এবারো শীর্ষে হুমায়ূন আহমেদের স্বপ্নের স্কুল শহীদ স্মৃতি বিদ্যাপীঠ
জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট (জেএসসি) পরীক্ষার ফলাফলে এবারো সফলতার শীর্ষে রয়েছে নন্দিত কথাসাহিত্যিক প্রয়াত হুমায়ূন আহমেদের স্বপ্নের স্কুল শহীদ স্মৃতি বিদ্যাপীঠ। ২০০৬ সালে হুমায়ূন আহমেদ নেত্রকোনার কেন্দুয়া উপজেলার নিজগ্রাম কুতুবপুরে এ বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা করেন। এ বছর জেএসসি পরীক্ষায় এ বিদ্যালয়ের ৬৭ জন শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করে।
সোমবার (২৪ ডিসেম্বর) দুপুরে জেএসসির ফল প্রকাশিত হয়। এতে জানা যায়, ওই বিদ্যালয়ের ৬৭ জন শিক্ষার্থীই উত্তীর্ণ হয়েছে। জিপিএ ৫ অর্জন করেছে ২৫ জন শিক্ষার্থী এবং অন্য সবাই জিপিএ ৪ পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছে।
শহীদ স্মৃতি বিদ্যাপীঠের প্রধান শিক্ষক আসাদুজ্জামানের সঙ্গে কথা হলে তিনি বার্তা২৪.কমকে ফলাফলের বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, শুধু এ বছরই নয়, বরাবরই ধারাবাহিকভাবে শতভাগ সফলতা অর্জন করে আসছে শহীদ স্মৃতি বিদ্যাপীঠের শিক্ষার্থীরা। উপজেলা ছাড়িয়ে জেলা পর্যায়েও সেরা নির্বাচিত হয়েছে এ প্রতিষ্ঠানটি।
প্রয়াত হুমায়ূন আহমেদের স্বপ্ন বাস্তবায়নে বিদ্যালয়টির শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা নিরলসভাবে প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে জানিয়ে প্রধান শিক্ষক আরো বলেন, হুমায়ূন স্যারের স্বপ্ন ছিল- এ স্কুলটি একদিন দেশসেরা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পরিণত হবে। তিনি শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের বলতেন, “তোমরা দেখে এই স্কুল একদিন দেশজুড়ে হইচই ফেলে দিবে। স্কুলের সুনাম দেশব্যাপী ছড়িয়ে পড়বে। আর তখন শহরের ছাত্রছাত্রীরাও প্রত্যন্ত গ্রামের এ বিদ্যালয়ে পড়াশোনা করতে আসবে।” কিন্তু স্যারের সেই স্বপ্ন পূরণ হওয়ার আগেই তিনি না ফেরার দেশে চলে গেছেন।
তবে হুমায়ূন আহমেদের সহধর্মিনী ও শহীদ স্মৃতি বিদ্যাপীঠ পরিচালনা কমিটির সভাপতি মেহের আফরোজ শাওনের তত্ত্বাবধানে স্কুলটিকে ঘিরে হুমায়ূন আহমেদের যে স্বপ্ন ছিল- সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নের কাজ অব্যাহত রয়েছে বলেও জানান তিনি।
এদিকে ফলাফলের ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক জিপিএ ৫ সহ শহীদ স্মৃতি বিদ্যাপীঠের শিক্ষার্থীরা ধারাবাহিকভাবে শতভাগ সফলতা অর্জন করলেও প্রতিষ্ঠানটি এমপিওভুক্ত না হওয়ায় শিক্ষক, শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও এলাকাবাসীসহ উপজেলার সচেতন মানুষের মনে হতাশা বিরাজ করছে। তাদের সকলের দাবী, হুমায়ূন আহমেদের স্বপ্নকে বাস্তবায়নের পথ ত্বরান্বিত করতে অচিরেই যেন প্রতিষ্ঠানটিকে এমপিওভুক্তিসহ সরকারের সব রকম সুযোগ-সুবিধার আওতায় আনা হয়।
হুমায়ূন আহমেদ প্রতিষ্ঠিত শহীদ স্মৃতি বিদ্যাপীঠের সফলতায় প্রতিষ্ঠানটিকে অভিনন্দন জানিয়ে কেন্দুয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার আল-ইমরান রুহুল ইসলাম বলেন, বিদ্যালয়টি সম্পর্কে আমরা অবগত আছি। কিছুদিন পূর্বে ময়মনসিংহ বিভাগীয় কমিশনার মহোদয় ও জেলা প্রশাসক মহোদয় বিদ্যালয়টি পরিদর্শন করেছেন। আশা করছি, সরকার এমপিওভুক্তির কার্যক্রম শুরু করলে প্রথমেই হুমায়ূন আহমেদের স্বপ্নের এ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটি অবশ্যই এমপিওভুক্তির আওতায় আসবে।