স্ত্রীর প্রেমিকের কাটা মাথা ব্যাগে নিয়ে ঘুরলেন স্বামী



সেন্ট্রাল ডেস্ক ২

  • Font increase
  • Font Decrease
স্ত্রী প্রতিবেশী যুবকের সঙ্গে পরকীয়ার সম্পর্কে জড়িয়ে পড়া বিষয় কোনোভাবেই মেনে নিতে পারেননি পাবনার সাঁথিযা উপজেলার বাসিন্দা ফখরুল। প্রতিশোধ হিসেবে তাকে একেবারে পৃথিবী থেকে সরিয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা করেন তিনি। এক পর্যায়ে সেটা বাস্তবায়নও করেন নির্মমভাবে। আড়াই লাখ টাকার বিনিময়ে স্ত্রীর পরকীয়া প্রেমিক সাইদকে হত্যার জন্য আরেক প্রতিবেশীকে ভাড়া করে স্বামী ফখরুল। এ হত্যাকা-ের পর ঘটে আরও রোমহর্ষক কাহিনী। সম্প্রতি এ ঘটনার বিস্তারিত প্রকাশিত হয়েছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে। পাবনার পুলিশ সুপার জিহাদুল কবির স্বয়ং তার ফেসবুক টাইমলাইনে এ বিষয়টি শেয়ার করেছেন। পুলিশ সুপারের শেয়ার করা স্ট্যাটাসে বলা হয়, তাই বলে মাথা কেটে ব্যাগে নিয়ে ঘুরে বেড়াতে হবে। তাও আবার কয়েক দিন ধরে। কে সেই হতভাগা যুবক. যার মাথা দেহ থেকে ছিন্ন করা হলো। কেন কাটা হল মাথা? দেহের বাকি অংশ কোথায় গেল? কি ছিল তার অপরাধ? কারা ঘটানো এমন নৃশংস হত্যাকা-? পুলিশ সুপারের স্ট্যাটাসে সে ঘটনাই বর্ণনা করা হয়েছে এভাবে- দিনটি ছিল গত বছরের অক্টোবরের ৩০ তারিখ। সন্ধ্যার পর খাবার খাচ্ছিল আটি গ্রামের সাইদ। হঠাৎ একটা ফোন কল আসে। সাইদের বউ কল রিসিভ করেন। এরপর সাইদকে ফোনটা দিতেই সে তড়িঘড়ি করে বাইরে চলে যায়। তারপর কেটে যায় এক মাস। ফোনটা বন্ধ। কোনো কূল-কিনারা না পেয়ে গত ৪ ডিসেম্বর সাঁথিয়া থানায় নিখোঁজ হওয়ার জিডি করেন সাইদের বাবা মন্তাজ। অন্য পাঁচটা সাধারণ ডায়েরির মতো এটিও নথিভুক্ত করা হয়। এএসআই শওকতের ওপর তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়। জিডি হাতে পেয়েই ঘটনাস্থল অর্থাৎ জিডিকারীর বাড়িতে যান শওকত। সাইদের বিষয়ে জানার চেষ্টা করেন। সন্দেহ করার মতো কিছুই মেলে না। কাঠমিস্ত্রির কাজ করতো সে। ঘরে বউ আছে। দিন আনে দিন খায়। তবে মাঝেমধ্যে নেশাদ্রব্য সেবন করতো বলে শোনা গেলেও দৃশ্যত কোনো প্রমাণ পাওয়া যায় না। এছাড়া আর কোনো তথ্যই পাননি শওকত। বারবার তিনি ঘটনাস্থলে যেতে থাকেন। কিছুই মেলে না। কেউ কেউ বলেন, হয়তো কোনো মেয়েকে নিয়ে ভেগে গেছে। কিন্তু, আশেপাশের পাঁচ গ্রামেও কোনো মেয়ে ভেগে যাওয়ার তথ্য পাওয়া যায় না। জিডির ১০/১২ দিন পর শওকত আমার কাছে আসে। বিষয়গুলো বর্ণনা করে। আমি পুরো বিষয় শোনার পর শওকতের কাছে থাকা সাইদ সংক্রান্ত কাগজপত্র দেখতে থাকি। একপর্যায়ে সাইদ ওদিন কাদের সঙ্গে ফোনে কথা বলেছিল, একে একে তাদের খুঁজে বের করি। এক সময় নিশ্চিত হই, সাইদ যার ফোন কলে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যায় তার নাম রাজীব। খোঁজ নিয়ে দেখা যায় রাজীব নিজেও একজন নেশাখোর। রাজীবকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য খুঁজতে থাকি। কিন্তু সে কোনোভাবেই ধরা দেয় না। ইয়াবা কেনার টোপ দিয়ে কৌশলে রাজীবকে আটক করে শওকত। আমার কাছে নিয়ে এলে সে সাইদের ব্যাপারে কিছুই জানে না বলে বর্ণনা করে। কিন্তু একটু খোঁজ নিতেই জানা যায়, সাইদ নিখোঁজের দিন গভীর রাত পর্যন্ত ফোনে কথা বলেছে রাজীব। এরই মধ্যে হঠাৎ আমার চোখে পড়ে, সাইদ নিখোঁজের ১৫/১৬ দিন পর তার ফোন সাময়িক সময়ের জন্য খোলা ছিল। যাদের সঙ্গে ওই সময় সাইদের ফোন থেকে কথা হয়েছে তাদের বিষয়ে দ্রুততার সঙ্গে খোঁজ লাগাই। কিন্তু দেখা যায়, তারা সবাই সাইদের নিকটাত্মীয়। তারা মাঝে মাঝেই ওই নম্বরে ফোন করে দেখত ফোন খোলা আছে কি না? আমি হতাশ হয়ে যাই। হঠাৎ আমার চোখে পড়ে সাইদ নিখোঁজ হওয়ার আগের ব্যবহƒত ফোন সেট আর পরের ফোন সেট আলাদা। আমার মনে এবার খটকা লাগে। এরপর আমি পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সের এলআইসি সেকশনের সহায়তা নিই। জানার চেষ্টা করি, পরবর্তী ফোন সেটটি কে নিয়মিত ব্যবহার করে। তাতে পাশের গ্রামের শামীম নামের একজনের নাম উঠে আসে। এবার নতুন উদ্যমে রাজীবকে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করি। এর ফাঁকে শওকতকে লাগাই শামীমের পেছনে। খুব দ্রুতই শামীমের বিস্তারিত আমার কাছে চলে আসে। তখন রাজীবকে পুনরায় প্রথম থেকে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করি। তাকে শামীমের কথা বলতেই সে ভয় পেয়ে যায়। সে বুঝতে পারে আমরা হয়তো কিছু টের পেয়েছি। রাজীব জানায়, শামীম, রাজীব ও তার সহযোগীরা সাইদকে খুন করে। করমজা গ্রামের খয়ের বাগানের পাশে ইউক্যালিপটাস বাগানে পুঁতে রেখেছে। কথাগুলো বিশ্বাস হচ্ছিল না। তাই সাঁথিয়া থানার পুরো টিমকে নিয়ে গভীর রাতে বাগানে গিয়ে তার দেখানো জায়গা খনন করি। তবে মাটির নিচে একটি দড়ি, ছেঁড়া গেঞ্জির টুকরা ও জমাট বাঁধা রক্ত ছাড়া কিছুই পাইনি। এ সংবাদ পেয়ে পুলিশ সুপার সশরীরে এসে পুরো বিষয়টি শোনেন এবং আমাদেরকে দিক-নিন্দেশনা দেন। সবই ঠিকঠাক ছিল। কিন্তু, বুঝতে পারছিলাম না রাজীব কেন সাইদকে হত্যা করবে। একপর্যায়ে রাজীব জানায়, মঙ্গলগ্রামের ফখরুল তাকে আড়াই লাখ টাকা দিয়ে ভাড়া করে। বিনিময়ে সাইদকে খুন করতে বলে। কিন্তু, কারণটা তখনও স্পষ্ট ছিল না। ওদিনই ফখরুলকে গ্রেফতার করা হয়। সে জানায় এক অভাবনীয় তথ্য। ফখরুলের তথ্যমতে, গত দুই বৎসর ধরে পুরুষত্বহীন ফখরুল। এ জন্য তার স্ত্রী পরপুরুষের প্রতি ঝুঁকে যায়। তার স্ত্রী ষড়যন্ত্র করে তাকে জেলে পাঠায়। এরই ফাঁকে সাইদের সঙ্গে পরকীয়া সম্পর্ক গড়ে তোলে। জেলে বসেই সে এ খবর পায়। বাড়ি ফিরে সাইদকে মেরে ফেলার পরিকল্পনা করে। এলাকার উশৃঙ্খল ছেলে রাজীবকে ভাড়া করে। এর মধ্যে রাজীব ৩০ তারিখ রাতে তাকে ফোন করে জানায়, সাইদকে শেষ করে ফেলা হয়েছে। ফখরুল প্রমাণ চায়। তখন রাজীব ও শামীম সাইদের কাটা মাথা এনে তাকে দেখায়। কয়েকদিন ওই কাটা মাথা ব্যাগে নিয়ে ঘুরেন ফখরুল। পরে আবার তা ফিরিয়ে দেয়। এর প্রেক্ষিতে তাদের প্রাথমিকভাবে ১৯ হাজার টাকা দেয় ফখরুল। দুইদিন পর তার মনে সন্দেহ হয়। হয়তো কাটা মাথা সাইদের নয়। ফখরুল পুনরায় মাথা দেখতে চায়। শামীম ও রাজীব আবার মাথা নিয়ে গেলে অর্ধগলিত মাথা দেখে শনাক্ত করতে না পেরে বাকি টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানায় ফখরুল। যখন এ কথাগুলো হচ্ছিল এরই ফাঁকে সাঁথিয়া থানা পুলিশের ওসি (তদন্ত) সকলের সহায়তায় খুব কৌশলে শামীমকে এক শ্বাসরুদ্ধকর অভিযানে আটক করে। শামীমের কাছে সাইদের ব্যবহƒত সিম না পেলেও যে ফোন সেটে সাইদের সিম ব্যবহƒত হয়েছিল তা উদ্ধার করা হয়। শামীম জানায়, ধরা পড়ার আগে সিম ভেঙে নন্দমায় ফেলে দিয়েছে। সেও ইউক্যালিপটাস বাগানে গিয়ে মরদেহ পুঁতে রাখার স্থান দেখায়। অতিরিক্তভাবে সে দেখায় কোথায় মাথা কেটে এনে পুঁতে রাখা ছিল এবং দ্বিতীয় বার মাথা দেখানোর পর কোথায় মাথাটা ফেলে দেয়া হয়। মাথাটা সে ফেলেছিল ফখরুলের বাড়ির অদূরে কচুরিপানাভর্তি ডোবার ভেতর। তার দেখানো মতে ডোবায় গতকাল লোক নামানো হয়। হাজার হাজার উৎসুক জনতার উপস্থিতিতে দেহ থেকে বিচ্ছিন্ন সাইদের কাটা মু-ু ডোবার কচুরিপানার ভেতর থেকে উদ্ধার হয়। পুলিশ সুপারের শেয়ার করা স্ট্যাটাসে উল্লেখ করা হয়, এর চেয়ে বেশি কিছু লেখা সম্ভব নয়। সব কথা তদন্তের স্বার্থে বলতে পারলাম না। গত দেড়টা মাস নানা জল্পনা-কল্পনার পর এ ঘটনার রহস্য ভেদ করতে পেরে ভালো লাগছে। তবে একেক জন আসামি শনাক্ত করা আর তাদের ধরা যে কত কষ্টসাধ্য, কতটা ব্যয়বহুল তা বলে বোঝাতে পারব না। এখনও অনেক কাজ বাকি। তদন্তের স্বার্থে সবটা প্রকাশ করছি না। তবে, সকলের কাছে অনুরোধ আমাদের কাজে দয়া করে সহায়তা করুন। সম্মানিত সাংবাদিক ভাইরা অনেক কিছু জানতে চান, বুঝতে পারি না যে, তথ্য দেবার সময় না এলে তথ্য দিলে আমার পুরো প্ল্যান ভেস্তে যাবে। বাদীপক্ষের চাপ, একটা জিডি হলো পুলিশ কিছু করলো না। কিছু অবুঝ নাছোড় বান্দা জানতে চায় তদন্ত কোন দিকে এগোচ্ছে? সব মিলিয়ে আমাদের ত্রাহি ত্রাহি অবস্থা। শুধু এতটুকু বলি, ‘আস্থা রাখুন- আমরা অবশ্যই নিরাশ করব না। এ ঘটনার রহস্য উন্মোচন হবেই।’
   

রাঙামাটিতে হঠাৎ ভুতুড়ে বিদ্যুৎ বিলে অতিষ্ঠ গ্রাহক



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, রাঙামাটি
ছবি: বার্তা২৪

ছবি: বার্তা২৪

  • Font increase
  • Font Decrease

ভুতুড়ে বিলে জর্জরিত রাঙামাটির ইসলামপুরবাসী। এক মাসের বিল ৩ হাজার থেকে শুরু করে ৭০ হাজার টাকার বেশি এসেছে কারো কারো। কাপ্তাই হ্রদের ওপারে বসবাস করা হতদরিদ্র খেটে খাওয়া কয়েকশ পরিবারের বিদ্যুৎ বিলে এমন তুঘলকি কাণ্ডে ক্ষোভ প্রকাশ করছেন গ্রাহকেরা।

রাঙামাটি শহরের ১ নম্বর ওয়ার্ডের ইসলামপুরে প্রায় দু’শতাধিক অসহায় দিনমজুর পরিবারের বসবাস, যাদের শতকরা ৯৯ ভাগই দিন এনে দিন খেয়ে সংসার চালাতে হয়।

এমন পরিস্থিতিতে হঠাৎ করে বাড়তি ভুতুড়ে বিল তাদের নাস্তানাবুদ করে ফেলেছে। যেখানে তাদের মাসের বিদ্যুৎ বিল আসে ৫শ থেকে ৭শ টাকা, সেখানে ৩ হাজার থেকে শুরু করে ৭০ হাজার টাকার বিল করেছে রাঙামাটি বিদ্যুৎ বিভাগ।

স্থানীয়দের অভিযোগ, প্রতি মাসের বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ করে আসছেন তারা। তাদের কোনো বকেয়া বিল নেই। প্রতি মাসে সাধারণত তাদের বিদ্যুৎ বিল আসে ২শ থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ দেড় হাজার টাকা। কিন্তু হঠাৎ করে এমন ভুতুড়ে বিদ্যুৎ বিলে তাদের মাথায় যেন আকাশ ভেঙে পড়েছে। তাদের প্রশ্ন, নিয়মিত বিদ্যুৎ বিল পরিশোধের পরেও কেন এমন বিদ্যুৎ বিল করেছে বিদ্যুৎ বিভাগ! এমন বিদ্যুৎ বিলে ক্ষোভ প্রকাশ করছেন স্থানীয়রা।

স্থানীয়দের অভিযোগ, অধিকাংশ গ্রাহকেরই দুই থেকে পাঁচ গুণ বেশি বিল করা হয়েছে। বিল কপিতে ব্যবহৃত ইউনিটের কলাম শূন্য থাকলেও পরিশোধের কলামে বিরাট অংকের টাকা বসিয়ে বিল সরবরাহ করা হচ্ছে। প্রতিকার চাইতে গিয়ে হয়রানির শিকার হন বলেও অনেক গ্রাহক সংবাদমাধ্যমের কাছে অভিযোগ করেছেন।

স্থানীয় বাসিন্দা আব্দুল মান্নান বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘আমি দিনমজুরের কাজ করি। এর আগে প্রতিমাসে আমার বাসায় একটি মিটারে ৫ থেকে ৭শ টাকা বিল আসতো। কিন্তু এখন আমাকে ১১ হাজার টাকার বিল ধরিয়ে দিয়েছে। এখন পরিবার নিয়ে খেয়েপড়ে বেঁচে থাকাই দায় হয়ে পড়েছে। এমতাবস্থায় এতগুলো টাকার বিল আমার জন্য চরম কষ্টকর পরিস্থিতিতে ফেলেছে’।

অপর এক বাসিন্দা রোকেয়া বেগম বলেন, ‘আমি মানুষের বাসায় কাজ করে সংসার চালাই। আমাকে বিল দিয়েছে সাড়ে ২৪ হাজার টাকা। অথচ আমার বিল হতো ৮শ থেকে এক হাজার টাকা। এই বিল কীভাবে দেবো আমি’!

শওকত আলী নামের একজন বলেন, আমার বিল হতো ১ হাজার ৫শ টাকা। কিন্তু আমাকে বিল দিয়েছে ৫৭ হাজার টাকা। এই টাকা পরিশোধ করা কোনোমতেই সম্ভব নয়। আমি এমনিতেই অসুস্থ মানুষ। এই সময়ে এতগুলো টাকার বিল দিয়ে আমার ওপর জুলুম করা হয়েছে।

তিনি বলেন, এভাবে অনেক গ্রাহককে ভুতুড়ে বিল দিয়ে হয়রানি করা হচ্ছে। নানা ঝক্কি-ঝামেলার ভয়ে অনেকেই ভুতুড়ে বিল পরিশোধ করতে বাধ্য হচ্ছেন’!

এদিকে, নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিদ্যুৎ বিভাগের এক কর্মচারী জানিয়েছেন, মিটার রিডাররা গ্রাহকের মিটার না দেখে বিল করায় এবং ‘সিস্টেম লস’ সমন্বয় করতে বাড়তি বিল করছেন। গ্রাহকেরা অভিযোগ করলে অনেক ক্ষেত্রে বিল কমিয়ে দেওয়া হয়। অনেক ক্ষেত্রেই গ্রাহককে আবার বাড়তি বিল পরিশোধ করতে হয়। এতে করে সাধারণ গ্রাহকরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।

অভিযোগের বিষয়ে বিদ্যুৎ বিভাগ বলছে, নতুন প্রিপেইড মিটার লাগানোর কারণে পুরনো মিটারের যে রেটিং বকেয়া রয়েছে, তা একসঙ্গে বিল আকার তাদের দেওয়া হয়েছে।

রেটিং বকেয়া থাকার কারণ জানতে চাইলে রাঙামাটি বিদ্যুৎ বিতরণ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী জালাল উদ্দিন বলেন, ‘হয়ত বিদ্যুৎ বিল করার সময় বিলে কম রেটিং তোলা হয়েছে, যার কারণে দীর্ঘদিনের রেটিং জমা হয়ে এই সমস্যা তৈরি হয়েছে। তবে যারা এই পরিমাণ বিদ্যুৎ বিল একসঙ্গে পরিশোধ করতে পারবেন না, তাদের কয়েক কিস্তিতে পরিশোধ করার সুযোগ দেওয়া হবে’।

;

আসন্ন বাজেটে তামাক পণ্যের দাম বৃদ্ধির দাবি



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা ২৪. কম, ঢাকা
ছবি: বার্তা২৪

ছবি: বার্তা২৪

  • Font increase
  • Font Decrease

দেশে ৩ কোটি ৭৮ লাখ (৩৫.৩ শতাংশ) মানুষ তামাক সেবন করেন। পাশাপাশি প্রায় ১৫ লাখ মানুষ তামাকজনিত বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত এবং এসব রোগের চিকিৎসায় সরকারের ব্যয় এ সংক্রান্ত খাত থেকে প্রাপ্ত রাজস্ব আয়ের তুলনায় অনেক বেশি।

তাই, আসন্ন ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরের বাজেটে সব ধরনের তামাক পণ্যের ওপর কার্যকর করারোপের মাধ্যমে দাম বৃদ্ধির দাবি জানিয়েছে ‘ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশ’ ও ‘প্ল্যাটফর্ম ডক্টরস ফাউন্ডেশন’।

বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) ঢাকার জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে অনুষ্ঠিত 'মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত তামাকমুক্ত বাংলাদেশ বিনির্মাণে আসন্ন ২০২৪-'২৫ অর্থবছরের বাজেটে তামাক কর বৃদ্ধির দাবি’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানানো হয়।

ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশ ও প্ল্যাটফর্ম ডক্টরস ফাউন্ডেশন-এর পক্ষ থেকে জানানো হয়, তামাক ব্যবহারজনিত রোগে প্রতিবছর প্রায় ১ লাখ ৬১ হাজার মানুষ মৃত্যুবরণ করেন। ২০১৭-১৮ অর্থবছরে তামাক ব্যবহারের অর্থনৈতিক ক্ষতির পরিমাণ ৩০ হাজার ৫শ ৬০ কোটি টাকা। অথচ একই সময়ে তামাকখাত থেকে অর্জিত রাজস্ব আয়ের (২২ হাজার ৮শ ১০ কোটি টাকা) চেয়ে অনেক বেশি।

তামাক পণ্যের দাম বাড়লে যে এর ব্যবহার কমে, পৃথিবীর অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও এটি প্রমাণিত। এমতাবস্থায় সিগারেটের নিম্নস্তরের প্রতি ১০ শলাকা প্যাকেটের দাম ৬০ টাকা; মধ্যমস্তরের প্রতি ১০ শলাকা প্যাকেটের দাম ৮০ টাকা; উচ্চস্তরের সিগারেটের প্রতি ১০ শলাকা প্যাকেটের দাম ১শ ৩০ টাকা ও প্রিমিয়াম স্তরের সিগারেটের প্রতি ১০ শলাকা প্যাকেটের দাম ১শ ৭০ টাকা ধার্যের দাবি জানানো হয়।

সংগঠন দুটির পক্ষ থেকে আরো বলা হয়, আসন্ন বাজেটে তাদের প্রস্তাবিত তামাক কর বাস্তবায়ন করা হলে দেশে সিগারেটের ব্যবহার ১৫.১ শতাংশ থেকে হ্রাস পেয়ে ১৩.৮০ শতাংশ হবে। একই সঙ্গে ৫ লাখ ৪০ হাজার ৬শ ৫৬ তরুণ জনগোষ্ঠীর অকালমৃত্যু প্রতিরোধ করা সম্ভব হবে। পাশাপাশি প্রায় ৪৭ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব আয় হবে; যা আগের বছরের তুলনায় ২৮ শতাংশ বেশি।

সংবাদ সম্মেলনের প্রধান অতিথি সিরাজগঞ্জ-১ আসনের সংসদ সদস্য তানভীর শাকিল জয় বলেন, তামাকের ক্ষয়ক্ষতি থেকে দেশকে রক্ষা করতে প্রধানমন্ত্রী ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশ থেকে সম্পূর্ণভাবে তামাকের ব্যবহার নির্মূল করার দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রতিশ্রুত তামাকমুক্ত বাংলাদেশ বির্নিমাণে সংসদ সদস্যরা কাজ করছেন।

তিনি আরো বলেন, কার্যকর কর কাঠামো না থাকায় আমাদের দেশে তামাকের মতো ক্ষতিকর পণ্যটির দাম অন্যান্য দেশের তুলনায় সস্তা। ফলে, সহজেই সাধারণ মানুষ তামাক সেবন করছেন এবং বিভিন্ন মারণব্যাধিতে আক্রান্ত হচ্ছেন। তাই, সিগারেটের মতো তামাকপণ্যের জটিল করপদ্ধতি (স্তরভিত্তিক) বাতিল করে সুনির্দিষ্ট করপদ্ধতি কার্যকর করতে হবে; যাতে সবধরনের তামাকপণ্যের দাম বৃদ্ধি পায় এবং সাধারণ জনগণের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে নেওয়া যায়।

সভাপতির বক্তব্যে ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক খন্দকার আব্দুল আউয়াল রিজভী বলেন, দেশে ১৫ বছর বা তদুর্ধ্ব বয়সী নাগরিকদের মধ্যে ১৮ শতাংশ ধূমপান করেন। আবার কর্মক্ষেত্রসহ বিভিন্ন পাবলিক প্লেসে প্রতিদিন প্রায় ৩ কোটি ৮৪ লাখ প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ পরোক্ষ ধূপমানের শিকার হন।

বিশাল এই জনগোষ্ঠীকে তামাকের ক্ষতিকর দিক থেকে রক্ষায় সব ধরনের তামাক পণ্যের দাম বৃদ্ধি করতে হবে। কারণ, তামাক ব্যবহার কমাতে বিশ্বব্যাপী স্বীকৃত একটি পন্থা, কার্যকর কর আরোপ। আমাদের এই প্রস্তাব গ্রহণ করে কার্যকর কর আরোপ করা হলে সরকারের রাজস্ব আয় বৃদ্ধি পাবে ১০ হাজার কোটি টাকা; যা বিগত বছরের থেকে ২৮ শতাংশ বেশি।

সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাস্থ্য অর্থনীতি ইনস্টিটিউটের সহযোগী অধ্যাপক ড. শাফিউন নাহিন শিমুল, ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন হাসপাতাল অ্যান্ড রিসার্চ ইনস্টিটিউটের রোগতত্ত্ব ও গবেষণা বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. সোহেল রেজা চৌধুরী, বাংলাদেশ হেলথ রিপোর্টার্স ফোরামের সভাপতি রাশেদ বাঙ্গিসহ বিভিন্ন তামাকবিরোধী সংগঠনের প্রতিনিধিরা।

;

সাজেকে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহতদের মরদেহ স্বজনদের হস্তান্তর



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, খাগড়াছড়ি
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

রাঙ্গামাটির সাজেকের উদয়পুর সীমান্ত সড়কে দুর্ঘটনায় নিহত ৯ জনের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) সকাল থেকে খাগড়াছড়ি সদর হাসপাতালের মর্গে মরদেহগুলোর ময়নাতদন্ত করা হয়। পরে স্বজনদের কাছে মরদেহ হস্তান্তর করেন বাঘাইছড়ি উপজেলা প্রশাসন।

নিহতরা হলেন, গাজীপুরের টঙ্গীর সাগর, একই জেলার কাপাসিয়া উপজেলার অলিউল্লাহ, কিশোরগঞ্জের বাবু, মোহন, জসিম উদ্দিন, এরশাদ, তপু হোসেন, ইয়াছিন ও নয়ন।

রাঙ্গামাটির বাঘাইছড়ির উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা শিরীন আক্তার জানান, নিহতদের স্বজন কাছে মরদেহ হস্তান্তর করা হয়েছে এবং মরদেহ পরিবহনের জন্য ১০ হাজার টাকা করে স্থানীয় প্রশাসন থেকে দেয়া হয়েছে। এর পাশাপাশি বিআরটিএ’র পক্ষ থেকে নিহত প্রত্যেকের পরিবারকে ৫ লাখ টাকা করে এবং আহতদের প্রত্যেক পরিবারকে ২ লাখ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেয়া হবে।

বুধবার (২৪ এপ্রিল) বিকেলে রাঙ্গামাটির সাজেক-উদয়পুর সীমান্ত সড়কের কাজ শেষে ফেরার পথে নব্বই ডিগ্রি এলাকায় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে পিকআপ খাদে পড়ে যায়। এতে পিকআপে থাকা ৯ জন নিহত ও ৬ জন আহত হয়।

;

‘স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের হাতিয়ার দক্ষতা উন্নয়ন ও কর্মসংস্থান সৃষ্টি’



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে দক্ষতা উন্নয়ন ও সবাের জন্য কর্মসংস্থান সৃষ্টিকে হাতিয়ার বিবেচনা করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার এ লক্ষ্যে বিস্তৃত কর্মসূচি গ্রহণ করেছে বলে মন্তব্য করেছেন শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী।

বুধবার (২৪ এপ্রিল) সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার উদ্যোগে আয়োজিত ‘গ্লোবাল স্কিলস ফোরাম’ এর আলোচনায় শিক্ষামন্ত্রী এ মন্তব্য করেন।

শিক্ষামন্ত্রী বলেন, বর্তমান সরকারের সব উন্নয়ন নীতির মূলে রয়েছে সবার জন্য ন্যায়সঙ্গত কাজের সুযোগ সৃষ্টির প্রয়াস। সরকার সাধারণ শিক্ষার গুণগত উৎকর্ষের পাশাপাশি কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষার প্রসারে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। এ লক্ষ্যে সাধারণ শিক্ষার পাঠ্যক্রমে জীবন ও জীবিকা সংক্রান্ত পাঠ এবং প্রয়োজনীয় জীবন অভিজ্ঞতার পাঠ সন্নিবেশিত হয়েছে। তাছাড়া কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষার অবকাঠামোগত উন্নয়ন ও মান উন্নয়নে সরকার বিনিয়োগ অব্যাহত রেখেছে।

শিক্ষামন্ত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারের ধারাবাহিক বিনিয়োগের ফলে স্বাক্ষরতার হার ৭৫ শতাংশে উন্নীত হয়েছে বলে জানান। সাধারণ শিক্ষার ন্যায় কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষায়ও মেয়েদের অংশগ্রহণ উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে বলে তিনি জানান। বর্তমানে স্কুল সার্টিফিকেট পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে মেয়েদের হার ছেলেদের অংশগ্রহণের হারকে ছাড়িয়ে গেছে বলে মন্ত্রী জানান।

আলোচনায় অংশ নিয়ে আন্তর্জাতিক শ্রমসংস্থার মহাপরিচালক গিলবার্ট হোংবো সরকারের সাম্প্রতিক পদক্ষেপসমূহের ফলে দক্ষতা উন্নয়নে গুণগত অগ্রগতি সাধিত হয়েছে বলে জানান। মহাপরিচালক হোংবো নারী শিক্ষার প্রসার ও মান বৃদ্ধিতে বাংলাদেশ বিশ্ববাসীর কাছে উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত বলে মন্তব্য করেন।

এক প্রশ্নের উত্তরে শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী বলেন সরকার বৈদেশিক বিনিয়োগ আকর্ষণ ও দেশজ বিনিয়োগ বৃদ্ধির মাধ্যমে একদিকে যেমন কর্মসংস্থানমুখী বিভিন্ন অর্থনৈতিক খাতের উন্নয়নে কাজ করছে তেমনি মানবসম্পদ উন্নয়নের জন্য দক্ষতা উন্নয়ন ও নতুন নতুন দক্ষতা তৈরিতে প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। এ লক্ষ্যে সরকার শিক্ষা ব্যবস্থাকে অর্থনৈতিক সেক্টরগুলোর চাহিদা অনুযায়ী ঢেলে সাজানোর লক্ষ্যে কাজ করছে।

গ্লোবাল স্কিলস ফোরামের অংশ হিসেবে আয়োজিত এ প্যানেল আলোচনায় আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও কানাডা সরকারের অর্থায়নে বাংলাদেশের দক্ষতা উন্নয়ন ব্যবস্থার পরিবর্তনে বাস্তবায়িত প্রকল্পের সাফল্য তুলে ধরা হয়। আলোচনায় বাংলাদেশ এমপ্লয়ারস ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক ফারুক আহমেদ, বাংলাদেশ ফ্রি ট্রেড ইউনিয়ন কংগ্রেসের সাকি রিজওয়ানা, বাংলাদেশে ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূত চার্লস হোয়াইটলি ছাড়াও জেনেভায় ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও কানাডার প্রতিনিধিরা অংশগ্রহণ করেন। বক্তারা এ প্রকল্পের সাফল্যের ক্ষেত্রে সরকারের গুরুত্বপূর্ণ সহযোগিতার জন্য সরকারকে সাধুবাদ জানান এবং এ প্রকল্প অন্যান্য দেশের দক্ষতা উন্নয়ন প্রচেষ্টার ক্ষেত্রে দৃষ্টান্ত হতে পারে বলে মন্তব্য করেন।

;