কাদেরের সঙ্গে সিঙ্গাপুরে গেলেন তার স্ত্রী



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, ঢাকা, বার্তা২৪.কম
অসুস্থ কাদেরের সাথে সিঙ্গাপুর গেলেন তার স্ত্রী ইসরাতুন্নেসা, ছবি: সংগৃহীত

অসুস্থ কাদেরের সাথে সিঙ্গাপুর গেলেন তার স্ত্রী ইসরাতুন্নেসা, ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের সঙ্গে সিঙ্গাপুরে গেলেন তার স্ত্রী ইসরাতুন্নেসা কাদের।

উন্নত চিকিৎসার জন্য সোমবার (৪ মার্চ) বিকালে সোয়া ৩টার দিকে কাদেরকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতাল (বিএসএমএমইউ) থেকে এ্যাম্বুলেন্স করে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর নেওয়া হয়।

সেখান থেকে মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালের এয়ার এ্যাম্বুলেন্সে করে সিঙ্গাপুর পথে রওনা হয়।

এর আগে সকালের দিকে কাদের শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল থাকার পরও শুধুমাত্র ভারতের প্রখ্যাত হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. দেবী শেঠির পরামর্শের জন্য অপেক্ষা করছিলেন বিএসএমএমইউ ডাক্তাররা।

উন্নত চিকিৎসার জন্য রোববার রাতেই সিঙ্গাপুর থেকে এয়ার এ্যাম্বুলেন্স আনা হয় দেশে। সে সময় শারীরিক অবস্থা অস্থিতিশীল থাকায় ডাক্তাররা কোনভাবেই শিফট করতে পরামর্শ দেননি।

ডাক্তার বলেছিলেন অপেক্ষা করতে। দুপুর দিকে শেঠি ভারত থেকে এসে ওবায়দুল কাদের এনজিওগ্রাম থেকে শুরু করে চিকিৎসার সমস্ত কিছু পর্যবেক্ষণ পর শিফট করা পরামর্শ দেন।

সংবাদ সম্মেলন বিএসএমএমইউর উপাচার্য ডা. কনক কান্তি বড়ুয়া বলেন, 'শেঠি বলেছিলেন, এই মুহূর্তে শিফট করা সম্ভব। এটা প্রধানমন্ত্রীকে জানিয়েছি। সিঙ্গাপুরের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক দলের সক্ষমতা সাপেক্ষ যত দ্রুত সম্ভব শিফট করছি। সমস্ত কিছু পর্যালোচনা করেছে ডা. দেবী শেঠি। দেখার পর তিনি বলেছেন, হোয়াট এভার ডান ইউর মেডিকেল টিম, এক্সিলেন্টস। এ সময় কাদেরের সহধর্মিণীকে শেঠি বলেছেন, ইউ আর লাকি, ইউরোপ আমেরিকায়ও এরকম চিকিৎসা হয়।'

   

রাজধানীতে মাদকবিরোধী অভিযানে গ্রেফতার ২৭



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
রাজধানীতে মাদকবিরোধী অভিযানে গ্রেফতার ২৭

রাজধানীতে মাদকবিরোধী অভিযানে গ্রেফতার ২৭

  • Font increase
  • Font Decrease

রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় মাদকবিরোধী অভিযান চালিয়ে ২৭ জনকে আটক করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) অপরাধ ও গোয়েন্দা বিভাগ। মাদক বিক্রি ও সেবনের অভিযোগে তাদের আটক করা হয়েছে বলে জানানো হয়েছে।

মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) সকাল ছয়টা থেকে বুধবার (২৪ এপ্রিল) সকাল ছয়টা পর্যন্ত রাজধানীর বিভিন্ন থানা এলাকায় অভিযান চালিয়ে মাদকদ্রব্য উদ্ধারসহ তাদেরকে আটক করা হয়।

এ সময় তাদের কাছ থেকে ৫১০ পিস ইয়াবা, ১০ কেজি ৪০০ গ্রাম ৪০ পুরিয়া গাঁজা, ১৫১ গ্রাম হেরোইন ও ৩ বোতল ফেনসিডিল উদ্ধার করা হয়েছে বলে জা‌নিয়েছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) অপরাধ ও গোয়েন্দা বিভাগ।

ডিএমপির নিয়মিত মাদকবিরোধী অভিযানের অংশ হিসেবে এ অ‌ভিযান প‌রিচালনা করা হয়েছে বলে জানানো হয়। সেই সঙ্গে আটককৃতদের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট থানায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে ২৩টি মামলা রুজু হয়েছে বলেও জানানো হয়।

;

রানা প্লাজা ধসের ১১ বছর, নিহত শ্রমিকদের প্রতি শ্রদ্ধা



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা ২৪.কম, সাভার (ঢাকা)
ছবি: বার্তা ২৪

ছবি: বার্তা ২৪

  • Font increase
  • Font Decrease

আলোচিত রানা প্লাজা ধ্বসের ১১ বছর পূর্তি উপলক্ষে ধসে পড়া রানা প্লাজার সামনে অস্থায়ী স্মৃতিস্তম্ভে ফুল দিয়ে নিহত শ্রমিকদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েছেন শিল্প পুলিশ-১, বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠনের নেতা-কর্মীসহ ভবন ধ্বসের ঘটনায় আহত শ্রমিক ও নিহতের স্বজনেরা। 

বুধবার (২৪ এপ্রিল) সকাল থেকে সাভার বাজার স্ট্যান্ড সংলগ্ন ধসে পড়া রানা প্লাজার সামনে অস্থায়ী স্মৃতিস্তম্ভে এই শ্রদ্ধা জানান তারা। এসময় বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেন তারা।

শ্রদ্ধা জানাতে আসা নিহত শ্রমিকদের স্বজন ও আহত শ্রমিকরা ভবন মালিক সোহেল রানার সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ডের দাবি জানান। পাশাপাশি আহত শ্রমিকদের ক্ষতিপূরণ ও পুনর্বাসন দাবি করেন।

এদিকে, যে কোন ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে ধসে পড়া রানা প্লাজার সামনে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।

;

মেহেরপুরে তীব্র তাপপ্রবাহ, ব্যহত হচ্ছে কৃষি কাজ



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, মেহেরপুর
ছবি: বার্তা ২৪

ছবি: বার্তা ২৪

  • Font increase
  • Font Decrease

মেহেরপুরে সকাল থেকেই তীব্র গরমে অতিষ্ট হয়ে পড়ছে জনজীবন। কয়েকটি জেলার মত মেহেরপুর জেলার উপর দিয়ে বয়ে যাচ্ছে তীব তাপপ্রবাহ।

বুধবার (২৪ এপ্রিল) সকাল ১০ টায় ৪১ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করেছে জেলার আবহাওয়া অফিস।

এদিকে রোদের তীব্রতায় ক্ষেত খামারের কাজে নেমে এসেছে স্থবিরতা। প্রয়োজনীয় শ্রমিক না পেয়ে ফসল ঘরে তুলতে পারছেন না কৃষকরা।

চাষিরা জানান, বৈশাখ মাঠের আবাদ হিসেবে পাট ও সবজি বীজ বপন এবং বোরো ধানের পরিচর্যা নিয়ে ব্যস্ততা রয়েছে। তবে সকাল ১০ টার পর থেকে মাঠে অবস্থান বেশ কষ্টসাধ্য হয়ে পড়ছে।

এছাড়া জেলাজুড়ে ভুট্টা ও তামাক ঘরে তোলার কাজ চলছে পুরোদমে। প্রচণ্ড গরমে রোদের মধ্যে কাজ করতে চাইছেন না শ্রমিকরা। কাজের জন্য মিলছে না প্রয়োজনীয় সংখ্যক শ্রমিক। দুয়েকজন শ্রমিক পাওয়া গেলেও তারা দিনের পুরো সময় কাজ করতে নারাজ। রোদ ও গরমে কাজ করতে গিয়ে অসুস্থ হয়ে পড়ছেন অনেক শ্রমিক ও চাষি। কাজের ফাঁকে প্রয়োজনীয় পানি পান করেও মিলছে না স্বস্তি। বিশ্রামের ফাঁকে ফাঁকে কাজ করার চেষ্টা হলেও তাতে মারাত্মকভাবে ব্যহত হচ্ছে ফসল ঘরে তোলার কাজ।

;

রানা প্লাজা ধসের ১১ বছর

বাবা-মা হারানো ২১ শিশু বেড়ে উঠছে গাইবান্ধার ‘অরকা হোমসে’



মাসুম বিল্লাহ, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম,গাইবান্ধা
ছবি: বার্তা ২৪

ছবি: বার্তা ২৪

  • Font increase
  • Font Decrease

আজ ২৪ এপ্রিল, সাভারের রানা প্লাজা ধসের ১১ বছর। ২০১৩ সালের আজকের এই দিনের সকাল পৌনে ৯টার দিকে সাভার বাসস্ট্যান্ডের পাশে রানা প্লাজা নামে একটি ৯ তলা ভবন ধসের ঘটেছিল। যেটি বাংলাদেশ তথা এশিয়ার অন্যতম বড় শিল্প দুর্ঘটনা ছিল । আর বিশ্ব ইতিহাসে তৃতীয় বৃহত্তম শিল্প দুর্ঘটনা। সেদিনের সেই ভয়াল দুর্ঘটনায় জীবন দিতে হয়েছিল ১ হাজার ১৭৫ জন শ্রমিককে। আর দুই হাজারেরও বেশি মানুষ হয়েছিলেন আহত। তাদের মধ্যে অনেকেই আজীবন পঙ্গুত্ববরণ করে বেঁচে আছেন।

লোমহর্ষক এই ট্রাজেডির শিকার অনেকেরই সন্তান নিঃসঙ্গতা আর অর্থাভাবে ভিন্ন ভিন্ন পথের সারথি হলেও অত্যন্ত মমতার আশ্রয়ে গাইবান্ধার 'অরকা হোমস' নামের একটি প্রতিষ্ঠানে বেড়ে উঠছে ২১ জন শিশু, কিশোর-কিশোরী। যাদের কেউ হারিয়েছে বাবাকে, কেউবা মাকে। কেউ কেউ আবার বাবা-মা উভয়কে হারিয়ে একেবারেই হয়েছে নিঃস্ব। কারও কারও বাবা-মা আহত হয়ে পঙ্গুত্ববরণ করেছে আজীবনের জন্য। এরা ছাড়াও আরও ৩১ জন এতিম-অসহায় শিশু-কিশোর-কিশোরীর ঠিকানা হয়েছে অরকা হোমসে। বাবা-মা হারানো দেশের বিভিন্ন জেলার এসব শিশুর লেখাপড়া, খেলাধুলা ও বিনোদনসহ পুনর্বাসনের দায়িত্ব নিয়েছে রাজশাহী ক্যাডেট কলেজের প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের সংগঠন ওল্ড রাজশাহী ক্যাডেট অ্যাসোসিয়েশন (অরকা)।

চট্টগ্রামের উত্তর পতেঙ্গায় ২০১৪ সালে অরকা হোমসের প্রথম কার্যক্রম শুরু হয়। একই বছরের ২২ ডিসেম্বর গাইবান্ধা শহর থেকে প্রায় পাঁচ কিলোমিটার দূরে ফুলছড়ি উপজেলার কঞ্চিপাড়া ইউনিয়নের হোসেনপুর গ্রামে অরকা হোমস প্রতিষ্ঠিত হয়।


প্রতিষ্ঠানটির কার্যালয় সূত্র জানায়, ২০১৪ সালের ২৬ ডিসেম্বর প্রায় ১ কোটি ৯০ লাখ টাকা ব্যয়ে তিন তলাবিশিষ্ট দুটি এবং পরবর্তীতে প্রায় দুই কোটি টাকা ব্যয়ে চারতলাবিশিষ্ট একটি ভবন নির্মাণ করা হয়। যেখানে ৫২ জন এতিম অসহায় শিশু, কিশোর-কিশোরী বসবাস করছেন। এদের মধ্যে ২১ জন মেয়ে ও ৩১ জন ছেলে রয়েছে। তাদের মধ্যে বর্তমানে ২১ জন রানা প্লাজা ট্র্যাজেডির শিশু-কিশোর-কিশোরী রয়েছে। সেখানে তারা থাকা-খাওয়াসহ লেখাপড়া চালিয়ে যাচ্ছে। এর মধ্যে ৯ জন মেয়ে, ১২ জন ছেলে। 

এদের মধ্যে ওই সময়ে (২০১৪) আসা সব থেকে কম বয়সী শিশু ছিল সৌরভ। তখন সৌরভের বয়স মাত্র ছয় বছর। ট্রাজেডিতে জীবন হারানো মায়ের সন্তান সৌরভের বয়স এখন ১৭ । সে নবম শ্রেণিতে পড়ে। সৌরভের বাড়ি জামালপুর জেলার সদর উপজেলার বলমুই পাড়া গ্রামে। ছয় বছর বয়সে আসা শিশু সৌরভের তখনকার কোনো কিছুই মনে পড়েনা। তবে, বড় হওয়ার সাথে সাথে সবই জেনে গেছে সৌরভ। প্রতিবছরই সেই ভয়াল দিনের খবর পত্রিকার পাতায় পড়ে, টেলিভিশনে দেখে।

একান্ত সাক্ষাৎকারে বার্তা২৪.কমের গাইবান্ধার এ প্রতিবেদকে সৌরভ জানায়, তারা বাবা বাদশা মিয়া কাজ করতে অক্ষম হওয়ায় তার মা কল্পনা বেগম সাভাবের একটি পোশাক শ্রমিকের কাজ নেয়। তার মা ওই ভবনের তিন তলায় পোশাক কারখানার অপারেটর হিসেবে কাজ করতেন। রানা প্লাজা ট্র্যাজেডিতে প্রাণ হারান তিনি। এরপর এতিম সৌরভের জায়গা হয় গাইবান্ধার অরকা হোমসে।

সৌরভ জানায়, ‘শুনেছি আমার যখন ছয় বছর; তখন মা রানা প্লাজায় মারা যায়। ধ্বংসযজ্ঞের ১৬ দিন পর মাকে খুঁজে পায় বাবা-ভাই ও আমার স্বজনরা। তখন নাকি মায়ের দেহ গলে পঁচে গেছিলো, কিন্তু তার গলায় থাকা পোশাক কারখানার আইডি কার্ড দেখে বাবা-মাকে চিনে নেয়।

সৌরভ জানায়, মা'র (মায়ের) আয় করা টাকায় আমাদের পরিবার চলত। মা চলে যাওয়ার পর আমাদের ভালো চলছিল না। পরে এখানে রেখে যায় বাবা। একমাত্র বড় ভাই বিয়ে করে সংসার করছে। বাবাও দ্বিতীয় বিয়ে করেছে। এখন খোঁজ-খবর রাখছে বয়স্ক (বৃদ্ধ) দাদা। এখানে আমি ভাল আছি।

মাকে মনে পড়ে কি না? এমন তিক্ত প্রশ্নের উত্তরে সৌরভ জানায়, সব সয়ে গেছে। ছয় বছরের শিশু থাকতেই আমি মাকে হারিয়েছি তো, এখন খুব একটা কষ্ট হয়না! তবে, প্রতিবছর এই দিনটি আসলে সাংবাদিক এবং বিভিন্নভাবে মায়ের কথা মনে পড়ে।

কোনো স্বপ্ন আছে ? এমন প্রশ্নের জবাবে সৌরভ জানায়, বড় হয়ে প্রতিষ্ঠিত হতে চাই। আর শ্রমিকের কাজ করতে গিয়ে আমার মা জীবন দিয়েছেন। একটা মা হারা শিশুর আশ্রয় হয়েছে অরকা হোমসে। আমিও এরকম একটি প্রতিষ্ঠান গড়ার স্বপ্ন দেখি। যেখানে অসহায়-এতিম ছেলে-মেয়েরা ছাড়াও আমাদের মতো গরীব ঘরের সন্তানেরা বিনা টাকায় খেয়ে- থেকে পড়ালেখা করতে পারেব। তারাও প্রতিষ্ঠিত হয়ে দেশের অসহায় মানুষদের পাশে দাঁড়াবে। এভাবেই দেশটি একদিন সহযোগিতার হাতেই পূর্ণ হবে। হয়তো তখন কেনো মাকে শ্রমিকের কাজে গিয়ে জীবন দিতে হবেনা।

প্রতিষ্ঠানটির সহকারি ম্যানেজার মিল্লাত মন্ডলের। তিনি প্রতিষ্ঠাকালীন সময় থেকেই অরকা হোমসে আছেন। পরে সৌরভকে নিয়ে কথা হয় তার সাথেও।


সৌরভের সম্পর্কে জানতে চাইলে স্মৃতিচারণ করে তিনি বলেন, ২০১৪ সালে সৌরভ যখন এখানে আসেন তখন ওর বয়স ছয় বছর। তখন এটি এতো প্রসারিত ছিলনা, ছিলনা জনবলও। ও (সৌরভ) তখন বিছানায় পেশাব করতো, আমিই পরিষ্কার করতাম। এখন অনেক বড় হয়েছে। এখানে আসার পর টানা একমাসের বেশি সময় ধরে সৌরভ প্রায় সার্বক্ষণিক মায়ের জন্য, বাড়ির জন্য কেঁদেছে। ওকে আমরা সবাই অনেক স্নেহে মানুষ করেছি। কারণ, সব থেকে ছোট এবং কম বয়সের ছিল সেদিনের মা হারা শিশু এই সৌরভ।

এসময় তিনি আরও বলেন, মা হারা সৌরভ অনেক ভদ্র এবং নম্র। সৌরভ প্রচন্ড মেধাবী। এখান আসার পর পড়া-লেখা শুরু হয় সৌরভের। সৌরভ দ্বিতীয় শ্রেণি থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত প্রত্যেক ক্লাসেই প্রথম (এক রোল)। আর এবার নবম শ্রেণিতে উঠেছে সৌরভ। এসময় সৌরভের আচরণে সন্তুষ্ট হয়ে প্রাণ ভরে দোয়া করেন-সৌরভ জীবনে অনেক বড় হোক।

শুধু সৌরভই নয়, আল আমিন মিয়া, জিয়াদ হোসেন, তাহমিনা আক্তার, বীথিসহ হোমসে আশ্রয় হওয়া সকলেরই আছে প্রায় একই রকম শোকগাথা ইতিহাস। তবে, এতিম-অসহায় এই শিশুদের স্বপ্ন পূরণে কাজ করেই চলেছেন অরকা হোমস।

পরে এদিন ক্যাম্পাসটি ঘুরে দেখা যায়, প্রকৃতির ছাঁয়াঘেরা অরকা হোমসের পুরো ক্যাম্পাস। এক ক্যাম্পাসের ভিতরেই সকল ভবন। চারতলা ভবনটিতে থাকে ছেলেরা। আর মেয়েরা থাকে তিনতলার দুটি ভবনের একটিতে। এখানে থাকা শিশু-কিশোরের সবাই পড়াশোনা করছে পাশের মুসলিম একাডেমিতে। এখানে আছে খেলার মাঠ, লাইব্রেরি ও বিনোদনের ব্যবস্থা। এছাড়া তাদের দেখভালের জন্য রয়েছেন একজন তত্ত্বাবধায়ক, একজন ম্যানেজার, সহকারী ম্যানেজার, নারী কেয়ারটেকারসহ আটজন । তাদের জন্য রয়েছে বেশ কয়েকজন গৃহশিক্ষকও। রয়েছেন শরীরচর্চার শিক্ষক। ধর্ম শিক্ষার ব্যবস্থাও রয়েছে সেখানে। নামাজের জন্য ক্যাম্পাসের ভিতরের রয়েছে সুন্দর পাকা মসজিদ।

গাইবান্ধা অরকা হোমসের তত্বাবধায়ক মো. জাহিদুল হক বার্তা২৪.কমকে জানান, ২০১৪ সালে মাত্র ৮টি বাচ্চা নিয়ে গাইবান্ধায় অরকা হোমসের যাত্রা শুরু হয়। এখন এখানে বাচ্চা রয়েছে ৫২টি। তার মধ্যে ২১ টি বাচ্চা রানা প্লাজা ট্র্যাজেডির বাবা-মা হারানো; বাকিরা এতিম-অসহায়। তাদের পড়াশোনা থেকে সবকিছুই আমরা দিচ্ছি।

তিনি বলেন, এই ২১ জন ছাড়াও বিভিন্ন সময়ে এখানকার ৩১ জন শিশু-কিশোরের কেউ মাধ্যমিক পেরিয়ে উচ্চ মাধ্যমিকে পড়তে, কেউ কারিগরি শিক্ষায় প্রশিক্ষিত হতে আবার কারও কর্মসংস্থান হওয়ায় অরকা হোমস ছেড়ে চলেও গেছেন।

এ সময় এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, দেশ-বিদেশে থাকা অরকার সদস্যদের আর্থিক সহায়তায়ই মূলত হোমসের ব্যয় মেটানো হয়। এছাড়া বাংলাদেশের তৈরি পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারকদের প্রতিনিধিত্বকারী সংগঠন 'বিজিএমইএ' প্রতিমাসে নির্দিষ্ট পরিমাণ আর্থিক অনুদান দিয়ে আসছেন।

;