ইতিহাসের ভয়াল কালরাত্রি আজ



রেজা-উদ্-দৌলাহ প্রধান, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট,বার্তা২৪.কম
২৫ মার্চ কালরাত্রির স্মরণে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্মৃতি চিরন্তন/ ছবি: সংগৃহীত

২৫ মার্চ কালরাত্রির স্মরণে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্মৃতি চিরন্তন/ ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ। রাতের নিকষ কালো আঁধারে, ঘুমন্ত বাঙালি জাতির উপর ‘অপরাশেন সার্চলাইটের; নামে পৃথিবীর ইতিহাসে অন্যতম বর্বরোচিত হামলা চালিয়েছিল দখলদার পাকিস্তানি বাহনী। মুক্তিযুদ্ধ শুরুর আগমুহূর্তে বিভীষিকাময় ওই কালরাতে নৃশংসতম গণহত্যার নজির স্থাপিত হয়েছিল। সেই রাতে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ঢাকাসহ পূর্ব পাকিস্তান তথা বাংলাদেশের বড় বড় শহরে নির্মম হত্যাযজ্ঞ চালিয়ে লাখো ঘুমন্ত নিরস্ত্র বাঙালিকে হত্যা করে। বাঙালি জাতি যত দিন আছে, ততদিন প্রতিবছর ফিরে আসবে ২৫ মার্চের কাল রাত। এই রাতে গোটা জাতি গভীর শ্রদ্ধা আর অবনতমস্তকে স্মরণ করবে সেই মানুষদের, যারা একাত্তরের ২৫ মার্চের ভয়াল কালরাতে পাকিস্তানিদের হাতে নির্মমভাবে নিহত হয়েছিলেন।

যা ঘটেছিল সেই রাতে:

১৯৭১ সালের ২৪ মার্চ বুধবার ঢাকার প্রেসিডেন্ট হাউসে চলমান মুজিব-ইয়াহিয়া বৈঠকের অংশ হিসেবে আওয়ামী লীগ ও পাকিস্তান সরকারের উপদেষ্টা পর্যায়ের বৈঠকও কার্যত ব্যর্থতায় পর্যবসিত হয়। বৈঠক শেষে সেদিন বিকালেই পশ্চিম পাকিস্তানের অধিকাংশ নেতা পিআইএর একটি ফ্লাইটে ঢাকা ছেড়ে যান। কিন্তু আলোচনার নামে ধূর্ত পাকিস্তানিরা আসলে ষড়যন্ত্রের জাল বুনেছিল। সেটা অনেকে টেরও পেয়েছিলেন। কেননা একদিকে যখন চলচিল আলোচনা, অন্যদিকে পশ্চিম পাকিস্তান থেকে প্লাটুন প্লাটুন সৈন্য এসে নামছিল ঢাকার মাটিতে। 

২৫ মার্চের সকাল থেকেই অজানা আশঙ্কায় দিন কেটেছে বাঙালির। দিনভর দেশব্যাপী ছিল অশান্ত-উত্তাল পরিস্থিতি। এমনি এক পরিস্থিতিতে এক সময় বেতারের প্রচার বন্ধ করে দেওয়া হয়। সরকারি কোনো ঘোষণাও প্রচারিত হয়নি সেদিন। সন্ধ্যা পেরিয়ে রাত অবধি মিছিল-মিটিং-স্লোগানে মুখরিত ঢাকাবাসী রাত নামলে ঘুমিয়ে পড়ে। আর গভীর রাতে নিরীহ-নিরস্ত্র মানুষদের উপর সার্চলাইট অপারেশন শুরু করে নর পিশাচরা। 

রাত সাড়ে ১১টায় ক্যান্টনমেন্ট থেকে প্রথমে রাস্তায় নেমে আসে পাকিস্তান সেনাবাহিনী। তারা প্রথমে ঢাকার রাজারবাগ পুলিশ লাইনস, পরে একে একে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, ধানমণ্ডি ও পিলখানায় পূর্ব পাকিস্তানি রাইফেলস (ইপিআর- বর্তমানে বিজিবি) সদর দপ্তরসহ রাজধানীর সর্বত্র হামলা চালিয়ে নৃশংস হত্যাযজ্ঞ শুরু করে। পাশাপাশি নিধনযজ্ঞ চালায় চট্টগ্রামসহ দেশের কয়েকটি বড় শহরেও। 

রাজারবাগ পুলিশ সদর দফতরে পাকিস্তানি সেনাদের সাঁড়াশি আক্রমণের মুখেও বাঙালি পুলিশ সদস্যরা অস্ত্র সমর্পণে রাজি হননি। রাইফেল তাক করে প্রতিরোধ গড়ে তোলেন তারা। তবে শত্রুর ট্যাঙ্ক, কামান আর ভারী মেশিনগানের ক্রমাগত গুলির মুখে গুঁড়িয়ে যায় সমস্ত প্রতিরোধ বূ্হ্য। জ্বালানি ছিটিয়ে আগুনে ভস্মীভূত করা হয় পুলিশ সদর দফতর। সেখান থেকে ঘাতক বাহিনী এগোতে থাকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকার দিকে। পরে রাতভর গোটা রাজধানীতেই নিরীহ-নিরস্ত্র বাঙালির ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে পাকিস্তানি সেনারা।

মুজিব-ইয়াহিয়া বৈঠকসহ স্বাধীনতার দাবিতে বাঙালির বিক্ষোভে উত্তাল জনপদের খবর সংগ্রহ করতে তখন ঢাকায় আসা বিদেশি সাংবাদিকরা অবস্থান করছিলেন হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে। এ হোটেলের ১২ তলায় দেহরক্ষীদের কড়া পাহারায় ঘুমাচ্ছিলেন পাকিস্তান পিপলস পার্টির প্রধান জুলফিকার আলী ভুট্টো। রাত পৌনে ১২টায় পাকিস্তানি সেনারা হোটেলটি ঘিরে ফেলে। কেউ বেরুলেই গুলির নির্দেশ দেয়। এভাবেই বহির্বিশ্ব থেকে বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয় ঢাকাকে। এর পরপরই রাতের নিস্তব্ধতা ভেঙে নগরজুড়ে ভেসে আসতে শুরু করে পাকিস্তানি সেনাদের ট্যাঙ্ক, মেশিনগানের গুলি ও মর্টারের শব্দ। সেই শব্দে কান পাতা দায়।

ভারী ট্যাঙ্ক ও সৈন্যবোঝাই লরিগুলো নল উঁচিয়ে ঢুকে পড়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায়। একে একে ইকবাল হল, (বর্তমানে সার্জেন্ট জহুরুল হক হল) জগন্নাথ হলসহ সব হলেই হত্যাযজ্ঞ চালায় তারা। এর মধ্যে জগন্নাথ হলে চলে নৃশংসতম হত্যার সবচেয়ে বড় ঘটনাটি। এখানে হত্যাযজ্ঞ চলে রাত থেকে সকাল পর্যন্ত। পাকিস্তানি হায়েনাদের কবল থেকে রক্ষা পাননি রোকেয়া হলের ছাত্রীরাও। এক রাতে তিন শতাধিক ছাত্রছাত্রী শহীদ হন। শাহাদাত বরণ করেন ড. গোবিন্দ চন্দ্র দেব, ড. জ্যোতির্ময় গুহঠাকুরতা, অধ্যাপক সন্তোষ ভট্টাচার্য, ড. মনিরুজ্জামানসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের ৯ জন শিক্ষক।

পুরান ঢাকার হিন্দু সম্প্রদায় অধ্যুষিত এলাকাগুলোতেও চালানো হয় ব্যাপক গণহত্যা। কয়েকটি পত্রিকা অফিস পুড়িয়ে দেওয়া হয়। পাশাপাশি নগরজুড়ে ঘুমন্ত মানুষের ওপর রাতভর চলে বর্বরোচিত নিধনযজ্ঞ ও ধ্বংসের তাণ্ডব। দানবীয় বাহিনীর আক্রমণের বিভীষিকায় নিমজ্জিত হয় নগরীর রাজপথ, অলিগলি, ফুটপাত, খেলার মাঠ ও ক্যাম্পাস। মানুষের কান্নায় ভারী হয়ে ওঠে আকাশ-বাতাস। মর্মন্তুদ সে কান্না ছাপিয়ে চারপাশে তখন কেবলই আগুনের লেলিহান শিখা ও ধ্বংসযজ্ঞ। রাত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে দীর্ঘ হয়েছে লাশের স্তূপ। এক সময় গোটা নগরীই পরিণত হয় লাশের শহরে।

এক মিনিট প্রতীকীব্লাকআউট’:

২০১৭ সালের ১১ মার্চ জাতীয় সংসদে ২৫ মার্চকে 'জাতীয় গণহত্যা দিবস' হিসেবে পালনের প্রস্তাব সর্বসম্মতভাবে গৃহীত হয়। এর পর থেকেই দিনটি জাতীয় গণহত্যা দিবস হিসেবে পালিত হচ্ছে। সেই গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি আদায়ে সরকারসহ বিভিন্ন মহলের সর্বাত্মক উদ্যোগ ও প্রচেষ্টাও অব্যাহত রয়েছে। কালরাত্রিকে স্মরণ করে সোমবার (২৫ মার্চ) রাতে এক মিনিট অন্ধকারে থাকবে পুরো বাংলাদেশ। ‘জাতীয় গণহত্যা দিবস’ পালনে বিভিন্ন কর্মসূচির অংশ হিসেবে রাত ৯টা থেকে ৯টা ১মিনিট পর্যন্ত চলবে এই প্রতীকী ‘ব্ল্যাকআউট’ কর্মসূচি। জরুরি স্থাপনা ও চলমান যানবাহন ছাড়া সারাদেশে এই এক মিনিট ব্লাকআউট চলবে।

এছাড়া কালরাত্রি স্মরণে সোমবার সন্ধ্যা ৭টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্মৃতি চিরন্তনে মোমবাতি প্রজ্জ্বলন, তথ্যচিত্র প্রদর্শন এবং আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়েছে। রাত ৯টার পর জগন্নাথ হল প্রাঙ্গণে গণসমাধিতে মোমবাতি প্রজ্জ্বলন ও শ্রদ্ধা নিবেদন হবে। বাদ জোহর দেশব্যাপী মসজিদগুলোতে বিশেষ মোনাজাত এবং অন্যান্য উপাসনালয়গুলোতে প্রার্থনার আয়োজন করা হয়। ঢাকাসহ সকল জেলা ও উপজেলায় করা হয় আলোচনা সভা, গীতিনাট্য এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন।

   

নওগাঁর সান্তাহারে ‘চিলাহাটি এক্সপ্রেস’র ইঞ্জিন বিকল



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

ঢাকা থেকে ছেড়ে যাওয়া আন্তঃনগর 'চিলাহাটি এক্সপ্রেস' নীলফামারী যাওয়ার পথে নওগাঁর সান্তাহার রেলস্টেশনে ইঞ্জিন বিকল হয়ে যায়।

শুক্রবার (৩০ মার্চ) রাতে এ ঘটনা ঘটেছে।

রেলের পাকশি বিভাগীয় বাণিজ্যিক কর্মকর্তা নাসির উদ্দীন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। 

তিনি জানান, রাত ২টার দিকে ট্রেনটির ইঞ্জিন বিকল হয়ে পড়ে। পরে দিনাজপুরের পার্বতীপুর লোকশেড থেকে অন্য একটি ইঞ্জিন রওনা দিয়েছে। সেটি দিয়ে ট্রেন চালিয়ে গন্তব্যে নেয়া হবে। 

ইঞ্জিন বিকল হওয়ায় ট্রেনের যাত্রীরা ভোগান্তিতে পড়েছেন। গভীর রাতে স্টেশনে অপেক্ষা করতে হয়েছে তাদের।

;

মাগুরায় সড়ক দুর্ঘটনায় তিনজনের মৃত্যু, আহত ৫



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, মাগুরা
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

মাগুরা জেলার শালিখা উপজেলার হাজামবাড়ী এলাকায় সিএনজিচালিত মাহেন্দ্রা ও যাত্রীবাহী বাসের মুখোমুখি সংঘর্ষে ৩ জন নিহত হয়েছে। দুর্ঘটনায় আহত হয়েছে আরও ৫ জন।

শুক্রবার (২৯ মার্চ) রাতে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

নিহত তিনজন হলেন, যশোর জেলার বাঘারপাড়া থানার নারকেল বাড়িয়া এলাকার মৃত কালিপদ শিকদার এর ছেলে মধু শিকদার (৫৫), নিতাইদে এর স্ত্রী নিরুপা রানী দে (৫০) ও নারায়ণ চন্দ্র দের স্ত্রী পুষ্পা রানী দে। 

এ ঘটনায় আহত ৫ জনকে মাগুরা ও যশোর হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। নিহতদের সবার বাড়ি যশোর জেলার বাঘারপাড়া থানার নারকেল বাড়িয়া এলাকায়।

প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ সূত্র জানায়, নিহত ও আহতরা মাগুরা জেলার শ্রীপুর উপজেলা সদরে একটি ধর্মীয় অনুষ্ঠান শেষে বাড়ি যাওয়ার উদ্দেশ্যে বের হয়েছিল। পথিমধ্যে মাগুরা জেলার শালিখা উপজেলার হাজামবাড়ী এলাকায় তাদের বহনকারী সিএনজিচালিত মাহেন্দ্রার সাথে একটি যাত্রীবাহী বাসের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এ ঘটনায় ঘটনায় স্থলেই দুই নারীর মৃত্যু হয়। মাগুরা ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে নিয়ে আসার পর মধু শিকদারকে ডাক্তার মৃত ঘোষণা করেন।

শালিখা থানার ওসি তদন্ত গৌতম ঠাকুর বলেন, হতাহতরা সবাই শ্রীপুর উপজেলার একটি ধর্মীয় অনুষ্ঠান শেষ করে নিজ এলাকায় ফিরছিলেন। পথিমধ্যে শালিখা উপজেলা হাজামবাড়ী এলাকায় আসলে যশোর থেকে মাগুরামুখী একটি যাত্রীবাহী বাস তাদের বহনকারী সিএনজিচালিত মাহেন্দ্রাকে সামনে থেকে ধাক্কা দিয়ে চলে যায়। এ সময় সিএনজিচালিত মাহেন্দ্রাটি বিধ্বস্ত হয়ে দুই নারী ঘটনাস্থলেই নিহত হন। এছাড়া মাগুরা ২৫০ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পর একজন পুরুষের মৃত্যু হয়।

মাগুরা হাইওয়ে পুলিশের অফিসার ইনচার্জ ওসি গৌতম চন্দ্র মন্ডল বলেন, হতাহতদের উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে তদন্ত চলছে।

;

এক পায়ে তিন কিমি হেঁটে কলেজে যায় ইয়াছমিন



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, নোয়াখালী
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

এক পায়ে ক্র্যাচে ভর দিয়ে প্রতিদিন ৩ কিলোমিটার পথ হেঁটে কলেজে যায় ইয়াছমিন আক্তার (২০)। তার এক পা নেই, আরেক পা থাকলেও তা প্রায় শীর্ণ।  

এ গল্প নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার চরএলাহী ইউনিয়নের ৯নম্বর ওয়ার্ডের গাংচিল গ্রামের দিনমজুর নুরনবীর মেয়ে ইয়াছমিন আক্তারের।

দেড় বছর বয়সে এক পা হারিয়ে এমন বাস্তবতা নিয়ে পাড়ি দিয়েছেন জীবনের ১৯টি বছর। তবু কঠিন জীবন সংগ্রামে দমে যাননি। দারিদ্র্য আর শারীরিক অক্ষমতাকে জয় করে সে এখন জেলার সদর উপজেলার ড.বশির আহমদ কলেজে দ্বাদশ শ্রেণির দ্বিতীয় বর্ষের মানবিক বিভাগে পড়ছেন।

২০০৫ সালের ঘটনা। মা শিশু ইয়াছমিনকে বিছানায় রেখে পাশের বাড়ি থেকে পানিতে আনতে যায়। তখন চৌকির পাশে থাকা চেরাগ থেকে মশারিতে আগুন ধরে যায়। ওই আগুনে ইয়াছমিনের দুই পা দগ্ধ হয়ে যায়। পরে ডাক্তারের পরামর্শে তার বাম পা কেটে ফেলতে হয়। পায়ের রগ পুড়ে অপর পাও অনেকটা শীর্ণ হয়ে যায়।

এরপরও উদ্যম ইচ্ছা শক্তিতে প্রথমে ভর্তি হন স্থানীয় পশ্চিম গাংচিল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। প্রাথমিকের গণ্ডি পেরিয়ে গাংচিল কবি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পাস করেন। বর্তমানে দেড় কিলোমিটার পথ পায়ে হেঁটে প্রথমে স্থানীয় গাংচিল বাজারে যান। পরে সেখান থেকে গাড়ি করে বাড়ি থেকে সাড়ে ১৩ কিলোমিটার দূরে কলেজে ক্লাস করছেন নিয়মিত। আবার বাড়ি ফিরতেও তাকে হাঁটতে হয় দেড় কিলোমিটার পথ। এভাবে বয়ে চলেছেন জীবনের ভার। বছরে ৫ হাজার টাকা প্রতিবন্ধী সরকারি ভাতা পান। কিন্তু সরকারের এ সহযোগিতা একেবারেই অপ্রতুল।

ইয়াছমিন আক্তার বলেন, অনেক কষ্ট করে আমি লেখা পড়া করছি। পড়া লেখা শেষ করে আমি শিক্ষক হতে চাই। সবার সহযোগিতায় একটি কৃত্রিম পা সংযোজন হলে আমার স্বপ্ন পূরণ সহজ হবে।

ইয়াছমিনের বাবা নুরনবী বলেন, আমি একজন দিনমজুর। তবে শত কষ্ট-যাতনা সহ্য করে হলে মেয়েকে লেখাপড়া করাব। তার একটি কৃত্রিম পা সংযোজনে সমাজের বিত্তবান মানুষ এগিয়ে আসবে বলে প্রত্যাশা।

ড. বশির আহমদ কলেজের প্রভাষক এ.এইচ তানিম বলেন, আমরা তার কষ্টকে মূল্যায়ন করি। একই সাথে তার চেষ্টাকে সাধুবাদ জানাই। কেননা ইয়াছমিন যেটা সম্ভব করে চলেছে, তা সবার কাছেই অনুপ্রেরণা ও দৃষ্টান্ত।

ড. বশির আহমদ কলেজের অধ্যক্ষ আঞ্জুমান আরা মুক্তা বলেন, ইয়াছমিন প্রতিদিন তিন কিলোমিটার পথ এক পায়ে হেঁটে কলেজে আসে। সে একজন জীবন সংগ্রামী তরুণী। অদম্য প্রচেষ্ঠায় তার গল্পটি হয়ে উঠেছে প্রেরণার। দিনমজুর বাবা সব কিছু হারিয়ে মেয়েকে সারিয়ে তুললেও স্বাভাবিক ভাবে হাঁটতে পারেনা সে। তাদের আকুতি যদি কৃত্রিম পা দিয়ে হাঁটত পারত ইয়াসমিন।

;

দক্ষিণ আফ্রিকায় ছুরিকাঘাতে বাংলাদেশি যুবকের মৃত্যু



Rasel
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

দক্ষিণ আফ্রিকায় সন্ত্রাসীদের ছুরিকাঘাতে মো. এমরাজ হোসেন সুমন (২৮) নামে এক বাংলাদেশি যুবকের মৃত্যু হয়েছে। নিহত সুমন ফেনী জেলার দাগনভূঞা পৌরসভার জগৎপুর গ্রামের আবুল খায়েরের ছেলে।

শুক্রবার (২৯ মার্চ) বাংলাদেশ সময় সকাল ১১টার দিকে আফ্রিকার বেস্ট এরিয়ার ফালগুজ এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।এসময় ছুরিকাঘাতে তাকে হত্যা করে দেশটির এক সন্ত্রাসীদল।

নিহতের চাচাতো ভাই ও দেশ টিভির ফেনী জেলা প্রতিনিধি শেখ ফরিদ উদ্দিন তার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, শুক্রবার সকালে সুমনের দোকানে টাকা চাওয়াকে কেন্দ্র করে কথা-কাটাকাটির একপর্যায়ে সন্ত্রাসীরা তাকে ছুরিকাঘাত করে। পরে গুরুতর আহত অবস্থায় স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিলে দায়িত্বরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, ১০ বছর আগে সুমন জীবিকার তাগিদে দক্ষিণ আফ্রিকায় পাড়ি জমিয়েছেন। সেখানে বেস্ট এরিয়ার ফালগুজ এলাকায় একটি স্টেশনারি ও মুদিদোকানে কাজ করতেন তিনি। পরিবারে তার ৫ মাস বয়সী এক ছেলে সন্তান রয়েছে।

দাগনভূঞা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নিবেদিতা চাকমা বলেন, নিহতের মরদেহ দেশে আনার জন্য সর্বোচ্চ সহযোগিতা করা হবে। এ ছাড়া পরিবারের জন্য সরকার নির্ধারিত সহযোগিতা যেন খুব দ্রুত পায় সেই ব্যবস্থা করা হবে।

;