পিএমও’তে মুক্তা ব্র্যান্ডের পানি ব্যবহারের নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর
অটিস্টিক কিংবা প্রতিবন্ধী শিশুদের জন্য বরবারই সহানুভূতিশীল ও আন্তরিক আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সুযোগ পেলেই তিনি যেমন প্রতিবন্ধীদের সঙ্গে সময় কাটান, ঠিক তেমনি রাষ্ট্রীয়ভাবে তাদের পৃষ্ঠপোষকতাও করেন।
বিভিন্ন সময়েই তার প্রমাণ মিলেছে। এবার প্রতিবন্ধীদের তৈরি ‘মুক্তা ব্র্যান্ডের’ পানি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে ব্যবহার নিশ্চিত করতে কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।
মঙ্গলবার (২ এপ্রিল) রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ‘১২তম বিশ্ব অটিজম সচেতনতা দিবস-২০১৯’ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এ নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের অটিস্টিক শিশুরা যেন সমাজের বোঝা হয়ে না দাঁড়ায়। তাদের যেন কেউ বোঝা মনে না করে। তাদের মধ্যে কিন্তু অনেক ট্যালেন্ট আছে।
এসময় তিনি মঞ্চের টেবিল থেকে মুক্তা ব্র্যান্ডের পানির বোতল নিয়ে আসতে এক কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেন। এরপর ওই কর্মকর্তা বোতলটি প্রধানমন্ত্রীর হাতে দেন। সেই বোতল তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই যে এই পানিটা এটা কারা তৈরি করে আপনারা জানেন? এটা কিন্তু প্রতিবন্ধীরা করে।
তিনি বলেন, দুর্ভাগ্য হলো, আমার অফিসেও বলে বলে এই পানির ব্যবহারটা নিশ্চিত করা যাচ্ছে না। আমি যখন বলি তখন আমার জন্য হয়তো কিছু পাঠায়। কিন্তু অন্য ব্র্যান্ডের পানিই বেশি নিয়ে আসে। কিন্তু এটা যেহেতু প্রতিবন্ধীরা তৈরি করে, এর বোতলগুলো উন্নতমানের করা, ছোট ছোট বোতল করা সেগুলো আমরা করে দিয়েছি। কিন্তু এটাকে বাজারজাত করার ক্ষেত্রে আন্তরিকতার অভাব দেখি। আমার অফিসের সবাই আছে, আমি আশা করি, আজকের দিনের পরে সবাই এই পানিই নেবে।
শেখ হাসিনা বলেন, প্রতিবন্ধীরা কিন্তু নানা ধরনের জিনিসও তৈরি করে। আপনারা অবাক হবেন, দৃষ্টি প্রতিবন্ধী; খুব সুন্দর প্লাস্টিক দিয়ে বেতের মোড়া তৈরি করছে,আবার প্লাস্টিকের পণ্য তৈরি করছে। আমি যখনই সুযোগ পাই সেগুলো সংগ্রহ করি এবং সেগুলো ব্যবহারও করি। আমার নাতিদের শিখাই যে এটা কিন্তু একজন প্রতিবন্ধীর তৈরি করা কাজেই তোমরা সেটা বেশি যত্ন দিয়ে ব্যবহার করবা। এভাবেই প্রতিবন্ধীদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা যায়। তারা সমাজের বোঝা না।
আমি প্রতিবছর দুই ঈদ, তারপর নববর্ষের যত শুভেচ্ছা কার্ড পাঠাই, যারা পান তারা দেখেছেন সেগুলো কিন্তু এই প্রতিবন্ধী বা অটিস্টিক শিশুদের আঁকা। কার্ডগুলো সংগ্রহ করে সায়মা (প্রধানমন্ত্রী কন্যা সায়মা ওয়াজেদ পুতুল) আবার একটি অ্যালবামও করেছে যাতে অ্যালবামটা আমরা সব জায়গায় উপহার হিসেবে দিতে পারি। যেসব প্রতিবন্ধী শিশুর আঁকা ছবি নিই তা কিন্তু আমি বিনা পয়সায় নিই না। সেটাও আমি বলে দিচ্ছি। কারণ তাদের শ্রমের মূল্যটা আমি দিয়ে দিই। আমি একসঙ্গে সাতটা আটটা নয়টা ১০টা; শুধু ঢাকা না ঢাকার বাইরে থেকেও আমরা সংগ্রহ করি। সেগুলো থেকে কার্ড তৈরি করে আমরা দিয়ে দিই। অর্থাৎ এদের জীবনটা যেন অর্থবহ হয় সেদিকে দৃষ্টি রেখেই আমরা কাজ করি। এই মানুষগুলোর জন্য কিছু করে যেতে আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি।