ভোট ঘিরে রাজশাহীতে কড়া নিরাপত্তা
টানা ১৬ দিনের প্রচারণা শেষ। রোববার (১০ মার্চ) রাজশাহীর আট উপজেলায় ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। উপজেলা ভোটকে কেন্দ্র করে জেলাজুড়ে কড়া নিরাপত্তাব্যবস্থা নিয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
জেলা পুলিশ সুপার কার্যালয় সূত্র জানায়, নির্বাচনে তিন স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এতে দায়িত্ব পালন করবেন জেলা পুলিশের প্রায় দুই হাজার সদস্য। নিরাপত্তা পরিকল্পনায় নেওয়া হয়েছে বিভিন্ন কৌশল।
নির্বাচনে প্রতি ইউনিয়ন ও পৌর এলাকায় দুটি করে ১০৯টি মোবাইল টিম দায়িত্ব পালন করবে। প্রত্যেক থানায় থাকবে একটি করে স্ট্রাইকিং টিম।
প্রস্তুত থাকবে জেলা পুলিশের কুইক রেসপন্স টিম (কিইউআরটি)। তাছাড়া পর্যাপ্ত পুলিশ সদস্য থাকবে রিজার্ভে। নির্বাচনে নগর পুলিশও পর্যাপ্ত নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে বলে জানিয়েছে জেলা পুলিশ।
জানা যায়, জেলার ৮টি উপজেলায় ৫২২টি ভোটকেন্দ্র রয়েছে । নিরাপত্তা পরিকল্পনায় ঝুঁকিপূর্ণ (গুরুত্বপূর্ণ) ভোটকেন্দ্র ধরা হয়েছে ২০০টি। বাকি ৩০৬টি কেন্দ্র সাধারণ ধরে নিরাপত্তা ছক তৈরি করা হয়েছে।
জেলার তানোর উপজেলায় ভোটগ্রহণ হবে ৫১ কেন্দ্রে। ২৮টি ঝুঁকিপূর্ণ এবং ২৩টি সাধারণ ভোটকেন্দ্র রয়েছে এই উপজেলায়। গোদাগাড়ি উপজেলায় ৯৮ ভোটকেন্দ্রের ৩৬টি ঝুঁকিপূর্ণ এবং ৫৮টি ভোটকেন্দ্র সাধারণ।
মোহনপুর উপজেলায় ২৩টি ঝুঁকিপূর্ণ এবং ২১টি সাধারণ মিলিয়ে মোট ভোটকেন্দ্র ৪৪টি। বাগমারায় জেলার সর্বাধিক ১০৬টি ভোটকেন্দ্রে ভোটগ্রহণ হবে। এর মধ্যে ২৭টি ঝুঁকিপূর্ণ এবং ৭৯টি সাধারণ ভোটকেন্দ্র।
দুর্গাপুরের ৫৩ ভোটকেন্দ্রের মধ্যে ১৫টি ঝুঁকিপূর্ণ এবং ৩৮টি সাধারণ ভোটকেন্দ্র। জেলার পুঠিয়ায় ৫২ ভোটকেন্দ্রে ভোটগ্রহণ হবে। এর মধ্যে ২৩টি ঝুঁকিপূর্ণ এবং ২৯টি সাধারণ ভোটকেন্দ্র।
চারঘাট উপজেলায় ২৩টি ঝুঁকিপূর্ণ এবং ২১টি সাধারণ মিলিয়ে ভোটকেন্দ্র রয়েছে ৪৪টি। বাঘা উপজেলার ৫৯ ভোটকেন্দ্রে ভোটগ্রহণ হবে। এখানকার ২২টি ভোটকেন্দ্র ঝুঁকিপূর্ণ এবং ২১টি সাধারণ ধরে নিরাপত্তা কৌশল ঠিক করেছে পুলিশ।
এদিকে রাজশাহী মহানগর পুলিশের আওতাধীন ভোটকেন্দ্র রয়েছে ১৬টি। পুঠিয়ায় ১১টি এবং চারঘাটে ৫টি কেন্দ্র। প্রত্যেক ভোটকেন্দ্র ঝুঁকিপূর্ণ বলছে নগর পুলিশ। প্রত্যেকটি ভোটকেন্দ্র ঘিরে বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়েছেন তারা।
জেলা পুলিশের মুখপাত্র সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার আবদুর রাজ্জাক খান বলেন, নির্বাচনে ভোটার ও প্রার্থীদের কোনো নিরাপত্তার শঙ্কা নেই। তারপরও সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। নির্বাচনে কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা বরদাশত করা হবে না।
তিনি আরও বলেন, প্রত্যেক সাধারণ ভোটকেন্দ্রে একজন পুলিশ সদস্যসের সঙ্গে ১২ জন আসনার সদস্য দায়িত্ব পালন করবেন। আর গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রে একজন পুলিশ সদস্য বেশি রাখা হবে।
জেলা নির্বাচন অফিস সূত্র জানায়, জেলার তানোরে ১ লাখ ৪৫ হাজার ৩৪৩ জন, গোদাগাড়ীতে ২ লাখ ৩৮ হাজার ৪৩ জন, মোহনপুরে এক লাখ ২৯ হাজার ২৪৮ জন, বাগমারায় ২ লাখ ৭৮ হাজার ১৪ জন ভোটার রয়েছে।
এছাড়া পুঠিয়ায় এক লাখ ৬০ হাজার ৭২৪ জন, দুর্গাপুরে এক লাখ ৪১ হাজার ১০৫ জন, চারঘাটে এক লাখ ৫৯ হাজার ৭২৫ জন এবং বাঘায় এক লাখ ৪৪ হাজার ৫৭৩ জন ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন।
জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম বার্তা২৪.কম-কে বলেন, নির্বাচনের সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। শনিবার (০৯ মার্চ) সন্ধ্যার মধ্যে নিরাপত্তা বাহিনীর উপস্থিতিতে নির্বাচনী সরঞ্জাম পৌঁছে যাবে ভোটকেন্দ্রে।
রোববার (১০ মার্চ) সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত ভোটগ্রহণ হবে। এখন পর্যন্ত নির্বাচন ঘিরে অপ্রতীকির কোনো ঘটনার খবর নেই বলেও জানান তিনি।
জানা গেছে, রাজশাহীর ৮ উপজেলায় নির্বাচনে অংশ নিতে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছিলেন ৮৯ জন প্রার্থী। দুই চেয়ারম্যান ও দুই ভাইস চেয়ারম্যান বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন।
ফলে ভোটের মাঠে রয়েছেন ১৮ চেয়ারম্যান, ৩১ ভাইস রেচয়ারম্যান এবং ২০ মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী।