অযত্ন-অবহেলায় ময়লার ভাগাড় রামচন্দ্রপুর খাল
কর্তৃপক্ষের অবহেলা আর অযত্নে ময়লার ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে শতবর্ষী রামচন্দ্রপুর খাল। ময়লা-আবর্জনার স্তূপ জমে খালটি হারিয়ে ফেলেছে তার স্বাভাবিক স্রোত। ফলে বদ্ধ পানিতে জন্ম নিচ্ছে মশা। আর খালের পচা পানির দুর্গন্ধে দুর্বিষহ হয়ে উঠছে জনজীবন।
এছাড়া খালের উভয় পাড়েই গড়ে উঠেছে বহুতল আবাসন ভবন। যার বর্জ্য পদার্থ সব ফেলা হচ্ছে খালটিতে। সবমিলিয়ে পরিস্থিতি মারাত্মক আকার ধারণ করছে।
রোববার (৩ ফেব্রুয়ারি) সকালে ৪ দশমিক ৮ কিলোমিটার খালের পুরো অংশ ঘুরে এসব চিত্র দেখা গেছে।
বিআইডব্লিউটি’র সূত্র মতে, রামচন্দ্রপুর খাল হিসেবে পরিচিত এই খালটি তুরাগ নদী থেকে উৎপন্ন হয়ে রামচন্দ্রপুর হয়ে মোহাম্মদপুর, রায়েরবাজার বধ্যভূমি হয়ে বুড়িগঙ্গায় পড়েছে। এছাড়া বাইক্কা খাল নামের আরেকটি খাল এর সঙ্গে সংযুক্ত। ফলে নগরীর জলাবদ্ধতাসহ দূষিত পানি অপসারণে খালটির ভূমিকা অনেক। কিন্তু কতৃপক্ষের অবহেলায় খালটি এখন নানা দূষনের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। সংস্কারের অভাবে অনেক জায়গায় খালের পাড় ভেঙে যাচ্ছে, তাতে বাড়ছে নিরাপত্তার ঝুঁকি।
স্থানীয় অধিবাসীরা বার্তা২৪.কমকে জানান, কয়েক বছর আগে একবার খালটি পরিষ্কারের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। তখন খালটির চেহারাই পাল্টে যায়। কিন্তু এরপর থকে প্রশাসনের আর কোনো উদ্যোগ নেই।
স্থানীয় বাসিন্দা আজমল খান বলেন, ‘এটা যে খাল তা এখন কে বলবে, এটা এখন একটা বড় ড্রেন, যেখানে সবাই ময়লা ফেলে।’
আরেক বাসিন্দা রোকনউদ্দিন বলেন, ‘এই খালের পাশ দিয়ে যেতে হলে নাক ধরে যেতে হয়। ছেলে-মেয়েদের স্কুলে যাওয়ার সময় অনেক কষ্ট হয়। আমাদের সহ্য হয়ে গেছে কিন্তু ওরা তো পারে না।’
খালের সংস্কার ও বর্জ্য অপসারণের বিষয়ে বার্তা২৪.কমের সঙ্গে কথা হয় ৩৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর তারিকুজ্জামান রাজিব। তিনি বলেন, ‘খালটি আমরা অনেকবার পরিষ্কার করেছি, কিন্তু কিছুদিন পর আবার অবস্থা যা তাই হয়ে যায়। আসলে আমরা আমাদের বেডরুমকে যেভাবে পরিষ্কার রাখতে পছন্দ করি, সেভাবে আমাদের শহরকে পরিষ্কার রাখি না, মূল সমস্যাটাই এইখানে। তাই শহরের মানুষকে সচেতন করার পাশাপাশি আইনের প্রয়োগও প্রয়োজন। তারপরও আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি কীভাবে মানুষকে সচেতন করা যায়। আর খুব শিগগিরই আমরা এ ব্যাপারে পদক্ষেপ নিব।’
খালের সার্বিক অবস্থা নিয়ে কথা হয় ঢাকা উওর সিটি করপোরেশনের প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপক এয়ার কমোডর আব্দুর রাজ্জাকের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘খালের বর্জ্য ব্যাস্থাপনা ও অপসারণ ঢাকা ওয়াসার কাজ। এখানে আমাদের কিছুই করার নেই।’
ঢাকা ওয়াসার এক সূত্র থেকে যানা যায়, ইতোমধ্যে ওয়াসা অনেক খালের সংস্কারের উদ্যোগ নিয়েছে, তার মধ্যে রামচন্দ্রেপুর খালও আছে।