ঢাকায় রোদ-বৃষ্টির লুকোচুরি
ঢাকা: উপকূলীয় অঞ্চলের লোকজন যখন ফণী আতঙ্কে নিরাপদ আশ্রয়ের দিকে ছুটছে, তখন রাজধানী ঢাকায় চলছে রোদ-বৃষ্টির লুকোচুরি।
হঠাৎ হঠাৎ কালো মেঘে ঢেকে যাচ্ছে আকাশ, আবার কখনও এক পশলা বৃষ্টিতে শীতল পরশ বুলিয়ে যাচ্ছে।
কিন্তু এই লুকোচুরিতে রোদের প্রাধান্য লক্ষ্যনীয়। শুক্রবার (৩ মে) সকাল থেকে কয়েক দফায় বৃষ্টি হয়েছে। কিন্তু কোনোবারেই তেমন দীর্ঘ হতে দেখা যায়নি। সর্বশেষ বিকেল ৪টায় আকাশ অন্ধকার করে নেমে আসে বৃষ্টি। এসময় বাতাসের গতিবেগও ছিল অন্যান্য দফার তুলনায় কিছুটা বেশি। তবে কয়েক মিনিট পরেই আকাশ অনেকটা পরিষ্কার হয়ে সূর্য আলো ছড়িয়েছে। দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৩ ডিগ্রি রেকর্ড করা হয়েছে।
বার্তা২৪.কমের সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট মাহফুজুল ইসলাম জানিয়েছেন, বিকেল ৪টায় মতিঝিল, আরামবাগ, কমলাপুর এলাকায় থেমে থেমে বৃষ্টি হচ্ছে। বৃষ্টির সঙ্গে হালকা বাতাসও বইছে। সরকারি ছুটির দিন হওয়ায় রাস্তাগুলো অনেকটাই জনমানবহীন, দোকানপাটও বন্ধ রয়েছে। তবে ফুটপাতে থাকা মানুষগুলোকে বিভিন্ন ওভার ব্রিজ, যাত্রী ছাউনির নিচে অবস্থান করতে দেখা গেছে।
স্টাফ করেসপন্ডেন্ট তৌফিকুল ইসলাম জানান, বিকেল ৪টার দিকে গুলশান এলাকায় ভারি বৃষ্টি রেকর্ড করা হয়েছে। বৃষ্টির সঙ্গে সঙ্গে গাড়ি চলাচলের সংখ্যাও কমে এসেছে। বৃষ্টির কারণে হঠাৎ করেই দাবদাহ কমে পরিবেশ শীতল হয়ে যায়। কিন্তু কয়েক মিনিট পরে বৃষ্টি শেষে আবার ভ্যাবসা গরম ছড়িয়ে পড়ে।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের সর্বশেষ বুলেটিনে (৩ মে, দুপুর ১২টা) বলা হয়েছে, প্রবল ঘুর্ণিঝড় ফণী উড়িষ্যার উপকূল (পুরীর কাছ দিয়ে) অতিক্রম করছে। মংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ৪৯৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে, পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ৫৩৫ কিমি দক্ষিণপশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৬৯০ কিমি পশ্চিম-দক্ষিণ-পশ্চিমে এবং চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৭০০ কিমি পশ্চিম-দক্ষিণপশ্চিমে অবস্থান করছিল।
ফণী আরও উত্তর-উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে ৩ মে মধ্যরাত নাগাদ খুলনা ও তৎসংলগ্ন বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল এলাকায় পৌঁছাতে পারে। খুলনা ও তৎসংলগ্ন বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকায় শুক্রবার সকাল থেকে অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় ফণির অগ্রবর্তী অংশের প্রভাব শুরু হয়েছে।
ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৭৪ কিমির মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ১৮০ কিমি যা দমকা অথবা ঝোড়ো হাওয়ার আকারে ২০০ কিমি পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের কাছে সাগর খুবই উত্তাল রয়েছে।
মংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে ৭ নম্বর বিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।উপকূলীয় জেলা ভোলা, বরগুনা, পটুয়াখালী, বরিশাল, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বাগেরহাট, খুলনা, সাতক্ষীরা এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরগুলোতেও ৭ নম্বর বিপদ সংকেত বিপদ সংকেতের আওতায় থাকবে।
চট্টগ্রাম সমুদ্র বন্দরকে ৬ নম্বর বিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। উপকূলীয় জেলা চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, লক্ষীপুর, ফেনী, চাঁদপুর এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরগুলোতে ৬ নম্বর বিপদ সংকেতের আওতায় থাকবে। কক্সবাজার সমুদ্র বন্দরকে ৪ নম্বর হুঁশিয়ারি সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।