এবারের ভিটামিন 'এ' ক্যাপসুলে সমস্যা নেই: স্বাস্থ্যমন্ত্রী
এবারের ভিটামিন 'এ' ক্যাপসুলে সমস্যা নেই বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক। তিনি বলেছেন, কয়েকদিন আগে ভিটামিন 'এ' ক্যাপসুলে কিছুটা ত্রুটি দেখা দেয়। আমরা শিশুদের জন্য কোনো ঝুঁকি নিতে চাইনি। ফলে সেই ক্যাপসুলগুলো আর ব্যবহার করিনি। তবে এবারের ক্যাপসুলে আর কোনো সমস্যা নেই।
বৃহস্পতিবার (০৭ ফেব্রুয়ারি) সচিবালয়ে ভিটামিন এ ক্যাপসুল খাওয়ানো উপলক্ষে আয়োজিত প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী জানান, সেই ঘটনায় আমরা একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছি। তারা একটি প্রতিবেদন জমা দিয়েছে, আমরা তা এখনো দেখিনি। তবে তাতে যারাই দোষী সাব্যস্ত হোক, তাদের শাস্তি পেতে হবে।
আগের ক্যাপসুলের সমস্যা সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ওই ভিটামিন ক্যাপসুল সাপ্লাইয়ে দেরি হওয়ায় এটা নিয়ে আদালতে মামলা হয়। মামলা নিষ্পত্তিতে প্রায় দেড় বছর লেগে যায়। তাতে এই ক্যাপসুল ড্যামেজ হয়ে যায়। তবে ক্যাপসুলের ভেতরে থাকা উপাদানের গুণগতমান ঠিক ছিল। কিন্তু বাড়তি সতর্কতার জন্য আমরা ঝুঁকি নিতে চাইনি। বলতে পারেন আমিই এই সিদ্ধান্ত দিয়েছিলাম।
মন্ত্রী বলেন, গতবারের সেই বিতর্ক না তুলে এবার যাতে দেশের সব শিশু ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল খেতে আসে সেজন্য আমরা গণমাধ্যমের সহযোগিতা চাই। এবার শুধু দেশি ল্যাবে পরীক্ষা নয় বরং আন্তর্জাতিক মানের ল্যাবেও পরীক্ষা করেছি।
তিনি জানান, ভিটামিন 'এ' খাওয়ানোর ফলে শিশু যে শুধুমাত্র রাতকানা রোগ থেকে রক্ষা পায়, তা নয়। এটি শিশুদের আরো বহুবিধ উপকার করে। যেমন: শিশুর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে, দৃষ্টিশক্তি ভালো রাখে, শিশুমৃত্যু হার কমায় , শিশুর স্বাভাবিকভাবে বেড়ে ওঠা নিশ্চিত করে, ডায়রিয়ার ব্যাপ্তি এবং হামের জটিলতা কমায়। স্বাস্থ্য পুষ্টি সমৃদ্ধ সোনার বাংলা গড়ার লক্ষ্যে স্বাস্থ্য সেবা ও পুষ্টি কার্যক্রমকে জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে আমরা নিরলস প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।
তিনি বলেন, আমাদের মনে রাখতে হবে, শিশুরা দেশের ভবিষ্যৎ। তাদের জন্য সুন্দর একটি বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয়ে বর্তমান সরকার কাজ করে যাচ্ছে। এই কার্যক্রমকে সফল করতে পারলে আগামী প্রজন্মের জন্য আমরা একটি অমিত সম্ভাবনাময় সুন্দর বাংলাদেশ রেখে যেতে পারবো।
মন্ত্রী বলেন, আমরা আর অপুষ্ট শিশু দেখতে চাই না। তেমনই চাই না অপুষ্টিজনিত রাতকানা রোগ কিংবা অন্ধত্ব। বছরে দুইবার ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল খাইয়ে আমরা অন্ধত্ব প্রতিরোধ করতে পারি, শিশুর দেহের স্বাভাবিক বৃদ্ধি নিশ্চিত করতে পারি, শিশুর মৃত্যুহার ২৪ শতাংশ কমিয়ে আনতে পারি।
জাহিদ মালেক বলেন, এই ক্যাপসুল ছয় থেকে ৫৯ মাস বয়সী শিশুদের খাওয়ানো হবে। স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ে বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি সংস্থা, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান, শিক্ষক ও সাংবাদিকসহ সকলের সার্বিক সহযোগিতায় দেশব্যাপী ১ লাখ ২০ হাজার কেন্দ্রের মাধ্যমে এই কার্যক্রম পরিচালিত হবে। লঞ্চঘাট, ফেরিঘাট, টোল প্লাজা, বিশেষ করে বঙ্গবন্ধু ব্রিজ, দাউদকান্দি, মেঘনা ব্রিজ, বিমানবন্দর, স্টেশন, খেয়াঘাট ইত্যাদি স্থানে অবস্থান করবে আমাদের টিম।
মন্ত্রী জানান, দুর্গম এলাকা হিসেবে চিহ্নিত ১২ জেলার ৪৬টি উপজেলায় ২৪০টি ইউনিয়নে ক্যাম্পেইন পরবর্তী চারদিন বাড়ি বাড়ি গিয়ে শিশুদের সার্চিং কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে। বাদ পড়া শিশুদের ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল খাওয়ানো হবে আগামী শনিবার (৯ ফেব্রুয়ারি) সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত।
ভিটামিন ‘এ’ ক্যাম্পেইন চলাকালীন কোনো কুচক্রীমহল যেন এ নিয়ে অপপ্রচার চালাতে না পারে সেজন্য সতর্ক থাকার আহবান জানান স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক।