মনোনয়ন না পেয়েও ন্যাম ভবন ছাড়েননি সাবেক এমপিরা



শাহজাহান মোল্লা, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
রাজধানীর মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে অবস্থিত ন্যাম ভবনের একাংশ/ ছবি: সংগৃহীত

রাজধানীর মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে অবস্থিত ন্যাম ভবনের একাংশ/ ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

দশম সংসদের মেয়াদ শেষ হয়েছে আরও দুই মাস আগে। নতুন সরকার গঠন শেষ হয়েছে সেও দুই মাস হতে চলল। এবার বেশকিছু সংসদীয় আসনে নতুন মুখ এসেছে। কাজেই নতুনদের জন্য পুরনোদের বাসা ছেড়ে দিতে হবে এটাই রেওয়াজ। তাছাড়া যিনি এমপি হতে পারেননি তার তো সরকারি বাসায় থাকারও কথা নয়।

এমপি হওয়া দূরের কথা মনোনয়নই নেননি- এমন এমপিরাও তাদের ন্যাম ভবনের বাসা দখলে রেখেছেন এখনো অবদি। সংসদ সচিবালয় থেকে চিঠি দেওয়ার পরেও ৩০ থেকে ৩৫ জন সংসদ সদস্য তাদের বরাদ্দকৃত বাসা বুঝিয়ে দেননি। যে কারণে নতুন এমপিদের বাসা বরাদ্দে হিমশিম খাচ্ছে সংসদ সচিবালয়।

মনোনয়ন পাননি এখনো বাসা দখলে রেখেছেন এমন অন্তত পাঁচ জন সংসদ সদস্যের সঙ্গে কথা হয় বার্তা২৪.কম এর প্রতিবেদকের সঙ্গে। তাদের অধিকাংশই বলছেন, ঢাকার বাইরে থাকায় ছাড়তে পারেননি। আবার কেউ বলছেন ঢাকায় উপযুক্ত পরিবেশে বাসা ভাড়া পাচ্ছেন না, তাই একটু সময় লাগছে। তবে বিষয়টি যে যুক্তিসঙ্গত হয়নি তারা স্বীকারও করেছেন।

বাসা না ছাড়ার তালিকাভুক্তদের মধ্যে দশম সংসদের বিরোধীদল জাতীয় পার্টির সদস্যরাই বেশি। অনেক সংরক্ষিত আসনের সদস্যরাও রয়েছেন।

একাদশ সংসদে দলীয় মনোনয়ন পাননি পিরোজপুর-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য এ কে এম এ আউয়াল। তার আসনে এবার গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম ভোট করেছেন। গত ৩০ ডিসেম্বরের আগেই তিনি বুঝতে পেরেছেন ন্যাম ভবনের বাসা ছেড়ে দিতে হবে। তারপরেও ছাড়েননি।

এ বিষয়ে এ কে এম এ আউয়াল বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘আমি এলাকায় রয়েছি, ন্যাম ফ্ল্যাটের বাসায় না থাকলেও বুঝিয়ে দিইনি। কিছুদিনের মধ্যেই দিয়ে দেব। আসলে নির্বাচনের পর সেভাবে ঢাকায় যাওয়া হয় না, তাই একটু সময় লেগেছে। সংসদ সচিবালয় থেকে আমাদের গত ২৮ ফেব্রুয়ারির মধ্যে ছেড়ে দেওয়ার জন্য চিঠি দিয়েছে। আমি দ্রুতই বুঝিয়ে দেব।’

কক্সবাজার-১ আসনের সংসদ সদস্য মো. ইলিয়াস বার্তা২৪.কম-কে বলেন, ‘এমপি হতে পারিনি, বাসা তো ছাড়তেই হবে। বাসায় এখনো আমার স্টিকার, ছবিসহ বিভিন্ন জিনিস রয়েছে। সেগুলো আগামী কয়েক দিনের মধ্যে সরিয়ে নেব এবং বাসা বুঝিয়ে দেব।’

জাতীয় পার্টির সাবেক সংসদ সদস্য হবিগঞ্জ-১ আসনের আব্দুল মুনিম চৌধুরী বার্তা২৪.কম-কে প্রথমে ন্যাম ভবনের বাসায় থাকার কথা বলেন। পরে যখন তাকে প্রশ্ন করা হয়, এবার তো সংসদ সদস্য হিসেবে ভোটও করেননি তাহলে কিভাবে বাসায় থাকেন? পরক্ষণেই বলেন, ‘আমি তো বাসায় থাকি না। এলাকায় থাকি। তবে বাসা বুঝিয়ে দেওয়া হয়নি। আগামী সপ্তাহের মধ্যে বুঝিয়ে দেব।’

দশম সংসদের জাতীয় পার্টির সংরক্ষিত আসনের সদস্য মেরিনা রহমান এখনো ন্যাম ফ্ল্যাটের বাসাতেই থাকেন। তিনি বার্তা২৪.কম-কে বলেন, ‘আমি চিঠি পাইনি। তবে নিয়ম অনুযায়ী যেহেতু এমপি না, তাই বাসা ছেড়ে দিতে হবে। তবে এবার আমার ছেলে আহসান আদেলুর রহমান সংসদ সদস্য হয়েছে। আমি যতটুক জানতে পেরেছিলাম আমার ছেলেই উঠবে। পরে শুনেছি পাশের একটি ফ্ল্যাট আমার ছেলেকে দেওয়া হয়েছে। আমি শীঘ্রই আমার নামে বরাদ্দকৃত বাসা ছেড়ে দেব।’

দশম সংসদে আওয়ামী লীগের সংরক্ষিত আসনের সদস্য উম্মে রাজিয়া কাজল এখনো ন্যাম ভবনের বাসাতেই থাকেন। তিনিও স্বীকার করেন, বাসাটি আরও আগেই ছেড়ে দেওয়া উচিত ছিল। তবে ঢাকায় বাসা পেতে একটু সময় লাগাতে তার বাসা ছাড়তে বিলম্ব হচ্ছে বলে জানান তিনি। তবে আগামী সাত দিনের মধ্যে ছেড়ে যেতে পারবেন বলে জানিয়েছেন কাজল।

এ রকম প্রায় ৫০ জন সংসদ সদস্য যারা এবার দলের মনোনয়ন না পেলেও তার নামে বরাদ্দকৃত বাসাটি দখলে রেখেছেন।

এ বিষয়ে জাতীয় সংসদের চিফ হুইপ নূর ই আলম চৌধুরী বার্তা২৪.কম-কে বলেন, ‘আমরা চিঠি দিয়েছি। পুরনো এমপিদের মধ্যে যারা এবার এমপি হতে পারেননি, তাদের গত ২৮ ফেব্রুয়ারির মধ্যে বাসা বুঝিয়ে দেওয়ার কথা। কিন্তু অনেকেই এখনো দেননি। যেহেতু তাদেরও নতুন বাসা পেতে সময় লাগে তাই একটু সময় নিচ্ছি। আশা করি অতি দ্রুত তারা বাসা ছেড়ে যাবেন।‘

একাদশ সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী না হলেও ন্যাম ভবনে বরাদ্দকৃত বাসা ছাড়েননি এমন তালিকায় আরও রয়েছেন আওয়ামী লীগ দলীয় সাবেক সংসদ সদস্য গাজিপুর-৩ আসনের অ্যাড. রহমত আলী, জাতীয় পার্টির কুমিল্লা-৮ আসনের নুরুল ইসলাম মিলন, কুড়িগ্রাম-৪ রুহুল আমিন, নড়াইল-২ আসনের শেখ হাফিজুর রহমান, নাটোর-২ আসনের আবুল কালাম আজাদ।

জাপা’র সংরক্ষিত আসনের নূর ই হাসনা লিলি চৌধুরী, এ, কে, এম মোস্তাফিজুর রহমান,সুকুমার রঞ্জন ঘোষ,এস. এম, আবুল কালাম আজাদ, অ্যাড. মোঃ রহমত আলী, মো. আব্দুর রহমান, বেগম হেপী বড়াল, বেগম রিফাত আমিন, বেগম ফাতেমা জোহরা রাণী, বেগম শাহানারা বেগম, বেগম সফুরা বেগম, বেগম আমাতুল কিবরিয়া কেয়া চৌধুরী প্রমুখ। এরা সবাই এখনো ন্যাম ফ্ল্যাটের বাসা নিজের দখলে রেখেছেন।

   

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে মানবাধিকার উইং চালুর পরামর্শ



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে মানবাধিকার সম্পর্কিত একটি নতুন শাখা চালু করার পরামর্শ দিয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি।

বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) জাতীয় সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত সংসদীয় কমিটির বৈঠকে এই পরামর্শ দেওয়া হয়। বৈঠক শেষে সংসদ সচিবালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

বৈঠকে ২৫ মার্চকে আন্তর্জাতিক গণহত্যা দিবস হিসেবে স্বীকৃতি আদায়ের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সুপারিশ করা হয়। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সদস্যদের নিয়ে রোহিঙ্গা ক্যাম্প কুতুপালং এবং ভাসানচর পরিদর্শনের জন্য বৈঠকে প্রস্তাব করা হয়।

কমিটির সভাপতি এ কে আব্দুল মোমেনের সভাপতিত্বে বৈঠকে কমিটির সদস্য ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ, শাহরিয়ার আলম, নাহিম রাজ্জাক, নিজাম উদ্দিন জলিল, নুরুল ইসলাম নাহিদ, হাবিবুর রহমান, সাইমুম সারওয়ার, জারা জাবীন মাহবুব অংশ নেন।

 

;

ঢাকাসহ ৮ জেলায় ৬০ কিমি বেগে ঝড়ের শঙ্কা



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

ঢাকাসহ দেশের আট জেলার ওপর দিয়ে ৬০ কিলোমিটার বেগে ঝড়ের আশঙ্কা করছে আবহাওয়া অফিস। সেইসঙ্গে বজ্রসহ বৃষ্টি হওয়ার সম্ভবনা রয়েছে বলা হচ্ছে।

শুক্রবার (২৯ মার্চ) সকাল ৯টা পর্যন্ত দেশের অভ্যন্তরীণ নদীবন্দরগুলোর জন্য দেওয়া এক পূর্বাভাসে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।

আবহাওয়াবিদ মো. শাহীনুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, খুলনা, বরিশাল, পটুয়াখালী, নোয়াখালী, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম, ঢাকা এবং সিলেট জেলার ওপর দিয়ে পশ্চিম অথবা উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে ঘণ্টায় ৪৫ থেকে ৬০ কিলোমিটার বেগে অস্থায়ীভাবে দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। এ সময় বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। তাই এসব এলাকার নদীবন্দরগুলোকে ১ নম্বর সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।

এদিকে, আবহাওয়া অফিসের অপর এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, পশ্চিমা লঘুচাপের বর্ধিতাংশ পশ্চিমবঙ্গ ও তার কাছাকাছি এলাকায় অবস্থান করছে। মৌসুমের স্বাভাবিক লঘুচাপ দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে।

এ অবস্থায় শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ঢাকা, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের দুয়েক জায়গায় অস্থায়ী দমকা বা ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি বা বজ্রবৃষ্টি হতে পারে।

;

ইসলামি সংগীত শিল্পী সালমানের মৃত্যুতে শোকের ছায়া



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ময়মনসিংহ
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

ময়মনসিংহের ত্রিশালে বাসের ধাক্কায় নিহত তিনজনের একজন সালমান আজাদী। তিনি জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গীত বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী এবং ইসলামি সঙ্গীত শিল্পী ও প্রশিক্ষক। তার মৃত্যুতে ক্যাম্পাসের শিক্ষক-শিক্ষার্থী এবং স্বজন-শুভাকাঙ্ক্ষীদের মাঝে নেমে এসেছে শোকের ছায়া।

বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) দুপুর সোয়া ১২টার দিকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান সালমান আজাদী।

তিনি বগুড়া জেলার শেরপুর উপজেলার হাপানিয়া এলাকার মৃত কোরবান আলীর ছেলে। নিহত সালমান স্ত্রী ও এক শিশুপুত্রকে নিয়ে নগরীর মাসকান্দা এলাকায় থাকতেন।

জানা গেছে, ইসলামি সংঙ্গীত শিল্পী হিসেবে ময়মনসিংহে বেশ জনপ্রিয় ছিলেন সালমান আজাদী। ইসলামি সঙ্গীতের প্রসারে নিজেই প্রতিষ্ঠা করেছেন সালমান ইসলামি সঙ্গীত একাডেমি। প্রায় দুই বছর ধরে এই প্রতিষ্ঠানে শিশুদের ইসলামি গান শেখাতেন। এছাড়াও ত্রিশালে কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের ইসলামি সঙ্গীতের প্রশিক্ষক ছিলেন তিনি।

উদীয়মান এ ইসলাম সঙ্গীত শিল্পীর মৃত্যুতে শোকাভিভূত পরিবার, আত্নীয়-স্বজন, ক্যাম্পাসের সহপাঠী-শিক্ষার্থী, ইসলামি সংস্কৃতি প্রেমিসহ শুভাকাঙ্ক্ষীরা। শতশত মানুষের ফেসবুক স্ট্যাটাসে যেন শোক বইয়ে পরিণত হয়েছে সানমানের ফেসবুক টাইমলাইন।

আব্দুর রহিম ভূঁইয়া নামে একজন লিখেছেন, কিছু মৃত্যুর সংবাদ মানুষকে ভীষণ বেদনা দেয়, ভীষণ কষ্ট দেয়। আর এই মৃত্যু যদি অকালে হয় বা আকস্মিক হয় তার শোক কাটিয়ে উঠা মোটেও সহজ না। সালমান আজাদী ইসলামিক শিল্প একাডেমির শিক্ষক ও স্বপ্নদ্রষ্টা ছিলেন। তিনি বাচ্চাদের নিয়ে অনেক স্বপ্ন দেখতেন। বাচ্চাদের সুস্থ ধারার ইসলামিক সাংস্কৃতিক চর্চার ব্যাপারে তার অনেক পরিকল্পনা ছিল।

হানজালা রমজান মুন্না নামে আরেকজন লিখেছেন, প্রিয় হাসিমাখা মুখ ও সুন্দর করে কথা উপস্থাপন ছিল যার নৈমিত্তিক অভ্যাস। ইসলামি সংস্কৃতি ছড়িয়ে দেয়ায় পেছনে ময়মনসিংহ শহরে যাদের অবদান, তাদেরই একজন ছিলেন। মনের মধ্যে ছিল ইসলামের জন্য তীব্র ভালবাসা। ভাইয়ের ভুল ত্রুটিগুলো ক্ষমা করে দিয়ে জান্নাতের উঁচু মাক্বাম দান করুন।

স্বামীর শোকে বাকরুদ্ধ স্ত্রী খাদিজা খাতুন জানান, সালমান নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গীত বিভাগে মাস্টার্সে অধ্যয়নরত ছিলেন। বৃহস্পতিবার ক্লাস করতেই ক্যাম্পাসের উদ্দেশ্যে ত্রিশাল যাচ্ছিলেন তিনি।

এদিকে সালমান আজাদীর অকাল মৃত্যুতে গভীর শোক জানিয়েছে নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় পরিবার। এক শোকবার্তায় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. সৌমিত্র শেখর বলেন, অত্যন্ত দুঃখের সঙ্গে জানাচ্ছি, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সংগীত বিভাগের ২০১৭-'১৮ শিক্ষাবর্ষের স্নাতকের শিক্ষার্থী এবং বর্তমানে স্নাতকোত্তরে ২০২১-'২২ সেশনে অধ্যয়নরত মো. সালমান আজাদী (২৫) বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে দশটায় ত্রিশালে এক মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় মারাত্মকভাবে আহত হয়ে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেছে। তাঁর এই অকাল মৃত্যুতে বিশ্ববিদ্যালয়-পরিবারের পক্ষে আমি গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করছি। সেইসঙ্গে সালমানের বিদেহী আত্মার চিরশান্তির জন্য প্রার্থনাসহ শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানাচ্ছি।

কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাঈন উদ্দিন জানান, বিনা ময়নাতদন্তের জন্য আবেদনের প্রেক্ষিতে মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

এর আগে, ত্রিশালে বাসের ধাক্কায় সিএনজিচালিত অটোরিকশার তিন যাত্রী নিহত হয়। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও ৪ জন। বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে উপজেলার ত্রিশাল বাজারের সাইফুল কমিশনারের বাসার সামনে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

নিহত অন্য দুইজন হলেন, উপজেলার বৈলর ইউনিয়নের রুদ্রগ্রামের এনামুল হকের মেয়ে রুবাইরা তাজনিম (২) ও চিকনা মনোহর এলাকার মৃত আব্দুস সামাদের ছেলে শরিফুল ইসলাম (৩৪)।

;

মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম বীরাঙ্গনাদের সম্মাননা দাবি



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, নরসিংদী
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধ বাংলাদেশের বহু যুবক ও ছাত্র জনতার আত্মহুতির অবদান। এই যুদ্ধে নারীদের অবদানও কোন অংশে কম নয়। এ যুদ্ধে অসংখ্য নারী সরাসরি অংশগ্রহণের পাশাপাশি ইজ্জতও দিতে হয়েছে। তাদের মধ্যে একজন নরসিংদীর পলাশ উপজেলার বেদনা দত্ত। বেদনা দত্তের মতো বীরাঙ্গনাদের স্মরণীয় করে রাখতে বীরাঙ্গনা স্মৃতিসৌধ বা রাস্তা ও প্রতিষ্ঠানের নামকরণের দাবি মুক্তিযোদ্ধাসহ স্থানীয়দের।

নরসিংদীর পলাশ উপজেলার বড়ি-বাড়ির বেদনা দত্ত স্বাধীনতা সংগ্রামের পূর্বেই স্বামী মারা যাওয়ায় অবুঝ তিন শিশুকে নিয়ে অনেক দুঃখ কষ্টে দিন পার করছিলেন। ঠিক সেই সময়ে মুক্তিযোদ্ধাদের রান্না করে খাওয়ানোসহ তাদের নানাভাবে সহয়তা করতেন বেদনা দত্ত। আর এমন খবর পেয়ে রাজাকার সদস্যরা বেদনাকে জোরপূর্বক ধরে নিয়ে পাকিস্তানি হায়েনাদের হাতে তুলে দেয়। বাড়ির পাশে রেল ব্রিজের নিচে পাকিস্তানিদের ক্যাম্পে ৪ দিনে নির্যাতন শেষে মৃত ভেবে পাশের জঙ্গলে ফেলে দেয় বেদনাকে।

পরে সেখান থেকে দুইদিন পর প্রাণ ফিরে পেলেও ইজ্জত আর সন্তানদের জীবন রক্ষায় এলাকা ছেড়ে নিজেকে আড়াল করে রাখেন তিনি। দীর্ঘদিন পর বাড়ি ফিরে আসলেও জীবন চলে অনাহারে অর্ধাহারে। এভাবেই পার করতে হয়েছে জীবনের প্রায় অর্ধশতাব্দি। অবশেষে এই ঘটনা নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়। সংবাদ প্রকাশের পর প্রশাসনের নজরে আসলে তার কাগজপত্র যাচাই বাছাই শেষে তাকে বীরাঙ্গনা হিসেবে নথিভুক্ত করেন এবং ভাতার আওতায় আনেন। সেই সাথে মুজিব বর্ষের উপহার হিসেবে তার জন্য তৈরি করা হয় বীর নিবাস। এখন এলাকাবাসীর দাবি বেদনা দত্তের অবর্তমানে পরবর্তী প্রজন্মের জন্য স্মৃতিসৌধ নির্মাণের। অথবা তার নামে স্থানীয় কোন রাস্তা বা প্রতিষ্ঠানের নামকরণের দাবি মুক্তিযুদ্ধাসহ স্থানীয় বাসিন্দাদের।

স্থানীয় জিনারদী ইউনিয়ন মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা সুলতান উদ্দিন পাঠান বলেন, আমরা জানতামই না আমাদের এলাকায় একজন বীরাঙ্গনা রয়েছে। সরকার যখন বেদনা দত্তকে একটি বীর নিবাস তৈরি করে দেয় তখনই জানতে পারি এই এলাকায় একজন বীরাঙ্গনা রয়েছেন। স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় নির্মম নির্যাতনের শিকার এই নারী হয়তো একদিন থাকবেনা। কিন্তু তাকে যেনো পরবর্তী প্রজন্ম মনে রাখে এবং স্মরণ করে সেজন্য তার নামে একটি সড়কের নামকরণ বা স্মৃতিসৌধ নির্মাণের দাবি জানাই।

নরসিংদী জেলা প্রশাসক ড. বদিউল আলম জানান, স্বাধীনতা যুদ্ধে নারী মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে বেদনা দত্তের মতো আরও যারা বীরাঙ্গনা রয়েছেন তাদের অসামান্য অবদান রয়েছে। নরসিংদীর নারী মুক্তিযোদ্ধাদের স্মৃতি রক্ষার্থে কয়েকটি আবেদন জমা পড়েছে যা প্রক্রিয়া দিন রয়েছে। অচিরেই এ বিষয়ে কাজ শুরু হবে বলে জানান তিনি।

;