হজযাত্রীরা ছিলেন প্রতারক চক্রের প্রধান টার্গেট
বিদেশি মুদ্রার প্রলোভন দেখিয়ে, অর্থ হাতিয়ে নেওয়া প্রতারক চক্রের ৭ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে র্যাব ১।
শুক্রবার (১৫ মার্চ) সকালে বার্তা২৪.কমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন র্যাব সদরদফতরের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক মুফতি মাহমুদ খান।
মুফতি মাহমুদ খান বলেন, 'বিদেশি মুদ্রার (ডলার/রিয়েল) প্রলোভন দেখিয়ে, প্রতারণার ফাঁদে ফেলে অর্থ আত্মসাৎকারী প্রতারক চক্রের ৭ সক্রিয় সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়েছে।'
র্যাবের এই কর্মকর্তা বলেন, 'গতকাল রাতে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে, রাজধানীর ভাটারার কুড়িল বিশ্বরোড এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়।'
শুক্রবার (১৫ মার্চ) কারওয়ান বাজার র্যাব মিডিয়া সেন্টারে অর্থ আত্মসাৎকারী চক্রের ৭ সদস্য সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানিয়েছেন, র্যাব ১ এর অধিনায়ক লেঃ কর্নেল সারোয়ার বিন কাশেম।
সারোয়ার বিন কাশেম বলেন, দীর্ঘদিন ধরে প্রতারক চক্রটি বিদেশি মুদ্রা (রিয়েল) বাজার মূল্যের চেয়ে কম মূল্যে বিক্রি করতে হজযাত্রী সহ সাধারণ মানুষকে টার্গেট করতো। ইতোমধ্যে প্রতারণা করে এই চক্রটি লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে।
র্যাবের এই কর্মকর্তা বলেন, ‘প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে চক্রটি জানিয়েছে, হজের মৌসুমে হজ ক্যাম্পে আসা গ্রামের হজযাত্রীদের টার্গেট করতেন তারা। তারপর বাজার দরের চেয়ে কম মূল্যে সৌদি রিয়েল দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে বান্ডিলের ভেতরে সাদা কাগজ বা অন্য কিছু ঢুকিয়ে দিতেন। টাকা ও রিয়েল হাত বদলের সময় আইনশৃঙ্খলাবাহিনী দেখে ফেলবে বলে দ্রুত কাজ শেষে সটকে পড়তো প্রতারক চক্র। পরবর্তীতে ভিকটিম যাত্রী বান্ডিল খুলে সাদা কাগজ ছাড়া কিছুই পেতেন না।’
সারোয়ার বিন কাশেম আরও বলেন, ‘শুধু হজ যাত্রী না এই প্রতারক চক্রটি গুলশান বনানীর অভিজাত এলাকায় প্রতারণা করতো। যানজটে আটকে থাকা বিভিন্ন প্রাইভেট গাড়িকে টার্গেট করে তাদের কাছে রিয়েল বিক্রির কথা বলতো। এমন কৌশলে তারা রিয়েল রাখতে, বোঝার উপায় থাকতো না। মনে হত অনেক রিয়েল রয়েছে। এ সময় কম দামে রিয়েল পাওয়ার আশায় অনেকেই তাদের ফাঁদে একই ভাবে পা দেয়।'
র্যাবের এই কর্মকর্তা বলেন, ‘এই প্রতারণাকারী চক্রের ৭ সদস্যই রং মিস্ত্রি। তারা এ কাজের আড়ালে এই কাজ চালিয়ে আসছে। তারা আরও বলেছে, রং মিস্ত্রি কাজের মাধ্যমে তারা বিভিন্ন ফ্ল্যাটে প্রবেশ করে। তারপরে বাসায় বয়স্ক ব্যক্তিদের কাছে রিয়েল দেখিয়ে অল্প দামে বিক্রি করে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নেয়।’
গ্রেফতারকৃত এ চক্রের দলপতি আবু শেখ (৩৮) অন্যরা হলেন, শাহিন মাতব্বর, মহসিন মিয়া, আবুল বাশার, কামরুল শেখ, ইশারত মোল্লা, আব্দুর রহমান মোল্লা। গ্রেফতারের সময় তাদের কাছে থেকে ১ হাজার ৫০০ রিয়েল, ১০ টি মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়।