অনলাইনে কেনা যাচ্ছে যশোরের ঐতিহ্যবাহী গুড়-পাটালি



ডিস্ট্রিক করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
যশোরের ঐতিহ্যবাহী গুড়-পাটালি, ছবি: বার্তা২৪

যশোরের ঐতিহ্যবাহী গুড়-পাটালি, ছবি: বার্তা২৪

  • Font increase
  • Font Decrease

দেশে-বিদেশে যেখানেই থাকুন না কেনো, শীত এলেই বাঙালির মনে পড়ে যায় যশোরের খেজুর রস, গুড়-পাটালি আর পিঠার কথা। কিন্তু মানুষের লোভের আগুনে পুড়ে গেছে যশোর অঞ্চলের লাখো খেজুরগাছ। অবশ্যম্ভাবী ফল হলো, চৌকষ গাছিও বেঁচে থাকার তাগিদে পেশা বদলে ফেলেছেন। যা কিছু খেজুরগাছ এখনো যশোরের ঐতিহ্যের জানান দিচ্ছে, শীত এলে সেগুলো থেকে রস সংগ্রহের জন্য গাছি পাওয়া দুষ্কর। ফলত রস তথা গুড়-পাটালির উৎপাদন কমেছে আশঙ্কাজনক। কিন্তু যশোরের গুড়-পাটালির চাহিদা থেকে গেছে আগের মতোই। এই সুযোগে কিছু অসাধু কারবারি খেজুরগুড়ের সঙ্গে ভেজাল মিশিয়ে দেদারছে বিক্রি করছে।

সরকারিভাবে যশোর জেলাকে যেভাবে ব্রান্ডিং করা হয়েছে, সেখানেও রয়েছে খেজুর গুড়ের কথা- ‘নানা রঙের ফুলের মেলা, খেজুর গুড়ের যশোর জেলা’। এসব কারণেই যশোরের খেজুররস, গুড়-পাটালির পুরনো ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনতে যশোরের উদ্যোক্তাদের কেউ কেউ এগিয়ে আসছেন। তাদের মধ্যে এই মুহূর্তে শীর্ষে রয়েছে যশোররোডডটকম (www.jessoreroad.com)।

কর্মসূত্রে যশোরে দীর্ঘদিন বসবাস করেছেন ঢাকার কেরানিগঞ্জের জাকির হোসেন। করপোরেট হাউজে উচ্চপদে কর্মরত জাকির হোসেন যশোর ছাড়লেও এখানকার খেজুরগুড়-পাটালির স্বাদ ভোলেননি। তাইতো ঢাকায় অবস্থান করেও তিনি খুঁজে ফেরেন যশোরের গুড়-পাটালি। www.jessoreroad.com তার মতো মানুষদের চাহিদা পূরণে সচেষ্ট। রাজধানীতে বসে যশোরের খাঁটি গুড়-পাটালি পেয়ে খুশি জাকির হোসেন।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Jan/01/1546352170379.jpg

বেসরকারি প্রতিষ্ঠান জাগরণী চক্র ফাউন্ডেশনে গণসংযোগ কর্মকর্তা হিসেবে কাজ করছেন হাসিব নেওয়াজ। তার এক শুভাকাঙ্ক্ষীকে গাজীপুরের টঙ্গীতে পাটালি পাঠানোর দরকার ছিল। অনলাইনে দেখেছেন, পাটালি বিক্রি হচ্ছে www.jessoreroad.com -এ। কিন্তু পণ্য কিনে ঠকে যান কি-না, সেই আশঙ্কায় ভুগছিলেন। পরে ফোনে (০১৯৮০ ১৭ ১৭ ১৭) কথা বলে প্রতিষ্ঠানটির কর্ণধারদের পরিচয় সমন্ধে নিশ্চিত হন। একবাক্যে অর্ডার দিয়ে দেন। এরপর আলাপচারিতায় জানান, তার শুভাকাঙ্ক্ষী ভদ্রলোক পাটালির মানে ভীষণ খুশি হয়েছেন।

www.jessoreroad.com -এর গুড়-পাটালির চাহিদা রয়েছে প্রবাসীদের কাছেও। কিন্তু কর্তৃপক্ষ বলছেন, কিছু প্রতিবন্ধকতার কারণে এই মুহূর্তে দেশের বাইরে পাঠানো যাচ্ছে না জনপ্রিয় খাদ্যপণ্যটি। অথচ প্রতিদিনই প্রবাসীরা নানা মাধ্যমে যোগাযোগ করেন। বিশেষত www.jessoreroad.com -এর ফেসবুক পাতা (facebook/amarjessoreroad) ইতিমধ্যে বেশ জনপ্রিয়তা পেয়েছে। অনেকে আবার হটলাইনেও (০১৯৮০ ১৭ ১৭ ১৭) যোগাযোগ করে পছন্দের পণ্যটি নিতে সচেষ্ট হন।

যশোর রোডের প্রধান নির্বাহী আহসান কবীর বলেন, ‘আমাদের জেলার প্রধান যে ঐতিহ্য খেজুরগাছের রস, গুড়, পাটালি, তাকে কীভাবে টিকিয়ে রাখা যায় তা নিয়ে প্রথমে আমরা একটি সমীক্ষা করি। আমরা দেখতেই পাই, এই ঐতিহ্যটি হারিয়ে যাওয়ার অন্যতম প্রধান কারণ খেজুরগাছের সংখ্যা কমে যাওয়া। দ্বিতীয় কারণটি হলো, খেজুরগাছ থেকে রস সংগ্রহের ব্যাপারটি বেশ কষ্টকর। নিপুণতা, দক্ষতা না থাকলে ভালো মানের রস-গুড়-পাটালি উৎপাদন করা যায় না। একসময় যেসব দক্ষ গাছি তাদের নিপুণ হাতে এই কাজটি করতেন, তাদের বেশিরভাগই মারা গেছেন। যারা বেঁচে আছেন তারা বয়সের ভারে ন্যুব্জ। আগে গাছিদের সন্তানরাই বাবার কাছ থেকে শিখে এই কাজ করতেন। এখন অন্য কাজে অল্প পরিশ্রমে বেশি টাকা আয়ের সুযোগ হওয়ায় গাছিদের সন্তানরা আর খেজুরগাছ থেকে রস সংগ্রহের কষ্টসাধ্য কাজ করতে আগ্রহী হচ্ছেন না। এ অবস্থায় যশোরের এ ঐতিহ্য বিলুপ্তির দিকে এগুচ্ছে।’

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Jan/01/1546352197193.jpg

তিনি বলেন, ‘আমাদের পরিকল্পনা, রস সংগ্রহ, গুড়-পাটালি তৈরির কাজকে বাণিজ্যিকভাবে লাভজনক করে তুলতে হবে। তা না হলে কোনোভাবে নতুন প্রজন্মকে গাছ কাটা, রস-গুড় উৎপাদনে আগ্রহী করা যাবে না। কেবল স্থানীয় বাজারে গুড়-পাটালি বিক্রি করলে গাছিরা ভালো দাম পাবেন না। দরকার আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার। আমরা ঠিক এই কাজটিই করছি। যশোরে উৎপাদিত গুড়-পাটালি দেশের বিভিন্ন স্থানে পাঠানোর ব্যবস্থা করছি। গাছিরা যাতে ভালো দাম পান, সেই দিকেও দৃষ্টি রাখা হয়েছে। প্রায় ছয় বছর আগে কিনে রাখা ডোমেইন-হোস্টিংয়ের মাধ্যমে আমরা jessoreroad.com- নামে একটি ই-কমার্স সাইট তৈরি করি; যা চলতি শীত মৌসুমে যশোরের গুড়-পাটালি ক্রেতার চাহিদা অনুযায়ী দেশের বিভিন্ন প্রান্তে, বিশেষ করে নগর-মহানগরগুলোতে পৌঁছে দিচ্ছে,’ বলছিলেন আহসান কবীর।

jessoreroad.com -এর অন্যতম পরিচালক সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘জেলার বসুন্দিয়া ও বাঘারপাড়া এলাকার কয়েক ডজন গাছিকে আমরা সংগঠিত করেছি। সেখানে কাজ করছেন আমাদের বিশ্বস্ত কর্মীরা। ফলে ভেজাল গুড়-পাটালি তৈরির কোনো সুযোগ নেই। এসব গাছির কাছ থেকে আমরা যে গুড়-পাটালি সংগ্রহ করি, তা স্থানীয় বাজারদরের চেয়ে খানিকটা বেশি। বৈশিষ্ট্য হলো, একশ ভাগ বিশুদ্ধতার নিশ্চয়তা।’

তিনি বলেন, ‘আমরা দেখেছি, গাছিরা আগে এক কেজি খেজুরগুড়ে ভেজাল মিশিয়ে ৪০ থেকে ৫০ টাকা বেশি লাভ করতেন। আমাদের বক্তব্য পরিষ্কার- ভেজাল দেওয়া যাবে না। ভেজাল দিয়ে গাছিরা যে বাড়তি মুনাফা করতেন, তা পুষিয়ে যাবে ন্যায্য দামে খাঁটি গুড়-পাটালি বিক্রি করতে পারলে। এই প্রক্রিয়ায় আমরা খুবএকটা লাভ করতে না পারলেও ক্রেতাদের আস্থা অর্জন করতে পেরেছি। আমাদের স্বল্পমেয়াদী লক্ষ্য হলো, যশোরের ঐতিহ্য পুনরুদ্ধার করা। এই কাজে সফল হলে পরে খেজুরগাছের সংখ্যা বৃদ্ধি ও প্রশিক্ষণের মাধ্যমে নতুন নতুন গাছি তৈরির পরিকল্পনা নিয়ে এগোনো।’

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Jan/01/1546352220533.jpg

আরেক পরিচালক উজ্জ্বল বিশ্বাস বলেন, ‘‘যশোরের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসের সঙ্গে জড়িয়ে আছে ‘যশোর রোড’-এর নাম। ঐতিহাসিক সেই যশোর রোডের নামেই আমাদের ই-কমার্স সাইটটি করা। এর লোগো হিসেবেও ব্যবহার করা হয়েছে যশোর রোডের পাশে থাকা প্রায় দুইশ’ বছরের পুরনো রেইনট্রি। যেহেতু সাইটটির নাম jessoreroad.com, আমরা চিন্তা করি, শুধু খেজুর গুড়-পাটালিই নয়, যশোরে তৃণমূল পর্যায়ে আরো অনেক বিখ্যাত পণ্য উৎপাদিত হয়, সেগুলোও আমরা এই সাইটের মাধ্যমে দেশে-বিদেশে ছড়িয়ে দিতে পারি। তারই অংশ হিসেবে যশোরের বিখ্যাত কুমড়োবড়ি, চালের গুঁড়া, নকশিকাঁথা, নানা ধরনের হস্তশিল্প, সূচির কাজ করা পোশাক বাজারজাত করার ব্যবস্থা করছি। যশোরে উৎপাদিত ঘি ও মধুও এই ই-কমার্স সাইটে বিক্রি করা হচ্ছে। বাজারজাত করার আগে এগুলোর মান সম্বন্ধে নিশ্চিত হওয়ার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। মান এবং বিশুদ্ধতার ব্যাপারে আমরা আপস করি না।’

   

জব্বারের বলীখেলার নতুন চ্যাম্পিয়ন কুমিল্লার বাঘা শরীফ



তাসনীম হাসান, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, চট্টগ্রাম
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

মাথার ওপর বৈশাখের কাঠফাটা রোদ। সেটি উপেক্ষা করে ২০ বাই ২০ হাতের চতুর্ভুজ আকৃতির রিংয়ের চারপাশ ঘিরে অসংখ্য দর্শকের হই-হুল্লোড়। রেফারির বাঁশি বেজে ওঠার সঙ্গে সঙ্গে শুরু হলো শক্তির লড়াই। দাঁতে দাঁত চেপে, মাথায় মাথা লাগিয়ে শুরু হলো বাঘা শরীফ ও রাশেদের চ্যাম্পিয়ন হওয়ার লড়াই।

ঘামে ভিজে, রোদে পুড়ে অস্থির। তবু যেন ‘কেহ কারে নাহি ছাড়ে সমানে সমান’। কিন্তু থামতে যে হবেই! ৩১ মিনিটেও কেউ কারও পিঠ রিংয়ের বালুতে ছোঁয়াতে পারেনি। তবে শেষমেশ আর না পেরে হার মেনে নেন রাশেদ বলী। এর মধ্য দিয়ে ঐতিহাসিক এই বলীখেলা পেল নতুন চ্যাম্পিয়ন।

১১ রুদ্ধশ্বাস লড়াই শেষে রেফারি বাঘা শরীফের হাত উঁচিয়ে বললেন, ‘ওই এবারের আবদুল জব্বার বলীখেলার চ্যাম্পিয়ন’। মন ভাঙলেও মেনে নেন কুমিল্লারই আরেক বলী রাশেদ।

একটা সময় জব্বারের বলীখেলা মানেই ছিল কক্সবাজারের দিদার বলীর হাতে ট্রফি। রেকর্ড ১১ বারের চ্যাম্পিয়ন দিদার ২০১৭ সালে অবসরে যাওয়ার পর থেকে আসল দ্বৈরথটা হচ্ছে জীবন ও শাহজালালের মধ্যে। ২০১৯ সালের বলীখেলায় ফাইনালে জীবনকে হারিয়ে শিরোপা জিতেছিলেন শাহজালাল। পরেরবার শিরোটা পুনরুদ্ধার করেন জীবন। এরপর গতবার শোধ নেন জীবন। তবে এবার দুজনেই নাম প্রত্যাহার করেন।

যুবসমাজকে ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনে উদ্বুদ্ধ করতে ১৯০৯ সালে চট্টগ্রামের বকশিরহাটের ব্যবসায়ী আবদুল জব্বার সওদাগর চালু করেছিলেন বলীখেলা। সময়ের ব্যবধানে লালদীঘির মাঠে বসা ‘জব্বারের বলীখেলা’ হয়ে উঠেছে এই জনপদের অন্যতম আকর্ষণ। শুধু কি তাই? বলীখেলাকে কেন্দ্র করে বৃহত্তর চট্টগ্রামের সবচেয়ে বড় বৈশাখী মেলাটিও বসে এখানে। কিন্তু করোনার থাবা এই আনন্দ-উৎসব থামিয়ে দিয়েছিল ২০২০ সালে। এরপর গত বছরও এই মেলা হয়নি একই কারণে। এবারও ঐতিহাসিক এই আয়োজনের ভবিষ্যৎ ঝুলছিল সুতার ওপর। শেষ পর্যন্ত সিটি মেয়র মো. রেজাউল করিম চৌধুরীর প্রচেষ্টায় তিন বছর পর বলীখেলা দেখল নগরবাসী।

এবার আবদুল জব্বারের বলীখেলায় অংশ নিতে ৮৪ জন বলী নিবন্ধন করেন। তাঁদের মধ্যে ২৫ বছরের তরুণ যেমন ছিল, তেমনি ছিলেন ৭০ বছরের বলীও। প্রথম রাউন্ডে শখের বশে খেলতে আসা বলীরা অংশ নেন। এরপর হয় চ্যালেঞ্জ রাউন্ড। এই রাউন্ড থেকেই জয়ী হয়ে বাঘা শরীফ, রাশেদ, রাসের ও সৃজন চাকমা যান সেমিফাইনালে।

সেমিফাইনাল শেষে ফাইনালে মুখোমুখি হন বাঘা শরীফ ও রাশেদ। ফাইনালে দুই দুরন্ত বলীর লড়াইয়ে এক প্রস্থ নাটকও হলো। ২০ বাই ২০ হাতের চতুর্ভুজ আকৃতির রিংয়ে শক্তির লড়াইয়ে কেউ কাউকে ফেলতে পারছিলেন না। দুজনের মধ্যে বেশ কয়েকবার ধাক্কাধাক্কিও হলো।

পিঠ নিচে ফেলতে না পারলেও অবশ্য বাঘা শরীফ বারবারই পরাস্থ করেন রাশেদতে। খেলার ১১ মিনিটের মাথায় রাশেদ বলে আর ফেরে উঠতে না পেরে সরে দাঁড়ান।

কুমিল্লার হোমনা বাসিন্দা বাঘা শরীফ মাংস বিক্রেতা। কাজের ফাঁকে যে টুকু অবসর মিলে তার পুরোটা দেন বলীখেলায়। কুমিল্লার অন্যতম সেরা বলী হিসেবে পরিচিতি আছে তার। সেজন্য তার নাম হয়ে দাঁড়ায় বাঘা শরীফ।

চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর বাঘা শরীফ বলেন, প্রথমবারের মতো অংশ নিলাম। আর প্রথমবার অংশ নিয়েই চ্যাম্পিয়ন হলাম। যারা সুযোগ করে দিয়েছেন। সামনের আসরগুলোতে আরও শিরোপা চাই।

;

দুই দপ্তরের অনাদায়ী অর্থ আদায় করে সরকারি কোষাগারে জমার নির্দেশ



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ফাইল ছবি

ফাইল ছবি

  • Font increase
  • Font Decrease

খাদ্য, যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন দুই দপ্তরের অডিট আপত্তির বিরুদ্ধে নির্দেশনা দিয়েছে সরকারি হিসাব সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটি। এই দুই দপ্তরের অনিষ্পন্ন অডিট আপত্তির প্রমাণক সাপেক্ষে নিষ্পত্তিসহ অনাদায়ী অর্থ আদায় করে সরকারি কোষাগারে জমার নির্দেশনা দিয়েছে কমিটি।

বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) জাতীয় সংসদ ভবনের কেবিনেট কক্ষে দ্বাদশ জাতীয় সংসদের সরকারি হিসাব সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির ২য় বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন হাফিজ উদ্দিন আহম্মেদ এমপি। কমিটির সদস্য ফয়জুর রহমান, মো. মুজিবুল হক, মো. জাহিদ মালেক, ফজিলাতুন নেসা, সৌরেন্দ্র নাথ চক্রবর্তী, নূর মোহাম্মদ, আখতারউজ্জামান, এস. এ. কে একরামুজ্জামান, মো. রেজাউল হক চৌধুরী ও মো. নজরুল ইসলাম বৈঠকে অংশগ্রহণ করেন।

বৈঠকে খাদ্য মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন খাদ্য অধিদপ্তর এবং যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর এর ২০১৭-১৮ অর্থ বছরের কমপ্লায়েন্স অডিট রিপোর্ট নম্বর ৩৫/২০২১ এ অন্তর্ভুক্ত অডিট আপত্তির অনুচ্ছেদ নং- ০১, ০২, ০৩, ০৪, ০৫, ০৬, ০৭, ০৮ এবং ০৯ এর বিষয়ে আলোচনা ও প্রমাণক সাপেক্ষে নিষ্পত্তিসহ অনাদায়ী অর্থ আদায়পূর্বক সরকারি কোষাগারে জমা প্রদানের জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়।

বাংলাদেশের মহা হিসাব-নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রকের রিপোর্টভুক্ত অনিষ্পন্ন অডিট আপত্তিগুলোর মধ্যে খাদ্য মন্ত্রণালয় এবং যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় কর্তৃক নিষ্পত্তির জন্য প্রমাণকসহ মহা হিসাব-নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রকের কার্যালয়ে প্রেরণের পরে সিএজি কর্তৃক নিষ্পত্তির সুপারিশের পরিপ্রেক্ষিতে সরকারি হিসাব সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটি পরবর্তী বৈঠকে উপস্থাপনের জন্য নির্দেশনা প্রদান করা হয়।

বৈঠকে খাদ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব, যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের সচিবসহ সিএজি কার্যালয়, অর্থ মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ব্যাংক, খাদ্য অধিদপ্তর, যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর, সিজিডিএফ কার্যালয় এবং জাতীয় সংসদ সচিবালয়ের সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

;

এক দিনের ব্যবধানে আরও কমল স্বর্ণের দাম



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

একদিন না যেতেই আবারও স্বর্ণের দাম কমানোর ঘোষণা দিয়েছে জুয়েলারি ব্যবসায়ীদের সংগঠন বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাজুস)।

বৃহস্প‌তিবার (২৫ এপ্রিল) বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বাজুস) মূল্য নির্ধারণ ও মূল্য পর্যবেক্ষণ স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান মাসুদুর রহমানের স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। বৃহস্পতিবার বিকেল ৩টা ৫০ মি‌নিট থেকেই নতুন এ দাম কার্যকর করা হয়েছে।

ভালো মানের স্বর্ণের দাম ভরিতে ৬৩০ টাকা কমানো হয়েছে। ২২ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণ দাম এক লাখ ১৪ হাজার ১৯১ টাকা থেকে কমিয়ে এক লাখ ১৩ হাজার ৫৬১ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।

এর আগে, গত ৬, ৮ ও ১৮ এপ্রিল স্বর্ণের দা‌ম বা‌ড়ি‌য়ে‌ছিল বাজুস। এর ম‌ধ্যে ৬ এপ্রিল বে‌ড়ে‌ছিল ১৭৫০ টাকা, ৮ এপ্রিল ১৭৫০ টাকা ও ১৮ এপ্রিল বে‌ড়ে‌ছিল দুই হাজার ৬৫ টাকা। পরে ২০ এপ্রিল ৮৪০ টাকা কমানোর একদিন পর ২১ এপ্রিল আবার ভরিতে ৬৩০ টাকা বাড়ায় বাজুস।

এর দুই দিন পর ২৩ এপ্রিল তিন হাজার ১৩৮ টাকা, ২৪ এপ্রিল ২০৯৯ টাকা ও ২৫ এপ্রিল ভালো মানের স্বর্ণ ভরিতে ৬৩০ টাকা কমানোর ঘোষণা দিল বাজুস। অর্থাৎ তিন দিনে ভ‌রি‌তে স্বর্ণের দাম ক‌মেছে পাঁচ হাজার ৮৬৮ টাকা।

;

টাঙ্গাইল শাড়িসহ ১৪টি জিআই পণ্যের সনদ বিতরণ



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন বলেছেন, পৃথিবীর বুকে বাংলাদেশ একটি অমিত সম্ভাবনাময় দেশ। ষড়ঋতুর এ দেশকে প্রকৃতি যেমন দু'হাত ভরে তাঁর বৈচিত্র্যময় সম্পদ ঢেলে দিয়েছে, তেমনি এদেশের মেহনতি মানুষ তাঁদের আপন শৈল্পিক কারুকার্যের মাধ্যমে অনন্যসাধারণ সামগ্রী প্রস্তুত করে বিশ্বদরবারে বাংলাদেশের সুনাম ও খ্যাতি বৃদ্ধি করেছে। মাটি, বায়ু, পানি, পরিবেশ, কারিগরদের দক্ষতা প্রভৃতি স্বতন্ত্র ও অনন্য বৈশিষ্ট্যের কারণে ছোট এ ভূখণ্ডের আনাচে-কানাচে ছড়িয়ে রয়েছে অসংখ্য ভৌগোলিক নির্দেশক বা জিআই পণ্য। ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা এসব পণ্যকে জিআই হিসেবে স্বীকৃতি প্রদানের পাশাপাশি এর গুণগত মান ও টেকসই সংরক্ষণের দিকে নজর দিতে হবে।

বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) মন্ত্রী রাজধানীর বেইলি রোডে বাংলাদেশ ফরেন সার্ভিস একাডেমির মাল্টিপারপাস হলে শিল্প মন্ত্রণালয়ের পেটেন্ট, শিল্প-নকশা ও ট্রেডমার্কস অধিদপ্তর (ডিপিডিটি) আয়োজিত বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী টাঙ্গাইল শাড়ি, গোপালগঞ্জের রসগোল্লা ও নরসিংদীর অমৃত সাগর কলা-সহ ১৪টি ভৌগোলিক নির্দেশক (জিআই) পণ্যের নিবন্ধন সনদ বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।

ডিপিডিটি'র মহাপরিচালক মোঃ মুনিম হাসান এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসাবে বক্তৃতা করেন শিল্প মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব জাকিয়া সুলতানা, ফরেন সার্ভিস একাডেমির রেক্টর রাষ্ট্রদূত মাশফী বিনতে শামস ও শিল্প মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব কামরুন নাহার সিদ্দীকা।

মন্ত্রী বলেন, বিশ্ববাজারে জিআই পণ্যের প্রচার ও প্রসারে আমাদের এখনই কার্যকর উদ্যোগ ও পদক্ষেপ নিতে হবে। বিদেশের বাংলাদেশ মিশনসমূহ, দেশের সকল আন্তর্জাতিক ও অভ্যন্তরীণ বিমানবন্দর ও গুরুত্বপূর্ণ স্থানে কেন্দ্রীয়ভাবে এসব পণ্য প্রদর্শনীর ব্যবস্থা করতে হবে। তাছাড়া দেশে-বিদেশে বিভিন্ন মেলায় জিআই পণ্যসমূহ প্রদর্শন করা যেতে পারে। তিনি বলেন, শিল্প মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন ডিপিডিটি, বিসিক ও এসএমই ফাউন্ডেশনের সহযোগিতায় জেলা ও উপজেলা প্রশাসন এসব পণ্যের উন্নয়ন ও প্রসারে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে পারে।

নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন বলেন, বাংলাদেশ এখন কোন খালি বাস্কেট নয়, এটি একটি পরিপূর্ণ ভরা বাস্কেট। আমাদের সম্পদের কোনো অভাব নেই, প্রয়োজন এর সদ্ব্যবহারের। প্রয়োজনীয় পৃষ্ঠপোষকতা, কারিগরি সহযোগিতা ও প্রশিক্ষণের মাধ্যমে এসব সম্পদ ও পণ্যের প্রচার-প্রসার ঘটাতে হবে।

সিনিয়র শিল্প সচিব জাকিয়া সুলতানা বলেন, আমরা ইতোমধ্যে জিআই হিসেবে স্বীকৃতি পেতে পারে এমন ৫০০টি পণ্যের প্রাথমিক তালিকা তৈরি করেছি। একটু দেরিতে হলেও আমরা এ বিষয়ে কার্যকর উদ্যোগ নিয়েছি। তিনি বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দিকনির্দেশনায় আমরা ২০১৩ সালে 'ভৌগোলিক নির্দেশক পণ্য (নিবন্ধন ও সুরক্ষা) আইন প্রণয়ন করি এবং পরবর্তীতে ২০১৫ সালে এ সংক্রান্ত বিধিমালা প্রণয়ন করি। বিশেষ অতিথি বলেন, আমাদের জিআই পণ্যকে সুরক্ষা দিতে হবে এবং একইসঙ্গে এর পেটেন্ট দিতে হবে। জিআই পণ্যের প্রচার-প্রসারে বিভিন্ন উৎসব, পালাপার্বণ ও রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠানে এসব পণ্যকে আমরা উপহার হিসেবে প্রদান করতে পারি। তাছাড়া এসব পণ্য সম্পর্কে টিভিসি, ডকুমেন্টারি তৈরি করে সোশ্যাল মিডিয়ায় ব্যবস্থা প্রচারের ব্যবস্থা গ্রহণ করা যায়।

অনুষ্ঠানে টাঙ্গাইল শাড়িসহ বাংলাদেশের মোট ১৪টি ঐতিহ্যবাহী পণ্যকে জিআই পণ্য হিসেবে স্বীকৃতি দিয়ে সনদ প্রদান করা হয়। সেগুলো হলো যথাক্রমে গোপালগঞ্জের রসগোল্লা, নরসিংদীর অমৃত সাগর কলা, টাঙ্গাইলের পোড়াবাড়ির চমচম, কুমিল্লার রসমালাই, কুষ্টিয়ার তিলের খাজা, বাংলাদেশের ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাগল, রংপুরের হাঁড়িভাঙ্গা আম, মৌলভীবাজারের আগর, মৌলভীবাজারের আগর আতর, মুক্তাগাছার মণ্ডা, যশোরের খেজুরের গুড়, রাজশাহীর মিষ্টি পান এবং জামালপুরের নকশিকাঁথা। এ নিয়ে ডিপিডিটি কর্তৃক জিআই সনদপ্রাপ্ত বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী পণ্যের সংখ্যা দাঁড়ালো ৩১টিতে।

;