রাজশাহীতে জামায়াত নেতার বিরুদ্ধে মাছ লুটের মামলা
রাজশাহীর বাগমারা উপজেলায় হাফিজুর রহমান নামে এক জামায়াত নেতার নেতৃত্বে দিন-দুপুরে মাছ লুটের অভিযোগ পাওয়া গেছে। দুই দফায় লুটের ঘটনায় মাছ ব্যবসায়ী মহসীন আলী বৃহস্পতিবার (৭ মার্চ) সন্ধ্যায় বাগমারা থানায় তিনজনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন।
ঘটনার পর থেকে রাজশাহী মহানগর জামায়াতের ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের আমির হাফিজুরসহ অন্য আসামিরা গা-ঢাকা দিয়েছেন।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, রাজশাহী মহানগরীর উপকণ্ঠ শাহমখদুম থানার সন্তোষপুর মহল্লার বাসিন্দা মহসীন আলীর বাগমারার চকহায়াতপুরে চারটি পুকুর রয়েছে।
বিসমিল্লাহ মৎস্য খামারের মালিক মহসীন প্রায় ২০ বিঘা আয়তনের পাশাপাশি থাকা এ চারটি পুকুর ১০ বছরের জন্য লিজ নিয়েছেন।
পূর্ব শত্রুতার জের ধরে গত ২৭ এবং ২৮ ফেব্রুয়ারি সকাল সাড়ে ৮টা থেকে বেলা সাড়ে ১১টা পর্যন্ত পুকুরে জোরপূবর্ক জাল নামিয়ে মাছ লুট করে নিয়ে যান হাফিজুরসহ তার সহযোগীরা।
পুকুরের মালিক মহসীন অভিযোগ করেন, পর পর দুইদিন মাছ লুটের সময় জামায়াত নেতা হাফিজুর, তার ভাই আবদুল জাব্বার এবং বাগমারা উপজেলার মোহনগঞ্জ এলাকার আবদুল্লাহেল কাফি সহ ২০-২৫ জন দুর্বৃত্তকে সাথে নিয়ে পুকুর পাড়ে যান।
এ সময় তারা দেশীয় বিভিন্ন ধরনের অস্ত্রে সজ্জিত ছিলেন। এরপর পাহারাদার বাগমারার হাসনিপুরের বাসিন্দা আবুল কালামকে অস্ত্রের মুখে ভয় দেখিয়ে তাড়িয়ে দেন। দুই দিনে চারটি পুকুর থেকে প্রায় ১০ লাখ টাকার মাছ লুট করেন তারা।
পুলিশ জানিয়েছে, জামায়াত নেতা হাফিজুরের বিরুদ্ধে ২০১৩ সালের শেষ দিকে এবং ২০১৪ সালে রাজশাহী মহানগরীর উপকণ্ঠ শাহমখদুম থানার বিভিন্ন এলাকায় বিভিন্ন যানবাহনে অগ্নিসংযোগ, পেট্রোল বোমা হামলা, জামায়াত-শিবির কর্মীদের সংগঠিত করে নাশকতামূলক কর্মকাণ্ডে লিপ্ত থাকার অভিযোগ রয়েছে।
খড়খড়ি বাইপাস, শাহমখদুম থানার মোড় এবং পবা উপজেলা পরিষদের সামনে ট্রাকসহ বিভিন্ন যানবাহনে পেট্রোল বোমা মেরে অগ্নিসংযোগের ঘটনা হাফিজুরের নেতৃত্বে ঘটেছে।
এসব নাশকতামূলক কর্মকাণ্ড সংঘটনের অভিযোগে শাহ খদুম থানায় তার বিরুদ্ধে ৬টি মামলা রয়েছে। এরপর থেকে হাফিজুর তার ভাই জাব্বারের শ্বশুর বাড়ি বাগমারার যোগিশো উত্তরপাড়া এলাকায় বসবাস করেন।
বাগমারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাছিম আহমেদ বলেন, 'তদন্তের পর ঘটনার সত্যতা পাওয়ায় বুধবার রাতে অভিযোগটি মামলা আকারে রেকর্ড করা হয়েছে। আসামি হাফিজুর জামায়াত নেতা এটা নিশ্চিত হওয়া গেছে।'
ওসি বলেন, 'হাফিজুরের বাগমারায় আত্মগোপনের বিষয়টিও গুরুত্ব সহকারে দেখা হচ্ছে। এছাড়া মামলার অন্য আসামিদের গ্রেফতারের জন্য অভিযান শুরু করেছে পুলিশ।'