মন্ত্রিসভায় শেখ হাসিনার ‘ক্যারিশমা’



রেজা-উদ্-দৌলাহ প্রধান, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট,বার্তা২৪.কম
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তাঁর মন্ত্রিসভার সদস্যরা/ ছবি: ফোকাস বাংলা

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তাঁর মন্ত্রিসভার সদস্যরা/ ছবি: ফোকাস বাংলা

  • Font increase
  • Font Decrease

নতুন সরকারের মন্ত্রিপরিষদ ঠিক করে নিয়েছে একাদশ সংসদ নির্বাচনে নিরঙ্কুশ বিজয় অর্জন করা দল আওয়ামী লীগ। রোববার (৬ জানুয়ারি) মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে নতুন সরকারের মন্ত্রীদের মন্ত্রণালয় ও বিভাগও বণ্টন করা হয়েছে।

এবারের মন্ত্রিপরিষদে যেমন হেভিওয়েট, প্রবীণ কিংবা বিতর্কিতরা বাদ পড়েছেন তেমনি রয়েছে তারুণ্যের জয়জয়কার। ব্যাপক রদবদল করে মন্ত্রিসভা গঠনে চমক দেখিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা।

সমৃদ্ধির অগ্রযাত্রায় দেশকে এগিয়ে নিতে, নির্বাচনে জনতার ‘ম্যান্ডেন্ট’ পাওয়ার পর তৈরি হওয়া বিপুল প্রত্যাশা পূরণে তরুণ উদ্যমীদের নিয়ে গঠিত এবারের মন্ত্রিসভাকে শেখ হাসিনার ‘ক্যারিশমা’ হিসেবে দেখছেন বিশ্লেষকরা।

নতুন সরকারের মন্ত্রিপরিষদে প্রধানমন্ত্রী ছাড়া ৪৬ জনকে স্থান দেওয়া হয়েছে। এদের মধ্যে ২৪ জন পূর্ণমন্ত্রী, ১৯ জন প্রতিমন্ত্রী ও তিন জন উপমন্ত্রী। এতে বিগত মন্ত্রিসভার ১৬ জন স্থান পেয়েছেন। আর বাকি ৩১ জনই নতুন মুখ।

আগামীকাল সোমবার (৭ জানুয়ারি) বিকাল সাড়ে ৩টায় বঙ্গভবনে প্রধানমন্ত্রীসহ মন্ত্রিপরিষদের সদস্যদের শপথ পাঠ করাবেন রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ। বিগত মন্ত্রিসভার ২৫ মন্ত্রী, ৯ প্রতিমন্ত্রী ও ২ উপমন্ত্রী এবারের মন্ত্রিসভায় স্থান পাননি। এছাড়া বিগত মন্ত্রিসভার জনপ্রশাসনমন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম গত ৩ জানুয়ারি মারা যান।

মন্ত্রিসভায় তারুণ্যের এই উত্থানকে স্বাগত জানাচ্ছেন সর্বমহল। তারা বলছেন, আওয়ামী লীগের এই মন্ত্রিসভায় একদিকে যেমন বির্তকিতরা বাদ পড়েছেন অন্যদিকে তরুণ ও উদ্যমীদের জায়াগা দেওয়া হয়েছে। নবীন-প্রবীণের সমন্বয়ে একটি গতিশীল টিম তৈরির চেষ্টা করা হয়েছে।

জানতে চাইলে রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বার্তা২৪কে বলেন, ‘গণম্যান্ডেট যেটা পেয়েছে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে মহাজোট, সেই গণম্যান্ডেটের সাথে যে বিশাল প্রত্যাশা জন্ম হয়েছে সেটাকে বিবেচনায় রেখে তরুণদেরকে বেশি মন্ত্রিসভায় যুক্ত করা হয়েছে।’

‘তারুণ্যের শক্তির উপর বঙ্গবন্ধু নির্ভর করতেন, একইভাবে বঙ্গবন্ধু কন্যাও এবার তারুণ্যকে নীতি নির্ধারণী জায়গায় স্থান দিয়ে কর্মকাণ্ডে গতিশীলতা আনার চেষ্টা করেছেন। টিমটা খুব ভালো হয়েছে। আশা করি মানুষের প্রত্যাশা পূরণে এই কেবিনেট একটি সুসমন্বিত টিম হিসেবে কাজ করবে।’

নুতন সরকারের নৌ পরিবহন প্রতিমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বার্তা২৪কে বলেন, ‘আমাদের সভাপতি শেখ হাসিনা সবসময় তারুণ্য নির্ভর। তার চিন্তাভাবনা তারুণ্যকে নিয়ে। সেজন্য তাকে আধুনিক বাংলাদেশের রূপকার বলা হয়। তিনি আধুনিকতাকে ধারণ করেন, এবারো ব্যতয় ঘটেনি।’

মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে জানা গেছে, সোমবার শপথ গ্রহণের মধ্যদিয়ে টানা তিনবারের মত প্রধানমন্ত্রী হবেন শেখ হাসিনা। এবার তাঁর অধীনে থাকবে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়, প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়, সশস্ত্র বাহিনী বিভাগ, বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয় এবং মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়।

২৪ জন পূর্ণ মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন। তারা হলেন-মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ে আ.ক.ম মোজাম্মেল হক, সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ে ওবায়দুল কাদের, কৃষি মন্ত্রণালয়ে ড. আবদুর রাজ্জাক, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আসাদুজ্জামান খান কামাল, তথ্যমন্ত্রণালয়ে মোহাম্মদ হাছান মাহমুদ।

আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ে আনিসুল হক, অর্থ মন্ত্রণালয়ে আ হ ম মুস্তফা কামাল, স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ে মো: তাজুল ইসলাম, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে দীপু মনি, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এ.কে আব্দুল মোমেন, পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে এম এ মান্নান।

শিল্প মন্ত্রণালয়ে নুরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ুন, বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ে গোলাম দস্তগীর গাজী, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ে জাহিদ মালেক, খাদ্য মন্ত্রণালয় সাধন চন্দ্র মজুমদার, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে টিপু মুনশি, সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ে নুরুজ্জামান আহমেদ, গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ে শ.ম. রেজাউল করিম।

পরিবেশ,বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ে শাহাব উদ্দিন, পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয় বীর বাহাদুর উশেসিং, ভূমি মন্ত্রণালয়ে সাইফুজ্জামান চৌধুরী, রেলপথ মন্ত্রণালয় নুরুল ইসলাম সুজন, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় ইয়াফেস ওসমান, ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় মোস্তফা জব্বার। 

প্রতিমন্ত্রী হিসেবে ১৯ জন শপথ নেবেন। তারা হলেন- শিল্প মন্ত্রণালয়ে কামাল আহমেদ মজুমদার, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ে ইমরান আহমদ, যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ে জাহিদ আহসান রাসেল, বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ে নসরুল হামিদ বিপু।

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ে আশরাফ আলী খান খসরু, শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ে মন্নুজান সুফিয়ান, নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ে খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, প্রাথমিক শিক্ষা ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ে জাকির হোসেন, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে শাহরিয়ার আলম।

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ে জুনাইদ আহমেদ পলক, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে ফরহাদ হোসেন,স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ে স্বপন ভট্টাচার্য, পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ে জাহিদ ফারুক, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ে মুরাদ হাসান, সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ে শরীফ আহমেদ।

সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ে কে এম খালিদ, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ে এনামুর রহমান, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ে মাহবুব আলী এবং ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়ে শেখ মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ।

উপমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন পরিবেশ বন ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক মন্ত্রণালয়ে হাবিবুন নাহার, পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ে একেএম এনামুল হক শামীম ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল।

   

ইসলামি সংগীত শিল্পী সালমানের মৃত্যুতে শোকের ছায়া



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ময়মনসিংহ
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

ময়মনসিংহের ত্রিশালে বাসের ধাক্কায় নিহত তিনজনের একজন সালমান আজাদী। তিনি জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গীত বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী এবং ইসলামি সঙ্গীত শিল্পী ও প্রশিক্ষক। তার মৃত্যুতে ক্যাম্পাসের শিক্ষক-শিক্ষার্থী এবং স্বজন-শুভাকাঙ্ক্ষীদের মাঝে নেমে এসেছে শোকের ছায়া।

বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) দুপুর সোয়া ১২টার দিকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান সালমান আজাদী।

তিনি বগুড়া জেলার শেরপুর উপজেলার হাপানিয়া এলাকার মৃত কোরবান আলীর ছেলে। নিহত সালমান স্ত্রী ও এক শিশুপুত্রকে নিয়ে নগরীর মাসকান্দা এলাকায় থাকতেন।

জানা গেছে, ইসলামি সংঙ্গীত শিল্পী হিসেবে ময়মনসিংহে বেশ জনপ্রিয় ছিলেন সালমান আজাদী। ইসলামি সঙ্গীতের প্রসারে নিজেই প্রতিষ্ঠা করেছেন সালমান ইসলামি সঙ্গীত একাডেমি। প্রায় দুই বছর ধরে এই প্রতিষ্ঠানে শিশুদের ইসলামি গান শেখাতেন। এছাড়াও ত্রিশালে কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের ইসলামি সঙ্গীতের প্রশিক্ষক ছিলেন তিনি।

উদীয়মান এ ইসলাম সঙ্গীত শিল্পীর মৃত্যুতে শোকাভিভূত পরিবার, আত্নীয়-স্বজন, ক্যাম্পাসের সহপাঠী-শিক্ষার্থী, ইসলামি সংস্কৃতি প্রেমিসহ শুভাকাঙ্ক্ষীরা। শতশত মানুষের ফেসবুক স্ট্যাটাসে যেন শোক বইয়ে পরিণত হয়েছে সানমানের ফেসবুক টাইমলাইন।

আব্দুর রহিম ভূঁইয়া নামে একজন লিখেছেন, কিছু মৃত্যুর সংবাদ মানুষকে ভীষণ বেদনা দেয়, ভীষণ কষ্ট দেয়। আর এই মৃত্যু যদি অকালে হয় বা আকস্মিক হয় তার শোক কাটিয়ে উঠা মোটেও সহজ না। সালমান আজাদী ইসলামিক শিল্প একাডেমির শিক্ষক ও স্বপ্নদ্রষ্টা ছিলেন। তিনি বাচ্চাদের নিয়ে অনেক স্বপ্ন দেখতেন। বাচ্চাদের সুস্থ ধারার ইসলামিক সাংস্কৃতিক চর্চার ব্যাপারে তার অনেক পরিকল্পনা ছিল।

হানজালা রমজান মুন্না নামে আরেকজন লিখেছেন, প্রিয় হাসিমাখা মুখ ও সুন্দর করে কথা উপস্থাপন ছিল যার নৈমিত্তিক অভ্যাস। ইসলামি সংস্কৃতি ছড়িয়ে দেয়ায় পেছনে ময়মনসিংহ শহরে যাদের অবদান, তাদেরই একজন ছিলেন। মনের মধ্যে ছিল ইসলামের জন্য তীব্র ভালবাসা। ভাইয়ের ভুল ত্রুটিগুলো ক্ষমা করে দিয়ে জান্নাতের উঁচু মাক্বাম দান করুন।

স্বামীর শোকে বাকরুদ্ধ স্ত্রী খাদিজা খাতুন জানান, সালমান নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গীত বিভাগে মাস্টার্সে অধ্যয়নরত ছিলেন। বৃহস্পতিবার ক্লাস করতেই ক্যাম্পাসের উদ্দেশ্যে ত্রিশাল যাচ্ছিলেন তিনি।

এদিকে সালমান আজাদীর অকাল মৃত্যুতে গভীর শোক জানিয়েছে নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় পরিবার। এক শোকবার্তায় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. সৌমিত্র শেখর বলেন, অত্যন্ত দুঃখের সঙ্গে জানাচ্ছি, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সংগীত বিভাগের ২০১৭-'১৮ শিক্ষাবর্ষের স্নাতকের শিক্ষার্থী এবং বর্তমানে স্নাতকোত্তরে ২০২১-'২২ সেশনে অধ্যয়নরত মো. সালমান আজাদী (২৫) বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে দশটায় ত্রিশালে এক মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় মারাত্মকভাবে আহত হয়ে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেছে। তাঁর এই অকাল মৃত্যুতে বিশ্ববিদ্যালয়-পরিবারের পক্ষে আমি গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করছি। সেইসঙ্গে সালমানের বিদেহী আত্মার চিরশান্তির জন্য প্রার্থনাসহ শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানাচ্ছি।

কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাঈন উদ্দিন জানান, বিনা ময়নাতদন্তের জন্য আবেদনের প্রেক্ষিতে মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

এর আগে, ত্রিশালে বাসের ধাক্কায় সিএনজিচালিত অটোরিকশার তিন যাত্রী নিহত হয়। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও ৪ জন। বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে উপজেলার ত্রিশাল বাজারের সাইফুল কমিশনারের বাসার সামনে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

নিহত অন্য দুইজন হলেন, উপজেলার বৈলর ইউনিয়নের রুদ্রগ্রামের এনামুল হকের মেয়ে রুবাইরা তাজনিম (২) ও চিকনা মনোহর এলাকার মৃত আব্দুস সামাদের ছেলে শরিফুল ইসলাম (৩৪)।

;

মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম বীরাঙ্গনাদের সম্মাননা দাবি



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, নরসিংদী
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধ বাংলাদেশের বহু যুবক ও ছাত্র জনতার আত্মহুতির অবদান। এই যুদ্ধে নারীদের অবদানও কোন অংশে কম নয়। এ যুদ্ধে অসংখ্য নারী সরাসরি অংশগ্রহণের পাশাপাশি ইজ্জতও দিতে হয়েছে। তাদের মধ্যে একজন নরসিংদীর পলাশ উপজেলার বেদনা দত্ত। বেদনা দত্তের মতো বীরাঙ্গনাদের স্মরণীয় করে রাখতে বীরাঙ্গনা স্মৃতিসৌধ বা রাস্তা ও প্রতিষ্ঠানের নামকরণের দাবি মুক্তিযোদ্ধাসহ স্থানীয়দের।

নরসিংদীর পলাশ উপজেলার বড়ি-বাড়ির বেদনা দত্ত স্বাধীনতা সংগ্রামের পূর্বেই স্বামী মারা যাওয়ায় অবুঝ তিন শিশুকে নিয়ে অনেক দুঃখ কষ্টে দিন পার করছিলেন। ঠিক সেই সময়ে মুক্তিযোদ্ধাদের রান্না করে খাওয়ানোসহ তাদের নানাভাবে সহয়তা করতেন বেদনা দত্ত। আর এমন খবর পেয়ে রাজাকার সদস্যরা বেদনাকে জোরপূর্বক ধরে নিয়ে পাকিস্তানি হায়েনাদের হাতে তুলে দেয়। বাড়ির পাশে রেল ব্রিজের নিচে পাকিস্তানিদের ক্যাম্পে ৪ দিনে নির্যাতন শেষে মৃত ভেবে পাশের জঙ্গলে ফেলে দেয় বেদনাকে।

পরে সেখান থেকে দুইদিন পর প্রাণ ফিরে পেলেও ইজ্জত আর সন্তানদের জীবন রক্ষায় এলাকা ছেড়ে নিজেকে আড়াল করে রাখেন তিনি। দীর্ঘদিন পর বাড়ি ফিরে আসলেও জীবন চলে অনাহারে অর্ধাহারে। এভাবেই পার করতে হয়েছে জীবনের প্রায় অর্ধশতাব্দি। অবশেষে এই ঘটনা নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়। সংবাদ প্রকাশের পর প্রশাসনের নজরে আসলে তার কাগজপত্র যাচাই বাছাই শেষে তাকে বীরাঙ্গনা হিসেবে নথিভুক্ত করেন এবং ভাতার আওতায় আনেন। সেই সাথে মুজিব বর্ষের উপহার হিসেবে তার জন্য তৈরি করা হয় বীর নিবাস। এখন এলাকাবাসীর দাবি বেদনা দত্তের অবর্তমানে পরবর্তী প্রজন্মের জন্য স্মৃতিসৌধ নির্মাণের। অথবা তার নামে স্থানীয় কোন রাস্তা বা প্রতিষ্ঠানের নামকরণের দাবি মুক্তিযুদ্ধাসহ স্থানীয় বাসিন্দাদের।

স্থানীয় জিনারদী ইউনিয়ন মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা সুলতান উদ্দিন পাঠান বলেন, আমরা জানতামই না আমাদের এলাকায় একজন বীরাঙ্গনা রয়েছে। সরকার যখন বেদনা দত্তকে একটি বীর নিবাস তৈরি করে দেয় তখনই জানতে পারি এই এলাকায় একজন বীরাঙ্গনা রয়েছেন। স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় নির্মম নির্যাতনের শিকার এই নারী হয়তো একদিন থাকবেনা। কিন্তু তাকে যেনো পরবর্তী প্রজন্ম মনে রাখে এবং স্মরণ করে সেজন্য তার নামে একটি সড়কের নামকরণ বা স্মৃতিসৌধ নির্মাণের দাবি জানাই।

নরসিংদী জেলা প্রশাসক ড. বদিউল আলম জানান, স্বাধীনতা যুদ্ধে নারী মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে বেদনা দত্তের মতো আরও যারা বীরাঙ্গনা রয়েছেন তাদের অসামান্য অবদান রয়েছে। নরসিংদীর নারী মুক্তিযোদ্ধাদের স্মৃতি রক্ষার্থে কয়েকটি আবেদন জমা পড়েছে যা প্রক্রিয়া দিন রয়েছে। অচিরেই এ বিষয়ে কাজ শুরু হবে বলে জানান তিনি।

;

ডিজিটাল হুন্ডিতে ৪০০ কোটি টাকা পাচার, নিয়ন্ত্রণ দুবাই বসে



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

মোবাইল ব্যাংকিং সার্ভিস (এমএফএস) ব্যবহার করে ডিজিটাল হুন্ডির মাধ্যমে বিদেশে প্রায় ৪০০ কোটি টাকা পাচারের অভিযোগে ৫ ব্যক্তিকে আটক করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।

বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) বিকেলে সিআইডি সদর দফতরে এক সংবাদ সম্মেলনে সিআইডি প্রধান অতিরিক্ত আইজিপি মোহাম্মদ আলী মিয়া এ বিষয়টি জানান।

গ্রেফতারকৃতরা হলেন- তাসমিয়া অ্যাসোসিয়েটসের মালিক নাসিম আহমেদ (৬২), এজেন্ট সিমের টেরিটোরি সেলস ম্যানেজার ফজলে রাব্বি সুমন (৩২), মো. কামরুজ্জামান (৩৩), জেট রোবোটিক অ্যাপসের বাংলাদেশের প্রতিনিধি জহির উদ্দিন (৩৭) ও খায়রুল ইসলাম ওরফে পিয়াস (৩৪)।

অতিরিক্ত আইজিপি মোহাম্মদ আলী মিয়া বলেন, মোবাইল ব্যাংকিং সার্ভিস ব্যবহার করে ডিজিটাল হুন্ডির মাধ্যমে বিদেশে প্রায় ৪০০ কোটি টাকা পাচার করেছে একটি চক্র। অভিযান চালিয়ে এ চক্রের পাঁচ সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়।

তিনি জানান, গত কয়েক মাসে জেট রোবোটিক অ্যাপের মাধ্যমে ৪০০ কোটি টাকা অবৈধভাবে এসেছে বাংলাদেশে। ইন্টেলিজেন্সের মাধ্যমে অ্যাপটির সন্ধান পায় পুলিশ।

তিনি আরও জানান, চট্টগ্রাম বেসড ডিস্ট্রিবিউশন হাউজ থেকে এ চক্রটির টাকা লেনদেন হতো। বুধবার রাতে ঢাকা ও চট্টগ্রামে পৃথক অভিযান চালিয়ে চক্রের পাঁচজনকে আটক করা হয়।

তিনি জানান, গ্রেফতারের সময় তাদের কাছ থেকে নগদ ২৮ লাখ ৫১ হাজার টাকা জব্দ করা হয়। তারা বিকাশের এজেন্ট সিম ভাড়া নিয়ে সেগুলোর মাধ্যমে তৃণমূল পর্যায়ে টাকা পৌঁছে দিতো বলে জানান তিনি।

সিআইডি প্রধান জানান, এ চক্রের হোতা মামুন দুবাইতে থাকেন। তিনি এখানকার এজেন্ট সিম ব্যবহার করছেন। দুবাই থেকে পাঠানো নির্দিষ্ট লিংক ধরে ৪৮টা সিমের বাইরে পাচারকাজে ব্যবহৃত এই অ্যাপটি কাজ করতে পারে না। সাতজন শুধু এই অ্যাপে ঢুকতে পারবে।

এটা হুন্ডি ব্যবসার আধুনিক রূপ উল্লেখ করে তিনি বলেন, বাংলাদেশে রেমিটেন্স আসা ব্লক করে দিয়ে এই অ্যাপের মাধ্যমে দেশে টাকা সার্কুলেট করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে এরকম আরও ৫-৭টি অর্গানাইজেশন পেয়েছেন যারা এভাবে কাজ করছে।

তিনি বলেন, গত তিন মাসে ৪০০ কোটি টাকা বাংলাদেশে আসতে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেছে জেট রোবোটিক অ্যাপসের মাধ্যমে। অভিনব কৌশলে এ অ্যাপস ব্যবহারকারী পাঁচজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে এবং তাদের ডিভাইসগুলো জব্দ করা হয়েছে।

তিনি জানান, চট্টগ্রামের বিকাশ ডিস্ট্রিবিউশন হাউজ তাসমিয়া অ্যাসোসিয়েটস। প্রতিষ্ঠানটির কাছে রয়েছে এক হাজার ১০০ বিকাশ এজেন্ট সিম। এসব এজেন্ট সিমের যাদের পারফর্মেন্স ভালো না, সেসব এজেন্টের সিমগুলো ডিএসওরা নিয়ে জেট রোবোটিক অ্যাপস ব্যবহারকারীদের সরবরাহ করে।

;

মৌলভীবাজারে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে মৃত্যুর ঘটনায় দায়ীদের দ্রুত শাস্তি দাবি



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

মৌলভীবাজারে বিদ্যুতায়িত হয়ে একই পরিবারের ৬ জনের মৃত্যুর ঘটনা খুবই মর্মান্তিক ও হৃদয় বিদারক। এই ঘটনায় মূল দায়ী ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে জবাবদিহিতার আওতায় আনতে হবে বলে জানিয়েছেন জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান ড. কামাল উদ্দিন আহমেদ।

বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) রাজধানীর একটি হোটেলে 'বিজনেস ডাইজেস্ট' পরিচালিত 'মানবাধিকার ও ভোক্তা অধিকার রক্ষায় গণমাধ্যমের ভূমিকা' শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এই মন্তব্য করেন।

মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান বলেন, মৌলভীবাজারের ঘটনা তদন্তপূর্বক দায়ীদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ এবং এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। আমরা একটি পরিবারের জন্য কিছু করতে পারলাম না, কিন্তু এমন শত শত পরিবারের জন্য আমাদের করণীয় রয়েছে।

তিনি আরও বলেন, অধিকার বিষয়টি প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে গণমাধ্যমের নিত্য চর্চার বিষয়। গণমাধ্যম সকল অনিয়মকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে পারে, মানুষকে তাদের অধিকার ও কর্তব্য সম্পর্কে সচেতন করে এবং অধিকার প্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদের প্রেক্ষিতেই আমরা সংস্কারমূলক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করতে পারি।

ড. কামাল উদ্দিন আহমেদ জনগণের মাঝে সংবিধান, আইন ও অধিকার সংক্রান্ত প্রয়োজনীয় জ্ঞানের প্রসারের জন্য সার্বিক উদ্যোগ গ্রহণ করতে গণমাধ্যমকর্মীদের আহবান জানান।

আলোচনার এক পর্যায়ে তিনি অগ্নিকাণ্ডের পুনরাবৃত্তি নিয়ে বলেন, বিগত বছরগুলোতে সংঘটিত নিমতলি, নিউমার্কেট ও বঙ্গবাজারে বড় বড় অগ্নিকাণ্ড ও বিস্ফোরণের ঘটনাগুলো থেকে আমরা যথাযথ শিক্ষা গ্রহণ করিনি। আমরা কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করলে অগ্নিকাণ্ডের পুনরাবৃত্তি রোধ করা সম্ভব হতো।

;