মেগা প্রকল্পগুলোর মধ্যে পদ্মা সেতুর নির্মাণ কাজ এগিয়ে



আসিফ শওকত কল্লোল, স্পেশাল করেসপন্ডেট, বার্তা২৪.কম
দৃশ্যমান পদ্মা বহুমুখী সেতু, ছবি: সংগৃহীত

দৃশ্যমান পদ্মা বহুমুখী সেতু, ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

সরকারের অগ্রাধিকারের তালিকায় থাকা প্রকল্পগুলোর মধ্যে এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি এগিয়েছে পদ্মা বহুমুখী সেতুর নির্মাণ কাজ। মেট্রোরেল, রূপপুর পারমাণবিক ও রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র প্রকল্পের অগ্রগতি হলেও তা আশানুরূপ নয়।

সবশেষ গত বছরের জুনে ফাস্ট ট্র্যাক প্রজেক্ট মনিটরিং টাস্ক ফোর্সের সভায় প্রকল্পগুলোর অগ্রগতি প্রতিবেদন উপস্থাপন করা হয়েছিল। অর্থায়ন নিশ্চিত না হওয়ায় অগ্রাধিকার তালিকায় থাকা সোনাদিয়া গভীর সমুদ্র বন্দর প্রকল্পের কোনো অগ্রগতি হয়নি। জাপানের প্যাসিফিক কনসালট্যান্ট ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেড প্রকল্পের সার্ভে সম্পন্ন করেন।

ফাস্ট ট্র্যাক প্রজেক্ট মনিটরিং টাস্ক ফোর্সের সাচিবিক দায়িত্ব পালনকারী সংস্থা অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) সচিব। তিনি জানান, এখন পর্যন্ত ১১টি প্রকল্পের মধ্যে অধিকাংশেরই অগ্রগতি হয়েছে। কোনো কোনোটি অনেক দূর এগিয়েছে। এসব মেগা প্রকল্প পরিকল্পনা অনুযায়ীই বাস্তবায়ন হবে।

পদ্মা সেতু
জানুয়ারি পর্যন্ত মূল সেতু নির্মাণকাজের অগ্রগতি হয়েছে ৬৩ শতাংশ। এছাড়া নদীশাসন কাজ হয়েছে ৫০ শতাংশ। জাজিরা প্রান্তে অ্যাপ্রোচ সড়কের কাজ ১০০ ভাগ, মাওয়া প্রান্তে অ্যাপ্রোচ সড়ক ও সার্ভিস এরিয়া-২ এর কাজ শতভাগ, মূল সেতুর কাজ হয়েছে ৭৩ শতাংশ। প্রকল্পটির আর্থিক অগ্রগতি হয়েছে ২৭ দশমিক ৬৩ শতাংশ। প্রকল্পের মোট ব্যয় ৩০ হাজার ১৯৩ কোটি ৩৯ লাখ টাকার মধ্যে এখন পর্যন্ত খরচ হয়েছে ১৮ হাজার ৩৯ কোটি টাকা।

পদ্মা সেতু প্রকল্পের পরিচালক ইঞ্জিনিয়ার শফিকুল ইসলাম বলেন, এখনও আমি আশাবাদী, নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই পদ্মা সেতুর কাজ শেষ করা যাবে।

পদ্মা সেতুতে রেলসংযোগ
প্রকল্পটির ভৌত অগ্রগতি হয়েছে ১৬ দশমিক ৮০ শতাংশ এবং আর্থিক অগ্রগতি ২৩ দশমিক ৪৭ শতাংশ। প্রকল্পটি বাস্তবায়নে মোট খরচ হচ্ছে ৩৪ হাজার ৯৮৮ কোটি ৮৬ লাখ টাকা। প্রকল্পটি চীন সরকারের অর্থায়নে জি টু জি পদ্ধতিতে বাস্তবায়িত হচ্ছে। ঠিকাদারের ডিজাইনিং চূড়ান্ত না হওয়ায় ও ভূমি জমিগ্রহণ সংক্রান্ত জটিলতার কারণে ব্যয় কম হচ্ছে, বিধায় প্রকল্পটি সংশোধন করা হচ্ছে।

রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র
দ্বিতীয় পর্যায়ে মূল বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণে খরচ হচ্ছে ১ লাখ ১৩ হাজার ৯২ কোটি ৯১ লাখ টাকা। শুরু থেকে গত জানুয়ারি মাস পর্যন্ত খরচ হয়েছে ৬ হাজার ৬৫১ দশমিক ৮৪ কোটি টাকা। আথিক অগ্রগতি ১৩ দশমিক ৮৫ শতাংশ। রাশিয়ান ফেডারেশনের মধ্যে স্বাক্ষরিত দু’টি চুক্তির আওতায় এ প্রকল্পের কার্যক্রম এগিয়ে চলছে। প্রকল্পটির আওতায় ১২০০ মেগাওয়াটের দুইটি ইউনিটের মাধ্যমে ২৪০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হবে। প্রকল্পের মূল কাজ ৩৪৪টি অংশে ভাগ করে কাজ হচ্ছে।

মেট্রোরেল
ইতোমধ্যেই এই প্রকল্পের কাজ দৃশ্যমান হয়েছে। এখন পর্যন্ত প্রকল্পটির আর্থিক অগ্রগতি ২৬ দশমিক ২০ শতাংশ। মেট্রোরেল প্রকল্প বাস্তবায়নে মোট খরচ হবে ২১ হাজার ৯৮৫ কোটি ৭ লাখ টাকা। প্রকল্পের শুরু থেকে এ পর্যন্ত খরচ হয়েছে ৬৯৫ কোটি ৪৪ লাখ টাকা। প্রকল্পের আওতায় প্রথম পর্যায়ে উত্তরার উত্তরাংশ থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত লাইনের নয়টি ষ্টেশন স্থাপনের কাজের ৩০ দশমিক ৭৩ শতাংশ সম্পন্ন হয়েছে। পরবর্তী পর্যায়ে আগারগাঁও থেকে বাংলাদেশ ব্যাংক, মতিঝিল পর্যন্ত লাইনের সাতটি ষ্টেশন নির্মাণের কাজ মাত্র তিন শতাংশ শেষ হয়েছে।

মৈত্রী সুপার থারমাল পাওয়ার প্রজেক্ট (রামপাল)
এ প্রকল্পের ভৌত অগ্রগতি হয়েছে ২৯ দশমিক ৩৭ শতাংশ, আর আর্থিক অগ্রগতি ২২ দশমিক ৮০ শতাংশ। ইপিসি কাজ ২৭ শতাংশ হয়েছে। সীমানা প্রাচীর নির্মাণ ও ভরাটের কাজ সম্পূর্ণ প্রকল্পটি বাস্তবায়নে খরচ হচ্ছে ১৬ হাজার কোটি টাকা, এ পর্যন্ত খরচ হয়েছে তিন হাজার ৬৪৭ দশমিক ৬৫ কোটি টাকা।

মাতারবাড়ি বিদ্যুৎ কেন্দ্র
প্রকল্পটির ভৌত অগ্রগতি হয়েছে ২১ দশমিক ৮০শতাংশ এবং আর্থিক অগ্রগতি হয়েছে ২১ দশমিক ১৫ শতাংশ। প্রকল্পের জন্য দেড় হাজার একর জমি অধিগ্রহণের কাজ প্রায় শেষ। প্রকল্পটি বাস্তবায়নে খরচ হচ্ছে ৩৫ হাজার ৯৮৪ কোটি ৪৬ লাখ টাকা। শুরু থেকে এখন পর্যন্ত খরচ হয়েছে ৭ হাজার ৫২৮ কোটি ৫৯ লাখ টাকা।

পায়রা গভীর সমুদ্র বন্দর
এ বন্দরের কার্যক্রম পরিচালনার জন্য ৩ হাজার ৩৫০ কোটি ৫১ লাখ টাকা খরচে একটি প্রকল্পের কাজ এগিয়ে চলছে। প্রকল্পের ভৌত ও আর্থিক অগ্রগতি যথাক্রমে ৪০ দশমিক ৫৫ শতাংশ ও ৩৮ দশমিক ১৮ শতাংশ।

এলএনজি টার্মিনাল নির্মাণ
এ প্রকল্পটি বিল্ড ওন অপারেট অ্যান্ড ট্রান্সফার (বিওওটি) পদ্ধতিতে বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। গত বছরের ১৯ আগষ্ট টার্মিনাল অপারেশন শুরু হয়েছে। এর মাধ্যমে মহেশখালী-আনোয়ারা, আনোয়ারা-ফৌজদারহাট এবং চট্টগ্রাম-ফেনী-বাখরাবাদ গ্যাস পাইপলাইন মাধ্যমে গ্যাস দেওয়া শুরু হবে।

ঘুমধুম পর্যন্ত সিঙ্গেল লাইন ডুয়েল গেজ ট্র্যাক নির্মাণ
এ প্রকল্পটির ভৌত অগ্রগতি হয়েছে ২০ দশমিক ১০ শতাংশ এবং আর্থিক অগ্রগতি হয়েছে ১৮ দশমিক ৮৬ শতাংশ। কক্সবাজার এবং চট্টগ্রামের ভূমি অধিগ্রহণের বাস্তবায়নের হার ৯৮ শতাংশ ও ভৌত নির্মাণ ২২ শতাংশ। অস্থায়ী পিলার দ্বারা দোহাজারী কক্সবাজার সেকশনে রেলপথের সীমানা চিহ্নিতকরণ ৮৬ শতাংশ, পরামর্শক সেবা- সুপারভিশন ১৯ শতাংশ। আর পরামর্শক অগ্রিম ১০০ শতাংশ এবং রিসেটেলমেন্ট কার্যক্রম সম্পাদন ১০ শতাংশ। প্রকল্পটি বাস্তবায়নে মোট ব্যয় হচ্ছে ১৮ হাজার ৩৪ কোটি ৪৮ লাখ টাকা এবং এ পর্যন্ত খরচ হয়েছে ৩ হাজার ৩৪৭ কোটি ৭০ লাখ টাকা ।

আরও ১১টি মেগা প্রকল্পের পরিকল্পনা কমিশনে পাঠানো হয়নি। এ প্রকল্পগুলো হচ্ছে- চিটাগাং জেটি নির্মাণ প্রকল্প, কয়লা ভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জন্য রাস্তা নির্মাণ, বাঁধ ও রাস্তা নির্মাণ প্রকল্প, ইকো টুরিজম পার্ক এবং ইকোনমিক জোন, বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের ডাবল পাইপ লাইন প্রকল্প, পিডিবির ১০ হাজার মেগাওয়াট পাওয়ার প্লান্ট প্রকল্প, জাপানের মিৎসুই কোম্পানির বাস্তবায়ন জন্য ১৩২০ মেগাওয়াট কোলব্যাস পাওযার প্লান্ট, আর একই জাপানি কোম্পানির বাস্তবায়নের জন্য ৭০০ মেগাওয়াট এলএমজি পাওয়ার প্লান্ট, জাপানের সুমিটোম কোম্পানির বাস্তবায়নের জন্য ১২০০ মেগাওয়াট কোল পাওয়ার প্লান্ট, পিপিজি সিবিএল দ্বিতীয় ফেজ ১২০০ মেগাওয়াট পাওয়ার প্লান্ট প্রকল্প এবং দক্ষিণ চট্টগ্রাম কোল বেস পাওয়ার প্লান্ট ফিজিবিলিটি স্টাডি।

   

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে মানবাধিকার উইং চালুর পরামর্শ



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে মানবাধিকার সম্পর্কিত একটি নতুন শাখা চালু করার পরামর্শ দিয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি।

বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) জাতীয় সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত সংসদীয় কমিটির বৈঠকে এই পরামর্শ দেওয়া হয়। বৈঠক শেষে সংসদ সচিবালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

বৈঠকে ২৫ মার্চকে আন্তর্জাতিক গণহত্যা দিবস হিসেবে স্বীকৃতি আদায়ের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সুপারিশ করা হয়। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সদস্যদের নিয়ে রোহিঙ্গা ক্যাম্প কুতুপালং এবং ভাসানচর পরিদর্শনের জন্য বৈঠকে প্রস্তাব করা হয়।

কমিটির সভাপতি এ কে আব্দুল মোমেনের সভাপতিত্বে বৈঠকে কমিটির সদস্য ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ, শাহরিয়ার আলম, নাহিম রাজ্জাক, নিজাম উদ্দিন জলিল, নুরুল ইসলাম নাহিদ, হাবিবুর রহমান, সাইমুম সারওয়ার, জারা জাবীন মাহবুব অংশ নেন।

 

;

ঢাকাসহ ৮ জেলায় ৬০ কিমি বেগে ঝড়ের শঙ্কা



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

ঢাকাসহ দেশের আট জেলার ওপর দিয়ে ৬০ কিলোমিটার বেগে ঝড়ের আশঙ্কা করছে আবহাওয়া অফিস। সেইসঙ্গে বজ্রসহ বৃষ্টি হওয়ার সম্ভবনা রয়েছে বলা হচ্ছে।

শুক্রবার (২৯ মার্চ) সকাল ৯টা পর্যন্ত দেশের অভ্যন্তরীণ নদীবন্দরগুলোর জন্য দেওয়া এক পূর্বাভাসে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।

আবহাওয়াবিদ মো. শাহীনুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, খুলনা, বরিশাল, পটুয়াখালী, নোয়াখালী, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম, ঢাকা এবং সিলেট জেলার ওপর দিয়ে পশ্চিম অথবা উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে ঘণ্টায় ৪৫ থেকে ৬০ কিলোমিটার বেগে অস্থায়ীভাবে দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। এ সময় বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। তাই এসব এলাকার নদীবন্দরগুলোকে ১ নম্বর সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।

এদিকে, আবহাওয়া অফিসের অপর এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, পশ্চিমা লঘুচাপের বর্ধিতাংশ পশ্চিমবঙ্গ ও তার কাছাকাছি এলাকায় অবস্থান করছে। মৌসুমের স্বাভাবিক লঘুচাপ দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে।

এ অবস্থায় শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ঢাকা, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের দুয়েক জায়গায় অস্থায়ী দমকা বা ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি বা বজ্রবৃষ্টি হতে পারে।

;

ইসলামি সংগীত শিল্পী সালমানের মৃত্যুতে শোকের ছায়া



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ময়মনসিংহ
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

ময়মনসিংহের ত্রিশালে বাসের ধাক্কায় নিহত তিনজনের একজন সালমান আজাদী। তিনি জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গীত বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী এবং ইসলামি সঙ্গীত শিল্পী ও প্রশিক্ষক। তার মৃত্যুতে ক্যাম্পাসের শিক্ষক-শিক্ষার্থী এবং স্বজন-শুভাকাঙ্ক্ষীদের মাঝে নেমে এসেছে শোকের ছায়া।

বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) দুপুর সোয়া ১২টার দিকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান সালমান আজাদী।

তিনি বগুড়া জেলার শেরপুর উপজেলার হাপানিয়া এলাকার মৃত কোরবান আলীর ছেলে। নিহত সালমান স্ত্রী ও এক শিশুপুত্রকে নিয়ে নগরীর মাসকান্দা এলাকায় থাকতেন।

জানা গেছে, ইসলামি সংঙ্গীত শিল্পী হিসেবে ময়মনসিংহে বেশ জনপ্রিয় ছিলেন সালমান আজাদী। ইসলামি সঙ্গীতের প্রসারে নিজেই প্রতিষ্ঠা করেছেন সালমান ইসলামি সঙ্গীত একাডেমি। প্রায় দুই বছর ধরে এই প্রতিষ্ঠানে শিশুদের ইসলামি গান শেখাতেন। এছাড়াও ত্রিশালে কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের ইসলামি সঙ্গীতের প্রশিক্ষক ছিলেন তিনি।

উদীয়মান এ ইসলাম সঙ্গীত শিল্পীর মৃত্যুতে শোকাভিভূত পরিবার, আত্নীয়-স্বজন, ক্যাম্পাসের সহপাঠী-শিক্ষার্থী, ইসলামি সংস্কৃতি প্রেমিসহ শুভাকাঙ্ক্ষীরা। শতশত মানুষের ফেসবুক স্ট্যাটাসে যেন শোক বইয়ে পরিণত হয়েছে সানমানের ফেসবুক টাইমলাইন।

আব্দুর রহিম ভূঁইয়া নামে একজন লিখেছেন, কিছু মৃত্যুর সংবাদ মানুষকে ভীষণ বেদনা দেয়, ভীষণ কষ্ট দেয়। আর এই মৃত্যু যদি অকালে হয় বা আকস্মিক হয় তার শোক কাটিয়ে উঠা মোটেও সহজ না। সালমান আজাদী ইসলামিক শিল্প একাডেমির শিক্ষক ও স্বপ্নদ্রষ্টা ছিলেন। তিনি বাচ্চাদের নিয়ে অনেক স্বপ্ন দেখতেন। বাচ্চাদের সুস্থ ধারার ইসলামিক সাংস্কৃতিক চর্চার ব্যাপারে তার অনেক পরিকল্পনা ছিল।

হানজালা রমজান মুন্না নামে আরেকজন লিখেছেন, প্রিয় হাসিমাখা মুখ ও সুন্দর করে কথা উপস্থাপন ছিল যার নৈমিত্তিক অভ্যাস। ইসলামি সংস্কৃতি ছড়িয়ে দেয়ায় পেছনে ময়মনসিংহ শহরে যাদের অবদান, তাদেরই একজন ছিলেন। মনের মধ্যে ছিল ইসলামের জন্য তীব্র ভালবাসা। ভাইয়ের ভুল ত্রুটিগুলো ক্ষমা করে দিয়ে জান্নাতের উঁচু মাক্বাম দান করুন।

স্বামীর শোকে বাকরুদ্ধ স্ত্রী খাদিজা খাতুন জানান, সালমান নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গীত বিভাগে মাস্টার্সে অধ্যয়নরত ছিলেন। বৃহস্পতিবার ক্লাস করতেই ক্যাম্পাসের উদ্দেশ্যে ত্রিশাল যাচ্ছিলেন তিনি।

এদিকে সালমান আজাদীর অকাল মৃত্যুতে গভীর শোক জানিয়েছে নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় পরিবার। এক শোকবার্তায় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. সৌমিত্র শেখর বলেন, অত্যন্ত দুঃখের সঙ্গে জানাচ্ছি, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সংগীত বিভাগের ২০১৭-'১৮ শিক্ষাবর্ষের স্নাতকের শিক্ষার্থী এবং বর্তমানে স্নাতকোত্তরে ২০২১-'২২ সেশনে অধ্যয়নরত মো. সালমান আজাদী (২৫) বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে দশটায় ত্রিশালে এক মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় মারাত্মকভাবে আহত হয়ে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেছে। তাঁর এই অকাল মৃত্যুতে বিশ্ববিদ্যালয়-পরিবারের পক্ষে আমি গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করছি। সেইসঙ্গে সালমানের বিদেহী আত্মার চিরশান্তির জন্য প্রার্থনাসহ শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানাচ্ছি।

কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাঈন উদ্দিন জানান, বিনা ময়নাতদন্তের জন্য আবেদনের প্রেক্ষিতে মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

এর আগে, ত্রিশালে বাসের ধাক্কায় সিএনজিচালিত অটোরিকশার তিন যাত্রী নিহত হয়। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও ৪ জন। বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে উপজেলার ত্রিশাল বাজারের সাইফুল কমিশনারের বাসার সামনে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

নিহত অন্য দুইজন হলেন, উপজেলার বৈলর ইউনিয়নের রুদ্রগ্রামের এনামুল হকের মেয়ে রুবাইরা তাজনিম (২) ও চিকনা মনোহর এলাকার মৃত আব্দুস সামাদের ছেলে শরিফুল ইসলাম (৩৪)।

;

মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম বীরাঙ্গনাদের সম্মাননা দাবি



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, নরসিংদী
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধ বাংলাদেশের বহু যুবক ও ছাত্র জনতার আত্মহুতির অবদান। এই যুদ্ধে নারীদের অবদানও কোন অংশে কম নয়। এ যুদ্ধে অসংখ্য নারী সরাসরি অংশগ্রহণের পাশাপাশি ইজ্জতও দিতে হয়েছে। তাদের মধ্যে একজন নরসিংদীর পলাশ উপজেলার বেদনা দত্ত। বেদনা দত্তের মতো বীরাঙ্গনাদের স্মরণীয় করে রাখতে বীরাঙ্গনা স্মৃতিসৌধ বা রাস্তা ও প্রতিষ্ঠানের নামকরণের দাবি মুক্তিযোদ্ধাসহ স্থানীয়দের।

নরসিংদীর পলাশ উপজেলার বড়ি-বাড়ির বেদনা দত্ত স্বাধীনতা সংগ্রামের পূর্বেই স্বামী মারা যাওয়ায় অবুঝ তিন শিশুকে নিয়ে অনেক দুঃখ কষ্টে দিন পার করছিলেন। ঠিক সেই সময়ে মুক্তিযোদ্ধাদের রান্না করে খাওয়ানোসহ তাদের নানাভাবে সহয়তা করতেন বেদনা দত্ত। আর এমন খবর পেয়ে রাজাকার সদস্যরা বেদনাকে জোরপূর্বক ধরে নিয়ে পাকিস্তানি হায়েনাদের হাতে তুলে দেয়। বাড়ির পাশে রেল ব্রিজের নিচে পাকিস্তানিদের ক্যাম্পে ৪ দিনে নির্যাতন শেষে মৃত ভেবে পাশের জঙ্গলে ফেলে দেয় বেদনাকে।

পরে সেখান থেকে দুইদিন পর প্রাণ ফিরে পেলেও ইজ্জত আর সন্তানদের জীবন রক্ষায় এলাকা ছেড়ে নিজেকে আড়াল করে রাখেন তিনি। দীর্ঘদিন পর বাড়ি ফিরে আসলেও জীবন চলে অনাহারে অর্ধাহারে। এভাবেই পার করতে হয়েছে জীবনের প্রায় অর্ধশতাব্দি। অবশেষে এই ঘটনা নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়। সংবাদ প্রকাশের পর প্রশাসনের নজরে আসলে তার কাগজপত্র যাচাই বাছাই শেষে তাকে বীরাঙ্গনা হিসেবে নথিভুক্ত করেন এবং ভাতার আওতায় আনেন। সেই সাথে মুজিব বর্ষের উপহার হিসেবে তার জন্য তৈরি করা হয় বীর নিবাস। এখন এলাকাবাসীর দাবি বেদনা দত্তের অবর্তমানে পরবর্তী প্রজন্মের জন্য স্মৃতিসৌধ নির্মাণের। অথবা তার নামে স্থানীয় কোন রাস্তা বা প্রতিষ্ঠানের নামকরণের দাবি মুক্তিযুদ্ধাসহ স্থানীয় বাসিন্দাদের।

স্থানীয় জিনারদী ইউনিয়ন মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা সুলতান উদ্দিন পাঠান বলেন, আমরা জানতামই না আমাদের এলাকায় একজন বীরাঙ্গনা রয়েছে। সরকার যখন বেদনা দত্তকে একটি বীর নিবাস তৈরি করে দেয় তখনই জানতে পারি এই এলাকায় একজন বীরাঙ্গনা রয়েছেন। স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় নির্মম নির্যাতনের শিকার এই নারী হয়তো একদিন থাকবেনা। কিন্তু তাকে যেনো পরবর্তী প্রজন্ম মনে রাখে এবং স্মরণ করে সেজন্য তার নামে একটি সড়কের নামকরণ বা স্মৃতিসৌধ নির্মাণের দাবি জানাই।

নরসিংদী জেলা প্রশাসক ড. বদিউল আলম জানান, স্বাধীনতা যুদ্ধে নারী মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে বেদনা দত্তের মতো আরও যারা বীরাঙ্গনা রয়েছেন তাদের অসামান্য অবদান রয়েছে। নরসিংদীর নারী মুক্তিযোদ্ধাদের স্মৃতি রক্ষার্থে কয়েকটি আবেদন জমা পড়েছে যা প্রক্রিয়া দিন রয়েছে। অচিরেই এ বিষয়ে কাজ শুরু হবে বলে জানান তিনি।

;