হানিফ ফ্লাইওভারের বাড়তি ব্যয়: ডিএসসিসি’র মতামত চেয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়
মেয়র হানিফ ফ্লাইওভার নির্মাণে বাড়তি ব্যয় হয়েছে এক হাজার ৭০৮ কোটি ৩১ লাখ টাকা। সম্প্রতি সালিসি ট্রাইব্যুনাল ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ওরিয়ন ইনফ্রাস্ট্রাকচার লিমিটেডকে সাত কার্যদিবসের মধ্যে এই অর্থ পরিশোধ করার রায় দিয়েছে। তবে এই রায়ের বিষয়ে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের (ডিএসসিসি) মতামত জানতে চেয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়।
সম্প্রতি এ রায়ের বিষয়ে অর্থ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মো. এখলাছুর রহমানের সভাপতিত্বে এক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপ (পিপিপি) এর আওতায় মেয়র মোহাম্মদ হানিফ ফ্লাইওভার নির্মাণে অতিরিক্ত ব্যয় পরিশোধ বা সংস্থানের বিষয়টি দ্রুত সমাধানের পরামর্শ দেওয়া হয়।
বৈঠকে ডিএসসিসি’র প্রতিনিধি উল্লেখ করেন, সালিসি আইন-২০০১ এর আলোকে এ রায়ের বিরুদ্ধে আপিলের সুযোগ আছে। তবে পরবর্তীতে কতটুকু আইনী প্রক্রিয়া গ্রহণের সুযোগ আছে সেটা আইনজীবীর সাথে পরামর্শ করে অর্থ মন্ত্রণালয়কে জানানো হবে।
বৈঠকে আরো উল্লেখ করা হয়, প্রকল্পের বাণিজ্যিক কার্যক্রম শুরু হয় ২০১৩ সালের ১১ অক্টোবর। ওরিয়ন ইনফ্রাস্ট্রাকচার লিমিটেডকে ওই অর্থ পরিশোধ না করলে ডিএসসিসিকে ব্যাংক হারের অতিরিক্ত ২ শতাংশ হারে অর্থ কনসেশনারকে পরিশোধ করতে হবে। কাজেই সিদ্ধান্ত গ্রহণে যত দেরি হবে ডিএসসিসি’র ব্যয়ও তত বাড়বে।
অন্যদিকে বৈঠকে পিপিপি কর্তৃপক্ষের প্রতিনিধি উল্লেখ করেন, পিপিপি’র আওতায় বর্তমানে ৫৫টি প্রকল্প রয়েছে, যা বাস্তবায়ন করা গেলে ২০ বিলিয়ান মার্কিন ডলার বিনিয়োগ হবে। এ প্রকল্পগুলোর মধ্যে জাপান এবং সিঙ্গাপুরের সাথে বেশ কিছু প্রকল্প আছে। তাই বিনিয়োগকারীদের আস্থা বজায় রাখতে বিনিয়োগ পরিবেশ তৈরি করতে হবে। ইতোমধ্যে সরকার পিপিপি ফ্রেমওয়ার্ক তৈরি করেছে এবং তা বাস্তবায়ন করছে।
জানা গেছে, ওরিয়ন ইনফ্রাস্ট্রাকচার লিমিটেড এবং ডিএসসিসি’র মধ্যে সালিসি ট্রাইব্যুনালের রায় হয় গত ৩০ অক্টোবর। রায়ে উল্লেখ করা হয়, অতিরিক্ত খরচ ডিএসসিসি কর্তৃপক্ষ বহন করবে। এজন্য সংস্থাটি এক হাজার ৪৩৮ কোটি ৫৪ লাখ টাকা ওরিয়ন ইনফ্রাস্ট্রাকচারকে দেবে। এর সাথে যুক্ত হবে অতিরিক্ত ২ শতাংশ হারে সুদ।
আরো জানা গেছে, বারবার প্রকল্প সংশোধন ও সম্প্রসারণ করায় ফ্লাইওভারের দৈর্ঘ্য বেড়ে দাঁড়ায় ১১ দশমিক ৮০ কিলোমিটার। আর কাজের পরিমাণ বাড়ায় নির্মাণ কাজ পিছিয়ে যায় এবং দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির কারণ দেখিয়ে অতিরিক্ত এক হাজার ৭০৮ কোটি ৩১ লাখ টাকা ব্যয় দেখানো হয়। যদিও প্রকল্পের প্রকৃত ব্যয় ধরা হয় ২ হাজার ৩৭৮ কোটি ৩১ লাখ টাকা।
প্রসঙ্গত, ফ্লাইওভার নির্মাণে ওরিয়ন গ্রুপকে ২ হাজার ২৫০ কোটি টাকা অর্থায়ন করে ছয়টি ব্যাংক ও বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠান। এর মধ্যে রাষ্ট্রায়ত্ত সোনালী ব্যাংক ৫০০ কোটি, রূপালী ব্যাংক ৫৫০ কোটি, জনতা ব্যাংক ৬০০ কোটি ও অগ্রণী ব্যাংক ৫০০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করে। এছাড়া ৫০ কোটি টাকা করে বিনিয়োগ করে সোস্যাল ইসলামী ব্যাংক ও ইনভেস্টমেন্ট কর্পোরেশন অব বাংলাদেশ (আইসিবি)।