দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রায় উত্তরের জনজীবনে হাঁসফাঁস
মাঝারি তাপদাহে উত্তপ্ত হয়ে উঠছে রাজশাহীসহ দেশের উত্তরাঞ্চলের জেলাগুলো। ভ্যাপসা গরমে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে এ অঞ্চলের প্রাণিকুল। রোববার (২৮ এপ্রিল) এবারের মওসুমে দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৯ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াসে পৌঁছেছে রাজশাহীতে।
আবহাওয়া অফিসের তথ্যমতে, তাপমাত্রা ৩৮ থেকে ৪০ ডিগ্রি পর্যন্ত থাকলে তাকে মাঝারি তাপপ্রবাহ বলা হয়। মাঝারি এই তাপ্রবাহ বইছে রাজশাহী ছাড়াও চাঁপাইনবাবগঞ্জ, নওগাঁ, পাবনা, নাটোর, জয়পুরহাট, বগুড়াসহ গোটা উত্তরাঞ্চলে।
গত কয়েকদিন ধরেই রাজশাহী অঞ্চলে দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা বিরাজ করছিল। রোববার সকাল থেকেই যেন রুদ্রমূর্তি ধারণ করছে প্রকৃতি। মানবকূলের পাশাপাশি দুঃসহ গরমে হাঁস-ফাঁস করছে প্রাণিকুলও। নিতান্তই প্রয়োজন ছাড়া ঘরের বাইরে বের হচ্ছে না মানুষ। বেলা বাড়ার সাথে সাথে ফাঁকা হয়ে গেছে পথঘাট।
রাজশাহী নগরীর দক্ষিণের পদ্মার ধূ-ধূ বালুচর থেকে বয়ে আসা গরম বাতাস শরীরে বিঁধছে আগুনের হলকার মতো। রোববার সপ্তাহের প্রথম কর্মদিবস হওয়ায় নিজ নিজ কর্মক্ষেত্রে যোগ দিয়েছেন কর্মজীবীরা। এই তীব্র গরম ও রোদের কবলে পড়েছে শিক্ষার্থীরাও। বেলা বাড়ার সাথে সাথে তাপমাত্রার পারদ কেবল উপরে উঠছে। তীব্র গরমের কারণে হাসপাতালে হিটস্ট্রোক ও ডায়রিয়া রোগীর সংখ্যা বেড়েছে হাসপাতালগুলোতে।
রাজশাহী আবহাওয়া অফিসের উচ্চ পর্যবেক্ষক আব্দুস সালাম জানান, রোববার দুপুরে রাজশাহীতে দেশের সর্বোচ্চ ৩৯ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। এটি চলতি মওসুমে এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ তাপমাত্রা। সোমবার তাপমাত্রা আরো বাড়তে বলে আভাস দিচ্ছে আবহাওয়া অফিস। তবে বৃষ্টি হলে তাপমাত্রা স্বাভাবিকে ফিরবে।
আবহাওয়া অফিস সূত্র জানায়, রাজশাহী অঞ্চলের উপর দিয়ে গত কয়েক দিন ধরে মৃদু তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে।
সূত্রটি আরও জানায়, ১৯৭২ সালের ১৮ মে রাজশাহীতে তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৪৫ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যা এখন পর্যন্ত এটিই দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রার রেকর্ড। ২০০৫ সালের ১২ জুন রাজশাহীতে মৌসুমের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৪২ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
এরপর ২০১৪ সালের ২১ মে উঠেছিল ৪২ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসে এবং ২০১৬ সালের ২৯ এপ্রিল উঠেছিল ৪১ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এরপর আর এই সর্বোচ্চ তাপমাত্রা অতিক্রম করেনি বিভাগীয় শহর রাজশাহীতে।