দোকানে অগ্নিনির্বাপণ সরঞ্জাম কেনার হিড়িক
পর পর কয়েকটি বড় আকারের অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় রাজধানীতে অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থায় ব্যাপক পরিবর্তনের ইঙ্গিত পাওয়া গেছে। এ কারণে শহরের অগ্নিনির্বাপণ সরঞ্জাম বিক্রির দোকানগুলোতে বিল্ডিং মালিক এবং অফিস ব্যবস্থাপকদের ভিড় লক্ষ্য করা গেছে।
রোববার (৩১ মার্চ) রাজধানীর গুলশান এবং তেঁজগাও এলাকায় ফায়ার প্রোটেকশন ব্যবস্থা বিক্রির দোকানগুলো ঘুরে দেখা যায়, মানুষ নিজেদের বাসা বা কর্মস্থলকে নিরাপদ রাখতে অগ্নিনির্বাপণ যন্ত্রপাতি কিনছে। এর ফলে যেমন সরঞ্জামের মূল্য হঠাৎ করেই বেড়ে গেছে। তবে বিক্রেতারা বলছেন, হঠাৎ করে বিক্রি বেড়ে যাওয়াতে চাহিদা অনুযায়ী যোগান পাওয়া যাচ্ছে না।
বিকেলে গুলশান লিংক রোডের অলিম্পিয়া ফায়ার সলিউশন নামের দোকানে গেলে মানুষের ব্যস্ততা চোখে পড়ে। এখানে প্রত্যক্ষ অগ্নিনির্বাপণের প্রায় ৩০ ধরনের সরঞ্জাম রয়েছে। যেগুলো কয়েকটি বেশ প্রয়োজনীয়, আবার কয়েকটি অধিক নিরাপত্তার জন্য। আবার অফিস বা বাসস্থানের জন্য আলাদা আলাদা ব্যবস্থা রয়েছে। দোকানের কর্মচারীরা নতুন যন্ত্রাদি ওঠানো এবং ডেলিভারি দেওয়ার কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন।
এ সময় কথা হয় ডোমিনো ডেভলপমেন্ট লিমিটেডের কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমানের সঙ্গে। তিনি বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘এই অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের নির্মিত ভবনগুলোতে আগে থেকেই অগ্নিনির্বাপণের ব্যবস্থা ছিল। তবে এখন আরও আধুনিক করার জন্য নতুন ব্যবস্থাপনা নেওয়া হচ্ছে এবং যন্ত্রাদি কেনা হচ্ছে। আমাদের কিছু ফায়ার এক্সটিংগুইশার রিফিল করার জন্য এসেছি।’
অলিম্পিয়া ফায়ার প্রোটেকশন অ্যান্ড সলিউশনের ম্যানেজার সেলস জাহাঙ্গীর আলম বার্তা২৪.কমকে বলেন,‘বনানীর এফআর টাওয়ারে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার পর থেকে এই এলাকায় অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থায় মানুষের সচেতনতা বেড়েছে। বিশেষ করে গত দুই দিনে অনেক বেশি বিক্রি বেড়েছে।’
অবশ্য এ ক্ষেত্রে তিনি মানুষের সচেতনতার চাইতে সরকারের পদক্ষেপের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন বেশি। জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘সরকারের পক্ষ থেকে ১০ দিনের মধ্যে ভবনের অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থার কাগজপত্র চাইলে সেদিন থেকেই বিক্রি বেড়ে যায়। গত দুইদিনে শতাধিক ভবন মালিক অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থাপনা কিনে নিয়েছে।’
ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বা অফিসের তুলনায় আবাসিক বাড়ির মালিকদেরই বেশি সক্রিয় বলে জানান তিনি।
অগ্নিনির্বাপণের জন্য বিক্রি হওয়া যন্ত্রাদির মধ্যে ফায়ার এক্সটিংগুইশার, এবিসি, কার্বন ডাই অক্সাইড সিলিন্ডার, ফায়ার বাকেট, স্ট্যান্ড, মাস্ক, হোস পাইপ, অটো ফায়ার বল, অটো ফায়ার এক্সটিংগুইশার বেশি বিক্রি হচ্ছে।
এখানে তিন কেজির ফায়ার এক্সটিংগুইশার বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ৯০০ টাকা পর্যন্ত এবং রিফিলের খরচ পড়ছে ৪০০ টাকা করে। ৫ কেজির ফায়ার এক্সটিংগুইশারের দাম পড়ছে ২ হাজার ৫০০ টাকা। আর রিফিল ৭৫০ টাকা করে। এছাড়া মাস্কের দাম পড়ছে ধরণ বুঝে ১ হাজার ৫০০ টাকা থেকে ২ হাজার ২০০ টাকা পর্যন্ত।
দাম বৃদ্ধির বিষয়ে জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘দুই দিন ধরে বিক্রি বেড়েছে। তবে এখনই সরঞ্জাম সংকট হবে না। তবে শুধু গুলশান বা বনানী নয়, শহরের প্রতিটি বাসাবাড়ি এবং অফিসে এই ধরনের ব্যবস্থা রাখার সময় এসেছে এখন। ’