বেনজীর আহমেদ
মিথ্যা ও কল্পনাপ্রসূত তথ্য দিয়ে সংবাদ প্রকাশ করা হয়েছে
দুর্নীতি ও অবৈধভাবে পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বেনজীর আহমেদ অঢেল সম্পদের মালিক বনে গেছেন বলে সম্প্রতি একটি গণমাধ্যমে দুই পর্বের সংবাদ প্রকাশ করে। প্রকাশিত ওই সংবাদের প্রতিবাদে শনিবার (২০ এপ্রিল) ‘আমার কিছু কথা’ শিরোনামে এক ভিডিও বার্তায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে বেনজীর আহমেদ বলেন, মিথ্যা ও কল্পনাপ্রসূত তথ্য দিয়ে সংবাদ প্রকাশ করা হয়েছে।
বেনজীর আহমেদের দাবি, কিছু তথ্য ফুলিয়ে ফাঁপিয়ে তিলকে তাল বানিয়ে উপস্থাপন করা হয়েছে।
তিনি বলেন, সম্প্রতি একটি পত্রিকায় আমার পরিবার ও আমার নামে খুবই আপত্তিজনক ও মানহানিকর অসত্য ও বিকৃত সংবাদ প্রচারিত হয়েছে। সেই সংবাদের সূত্র ধরে কিছু পত্রিকা একই ধরনের সংবাদ হুবহু প্রচার করেছে। তবে মূলধারার প্রিন্ট মিডিয়া এই অসত্য সংবাদ প্রকাশে আগ্রহ দেখায়নি। এজন্য মূলধারার গণমাধ্যমগুলোর সাংবাদিক বন্ধুগণের প্রতি আমি এবং আমার পরিবারের অনেক অনেক কৃতজ্ঞতা।
সাবেক এই আইজিপি বলেন, আপনারা জানেন গত ১৪ বছরে প্রথমে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার হিসেবে রাজধানীবাসীকে সেবা দিয়েছি, পরবর্তীতে এলিট ফোর্স র্যাবের মহাপরিচালক (ডিজি) ও পুলিশের আইজিপি হিসেবে দেশের মানুষের সেবা দেওয়ার সুযোগ হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ পুলিশের গুরুত্বপূর্ণ পদে ১৪ বছরসহ ৩৫ বছর সরকারি চাকরি করেছি। এই সময়ে শান্তিরক্ষী মিশনসহ বিদেশেও কাজ করেছি। যেহেতু ৩৫ বছর রাষ্ট্রের বেতনভুক্ত কর্মচারী হিসেবে চাকরি করেছি। তাই ব্যক্তিগত দায় হিসেবে প্রকাশিত সংবাদের প্রেক্ষিতে সত্য তথ্য তুলে ধরার নৈতিক তাগিদ অনুভব করছি। পাল্টা আক্রমণ নয়, কথার প্রেক্ষিতে কথা নয়। বরং আমি ও আমার পরিবারের পক্ষ থেকে প্রকৃত সত্যটি তুলে ধরতে চাই।
বেনজীর বলেন, প্রকাশিত দুই পর্বের সংবাদের তথ্যের পুঙ্খানুপুঙ্খ পর্যালোচনা করেছি। এতে সব মিলিয়ে ৪৫টি অভিযোগ ও অপমানজনক বক্তব্য উপস্থাপন করা হয়েছে। যার মধ্যে ২৪টি অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা ও কল্পনাপ্রসূত, দুইটি বিষয়কে সাত বার পুনরাবৃত্তি করা হয়েছে। দুইটি তথ্য ভুল প্রেক্ষাপটে বিকৃতভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে। বাকি ১০টি তথ্যকে ফুলিয়ে ফাঁপিয়ে তিলকে তাল বানিয়ে উপস্থাপন করা হয়েছে।
বেনজীর আহমেদ বলেন, আমার এবং পরিবারের ঢাকা ও ঢাকার বাহিরের সম্পত্তির তথ্য সম্পূর্ণ মিথ্যা। বেতন ভাতার হিসাব কাল্পনিক এবং ভুল। গোপালগঞ্জের পারিবারিক কৃষি খামারের ভূমির পরিমাণ যা উল্লেখ করা হয়েছে তা সঠিক নয়। জমির সকল তথ্য ট্যাক্স ফাইলে উল্লেখ আছে। এছাড়া আমার পরিবারের সদস্যদের জাতীয় পরিচয় পত্রসহ বেশ কিছু তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে। যা আমাকে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে।
সম্প্রতি প্রকাশিত এক জাতীয় দৈনিকের দাবি, পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ও র্যাবের সাবেক মহাপরিচালক বেনজীর আহমেদের বিপুল পরিমাণ অবৈধ সম্পদের খোঁজ মিলেছে। এরপর থেকেই বেশ আলোচনায় পুলিশের সাবেক এই আইজিপি।
গরমে স্বস্তি আনে নরসিংদীর বাঙ্গি
গ্রীষ্মকালের এমন তাপপ্রবাহ ও প্রচণ্ড রোদের কারণে অস্থির মানুষজন। কাজকর্মে নেমে এসেছে অসহনীয় অবস্থা। এই অবস্থায় ঠান্ডা জাতীয় খাওয়ার পাশাপাশি রোদ এড়িয়ে চলার পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসকগণ। বেশি করে ফলমূল ও পানি খাওয়ারও পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসকরা। ফলমূলের মধ্যে, ডাব, শসা, পেপে, বাঙ্গি আনারস ইত্যাদি। এই অবস্থায় জেলার চরাঞ্চলের মিষ্টি মধুর বাঙ্গির কদর বেড়েছে কয়েকগুন। এর ফলে একদিকে বেড়েছে বাঙ্গির উৎপাদন, অপরদিকে বেড়েছে মৌসুমি শ্রমিকের কর্মসংস্থান। আর এই নরসিংদীর সাগরকলা, লটকটন, বোম্বাই লেবুর পর এবার বাঙ্গি দিয়ে পরিচিত হচ্ছে নরসিংদী। মূলত মৌসুমি ফল হিসেবে নরসিংদীতে চাষাবাদ হয়ে থাকে এই বাঙ্গি।
গ্রীষ্মের অন্যতম ফল বাঙ্গি গ্রীষ্ম আসার আগেই নরসিংদীর চরাঞ্চলের মাঠে বেড়ে উঠে। ইতিমধ্যে বাঙ্গি চাষে প্রসিদ্ধ হয়ে উঠছে নরসিংদীর রায়পুরা ও সদর উপজেলার চরাঞ্চল। এ অঞ্চলের বাঙ্গি আকারে বড়, দেখতে সুন্দর ও সুস্বাদু হওয়ায় রাজধানীসহ আশপাশের বিভিন্ন জেলায় ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। অল্প শ্রম ও অল্প খরচে অধিক লাভবান হওয়ায় প্রতি বছরই বাড়ছে বাঙ্গির চাষ। ফলে এ অঞ্চলে সৃষ্টি হচ্ছে মৌসুমি কর্মসংস্থানের।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলার চরাঞ্চল বেষ্টিত বাঁশগাড়ি, শ্রীনগর, চরমধূয়া ও মির্জাচর ইউনিয়নের সর্বত্র বাঙ্গি চাষ হয়ে থাকে। তুলনামূলকভাবে বাঁশগাড়ি ইউনিয়নেই সবচেয়ে বেশি বাঙ্গির আবাদ হয়ে আসছে। গত মৌসুমে রায়পুরার চরাঞ্চলে প্রায় ৪৫ হেক্টর জমিতে বাঙ্গি চাষাবাদ হয়েছে। যা আগের বছর হয়েছিল ৪০ হেক্টর জমিতে। এ বছর বাঙ্গি চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে হেক্টর প্রতি ২০ থেকে ২৫ মেট্রিক টন।
বাঁশগাড়ি ইউনিয়নের মধ্যনগর ও চান্দেরকান্দি গ্রামের কৃষকরা তাদের জমিতে বাণিজ্যিকভাবে বাঙ্গি চাষ করে। শুধু মধ্যনগর বা চান্দেরকান্দি নয় আশপাশের বেশ কয়েকটি চরে বাঙ্গির আবাদ হচ্ছে। এই সকল চরের উৎপাদিত বাঙ্গির আকার বড় ও হলদে রঙের উজ্জ্বল হয়ে থাকে।
বাঁশগাড়ি ও শ্রীনগর ইউনিয়নের মধ্যবর্তী স্থানে পলি দ্বারা বিস্তৃত চর। বিস্তৃর্ণ পূর্ব পুরুষদের অনুকরণে চরে ধান জাতীয় ফসলের পাশাপাশি বাঙ্গি চাষ করা হয়েছে। মাটির উপর ছড়িয়ে রয়েছে বাঙ্গিগাছের সবুজ লতা। লতার ফাঁকে ফাঁকে কাঁচা-পাকা বাঙ্গি শোভা পাচ্ছে। জমি থেকেই বাঙ্গি কিনতে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে পাইকারগণ জমিতে ছুটে আসেন। জমিতেই পাইকারগণ দরদাম করে নিয়ে যাচ্ছেন যার যার মতো।
বাঙ্গি চাষীরা জানান, আগে নিজেরা খাওয়ার জন্য অল্প জমিতে বাঙ্গিচাষ করা হতো। পরবর্তীতে এটি লাভ জনক হওয়ায় বাণিজ্যিকভাবে চাষাবাদ শুরু করেন এই অঞ্চলের কৃষকরা। ফলে বর্তমানে চরের অর্ধেক জমিতেই বাঙ্গি চাষ হয়ে থাকে।
কৃষকরা আরো জানান, বাঙ্গি চাষ করতে তেমন খরচ লাগে না। রসুন ও বাঙ্গি দুই ফসল একবারে যায়। রসুনের জন্য সার দেয়ায় বাঙ্গির জন্য আলাদা করে সার লাগেনা। বীজ ও ঔষুধে এবছর দুই বিঘা জমিতে মাত্র ৬০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। আশা করা যায় আড়াই লাখেরও বেশি টাকা বিক্রি করা সম্ভব।
বাঙ্গি চাষ শুধু কৃষকদের সমৃদ্ধিই বয়ে আনেনা, সৃষ্টি হয়েছে মৌসুমী কর্মসংস্থানের। মৌসুমি শ্রমিকরা জমি থেকে বাঙ্গি ঝুঁড়িতে তুলে দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে নৌকা কিংবা ভ্যানে ভর্তি করে থাকেন। এতে পুরো চরে চোখে পড়ে কৃষক-শ্রমিকের কর্মচঞ্চলতা।
মৌসুমি শ্রমিকরা জানান, বাঙ্গির পুরা মৌসুমে এই গ্রামের কেউ বসে থাকেননা। সকলেই কিছু না কিছু কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করেন। জমি থেকে প্রতিটি বাঙ্গি ঘাটে নৌকায় বা ভ্যানে বোঝাই করে দিলে ৫ টাকা পান। এতে প্রতিদিন গড়ে ৮শ থেকে ১ হাজার টাকা রোজগার করা সম্ভব হয়। আকারভেদে পাইকারী হিসেবে একশ বাঙ্গি ৩ থেকে ৫ হাজার টাকায় বিক্রি হয়। এই এলাকার বাঙ্গি দেখতে সুন্দর, মিষ্টি ও ভালো মানের হওয়ায় ব্রাহ্মনবাড়িয়া, বাঞ্ছারামপুর, যাত্রাবাড়ি, নারায়নগঞ্জ, গাজীপুর, সিলেট,নরসিংদীসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় যাচ্ছে।
রায়পুরা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা বনি আমিন খান জানান, চরাঞ্চলখ্যাত রায়পুরায় বাঙ্গি চাষের ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে। বাঙ্গি চাষ সম্প্রসারণে কৃষি বিভাগ সার্বক্ষণিক কাজ করে যাচ্ছে। এরই অংশ হিসেবে মাঠ পরিদর্শনসহ কৃষকদের বিভিন্ন পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। বর্তমানে কৃষকরা স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত বীজ কৃষকরা ব্যবহার করছেন। বাঙ্গি চাষে কৃষকদের প্রশিক্ষণ ও উন্নত জাতের বীজ সরবরাহের পরিকল্পনা রয়েছে কৃষি বিভাগের।
ঠাকুরগাঁওয়ে নিখোঁজের ২ দিন পর ছাত্রের মরদেহ উদ্ধার
ঠাকুরগাঁও শহরের মাদ্রাসা পাড়া থেকে নিখোঁজের দুইদিন পর বাড়ির পাশের গলি থেকে নিবির (১২) নামে এক স্কুলছাত্রের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।
শনিবার (২০ এপ্রিল) সকালে বাড়ির পাশের গলিতে ছেলের অর্ধগলিত মরদেহটি দেখতে পেয়ে চিৎকার করে ওঠেন নিবিরের মা। পরে পুলিশে খবর দেওয়া হয়।
নিবির ঠাকুরগাঁও পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডের মাদ্রাসা পাড়া এলাকার বাসিন্দা ও ওমান প্রবাসী আব্দুস সালাম বাবলুর ছেলে। সে সালান্দর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির ছাত্র।
এ ঘটনায় সন্দেহভাজন দুজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করার জন্য আটক করেছে পুলিশ। আটকরা হলেন- একই এলাকার শিপন আলীর ছেলে আলিফ ও ফজর আলীর ছেলে লিখন।
পরিবার ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, গত বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) বাড়ি থেকে খেলতে বের হয়ে আর বাড়িতে ফেরেনি নিবির। এ নিয়ে সদর থানায় জিডি, মাইকিং ও ইন্টারনেটে ব্যাপক প্রচার করা হলেও সন্ধান মেলেনি তার।
বৃহস্পতিবার দিনগত মধ্য রাতে (শনিবার, ২০ এপ্রিল) বাড়ির জানালায় বিকট শব্দ করে দুর্বৃত্তরা। ভয়ে কেউ বাড়ি থেকে বাইরে আসেননি। তবে সকালে বাড়ির পাশের গলিতে নিবিরের নিথর মরদেহ পড়ে থাকতে দেখে চেঁচিয়ে ওঠেন নিবিরের মা। এরপর পরিবারের সবাই সেখানে হাজির হয়। পরে থানায় জানানো হয়।
এবিষয়ে ঠাকুরগাঁও সদর থানার ভারপ্রাপ্ত (ওসি) মো. ফিরোজ ওয়াহিদ বলেন, আমরা খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসি। লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। ময়না তদন্তের পর তদন্তসাপেক্ষে বিস্তারিত জানানো যাবে।
হাতিরঝিল থেকে যুবকের মরদেহ উদ্ধার
রাজধানীর বাড্ডা থানার হাতিরঝিল অংশের পুলিশ প্লাজার পেছনের ব্রিজের নিচ থেকে ভাসমান অবস্থায় এক যুবকের মরদেহ উদ্ধার করেছে বাড্ডা থানা পুলিশ।
শনিবার (২০ এপ্রিল) সকালে এ মরদেহটি উদ্ধার করা হয়।
প্রাথমিকভাবে জানা গেছে, নিহতের নাম- মো. রবিন (২৯)। পিতা আব্দুল সাত্তার। গ্রামের বাড়ি কুমিল্লার চান্দিনা উপজেলায়।
এর আগে, শনিবার সকাল বেলা ব্রিজ ধরে যাওয়ার পথে মরদেহ ভাসতে দেখে পথচারীরা জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ এ কল দিলে হাতিরঝিল থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে আসে। ঘটনাস্থল বাড্ডা থানাধীন হওয়ায় পরে বাড্ডা থানা পুলিশকে খবর দিলে তারা এসে মরদেহটি উদ্ধার করে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে বাড্ডা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) ইয়াসিন গাজী।
তিনি বলেন, হাতিরঝিল থানা পুলিশের মাধ্যমে আমরা জানতে পারি পুলিশ প্লাজার পেছনে ব্রিজের নিচে একটি মরদেহ ভাসমান অবস্থায় রয়েছে। পরে বাড্ডা থানার একটি টিম গিয়ে উদ্ধার করে মরদেহটি।
ওসি আরও বলেন, প্রাথমিকভাবে তার নাম পরিচয় পাওয়া গেছে। পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগের জন্য পুলিশ কাজ করছে। তবে তার শরীরে তেমন কোনো আঘাতের চিহ্ন দেখা যায়নি।