খুলনায় উপজেলা নির্বাচন: প্রচারণায় ব্যস্ত সম্ভাব্য প্রার্থীরা



মানজারুল ইসলাম, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, খুলনা, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

একাদশ সংসদ নির্বাচনের রেশ কাটতে না কাটতেই খুলনার ৯টি উপজেলায় শুরু হয়েছে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রস্তুতি। প্রকৃতিতে বইছে শীতের হাওয়া। তবে শীত-কুয়াশা কাটিয়ে খুলনায় শুরু হয়েছে নির্বাচনী হাওয়া। উপজেলা নির্বাচনের মাঠে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী প্রার্থীরা ব্যস্ত সময় পার করছেন। অপরদিকে বিরোধী শিবির বিএনপি নির্বাচনী মাঠেই নেই। এদিকে উপজেলা নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে না বলেই ঘোষণা দিয়েছে কেন্দ্রীয় বিএনপি।

নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, বিভাগ ভিত্তিক ৫ ধাপে এবারের পঞ্চম উপজেলা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। উপজেলা নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হবে আগামী ৩ ফেব্রুয়ারি ।

এছাড়া নির্বাচন কমিশনের তথ্য মতে, আগামী ১৮ মার্চ দ্বিতীয় ধাপে উপজেলা নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য খুলনা জেলার ৯টি উপজেলা- দিঘলিয়া, কয়রা, ডুমুরিয়া, পাইকগাছা, রূপসা, তেরখাদা, ফুলতলা, বটিয়াঘাটা ও দাকোপ উপজেলাকে চিহ্নিত করা হয়েছে। ২য় ধাপে একই সাথে উপজেলা নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য খুলনা বিভাগের অন্যান্য জেলা- কুষ্টিয়া জেলার ভেড়ামারা, কুমারখালী, মিরপুর, খোকসা ও দৌলতপুর। ঝিনাইদহ জেলার সদর, শৈলকুপা, হরিণাকুন্ডু ও কালীগঞ্জ। যশোর জেলার শার্শা, ঝিকরগাছা, চৌগাছা, সদর, বাঘারপাড়া, অভয়নগর, মনিরামপুর ও কেশবপুর। মেহেরপুর জেলার সদর, মুজিবনগর ও গাংনীসহ মোট ১২৫টি উপজেলাকে চিহ্নিত করা হয়েছে।

এবারই প্রথমবারের মতো আনুষ্ঠানিকভাবে দলীয় প্রতীকে হবে উপজেলা নির্বাচন। যে কারণে উপজেলা নির্বাচনের ভোট নিয়ে বাড়তি আগ্রহ ক্ষমতাসীন দলে। এরই মধ্যে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন পেতে কেন্দ্রীয় প্রভাবশালী নেতা ও স্থানীয় নব-নির্বাচিত এমপিদের কাছাকাছি ভিড়তে শুরু করেছেন সম্ভাব্য প্রার্থীরা। সংসদ নির্বাচনে মনোনয়ন বঞ্চিতরা চাচ্ছেন উপজেলায় প্রার্থী হতে। মনোনয়নের দৌড়ে থাকা নেতারা এরই মধ্যে এলাকায় ব্যানার-ফেস্টুন টাঙিয়ে সবার কাছে দোয়া চাইছেন। পুরানো প্রার্থীদের সঙ্গে এবার চারদিকে নতুন মুখের ছড়াছড়ি। প্রতিটি উপজেলায় আওয়ামী লীগের ৪-৬ জন করে সম্ভাব্য প্রার্থী সরব রয়েছেন।

অপরদিকে জাতীয় নির্বাচনে হেরে যাওয়া বিএনপি এই সরকারের অধীনে আর কোন নির্বাচনে যাবে না বলে আগেই ঘোষণা দিয়েছে।। প্রথমবারের মতো দলীয় ভিত্তিতে নির্বাচন হলেও বিএনপি এবং বিএনপি নেতৃত্বাধীন জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট উপজেলা নির্বাচনে অংশ নেবে না। এজন্য বিএনপির কোন প্রার্থী মাঠে নেই।

এছাড়া সংসদের বিরোধী দল জাতীয় পার্টি উপজেলা নির্বাচনে অংশ নেবার ঘোষণা দিলেও খুলনার উপজেলার নির্বাচনী মাঠে তাদের কোনো কার্যক্রম নেই। সদ্য শেষ হওয়া একাদশ সংসদ নির্বাচনেও খুলনার ৩টি আসনে দলটির প্রার্থী থাকলেও প্রচার প্রচারণা ও ভোটযুদ্ধে মাঠে দেখা যায়নি তাদের।

খুলনার ৯টি উপজেলার চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান এ তিন পদের সম্ভাব্য প্রার্থীরা ইতিমধ্যেই গণসংযোগ শুরু করছেন।

এরমধ্যে রূপসা উপজেলায় আ’লীগের ১০জন চেয়ারম্যান পদে মনোনয়ন প্রত্যাশীর নাম শোনা যাচ্ছে। তারা হলেন, জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক এড. সুজিৎ অধিকারী, বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান কামাল উদ্দিন বাদশা, নগর ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি শফিকুর রহমান পলাশ, বেলফুলিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক শেখ অলিউর রহমান, জেলা কৃষকলীগের সভাপতি ও আইচগাতী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান অধ্যাপক আশরাফুজ্জামান বাবুল, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান শেখ আলী আকবার, মালিক সরোয়ার উদ্দিন, নৈহাটি ইউপি সাবেক চেয়ারম্যান মোস্তফা কামাল মিনা, প্রভাবশালী পরিবারের সদস্য সরদার আবুল কাসেম ডাবলু ও সরদার ফেরদৌস আহমেদ।

দিঘলিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান পদে জাতীয় পার্টির ডা. সৈয়দ আবুল কাশেমের নাম শোনা যাচ্ছে। তিনি জেলা জাতীয় যুব সংহতির জেলা সভাপতি ও জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। এ উপজেলায় ক্ষমতাসীন দলের একাধিক সম্ভাব্য প্রার্থীর নাম শোনা যাচ্ছে। এভাবে অন্যান্য উপজেলায়ও ক্ষমতাসীন দলের একাধিক প্রার্থীর নাম শোনা যাচ্ছে।

বটিয়াঘাটায় ক্ষমতাসীন দলের বর্তমান চেয়ারম্যান মো. আশরাফুল আলম খান, এড. নিতাই চন্দ্র রায়, নব কুমার চক্রবর্তী, মনোরঞ্জন মণ্ডল, মোশারেফ হোসেন মুসা, শেখ হাদিউজ্জামান, মানস পাল, প্রফুল্ল কুমার রায় ও শ্রীমন্ত অধিকারী রাহুল এবং বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) প্রার্থী সমিরণ গোলদার। ভাইস চেয়ারম্যান পদে সম্ভাব্য প্রার্থী আওয়ামী লীগ মনোনীত মো. ইকরাম শেখ এবং বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান নিতাই গাইনের নাম শোনা যাচ্ছে।

দাকোপে ক্ষমতাসীন দলের বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান আলহাজ্ব শেখ আবুল হোসেনসহ বেশ কয়েক জনের নাম শোনা যাচ্ছে। এছাড়াও প্রার্থী হতে পারেন বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির এড এম এম রুহুল আমিন।

কয়রায় বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান আবুল খায়ের মো. তমিজ উদ্দিন, ক্ষমতাসীন দল সমর্থিত মো. মহসিন রেজা, কয়রা সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব এস এম মো. শফিকুল ইসলাম, আব্দুল্লাহ আল মাহমুদের নাম শোনা যাচ্ছে।

ডুমুরিয়ায় ক্ষমতাসীন দল সমর্থিত গুটুদিয়া ইউপি চেয়ারম্যান মোস্তফা সারোয়ার, কাজী আলমগীর, সুরঞ্জন বৈদ্য, হুমায়ুন কবির বুলু, মোস্তফা কামাল খোকন, সেলিম আক্তার স্বপন, ও শাহনেওয়াজ জোয়ার্দ্দার। ভাইস চেয়ারম্যান পদে সিরাজুল ইসলাম ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান শিরিনা দৌলতের নাম শোনা যাচ্ছে।

পাইকগাছায় বর্তমান চেয়ারম্যান মুক্তিযোদ্ধা এড. বাবর আলী ও বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির এড. প্রশান্ত মণ্ডল ও গুলজার রহমানের নাম শোনা যাচ্ছে।

ফুলতলায় ক্ষমতাসীন দলের বর্তমান চেয়ারম্যান আলহাজ্ব মো. আকরাম হোসেনসহ একাধিক প্রার্থীর নাম শোনা যাচ্ছে।

সাধারণ ভোটারদের সাথে কথা বলে জানা যায়, মনোনয়ন প্রত্যাশীদের মধ্যে অনেকেই সব সময় এলাকায় যাতায়াত করেন, সাধারণ ভোটারদের খোঁজ খবর নেন। আবার অনেকের নামই শোনেনি এমন প্রার্থীও আছে। এছাড়াও কয়েকজন প্রার্থী জনপ্রতিনিধি হিসেবে দায়িত্বে থাকলেও ৫বছরে তাদের একবার এলাকায় দেখা যায়নি। এবারের নির্বাচনে যোগ্য প্রার্থীরা অংশ নেবে বলে আশা করছেন তারা।

উল্লেখ্য, খুলনা জেলায় ১৮লাখ ৯৮৯জন ভোটার রয়েছেন। এর মধ্যে পুরুষ ৯লাখ ২হাজার ৯৫০জন ও নারী রয়েছেন ৮লাখ ৯৮হাজার ৩৯জন। ভোট কেন্দ্র ৭৮৬টি ও কক্ষ (বুথ) ৩হাজার ৮৫৭টি।

   

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে মানবাধিকার উইং চালুর পরামর্শ



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে মানবাধিকার সম্পর্কিত একটি নতুন শাখা চালু করার পরামর্শ দিয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি।

বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) জাতীয় সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত সংসদীয় কমিটির বৈঠকে এই পরামর্শ দেওয়া হয়। বৈঠক শেষে সংসদ সচিবালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

বৈঠকে ২৫ মার্চকে আন্তর্জাতিক গণহত্যা দিবস হিসেবে স্বীকৃতি আদায়ের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সুপারিশ করা হয়। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সদস্যদের নিয়ে রোহিঙ্গা ক্যাম্প কুতুপালং এবং ভাসানচর পরিদর্শনের জন্য বৈঠকে প্রস্তাব করা হয়।

কমিটির সভাপতি এ কে আব্দুল মোমেনের সভাপতিত্বে বৈঠকে কমিটির সদস্য ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ, শাহরিয়ার আলম, নাহিম রাজ্জাক, নিজাম উদ্দিন জলিল, নুরুল ইসলাম নাহিদ, হাবিবুর রহমান, সাইমুম সারওয়ার, জারা জাবীন মাহবুব অংশ নেন।

 

;

ঢাকাসহ ৮ জেলায় ৬০ কিমি বেগে ঝড়ের শঙ্কা



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

ঢাকাসহ দেশের আট জেলার ওপর দিয়ে ৬০ কিলোমিটার বেগে ঝড়ের আশঙ্কা করছে আবহাওয়া অফিস। সেইসঙ্গে বজ্রসহ বৃষ্টি হওয়ার সম্ভবনা রয়েছে বলা হচ্ছে।

শুক্রবার (২৯ মার্চ) সকাল ৯টা পর্যন্ত দেশের অভ্যন্তরীণ নদীবন্দরগুলোর জন্য দেওয়া এক পূর্বাভাসে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।

আবহাওয়াবিদ মো. শাহীনুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, খুলনা, বরিশাল, পটুয়াখালী, নোয়াখালী, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম, ঢাকা এবং সিলেট জেলার ওপর দিয়ে পশ্চিম অথবা উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে ঘণ্টায় ৪৫ থেকে ৬০ কিলোমিটার বেগে অস্থায়ীভাবে দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। এ সময় বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। তাই এসব এলাকার নদীবন্দরগুলোকে ১ নম্বর সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।

এদিকে, আবহাওয়া অফিসের অপর এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, পশ্চিমা লঘুচাপের বর্ধিতাংশ পশ্চিমবঙ্গ ও তার কাছাকাছি এলাকায় অবস্থান করছে। মৌসুমের স্বাভাবিক লঘুচাপ দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে।

এ অবস্থায় শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ঢাকা, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের দুয়েক জায়গায় অস্থায়ী দমকা বা ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি বা বজ্রবৃষ্টি হতে পারে।

;

ইসলামি সংগীত শিল্পী সালমানের মৃত্যুতে শোকের ছায়া



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ময়মনসিংহ
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

ময়মনসিংহের ত্রিশালে বাসের ধাক্কায় নিহত তিনজনের একজন সালমান আজাদী। তিনি জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গীত বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী এবং ইসলামি সঙ্গীত শিল্পী ও প্রশিক্ষক। তার মৃত্যুতে ক্যাম্পাসের শিক্ষক-শিক্ষার্থী এবং স্বজন-শুভাকাঙ্ক্ষীদের মাঝে নেমে এসেছে শোকের ছায়া।

বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) দুপুর সোয়া ১২টার দিকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান সালমান আজাদী।

তিনি বগুড়া জেলার শেরপুর উপজেলার হাপানিয়া এলাকার মৃত কোরবান আলীর ছেলে। নিহত সালমান স্ত্রী ও এক শিশুপুত্রকে নিয়ে নগরীর মাসকান্দা এলাকায় থাকতেন।

জানা গেছে, ইসলামি সংঙ্গীত শিল্পী হিসেবে ময়মনসিংহে বেশ জনপ্রিয় ছিলেন সালমান আজাদী। ইসলামি সঙ্গীতের প্রসারে নিজেই প্রতিষ্ঠা করেছেন সালমান ইসলামি সঙ্গীত একাডেমি। প্রায় দুই বছর ধরে এই প্রতিষ্ঠানে শিশুদের ইসলামি গান শেখাতেন। এছাড়াও ত্রিশালে কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের ইসলামি সঙ্গীতের প্রশিক্ষক ছিলেন তিনি।

উদীয়মান এ ইসলাম সঙ্গীত শিল্পীর মৃত্যুতে শোকাভিভূত পরিবার, আত্নীয়-স্বজন, ক্যাম্পাসের সহপাঠী-শিক্ষার্থী, ইসলামি সংস্কৃতি প্রেমিসহ শুভাকাঙ্ক্ষীরা। শতশত মানুষের ফেসবুক স্ট্যাটাসে যেন শোক বইয়ে পরিণত হয়েছে সানমানের ফেসবুক টাইমলাইন।

আব্দুর রহিম ভূঁইয়া নামে একজন লিখেছেন, কিছু মৃত্যুর সংবাদ মানুষকে ভীষণ বেদনা দেয়, ভীষণ কষ্ট দেয়। আর এই মৃত্যু যদি অকালে হয় বা আকস্মিক হয় তার শোক কাটিয়ে উঠা মোটেও সহজ না। সালমান আজাদী ইসলামিক শিল্প একাডেমির শিক্ষক ও স্বপ্নদ্রষ্টা ছিলেন। তিনি বাচ্চাদের নিয়ে অনেক স্বপ্ন দেখতেন। বাচ্চাদের সুস্থ ধারার ইসলামিক সাংস্কৃতিক চর্চার ব্যাপারে তার অনেক পরিকল্পনা ছিল।

হানজালা রমজান মুন্না নামে আরেকজন লিখেছেন, প্রিয় হাসিমাখা মুখ ও সুন্দর করে কথা উপস্থাপন ছিল যার নৈমিত্তিক অভ্যাস। ইসলামি সংস্কৃতি ছড়িয়ে দেয়ায় পেছনে ময়মনসিংহ শহরে যাদের অবদান, তাদেরই একজন ছিলেন। মনের মধ্যে ছিল ইসলামের জন্য তীব্র ভালবাসা। ভাইয়ের ভুল ত্রুটিগুলো ক্ষমা করে দিয়ে জান্নাতের উঁচু মাক্বাম দান করুন।

স্বামীর শোকে বাকরুদ্ধ স্ত্রী খাদিজা খাতুন জানান, সালমান নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গীত বিভাগে মাস্টার্সে অধ্যয়নরত ছিলেন। বৃহস্পতিবার ক্লাস করতেই ক্যাম্পাসের উদ্দেশ্যে ত্রিশাল যাচ্ছিলেন তিনি।

এদিকে সালমান আজাদীর অকাল মৃত্যুতে গভীর শোক জানিয়েছে নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় পরিবার। এক শোকবার্তায় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. সৌমিত্র শেখর বলেন, অত্যন্ত দুঃখের সঙ্গে জানাচ্ছি, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সংগীত বিভাগের ২০১৭-'১৮ শিক্ষাবর্ষের স্নাতকের শিক্ষার্থী এবং বর্তমানে স্নাতকোত্তরে ২০২১-'২২ সেশনে অধ্যয়নরত মো. সালমান আজাদী (২৫) বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে দশটায় ত্রিশালে এক মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় মারাত্মকভাবে আহত হয়ে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেছে। তাঁর এই অকাল মৃত্যুতে বিশ্ববিদ্যালয়-পরিবারের পক্ষে আমি গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করছি। সেইসঙ্গে সালমানের বিদেহী আত্মার চিরশান্তির জন্য প্রার্থনাসহ শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানাচ্ছি।

কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাঈন উদ্দিন জানান, বিনা ময়নাতদন্তের জন্য আবেদনের প্রেক্ষিতে মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

এর আগে, ত্রিশালে বাসের ধাক্কায় সিএনজিচালিত অটোরিকশার তিন যাত্রী নিহত হয়। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও ৪ জন। বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে উপজেলার ত্রিশাল বাজারের সাইফুল কমিশনারের বাসার সামনে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

নিহত অন্য দুইজন হলেন, উপজেলার বৈলর ইউনিয়নের রুদ্রগ্রামের এনামুল হকের মেয়ে রুবাইরা তাজনিম (২) ও চিকনা মনোহর এলাকার মৃত আব্দুস সামাদের ছেলে শরিফুল ইসলাম (৩৪)।

;

মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম বীরাঙ্গনাদের সম্মাননা দাবি



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, নরসিংদী
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধ বাংলাদেশের বহু যুবক ও ছাত্র জনতার আত্মহুতির অবদান। এই যুদ্ধে নারীদের অবদানও কোন অংশে কম নয়। এ যুদ্ধে অসংখ্য নারী সরাসরি অংশগ্রহণের পাশাপাশি ইজ্জতও দিতে হয়েছে। তাদের মধ্যে একজন নরসিংদীর পলাশ উপজেলার বেদনা দত্ত। বেদনা দত্তের মতো বীরাঙ্গনাদের স্মরণীয় করে রাখতে বীরাঙ্গনা স্মৃতিসৌধ বা রাস্তা ও প্রতিষ্ঠানের নামকরণের দাবি মুক্তিযোদ্ধাসহ স্থানীয়দের।

নরসিংদীর পলাশ উপজেলার বড়ি-বাড়ির বেদনা দত্ত স্বাধীনতা সংগ্রামের পূর্বেই স্বামী মারা যাওয়ায় অবুঝ তিন শিশুকে নিয়ে অনেক দুঃখ কষ্টে দিন পার করছিলেন। ঠিক সেই সময়ে মুক্তিযোদ্ধাদের রান্না করে খাওয়ানোসহ তাদের নানাভাবে সহয়তা করতেন বেদনা দত্ত। আর এমন খবর পেয়ে রাজাকার সদস্যরা বেদনাকে জোরপূর্বক ধরে নিয়ে পাকিস্তানি হায়েনাদের হাতে তুলে দেয়। বাড়ির পাশে রেল ব্রিজের নিচে পাকিস্তানিদের ক্যাম্পে ৪ দিনে নির্যাতন শেষে মৃত ভেবে পাশের জঙ্গলে ফেলে দেয় বেদনাকে।

পরে সেখান থেকে দুইদিন পর প্রাণ ফিরে পেলেও ইজ্জত আর সন্তানদের জীবন রক্ষায় এলাকা ছেড়ে নিজেকে আড়াল করে রাখেন তিনি। দীর্ঘদিন পর বাড়ি ফিরে আসলেও জীবন চলে অনাহারে অর্ধাহারে। এভাবেই পার করতে হয়েছে জীবনের প্রায় অর্ধশতাব্দি। অবশেষে এই ঘটনা নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়। সংবাদ প্রকাশের পর প্রশাসনের নজরে আসলে তার কাগজপত্র যাচাই বাছাই শেষে তাকে বীরাঙ্গনা হিসেবে নথিভুক্ত করেন এবং ভাতার আওতায় আনেন। সেই সাথে মুজিব বর্ষের উপহার হিসেবে তার জন্য তৈরি করা হয় বীর নিবাস। এখন এলাকাবাসীর দাবি বেদনা দত্তের অবর্তমানে পরবর্তী প্রজন্মের জন্য স্মৃতিসৌধ নির্মাণের। অথবা তার নামে স্থানীয় কোন রাস্তা বা প্রতিষ্ঠানের নামকরণের দাবি মুক্তিযুদ্ধাসহ স্থানীয় বাসিন্দাদের।

স্থানীয় জিনারদী ইউনিয়ন মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা সুলতান উদ্দিন পাঠান বলেন, আমরা জানতামই না আমাদের এলাকায় একজন বীরাঙ্গনা রয়েছে। সরকার যখন বেদনা দত্তকে একটি বীর নিবাস তৈরি করে দেয় তখনই জানতে পারি এই এলাকায় একজন বীরাঙ্গনা রয়েছেন। স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় নির্মম নির্যাতনের শিকার এই নারী হয়তো একদিন থাকবেনা। কিন্তু তাকে যেনো পরবর্তী প্রজন্ম মনে রাখে এবং স্মরণ করে সেজন্য তার নামে একটি সড়কের নামকরণ বা স্মৃতিসৌধ নির্মাণের দাবি জানাই।

নরসিংদী জেলা প্রশাসক ড. বদিউল আলম জানান, স্বাধীনতা যুদ্ধে নারী মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে বেদনা দত্তের মতো আরও যারা বীরাঙ্গনা রয়েছেন তাদের অসামান্য অবদান রয়েছে। নরসিংদীর নারী মুক্তিযোদ্ধাদের স্মৃতি রক্ষার্থে কয়েকটি আবেদন জমা পড়েছে যা প্রক্রিয়া দিন রয়েছে। অচিরেই এ বিষয়ে কাজ শুরু হবে বলে জানান তিনি।

;