কেমিক্যাল পেলেই কল করুন ‘৯৫৫৬০১৪’ নম্বরে: সাঈদ খোকন



সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
কেমিক্যাল অপসারণে নিজেই নেমে পড়েছেন সাঈদ খোকন/ছবি: সুমন শেখ

কেমিক্যাল অপসারণে নিজেই নেমে পড়েছেন সাঈদ খোকন/ছবি: সুমন শেখ

  • Font increase
  • Font Decrease

পুরান ঢাকার সমস্ত কেমিক্যাল গোডাউন অপসারণে নেমেছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন। যতক্ষণ পর্যন্ত এই এলাকায় কেমিক্যালের অস্তিত্ব পাওয়া যাবে ততক্ষণ পর্যন্ত অপসারণ বা উচ্ছেদ কার্যক্রম চালিয়ে যাবার ঘোষণা দিয়েছেন মেয়র মোহাম্মদ সাঈদ খোকন।

সেই সঙ্গে নগরবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়ে মেয়র বলেন, সর্বস্তরের নাগরিকদের প্রতি অনুরোধ যদি কেউ গোডাউনে কেমিক্যাল স্টোর করতে দেখেন বা কেমিক্যাল রাখতে দেখেন আপনারা আমাদের কন্ট্রোল রুম ‘৯৫৫৬০১৪’ নম্বরে জানান। যে কেউ তার বাড়ির আশাপাশে পাড়া-মহলায় কেমিক্যাল রাখছে এমন দৃশ্য দেখেন তাহলে আমাদের কন্ট্রোল রুম, পুলিশ কন্ট্রোল রুম, কাউন্সিলর অফিসে, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে জানান, আমরা তাৎক্ষনিকভাবে ব্যবস্থা নেব।

শনিবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) পুরান ঢাকার ওয়াহেদ ম্যানশনের কেমিক্যাল অপসারণের মাধ্যমে উচ্ছেদ অভিযানের উদ্বোধনকালে মেয়র একথা বলেন। একই সঙ্গে ওই দিনের অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাতের ভিডিও ফুটেজ আছে বলেও জানান মেয়র। পরে মেয়র নিজেই ওই ভবনে মজুদ থাকা কেমিক্যাল সন্দেহে সকল পদার্থ অপসারণ করেন মেয়র।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Feb/23/1550917223439.jpg

তিনি বলেছেন, আমরা প্রতিটি বাড়ি পরিদর্শন করব, যেখানেই কেমিক্যালের অস্তিত্ব পাওয়া যাবে সেসমস্ত কেমিক্যাল অপসারণ করা হবে। অভিযানে কোনো বাড়িতে কেমিক্যাল গোডাউন পাওয়া গেলে সর্বপ্রথম বাড়ির মালিককে আইনের আওতায় এনে শাস্তির ব্যবস্থা করার ঘোষণাও দেন মেয়র।

সাঈদ খোকন বলেন, ওয়াহেদ ম্যানশনের গোডাউনে যেসমস্ত কেমিক্যাল রয়েছে, সেই কেমিক্যাল অপসারণের মধ্য দিয়ে পুরনো ঢাকার সম্পূর্ণ এলাকার যত কেমিক্যাল গোডাউন আছে সমস্ত গোডাউন থেকে কেমিক্যাল অপসারণের কার্যক্রম শুরু করা হলো।

এ সময় মেয়র বলেন, গত বুধবার এই ওয়াহেদ ম্যানশনে অগ্নিকাণ্ড ঘটে। এরআগে সোমবার আমরা মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে কেমিক্যাল অপসারণ কাজ শুরু করি, দু:খজনক হলেও সত্য মাত্র দুই দিনের মাথায় ঘটনাটি ঘটে। আমরা পুরো এলাকা থেকে কেমিক্যালগুলো সেসময় অপসারণ করতে পারিনি। কাজেই যতক্ষণ না পর্যন্ত পুরনো ঢাকার কেমিক্যাল গোডাউন আমরা অপসারণ করতে পারছি ততক্ষণ পর্যন্ত এই কাজ অব্যাহত থাকবে। নগরবাসীর জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিতকল্পে নগর কর্তপক্ষ এ ব্যাপারে দৃঢ়ভাবে  প্রতিজ্ঞ।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Feb/23/1550917247634.jpg

অপসারণ কাজে সকলের সহযোগিতা চেয়ে মেয়র বলেন, স্থানীয় নাগরিক, ব্যবসায়ী প্রতিনিধিসহ সকল শ্রেণির নাগরিক রয়েছেন। এখানে হাজার হাজার বাড়িঘর রয়েছে যদি কোন একটি বাড়িতে ২০টি কেমিক্যাল কার্টুন ওঠায় তাহলে কারো পক্ষেই সেটা খুঁজে বের করা খুব দূরহ হয়ে পড়ে। সাধারণ মানুষ তার নিরাপত্তার স্বার্থে যতক্ষণ পর্যন্ত বিষয়গুলোকে শক্ত নজরদারির আওতায় নিয়ে না আসবে ততক্ষণ পর্যন্ত প্রশাসনের পক্ষে কাজটি করা খুব দূরহ একটি ব্যাপার।

পুলিশ সূত্রের বরাত দিয়ে মেয়র বলেন, সেদিনের অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাতের ভিডিও ফুটেজ পাওয়া গেছে। সেই অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত গ্যাস সিলিন্ডার থেকে। গ্যাস সিলিন্ডারের বিষ্ফোরণের সূত্র ধরে অগ্নিকাণ্ডের সূচনা হয়েছে। বিষয়টি পুলিশের একটি সূত্র আমাকে অবহিত করেছেন। রাস্তায় রাখা একটি গাড়ির গ্যাস সিলিন্ডারে বিষ্ফরণের সূত্র ধরে পরবর্তি বেশ কিছু গাড়ির গ্যাস সিলিন্ডার ছিল সেগুলো থেকে চেইন রিঅ্যাকশনের মাধ্যমে এটি ছড়িয়ে পড়েছিল।

কতগুলো বাড়িতে কেমিক্যাল রয়েছে এমন তালিকা আছে কি না জানতে চাইলে মেয়র বলেন, এখানে বিষ্ফরোক দ্রব্য অধিদপ্তরের কিছু তালিকা রয়েছে, আমাদের সঠিক তালিকা নেই। আমরা প্রতিটি বাড়িতে এক এক করে পরিদর্শন করব।

বাড়ির মালিকদের সর্তক করে বলেন, এখনো যদি কারো বাড়িতে কোনো রকম কেমিক্যাল গোডাউন থাকে, আপনারা নিজ উদ্যোগে সেটা সরিয়ে নেবেন। আর যদি এই অভিযান পরিচালনার সময় কারো বাড়িতে কেমিক্যালের অস্তিত্ব পাওয়া যায় তাহলে যেই বাড়িরতে পাওয়া যাবে সেই বাড়ির মালিককে আইনের আওতায় এনে আইনানুযায়ী তার বিচার করা হবে। এখনো যদি কারো বাসায় কেমিক্যাল গোডাউন রেখে থাকেন অনতিবিলম্বে নিজের নিরাপত্তার স্বার্থে সেটা সরিয়ে নেবার উদ্যোগ গ্রহণ করুন। তানাহলে ধরা পড়লে সর্বপ্রথম বাড়ির মালিককে আইনের আওতায় আনা হবে।

উচ্ছেদ করার পর সেসব কেমিক্যাল কি করা হবে এমন প্রশ্নের জবাবে মেয়র বলেন, প্রথম অপসারণ করে আমাদের গাড়ি লোড করে নিরাপদ দূরত্বে নিয়ে যাব। এরপর চেক করা হবে যদি ২৯টি দাহ্য পদার্থের মধ্যে কোনোটি পাওয়া যায় তাহলে সেগুলো জব্দ করা হবে। আর যদি দাহ্যে পদার্থের মধ্যে না পড়ে তাহলে এর মালিককে বুঝিয়ে দেব নিরাপদ জায়গায় সরিয়ে নেবার জন্য।

ওয়াহেদ ম্যানশনের কেমিক্যাল রাখা অবৈধ কি না এমন প্রশ্নর জবাবে মেয়র বলেন, কেমিক্যাল গোডাউন সবগুলোই আনের বাইরে। বাসাবাড়িতে কেমিক্যাল মজুদ করা আইনানুযায়ী এটা এমনিতিই অবৈধ। এখন আমরা দেখব যদি ঝুঁকিপূর্ণ থাকলে জব্দ করা হবে।

   

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ট্রেনের ধাক্কায় রিকশার যাত্রী নিহত



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ব্রাহ্মণবাড়িয়া
ছবি: বার্তা ২৪

ছবি: বার্তা ২৪

  • Font increase
  • Font Decrease

ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা সদরে রেলক্রসিং অতিক্রম করার সময় ট্রেনের ধাক্কায় রায়হান মিয়া (৩৫) নামে এক রিকশার যাত্রীর নিহত হয়েছেন। 

বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) রাত ১১টার দিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলওয়ে স্টেশন সংলগ্ন পুনিয়াউট রেলক্রসিংয় এলাকায় এই ঘটনা ঘটে। নিহত রায়হান কিশোরগঞ্জ জেলার বাজিতপুর উপজেলার দিলালপুর গ্রামের মৃত বাহার মিয়ার ছেলে। পরিবার নিয়ে তিনি ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের পুনিয়াউট এলাকায় ভাড়া বাসায় থাকতেন। রায়হান একই এলাকার সাগর নামের এক ব্যক্তির ড্রেজারের ড্রাইভার ছিলেন। এ ঘটনায় রায়হানের শিশুকন্যা ইকরা জাহান ইফতি (৮) আহত হয়েছে। তাকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালের সার্জারী বিভাগে ভর্তি করা হয়েছে।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলওয়ে স্টেশন পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ সাইফুল ইসলাম জানান, ঈদের ছুটি শেষে স্ত্রী-সন্তানদের নিয়ে গ্রামের বাড়ি থেকে বৃহস্পতিবার রাতে ভৈরব থেকে তিতাস কমিউটার ট্রেনে করে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ফিরেন রায়হান। পরে স্টেশন থেকে রিকশায় করে বাসায় যাওয়ার পথে পুনিয়াউট রেলক্রসিং অতিক্রমের সময় ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা নোয়াখালী অভিমুখী নোয়াখালী মেইল ট্রেনটি তাদের রিকশাটিকে ধাক্কা দেয়। এতে রায়হান ও তার শিশুকন্যা ইফতি গুরুতর আহত হন।

তিনি আরও জানান, আহতদের উদ্ধার করে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালে নেয়ার পর জরুরি বিভাগের চিকিৎসক অনিক দেব রায়হানকে মৃত ঘোষণা করেন। মরদেহটি হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে। এ ঘটনায় প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।

;

সিজারিয়ান প্রসবে নিষেধাজ্ঞার দাবি কি যৌক্তিক?



খন্দকার আরিফুজ্জামান, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪
সিজারিয়ান প্রসবে নিষেধাজ্ঞার দাবি কি যৌক্তিক?

সিজারিয়ান প্রসবে নিষেধাজ্ঞার দাবি কি যৌক্তিক?

  • Font increase
  • Font Decrease

সিজারিয়ান প্রসবে নিষেধাজ্ঞা যৌক্তিক কিনা তা নিয়ে বিভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি ও বিতর্ক থাকতে পারে। তার আগে জানা দরকার সিজারিয়ান প্রসব কেন করতে হয়। সিজারিয়ান প্রসব করা হয় যখন মা স্বাভাবিক প্রসবের মাধ্যমে শিশুর জন্ম দিতে অপারগ হন বা মেডিকেল হিস্ট্রি অনুযায়ী যদি মায়ের স্বাস্থ্যঝুঁকি বেশি থাকে। সেক্ষেত্রে ডাক্তারগণ মা এবং শিশুর স্বাস্থ্য সুরক্ষায় সিজারিয়ান প্রসবের সিদ্ধান্ত নেন। তবে কিছু ক্ষেত্রে স্বাভাবিক প্রসবে কোনও ঝুঁকি না থাকা সত্ত্বেও গর্ভবতী মায়ের ইচ্ছেতেও অনেক সময় সিজারিয়ান প্রসব করতে হয়।

সর্বশেষ জাতীয় জনসংখ্যা গবেষণা ও প্রশিক্ষণ ইন্সটিটিউটের (নিপোর্ট) একটি সমীক্ষাতে বাংলাদেশ ডেমোগ্রাফিক অ্যান্ড হেলথ সার্ভে (বিডিএইচএস) ২০২২-এর প্রাথমিক ফলাফলে দেখা যায় যে, ২০১৭ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত মাত্র ৫ বছরে সিজারিয়ান প্রসবের ঘটনা ৩৪ থেকে বেড়ে ৪৫ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। এ সমীক্ষাই প্রমাণ করে বাংলাদেশে অস্ত্রোপচার বা সিজারিয়ান সন্তান জন্মদানের প্রবণতা কতটুকু বেড়েছে।

যদিও সিজারিয়ান প্রসব করানো হয় শুধুমাত্র প্রসবের সময় কোনও জটিলতা দেখা দিলে। তবে বাংলাদেশে প্রয়োজন না থাকা সত্ত্বেও দিন দিন বেড়েই চলছে সিজারিয়ান প্রসবের প্রবণতা। সমীক্ষায় এর কারণ হিসেবে বলা হয়েছে, বিভিন্ন স্বাস্থ্যকেন্দ্র ও হাসপাতালে গিয়ে প্রসব করানোর প্রবণতা বাড়ার কারণে।  সরকারি হাসপাতালে সিজারিয়ান সেকশনের হার কম হলেও বেসরকারি হাসপাতাল এবং স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলোতে উল্লেখযোগ্য হারে হচ্ছে সিজারিয়ান প্রসব। তবে প্রয়োজন না থাকা সত্ত্বেও সিজারিয়ান প্রসব করা হলে মা ও শিশু উভয়ই পড়তে পারে ঝুঁকির মুখে।

কিছু কিছু ক্ষেত্রে মেডিকেল হিস্ট্রি অনুযায়ী স্বাভাবিক প্রসব সম্ভব হয় না, সে ক্ষেত্রে সিজারিয়ান প্রসব তখন বাধ্যতামূলক হয়ে দাঁড়ায়। যেমনটি ঘটেছিল দুই সন্তানের জননী সানজিদা মাহমুদ চৈতির ক্ষেত্রে। চৈতি বার্তা২৪.কমকে জানান, তার প্রথম সন্তানের প্রসব স্বাভাবিকভাবে হওয়ার কথা থাকলেও, শিশু গর্ভেই মলত্যাগ করে ফেলে এমনকি শিশু অক্সিজেনও নিতে পারছিল না। এবং চৈতি নিজেও দুর্বল হয়ে পড়েন। যে কারণে আর কোনও উপায় না পেয়ে মা ও শিশুকে বাঁচাতে শেষ পর্যন্ত ডাক্তারকে সিজারিয়ান সেকশনে যেতে হয়েছে।

চৈতি বলেন, আমিও খুব চেষ্টা করছিলাম স্বাভাবিক প্রসবের জন্য। কিন্তু শেষ পর্যন্ত পারিনি। তবে এটাও ঠিক, ডাক্তার যদি সে সময়ে সিজারিয়ান সেকশনে না যেতেন তাহলে হয়তো আমি আজকে বেঁচে থাকতাম না।

সিজারিয়ান প্রসব করাবেন বলে রাজধানীর একটি হাসপাতালে ভর্তি আছেন তাশফিয়া। কেন তিনি সিজার করাবেন প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, 'আমি ছোটবেলা থেকেই সামান্য ব্যথাও সহ্য করতে পারি না। ভয় হচ্ছে কীভাবে কী হবে। সিজারে কষ্ট কম হবে শুনেছি তাই সিজারই করব।'

সিজারিয়ান প্রসব নিয়ে বার্তা২৪.কমের কথা হয় গাইনি বিশেষজ্ঞ ডা. সালিমা আখতার জাহানের সাথে। তিনি বলেন, আমি দেশে-বিদেশে অসংখ্য ডেলিভারি কেস হ্যান্ডেল করেছি এবং এখনও করছি। আমি সবসময়ই চেষ্টা করি স্বাভাবিক প্রসব করানোর জন্য। তবে সিজারিয়ান সেকশনের ইন্ডিকেশন যখন আসে তখন আর কিছু করার থাকে না, সিজারিয়ান সেকশনে যেতে হয়। মায়ের গর্ভের জায়গা অনুযায়ী বাচ্চা ঠিক আছে কিনা, বাচ্চার ওজন ঠিক আছে কিনা, বাচ্চার আকার ঠিক আছে কিনা, গর্ভের ভেতরে বাচ্চার পজিশন ঠিক আছে কিনা-এই সব যদি ঠিক থাকে তাহলে স্বাভাবিক প্রসবই হবে। যদি এগুলো ঠিক না থাকে সেক্ষেত্রে আমাদের সিজারিয়ান সেকশনে যেতে হয় এবং পৃথিবীর সব দেশেই একই নিয়মে সিজারিয়ান সেকশনে যান ডাক্তারেরা।

তিনি আরও বলেন, পূর্বে আমাদের দাদি-নানিদের সময়ে তারা অনেক পরিশ্রম করতেন, তাদের ফিজিক্যাল অ্যাক্টিভিটি হত। যে কারণে তাদের স্বাভাবিক প্রসবই হত। কিন্তু বর্তমানে তা হয় না। যে কারণে কিছু কিছু ক্ষেত্রে সিজারিয়ান সেকশনে যাওয়া ছাড়া আর কোন উপায়ই থাকে না।

অপ্রয়োজনে সিজারিয়ান সেকশনে যাওয়া ঝুঁকিপূর্ণ হলেও, সিজারিয়ান সেকশন একবারে বাদ দিয়ে দেওয়া সম্ভব নয়। বর্তমানে এমন অনেক দেখা যায়, গর্ভবতীর ৫ ঘণ্টা ধরে প্রসব ব্যথা হচ্ছে কিন্তু প্রসবের রাস্তা ছোট বা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় কোনভাবেই বাচ্চা প্রসব হচ্ছে না- এমন অবস্থায় সিজারিয়ান প্রসবই করাতে হয়। এমন আরও অসংখ্য কারণ রয়েছে। সুতরাং, সিজারিয়ান সেকশন বাদ দেওয়ার কোনও রাস্তা নাই। যার মেডিকেল হিস্ট্রি স্বাভাবিক থাকবে তার স্বাভাবিক প্রসব হবে এবং যার স্বাস্থ্যগত  ঝুঁকি থাকবে তার সিজারিয়ান প্রসব হবে। এভাবেই বলছিলেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ডা. সানজিদা তাবাসসুম।

এদিকে, সম্প্রতি মিটফোর্ড হাসপাতাল থেকে গর্ভবতী নারীকে বের করে দেওয়ার ঘটনা সামনে আসার পর বুধবার (১৭ এপ্রিল) এক বিজ্ঞপ্তিতে সিজারিয়ান প্রসবের ওপর বিধিনিষেধ আরোপের লক্ষ্যে রাষ্ট্রীয়ভাবে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন বলে দাবি জানিয়েছে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন।

ওই বিজ্ঞপ্তিতে কমিশন জানায়, গত ১৩ এপ্রিল সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ‘গর্ভবতী মাকে মিটফোর্ড হাসপাতাল থেকে বের করে দিলেন গাইনি চিকিৎসক’ শিরোনামে প্রতিবেদন জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের দৃষ্টিগোচর হয়।

বিবৃতিতে বলা হয়, গত শনিবার এক বেসরকারি টেলিভিশনে প্রচারিত সংবাদ প্রতিবেদন থেকে মানবাধিকার কমিশন জানতে পারে, মিটফোর্ড হাসপাতালে সন্তান প্রসব করাতে গিয়েছিলেন রাজধানীর শ্যামপুরের এক নারী। পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে তাকে স্বাস্থকর্মী জানায় সব স্বাভাবিক রয়েছে। পরে দায়িত্বরত চিকিৎসক তার আর্থিক অবস্থা জানতে চান এবং অস্ত্রোপাচারের নির্দেশ দেন। কিন্তু ওই নারী তার আগের দুই সন্তান স্বাভাবিক প্রসব হয়েছে জানিয়ে অস্ত্রোপাচারে অপরাগতা প্রকাশ করেন। এতে চিকিৎসক ক্ষিপ্ত হয়ে রোগীর উপর নানা প্রকার মানসিক চাপ তৈরি করেন। চিকিৎসক আপত্তিকর মন্তব্যসহ হয়রানিমূলক কথা বলার অভিযোগ উল্লেখ করা হয়। পরবর্তীতে মুগদা নবস্বাস্থ্য নামের এক সরকারি হাসপাতালে ওই নারীর স্বাভাবিক প্রসব হয়।

;

পহেলা বৈশাখে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার তরুণী, গ্রেফতার ৫



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা ২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে ঢাকার কেরানীগঞ্জে বন্ধুর সঙ্গে ঘুরতে বেরিয়ে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকারের অভিযোগ করেছেন এক তরুণী (১৯)। তার করা মামলায় এরই মধ্যে অভিযুক্ত ৫ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ১৬৪ ধারায় দেওয়া জবানবন্দিতে অপরাধের কথা স্বীকার করেছে আসামিরা।

গ্রেফতারকৃতরা হলেন- মো. রাহাত (১৮), মো. সোহাগ আলম (২০), শহিদুল ইসলাম (২১), মিলন (২৩) ও মো. মাসুম (২৫)

১৪ এপ্রিলে রাজধানীর মোহাম্মদপুর থেকে দুই সহকর্মীর সঙ্গে ঘাটারচর সংলগ্ন মধু সিটিতে ঘুরতে গিয়েছিলেন তরুণী।  এরপরই রক্ষক হয়ে ভক্ষকের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয় আবাসন প্রতিষ্ঠানটির নিরাপত্তাকর্মী মাসুম। পরে তার সঙ্গে যোগ দেয় আরও কয়েকজন।

হাউজিংয়ের ভেতরে ছবি তোলার সময় ৫-৭ জন মিলে তাদের বিভিন্ন ধরনের প্রশ্ন করতে থাকেন। এক পর্যায়ে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে তারা ওই তরুণী ও তার সহকর্মীদের কাছ থাকা নগদ টাকা ও মোবাইল ছিনিয়ে নিয়ে যায়। এরপর তাদের টানাহেঁচড়া করে হাউজিংয়ের আরও ভিতরে ফাঁকা জায়গায় নিয়ে যান। সেখানে তরুণীর দুই সহকর্মীকে বেদম মারধর করে আটকে রাখে আসামিরা।

এরপর আসামিরা ওই তরুণীকে জোরপূর্বক হাউজিংয়ের উত্তর-দক্ষিণমুখী রাস্তার পূর্ব-পশ্চিম রোডের খালের উত্তর পাশে নিয়ে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ করেন। পরে ঘটনা কাউকে জানালে ক্ষতি করার হুমকি দিয়ে চলে যায়।

এ ঘটনায় পরদিন সোমবার তরুণী বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে কেরানীগঞ্জ মডেল থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেন।

কেরানীগঞ্জ মডেল থানার ওসি মোস্তফা কামাল জানান, ঘটনাটি জানার পরপরই আসামিদের গ্রেফতারে পুলিশের চৌকস একটি টিম তদন্ত কার্যক্রম শুরু করে। পরে ঘটনার আশপাশের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ বিশ্লেষণ ও তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় বিভিন্ন জায়গায় ধারাবাহিক অভিযান চালিয়ে সংঘবদ্ধ ধর্ষণে জড়িত পাঁচ জনকে গ্রেফতার করা হয়।

ওসি বলেন, গ্রেফতারকৃতরা পেশাদার অপরাধী। তারা প্রতিনিয়ত চুরি ছিনতাইসহ নানা অপকর্ম করে বেড়াত।

ভুক্তভোগী বলেন, তাদের সাথে শারীরিক সম্পর্ক করা জন্য প্রস্তাব দেয়া হয়। আমি রাজি না হওয়ায় তারা ব্লেড বের করে মুখের সামনে এসে আমাকে ভয় দেখিয়েছে। তখন আমি বাধা দিয়েছি। তারা তখন আমকে বলে আমি যদি রাজি না হই তাহলে আমার সহকর্মীদের মেরে ফেলে দেয়া হবে।  ওই তরুণী জানান, অনেক অনুরোধের পরও মন গলেনি ধর্ষকদের।

তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের সবাইকে বিবস্ত্র করে ছবি তোলা হয় এবং ভিডিও করা হয়। তারপর আমাদের ভয় দেখানো হয়। যদি পুলিশ বা এলাকার কারও কাছে বিষয়টি জানাই তাহলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভিডিও ছেড়ে দেয়া হবে। বাধা দিতে এলে সহকর্মী সিজানকে তারা প্রচুর মারধর করে। আমি এর সঠিক বিচার চাই। আমি চাই না আমার মত আর কোন মেয়ে এমন ভোগান্তিতে পড়ুক।  আমি তাদের শাস্তি চাই।’

কেরানীগঞ্জ সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শাহাব উদ্দিন কবির বলেন, ‘এই ঘটনার সাথে পাঁচজন সরাসরি জড়িত। কিন্তু এদের যারা সহযোগী বা যারা ওখানে আড্ডা দেয় তাদেরকে আমরা শনাক্ত করেছি।  তদন্তের স্বার্থে তাদের নাম বলা যাবে না। ঘটনাটি গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত করা হচ্ছে। ছাড় দেয়া হবে না কাউকেই।’

এদিকে মঙ্গলবার মামলা হলে ওই রাতেই অভিযান চালিয়ে ৫ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। আদালতে হাজির করা হলে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয় আসামিরা। এমন নির্জন স্থানে এটিই প্রথম নয়, এর আগেও একই ধরনের ঘটনা ঘটানোর কথা স্বীকার করেছে আসামিরা। 

 

;

নড়াইলে জমি নিয়ে বিরোধে ৩ জনকে কুপিয়ে জখম 



ডিসট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, নড়াইল
নড়াইলে জমি নিয়ে বিরোধে ৩ জনকে কুপিয়ে জখম 

নড়াইলে জমি নিয়ে বিরোধে ৩ জনকে কুপিয়ে জখম 

  • Font increase
  • Font Decrease

নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার লোহাগড়া ইউনিয়নের চরবকজুড়ি গ্রামের এরশাদ মোল্যার ও একই গ্রামের মো. মহিউদ্দিন মোল্যার মধ্যে জমি নিয়ে বিরোধের জেরে নাজমা বেগম, এরশাদ মোল্যা, হারুন মোল্যাকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে গুরুতর আহত করেছে।

বুধবার (১৭ এপ্রিল) সন্ধ্যা ৬টার দিকে এরশাদ মোল্যার বাড়িতে এ ঘটনায় । ঘটনায় থানায় একটি মামলা দায়ের হয়েছে।

এজাহার ও স্বজনদের সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার চরবকজুড়ি গ্রামের হুমায়ুন মোল্যার পরিবারের সঙ্গে জমিজমা সংক্রান্ত বিষয়ে দীর্ঘদিন একই গ্রামের মো. মহিউদ্দিন মোল্যার পরিবারের মধ্যে ঝামেলা চলছিলো। এরই জের ধরে বুধবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার সময় মহিউদ্দিন মোল্যা, আফজাল মোল্যা, উজ্জল মোল্যা, খোকা মোল্যা, লিঠু মোল্যা, মনসুর মোল্যা, জাহিদ মোল্যা, উজ্জ্বল মোল্যা, মুকিত মোল্যা, রঞ্জু মোল্যা, সাইদ মোল্যাসহ মোট ১৪/১৫ জন মিলে দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে নাজমা বেগম, এরশাদ মোল্যা, হারুন মোল্যাকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে গুরুতর জখম করে পালিয়ে যায়।

এ সময় স্থানীয় লোকজন আহতদেরকে দ্রুত লোহাগড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসলে কর্তব্যরত চিকিৎসক প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য গুরুতর আহত নাজমা বেগমকে নড়াইল সদর হাসপাতালে পাঠায়। এ ছাড়া আহত বাকি ২ জন এরশাদ মোল্যা ও হারুন মোল্যা লোহাগড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছে বলে জানা গেছে।

এ সময় আহত এরশাদ মোল্যা প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে আহত ভাই-বোনের জন্য উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সামনে ফার্মেসি থেকে ঔষধ কেনার জন্য আসলে পুনরায় দুর্বৃত্তরা এরশাদ মোল্যাকে এলোপাতাড়ি পিটিয়ে জখম করে। এ সময় নিজেকে রক্ষা করার জন্য এরশাদ মোল্যা দৌড়ে লোহাগড়া থানায় আশ্রয় নেন। পরবর্তীতে পুলিশি হেফাজতে তাকে চিকিৎসার জন্য লোহাগড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করানো হয়।

এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) আহতদের বোন লোহাগড়া উপজেলার লংকারচর গ্রামের বাবুল হোসেনের স্ত্রী সাবিনা ইয়াসমিন বাদী হয়ে উল্লিখিত ১১ জনকে ও অজ্ঞাতনামা আরও ৩-৪ কে আসামি করে লোহাগড়া থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।

এ বিষয়ে আহত মহিউদ্দিন মোল্যা বলেন, এ ঘটনায় আমার কোন ধরনের সম্পৃক্ততা নেই, এরশাদ মোল্যার পরিবারের সঙ্গে আফজাল মোল্যার মারামারি হচ্ছিলো। তখন আমি মারামারি ঠেকাতে গেলে প্রতিপক্ষের লোকজন আমাকে মারপিট করে আমার বাম হাত ভেঙে দেয়। আমি এখন লোহাগড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আছি।

এ বিষয়ে লোহাগড়া থানার পরিদর্শক ( তদন্ত ) আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, মারামারির খবর পেয়ে সঙ্গে সঙ্গে পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে যায় এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসে। এ ঘটনায় ১১ জনসহ অজ্ঞাত আরও ৩-৪ জনকে আসামি করে থানায় একটি মামলা রুজু হয়েছে। আসামিদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। প্রতিপক্ষের কেউ থানায় এখনো কোন অভিযোগ করেনি, তবে অভিযোগ পেলে সেটিও তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থাগ্রহণ করা হবে।

;