রাজশাহীতে বিস্তৃত হচ্ছে সেলুনভিত্তিক পাঠাগার



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, রাজশাহী, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

সেলুনে চুল-দাড়ি কাটতে এসে প্রচণ্ড ভিড়ে বসে না থেকে বই পড়ার অভ্যাস গড়ে তুলতে অভিনব উদ্যোগ গ্রহণ করেছে রাজশাহীর কেন্দ্রীয় কিশোর পাঠাগার। উদ্যোগের অংশ হিসেবে মহানগরীর ৩০টি ওয়ার্ডে ৩ শতাধিক সেলুনে ‘সেলুন ভিত্তিক পাঠাগার’ গড়ে তোলা হবে।

আগামী ২১ ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে নগরীর ১৪ নং ওয়ার্ডের ১০টি সেলুনে পরীক্ষামূলকভাবে এই সেলুনভিত্তিক পাঠাগারের কার্যক্রম শুরু করা হবে।

সেলুনভিত্তিক বইপড়া কর্মসূচির উদ্যোক্তা ও কেন্দ্রীয় কিশোর পাঠাগারের প্রতিষ্ঠাতা সোহাগ আলী বার্তা২৪.কম-কে বলেন, 'দিন দিন গণগ্রন্থাগারের পাঠক কমছে। বর্তমানে মানুষের কর্মব্যস্ততার মাঝে গ্রন্থাগারে গিয়ে বইপড়ার পর্যাপ্ত সময় ও সুযোগ না থাকায় আমরা বিভিন্ন সময় বিভিন্ন ধরনের বিনামূল্যে বইপড়া কর্মসূচি গ্রহণ করি। যাতে সহজেই পাঠক গ্রন্থাগারে না গিয়ে ঘরে বসেই বই পড়ার সুযোগ পান।'

তিনি আরও জানান, আমাদের কর্মসূচির মধ্যে ‘পলান সরকার বইপড়া আন্দোলন’ অন্যতম। যা মহানগরীতে দিনদিন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। ১৯৯৭ সালে কেন্দ্রীয় কিশোর পাঠাগার প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর থেকে পাঠক সৃষ্টির লক্ষে কাজ করে যাচ্ছে।’

সোহাগ আলী বলেন, 'আমরা আশা করছি সেলুনভিত্তিক এই শিক্ষামূলক সেবাটি প্রত্যেক পাঠকের কাছে আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হবে। ভিন্নধর্মী এই আয়োজনে সবার সহযোগিতা দরকার।'

রাজশাহী সিটি করপোরেশনের মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন বার্তা২৪.কম-কে বলেন, 'কেন্দ্রীয় কিশোর পাঠাগারের কয়েকজন তরুণ আমার কাছে এসেছিলেন। তারা যে উদ্যোগ নিয়েছে, সেটি চমৎকার। এ ধরনের কাজে উদ্যোক্তাদের সব ধরনের সহযোগিতা করবে সিটি করপোরেশন।'

   

রাজবাড়ীতে হিট স্ট্রোকে মারা গেলেন অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম,রাজবাড়ী
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

রাজবাড়ীর গোয়ালন্দে হিট স্ট্রোকে মো. নুর ইসলাম (৭৫) নামের অবসরপ্রাপ্ত এক শিক্ষকের মৃত্যু হয়েছে। বুধবার (২৪ এপ্রিল) উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হাসপাতালে মারা যান তিনি।

তার বাড়ি উপজেলার বালিয়াডাঙ্গা গ্রামে। তিনি স্থানীয় একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক।

মৃতের পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বুধবার (২৪ এপ্রিল) বেলা ১০টার দিকে প্রচন্ড গরমে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে নিজ বাড়ির আঙ্গিনায় মাটিতে লুটিয়ে পড়েন নুর ইসলাম। পরিবারের লোকজন দ্রুত এগিয়ে এসে প্রথমে তার মাথায় পানি ঢালেন। অবস্থা আরো খারাপ হলে তাকে গোয়ালন্দ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে যান। সেখানে চিকিৎসা শুরু করার কিছুক্ষণের মধ্যে তিনি মারা যান।

গোয়ালন্দ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. শরিফুল ইসলাম বলেন, তীব্র গরমে হিট স্ট্রোকে নুর ইসলাম নামের এক বৃদ্ধের মৃত্যু হয়েছে।এছাড়াও তার ডায়বেটিস জনিত রোগ ছিলো। 

;

দেশে ফিরলেন মিয়ানমারে আটকা পড়া ১৭৩ জন



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, কক্সবাজার
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

মিয়ানমারে সাজাভোগ শেষে দেশে ফিরেছেন ১৭৩ বাংলাদেশি। বুধবার (২৪ এপ্রিল) দুপুর ১টায় তারা কক্সবাজার শহরের নুনিয়ার ছড়া ঘাটে এসে পৌঁছে।

এরআগে, মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) মিয়ানমারের সিতওয়ে বন্দর থেকে বাংলাদেশে জলসীমার উদ্দেশে রওনা হয় জাহাজ চিন ডুইন। বাংলাদেশি জাহাজে করে মিয়ানমার জলসীমা থেকে নুনিয়াছড়া ঘাটে আনার পর একে একে তাদেরকে জাহাজ থেকে নামানো হয়।

বিজিবি, কোস্ট গার্ড ও পুলিশের কড়া নিরাপত্তায় হস্তান্তর প্রক্রিয়ার জন্য তৈরি করা অস্থায়ী তাবুতে নেওয়া হয় ১৭৩ বাংলাদেশিকে। সেখানে মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূতসহ বিজিবি ও কোস্টগার্ডের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

এছাড়া পুরো প্রক্রিয়াটিতে সকাল থেকেই উপস্থিত ছিলেন পররাষ্ট্র মন্ত্রালয়ের স্থায়ী কমিটির সদস্য, জাতীয় সংসদের হুইপ ও কক্সবাজার-৩ আসনের সংসদ সদস্য সাইমুম সরওয়ার কমল।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, জাহাজে ফেরা ১৭৩ জন বাংলাদেশির মধ্যে ১২৯ জন কক্সবাজারের, ৩০ জন বান্দরবানের এবং রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি, নোয়াখালী, নারায়ণগঞ্জ, চট্টগ্রাম, রাজবাড়ী, নরসিংদী, নীলফামারী জেলার একজন করে বাসিন্দা আছেন। এর মধ্যে ৩ জন নারীও আছেন।

জানা যায়, বাংলাদেশি নাগরিকদের দ্রুত ও সহজে ফেরত আনার পরিকল্পনায় মিয়ানমারে থাকা বাংলাদেশি দূতাবাস দেশটির বিভিন্ন কারাগারে বন্দী ১৪৪ জনকে যাচাই-বাছাই করে। পরে যাদের কারাভোগের মেয়াদ পূর্ণ হয়েছে বা ক্ষমা পেয়েছেন তাদেরকে সিতওয়ে কারাগারে আনতে উদ্যোগ নেয়।

পাশাপাশি আরও ২৯ জন যাচাই করা বাংলাদেশি নাগরিক, যারা এখনো কারাভোগরত কিংবা বিচারাধীন। তাদেরও মুক্তি দেওয়ার বিষয়টি মিয়ানমারের কাছে তুলে ধরে বাংলাদেশ। যার ভিত্তিতে সাজা মওকুফ করে তাদেরও সিতওয়ে কারাগার থেকে দেশে আনা হয়েছে আজকে।

সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ যাচাই বাছাই শেষে আজকেই ১৭৩ জনকে স্বজনদের কাছে ফিরিয়ে দিবে।

রাখাইন রাজ্যে সংঘাতের কারণে সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশে পালিয়ে আসতে বাধ্য হওয়া মিয়ানমারের প্রতিরক্ষা বাহিনীর ২৮৫ সদস্যকে নিয়ে ২৫ এপ্রিল ফিরে যাবে চিন ডুইন জাহাজটি।

উল্লেখ্য, সর্বশেষ ৩ অক্টোবর দুই দেশের সীমান্ত রক্ষাকারী বাহিনীর মধ্যে অনুষ্ঠিত পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে মিয়ানমারে কারাভোগ শেষ করা ২৯ জন বাংলাদেশি নাগরিককে দেশে পাঠানো হয়।

;

ফরিদপুরে ৪ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

ফরিদপুরের মধুখালীর বালিয়াকান্দি পঞ্চপল্লীর কালি মন্দিরে আগুনকে কেন্দ্র করে শ্রমিকদের পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ৪ প্লাটুন বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) মোতায়েন করা হয়েছে।

বুধবার (২৪ এপ্রিল) সকাল ৯টা থেকে জেলা প্রশাসনের ম্যাজিস্ট্রেটদের সঙ্গে ফরিদপুর সদরসহ মধুখালী উপজেলার বালিয়াকান্দি পঞ্চপল্লীর নিকটে এবং বাঘাটে বাজার এলাকায় যৌথ বাহিনীর সঙ্গে সমন্বয়ে টহল পরিচালনা করা হচ্ছে।

বিষয়টি নিশ্চিত করে বিজিবি সদর দপ্তরের জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. শরীফুল ইসলাম।

তিনি জানান, বর্তমানে এলাকার পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। ম্যাজিস্ট্রেটসহ যৌথ বাহিনীর সঙ্গে বিজিবির টহলের পাশাপাশি গ্রাম পুলিশ অবস্থান করছে।

এর আগে সকালে ফরিদপুর-খুলনা মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষুব্ধ জনতা। এর ফলে ওই এলাকায় তীব্র যানজট তৈরি হয়। পরে দুপুর দেড়টার দিকে পুলিশের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।

জানা যায়, পঞ্চপল্লীতে দুই ভাইকে পিটিয়ে হত্যা ও মন্দিরে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার প্রতিবাদে মধুখালী রেলগেটে মানববন্ধনের ডাক দেওয়া হয়। স্থানীয় সর্বসাধারণের ব্যানারে আয়োজিত এ কর্মসূচি পালনে সেখানে সমবেত হয় পাঁচ শতাধিক জনতা। আনুমানিক আধা ঘণ্টা স্থায়ী এ মানববন্ধন কর্মসূচি পালন শেষে বেলা ১১টার দিকে বিক্ষোভকারীরা মধুখালীর ঈদগাঁ ময়দানে প্রতিবাদ মিছিল বের করে। পরে মিছিলটি মহাসড়কে উঠে ঢাকা-খুলনা মহাসড়ক ধরে কামারখালী সেতুর দিকে এগোতে থাকে। এ সময় পুলিশ বাধা দিলে বিক্ষোভকারীরা খণ্ড খণ্ড হয়ে মিছিল করতে থাকে। একাধিক ভাগে বিভক্ত বিক্ষোভকারী মালেকা চক্ষু হাসপাতালের সামনে, নওয়াপাড়ার মোড়, মাঝিবাড়ি ও বাগাটের ঘোষঘাটসহ বিভিন্ন স্থানে অবস্থান নেয়।

বাগাটের ঘোষঘাটে বিক্ষোভকারীরা ঢাকা-খুলনা মহাসড়কে গাছের গুঁড়ি এনে অবরোধ করে এবং সড়কের মাঝে গাছের গুঁড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়। নওয়াপাড়ার মোড়ে একটি ইটভর্তি ট্রাক সড়কের মাঝখানে আড়াআড়িভাবে রেখে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, এ সময় পুলিশ তাদের ছত্রভঙ্গ করতে কাঁদানে গ্যাস ও শর্টগানের গুলি ছুড়ে। এতে জনতা বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠে এবং একপর্যায়ে পুলিশের দিকে ইট ছুড়ে ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়। দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ওই জায়গায় ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক কামরুল আহসান তালুকদার গিয়ে বিক্ষোভকারীদের সব দাবি মেনে নেওয়ার আশ্বাস দিয়ে বিক্ষোভ প্রত্যাহারের আহ্বান জানান। কিন্তু বিক্ষোভকারীরা তাদের ওপর পুলিশের গুলি ও হামলার প্রতিবাদ জানান। জেলা প্রশাসক এ ঘটনার তদন্ত হবে বলে আশ্বাস দেন। কিন্তু বিক্ষোভকারীরা জেলা প্রশাসকের আহ্বানে সাড়া দেয়নি। পরে পুলিশ ফাঁকা গুলি ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

বিক্ষোভকারীরা জানায়, পুলিশের হামলায় তাদের চারজন আহত হয়েছে। এর মধ্যে তিনজন মধুখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছে এবং বাকি একজনকে ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে।

ফরিদপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অপরাধ) মোহাম্মদ এমদাদ হুসাইন বলেন, কোথাও বুঝিয়ে এবং কোথাও শক্তি প্রয়োগ করে বিক্ষোভকারীদের হটিয়ে প্রায় তিন ঘণ্টা পর মহাসড়কে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক করা হয়। তবে এ ঘটনায় কোনো হতাহত বা জানমালের ক্ষতিসাধনের কোনো ঘটনা ঘটেনি।

;

রানা প্লাজা ট্র্যাজেডি: ১১ বছরেও শোক কাটেনি স্বজনদের



রাজু আহম্মেদ, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট বার্তা২৪.কম
রানা প্লাজা ট্র্যাজেডি: ১১ বছরেও শোক কাটেনি স্বজনদের

রানা প্লাজা ট্র্যাজেডি: ১১ বছরেও শোক কাটেনি স্বজনদের

  • Font increase
  • Font Decrease

 

যশোর জেলার ঝিকরগাছা এলাকার রাহেনা খাতুন। তার মেয়ে মুক্তা আক্তার ২০১০ সালে বাবা মায়ের অভাবের সংসারের হাল ধরতে চাকরি নিয়েছিলেন রানা প্লাজার আট তলার গার্মেন্টসে। চাকরিতে যোগদানের পর মায়ের সংসারের সব খরচ চালাতেন তিনি। দুঃখ দুর্দশার জীবন থেকে পরিবারে কিছুটা স্বস্তির দেখা মিলছিলো মুক্তার আয়ের টাকায়। তবে সে সুখ টিকেনি। ২০১৩ সালে রানা প্লাজা ট্রাজেডিতে নিহত হন মুক্তা। নিঃস্ব হয়ে পড়ে মুক্তার মা রাহেনা খাতুন।

মেয়ে হারানো ১১ বছরেও শোক কাটেনি অসহায় এই মায়ের। বুকভরা আর্তনাদ নিয়ে সাভার এসেছেন ষাটোর্ধ্ব রাহেনা খাতুন। মেয়ে হারানোর বেদনায় কেঁদে বুক ভাসাচ্ছেন তিনি।

বুধবার (২৪ এপ্রিল) সকালে কথা হয় মুক্তার মা রাহেনা খাতুনের সাথে। মেয়ের স্মৃতি স্মরণ করে তিনি বলেন, অভাবের সংসারে হাল ধরবে। তাই এসেছিল ঢাকায়। ১৮ বছর বয়স তখন মুক্তার। আমাকে বিকাশে টাকা পাঠাতো। গাড়িতে টাকা পাঠাতো। যখন চাইতাম ৫০০, ৮০০ টাকা দিত। সেই মেয়ে আমার ডাকে না। কল দেয় না। জোর করে আমার মেয়েকে মেরে ফেলছে মালিক। মেয়ের ছবি খুলতে পারি না।  বুক ফেটে যায়। মেয়ের অস্তিত্ব পাব সে আশায় আসি প্রতি বছর মেয়েকে তো পাই না।


এদিকে একি ট্র্যাজেডিতে বড় ছেলে হারিয়ে শূন্যতায় ধুকে মরছেন জামালপুর মেস্টা ইউনিয়নের শিমল তলি এলাকার খুরশিদা বেগম। বাবার মৃত্যুর পর মায়ের দুঃখ সইতে না পেরে খুরশদার বড় ছেলে আল আমিন শান্ত কাজের জন্য এসেছিল ঢাকায়। কোথাও কোনো কাজ না পেয়ে আল আমিন কাজ নিয়েছিলো রানা প্লাজার গার্মেন্টসে। তবে ছেলের ইনকামের টাকার সৌভাগ্যই কাল হয়েছিলো খুরশিদার জীবনে। মায়ের কষ্ট মুছতে এসে পৃথিবী থেকে নিজেই হারিয়ে গেছেন মা পাগল ছেলে।

খুরশিদা বেগম বলেন, আজও আমার চোখে আমার ছেলে ভাসে। পন্স স্যান্ডেল পরে হেঁটে আসে। আম্মু আম্মু বলে ডাকে। আমার ছেলে আমাকে কল দিত বলত মা খেয়ে নাও। আমি খাব না তুমি না খেলে। তুমি তো আমার সব আম্মু। তুমি নিজের খেয়াল রাখবা আম্মু। এখন আর আমার ছেলে ডাকে না।

খুরশিদা আরও বলেন, আমার পাগল ছেলে মায়ের ঋণ শোধ করতে চাইছিলো। মাকে ভালো রাখবে তাই ঢাকা আসছিলো। আমিও ছেলের কামাই খেতে চাইছিলাম। সে আমার প্রতি দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে নিজেই চলে গেলো।


রানা প্লাজা ট্রাজেডিতে খুরশিদা ও রাহেনা খাতুনের সন্তান ও প্রিয়জন হারানোর মতো এমন করুণ গল্প আছে ১১৭৫টি পরিবারের। ২০১৩ সালের ২৪ এপ্রিল সাভার বাস স্ট্যান্ডের পাশেই নির্মিত রানা প্লাজা নামের বহুতল ভবনটি ধসে পড়ে। সে সময় ভবনটির নিজ তলায় বিপনীবিতান ও ৮ম তলা পর্যন্ত ছিল পোষাক কারখানা। পোষাক কারখানায় প্রায় ৫ হাজার শ্রমিক কর্মরত ছিল। তাদের মধ্যে ১১৭৫ নিহত হন। এখনো ভয়াবহ সেই দুর্ঘটনায় আহত হয়ে আতঙ্ক নিয়ে বেঁচে আছে প্রায় ২ হাজারের বেশি মানুষ।

নিহতের স্বজন ও আহতদের অভিযোগ রানা প্লাজার ট্র্যাজেডির এত বছরেও পূরণ হয়নি ক্ষতিগ্রস্তদের দাবি। আশ্বাসের বিশ্বাসে ১১ বছর কেটে গেলেও শাস্তি হয় নি রানা প্লাজা ট্র্যাজেডিতে দোষী ব্যক্তিদের। বিশ্বের তৃতীয় বৃহৎ ইন্ডাস্ট্রিয়াল এই দুর্ঘটনায় আদায় হয়নি শ্রমিকের ন্যায্য দাবিও। ফলে হতাশা ও ক্ষোভ নিয়েই বছরের পর পর স্বজন হারার ব্যথা নিয়ে চলছে পরিবারগুলো।

এদিকে শ্রমিক নেতারা বলছেন, সরকারের সদিচ্ছার অভাবেই এখনও শ্রমিকরা ন্যায্য পাওনা বুঝে পায়নি। বিশ্ব যেখানে সাক্ষী। সেখানে শ্রমিকের সাক্ষা গ্রহণের নামে না আ অজুহাতে কার্যকর হচ্ছে দোষীদের বিচার। ফলে ভুক্তভোগীদের ক্ষতিপূরণ ও দুর্ভোগ লাঘবে দ্রুত উদ্যোগ নেওয়ার দাবি তাদের।

;