ক্রাইস্টচার্চ ট্রাজেডি: ইচ্ছে পূরণ হলো না সামাদের
নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চে আল নূর মসজিদে সন্ত্রাসী হামলায় নিহত দুই বাংলাদেশির একজন কৃষিবিদ অধ্যাপক ড. আবদুস সামাদ। তার গ্রামের বাড়ি কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী পৌর এলাকার মধুরহাইল্ল্যায়।
আগামী মাসে (এপ্রিলে) দেশে ফেরার কথা ছিল তার। ইচ্ছে ছিল গ্রামের বাড়ির কাছে একটি মাদরাসা করবেন। কিন্তু আবদুস সামাদের সেই ইচ্ছে পূরণ হলো না। ঘাতকের বুলেট কেড়ে নিয়েছে সামাদের ইচ্ছে পূরণের স্বপ্ন। নিহতের ছোট ভাই অধ্যাপক শামসুদ্দিনের সাথে মুঠোফোনে কথা হলে তিনি এসব কথা জানান।
অধ্যাপক শামসুদ্দিন বলেন, ‘শিক্ষকতার পাশাপাশি আল নূর মসজিদে ইমামতি করতেন আমার ভাই (অধ্যাপক ড. আবদুস সামাদ) । তিনি অত্যন্ত ধর্মভীরু মানুষ ছিলেন। তার অনেক স্বপ্ন ছিলো গ্রামের মানুষকে ঘিরে। আগামী মাসে পরিবারসহ দেশে আসার কথা ছিল। গ্রামের বাড়ির কাছে একটি মাদরাসা তৈরির করার কথা ছিল। কিন্তু সেই ইচ্ছা পূরণ হলো না।’
কৃষিবিদ অধ্যাপক আবদুস সামাদের মৃত্যুতে তার গ্রামের বাড়িতে শোকের ছায়া বিরাজ করছে। স্বজনদের আহাজারিতে ভারী হয়ে আছে পুরো গ্রাম। প্রিয় মানুষটির এমন মর্মান্তিক মৃত্যুকে মেনে নিতে পারছেন না কেউই। আবদুস সামাদের মরদেহ দ্রুত দেশে ফিরিয়ে আনতে সরকারের কাছে দাবি জানিয়েছেন নিহতের স্বজনরা।
ড. আবদুস সামাদ নাগেশ্বরীর মধুরহাইল্ল্যা গ্রামের মৃত জামাল উদ্দিন সরকারের পাঁচ ছেলে সন্তানের মধ্যে তৃতীয়। তিনি এলাকায় উচ্চ মাধ্যমিক পর্যন্ত পড়ালেখা করে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে উচ্চ শিক্ষা নেন। পরে তিনি সেখানেই শিক্ষকতা শুরু করেন।
শিক্ষকতার সময় তিনি পিএইচডি করতে নিউজিল্যান্ডে যান। সেখান থেকে ফিরে আরও কিছুদিন শিক্ষকতা করেন। এরপর চাকরি শেষ করার আগেই তিনি অবসর নিয়ে নিউজিল্যান্ডে পরিবারসহ বসবাস শুরু করেন। সেখানে একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করতেন। পাশাপাশি আল নূর মসজিদে ইমামতি করতেন।
ড. আবদুস সামাদের তিন ছেলে। এক ছেলে তোহা মোহাম্মদ বাংলাদেশে বেসরকারি কোম্পানিতে চাকরি করেন। বাকি দুই ছেলে তারেক মাহমুদ ও তানভীর হাসান সহ স্ত্রী কিশোয়ারা সুলতানাকে নিয়ে নিউজিল্যান্ডে থাকতেন আবদুস সামাদ।