শান্ত রাজধানীতে ভোটের অপেক্ষা
শনিবার সকাল ছিলে শীতে মোড়ানো। রাজধানীর মানুষেরও ঘুম ভেঙেছে দেরি করেই। কিছু বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ছাড়া আর সকল সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানই বন্ধ। এরই মধ্যে রাজধানী ছেড়ে ভোট আর স্বজনের টানে বাড়ি ফিরেছেন রাজধানীতে অভিবাসী মানুষেরা। ভোটের আগের দিনে রাজধানী যেমন শীতল আর শান্ত তেমনি ভোটের জন্যে যেন অপেক্ষা করছে এই ঢাকা শহর।
সকাল ১১ টার দিকে রাজধানীর উত্তরার ১৪ নং সেক্টর, ১২ নং সেক্টর এবং ১০ নং সেক্টর ঘুরে দেখা যায় খুব বেশি যান চলাচল নেই সড়কে। তবে ছুটির দিন হওয়ায় জহুরা মার্কেট কাঁচাবাজারে মানুষের ভিড় রয়েছে। ব্যস্ততা রয়েছে মুদির দোকানগুলোতেও।
শহরের সড়কগুলোতে বিএনপি নেতৃত্বাধীন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের প্রতীক ধানের শীষের পোস্টারের দেখা না মিললেও রয়েছে আওয়ামী লীগের নৌকা এবং ইসলামী ঐক্যজোটের হাতের পাখা ও স্বতন্ত্র প্রার্থীদের পোস্টারে ছেয়ে রয়েছে শহর। তাই ভোটের আমেজে খুব বেশি ভাটা খালি চোখে দেখা যাবে না।
উত্তরায় ঢাকা ১৮ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী এ্যাড. সাহারা খাতুনের যেমন প্রচার লক্ষ্য করা গেছে তেমনি রয়েছে আলহাজ্ব আনোয়ার হোসেনের প্রচার। জোহরা মার্কেটের ব্যবসায়ী আবদুস সালাম বলেন, এই এলাকায় এ্যাড. সাহারা খাতুন পূর্ব পরিচিত।
তিনি বলেন, ২০০৮ সালের নির্বাচনে এই এলাকা থেকে সর্বশেষ বিএনপির প্রার্থী হয়েছিলে ছাত্রগদলের সাবেক সভাপতি আজিজুল বারী হেলাল। তার একটি পরিচিতি ছিল। তবে এবারে ধানের শীষ প্রতীকের প্রার্থী জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জেএসডির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শহীদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন সর্ম্পকে স্থানীয় মানুষদের জানাশোনা কম।
আজমপুর, জসিমউদ্দিন হয়ে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের বারিধারা এলাকা পর্যন্ত ঢাকা ১৮ আসনের অধীনে। এই মহাসড়কে রাজধানীর অভ্যন্তরের এবং দূরপাল্লার বাস নির্বিঘ্নেই চলতে দেখা গেছে। এবং বাসগুলোতে যাত্রী সংখ্যাও রয়েছে উল্লেখযোগ্য।
ঢাকা ১৭ আসনে গুলশানের সড়কগুলোতে রয়েছে কর্মব্যস্ততা। এই এলাকায় বিপুল সংখ্যক বেসরকারি প্রতিষ্ঠান থাকায় রয়েছে কর্মব্যস্ততা। গুলশানে প্রবেশ এবং বের হওয়ার নিয়মিত চেকপোস্টগুলো ছাড়া বাড়তি নিরাপত্তা বাহিনীর টহল চোখে পড়েনি।
ঢাকা ১৬ আসনের বাড্ডায় রয়েছে আওয়ামী লীগ প্রার্থী একেএম রহমতউল্লাহ এবং ইসলামী আন্দোলনের আলহাজ্ব আমিনুল ইসলামের প্রচারনার পোস্টার। তবে নতুন বাজার, বাড্ডা, রামপুরা, হাজীপাড়ায় প্রধান সড়কগুলোতে বাড়তি আইন শৃঙ্খলাবাহিনীর অবস্থান চোখে পড়েনি। সড়কে ব্যক্তিগত গাড়ি কম থাকলেও পাবলিক পরিবহনের সরব উপস্থিত চোখে পড়েছে। এছাড়াও সিএনজি-অটোরিক্সার তেমন উপস্থিতি চোখে পড়েনি।
রামপুরার বাসিন্দা সোহেল রহমান বলেন, এখন পর্যন্ত এই এলাকায় কোন ধরনের সহিংসতার খবর পাওয়া যায়নি। গণমাধ্যমে বিভিন্ন প্রার্থীর সমর্থকদের আটক বা হয়রানির খবর দেখলেও এখানে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে কোন ধরনের সহিংসতার খবর আমরা পাইনি।
তিনি বলেন, রোববার ভোট দেয়ার শার্ন্তিপূর্ণ অবস্থা রয়েছে। শহর বেশ শান্ত এবং সহিংসতা ছাড়াই রয়েছে। আমার মনে হয়, মানুষ কাল উৎসব নিয়েই ভোট দিতে যাবে।