বগুড়ায় মহাসড়কে চলছে উন্নয়ন কাজ, ঈদে দুর্ভোগের আশঙ্কা
ঢাকা- রংপুর মহাসড়কের বগুড়া অংশে চলছে উন্নয়ন কাজ। এতে ঈদে কমপক্ষে ১০ থেকে ১২টি পয়েন্টে যানজটের আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন একাধিক বাসচালক। আর যানজটে তীব্র ভোগান্তিতে পড়বে ঈদে ঘরে ফেরা মানুষেরা। তবে বগুড়া জেলা পুলিশ মহাসড়কে যানজট হতে পারে এমন ৮টি পয়েন্ট চিহ্নিত করেছেন।
বগুড়া সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী আসাদুজ্জামান বলেন, ঢাকা- রংপুর মহাসড়কে বগুড়া অংশে ৬৫ কিলোমিটার মহাসড়ক রয়েছে। মহাসড়ক উন্নয়ন কাজ চলমান থাকলেও এবার কোন যানজট হবে না। কারণ হিসেবে তিনি বলেন, যানজট হয় এমন স্থান গুলোতে ফ্লাইওভার এবং আন্ডারপাস চালু হয়েছে। সর্বশেষ গত ২৭ মার্চ মাঝিড়া ক্যান্টনমেন্ট সংলগ্ন বিব্লক আন্ডার পাস, বগুড়া শহর সংলগ্ন ফুলতলা আন্ডার পাস এবং বগুড়া তিনমাথা রেলগেট ফ্লাই ওভার যানবাহন চলাচলের জন্য খুলে দেয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, মহাসড়কে যে সকল পয়েন্টে উন্নয়ন কাজ চলছে সেই স্থান গুলোতে যানবাহন চলাচলের জন্য বিকল্প সড়ক করা হয়েছে। এছাড়াও বগুড়া শহরতলীর বনানী এবং মাটিডালী মোড়ে দ্রুত গতিতে সড়ক উন্নয়ন কাজ চলছে। এক সপ্তাহের মধ্যে এই দুই স্থানে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক হবে।
রংপুর -ঢাকা রুটে চলাচলকারী টি আর পরিবহনের চালক সিকদার, শ্যামলী পরিবহনের চালক করিম, একতা পরিবহনের চালক সাব্বির বলেন, মহাসড়কের দক্ষিণে চান্দাইকোনা থেকে উত্তরে রহবল পর্যন্ত মহাসড়কে কমপক্ষে ১০ থেকে ১২টি স্থানে এবার যানজট হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
তারা বলেন, মহাসড়কে সিএনজি চালিত অটোরিকশা স্ট্যান্ড, ভটভটি চলাচল এবং মালবাহী ট্রাক চলাচল নিয়ন্ত্রণ করতে না পারলে ঈদে ঘরে ফেরা মানুষদেরকে যানজটে পড়ে দুর্ভোগ পোহাতে হবে।
এছাড়াও মহাসড়ক উন্নয়ন কাজের জন্য বিভিন্ন স্থানে সড়কের মাঝে বালুর ঢিবি করে রাখার কারণে দুর্ঘটনা ছাড়াও যানবাহনের গতি স্বাভাবিক রাখা যাবে না। ফলে ওই সকল স্থান গুলোতে যানবাহনের জট লেগে থাকতে পারে।
এদিকে বগুড়া জেলা পুলিশ মহাসড়কের বগুড়া অংশে যানজট হতে পারে এমন ৮টি পয়েন্ট চিহ্নিত করেছেন। সেগুলো হচ্ছে, শেরপুরের চান্দাইকোনা বগুড়া বাজার, শেরপুরের ধুনট মোড়, শাজাহানপুরের লিচুতলা বাইপাস ও বনানী মোড়, বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সামনে, বগুড়া শহরতলীর চারমাথা বাস টার্মিনাল, মাটিডালী এবং শিবগঞ্জের মোকামতলা বন্দর।
বগুড়া পুলিশ সুপার সুদীপ কুমার চক্রবর্তী বলেন, ঈদে ঘরে ফেরা মানুষদেরকে যেন মহাসড়কে দুর্ভোগ পোহাতে না হয় সেজন্য ৮টি পয়েন্ট চিহ্নিত করা হয়েছে। এই পয়েন্ট গুলোতে ঈদের এক সপ্তাহ আগে থেকে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করে যানবাহন চলাচল স্বভাবিক রাখতে কাজ করবে।
তিনি বলেন, ঈদ উপলক্ষে মহাসড়কে যাত্রী এবং যানবাহনের চাপ বেড়ে যায়। এ কারণে হাইওয়ে পুলিশ ও জেলা পুলিশ সমন্বয় করে মহাসড়ক মানুষের দুর্ভোগ কমাতে কাজ করে যাবে। আশা করি এবার যানজট সহনীয় পর্যায়ে থাকবে।
বঙ্গবন্ধুর আদর্শে শিশুদের গড়ে তুলতে হবে: গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রী
গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রী র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শে শিশুদের গড়ে তোলার আহবান জানিয়েছেন।
শুক্রবার (২৯ মার্চ) জাতীয় প্রেসক্লাব মিলনায়তনে শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হক গবেষণা পরিষদ আয়োজিত ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১০৪তম জন্মবার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবস-২০২৪’ উদযাপন উপলক্ষ্যে আয়োজিত এক আলোচনাসভা এবং সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের মাঝে ঈদ সামগ্রী বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এ আহ্বান জানান।
মন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আজীবন সাধারণ মানুষের কল্যাণে কাজ করেছেন এবং একটি মানবিক বাংলাদেশ গড়তে চেয়েছিলেন। তিনি শিশুদের অত্যাধিক ভালবাসতেন বলে তাঁর জন্মদিনকে জাতীয় শিশু দিবস হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। তাঁর আদর্শ ধারণ করে প্রত্যেকটি শিশুকে দেশ ও দেশের মানুষের কল্যাণে কাজ করার মনোভাব নিয়ে বড় হতে হবে।
মন্ত্রী বলেন, শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হক এবং জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান দু’জনেই আজীবন মানুষের কল্যাণে কাজ করেছেন। তাই সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের মাঝে ঈদ সামগ্রী বিতরণ এবং তাদের সুশিক্ষায় শিক্ষিত করার উদ্যোগের জন্য তিনি শেরে বাংলা একে ফজলুল হক গবেষণা পরিষদের প্রশংসা করেন।
অনুষ্ঠানে প্রেস কাউন্সিলের চেয়ারম্যান বিচারপতি মোহাম্মদ নিজামুল হক নাসিম প্রধান আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।
এছাড়া, ঢাকা ১০ আসনের সংসদ সদস্য চিত্রনায়ক ফেরদৌস হাসান, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের শিল্প ও বাণিজ্য বিষয়ক সম্পাদক মোঃ সিদ্দিকুর রহমান, বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ড. সাজ্জাদ হায়দার, শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হকের দৌহিত্র ও সাবেক সচিব সৈয়দ মার্গুব মোর্শেদ, চিত্রনায়িকা মেহজাবিনসহ বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
আলোচনাসভার শেষে মন্ত্রী শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হক গবেষণা পরিষদের পক্ষে সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের মাঝে ঈদ উপহার তুলে দেন।
প্রাথমিক নিয়োগ পরীক্ষায় ইলেকট্রনিক ডিভাইস ব্যবহার, ভাই-বোন আটক
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষার সময় কানে বিশেষ কায়দায় লুকিয়ে ইলেকট্রনিক ডিভাইস ব্যবহার করে নকল করার দায়ে এক পরীক্ষার্থীসহ দুইজনকে আটক করেছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।
শুক্রবার (২৯ মার্চ) সকালে ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌর ডিগ্রি কলেজের পরীক্ষাকেন্দ্র থেকে তাদের আটক করা হয়। আটকৃতরা হলেন- পরীক্ষার্থী রিনা আক্তার ও তার ভাই আব্দুল জলিল। তারা জেলার বিজয়নগর উপজেলার পত্তন ইউনিয়নের টুকচানপুর এলাকার আব্দুল মালেক মিয়ার সন্তান।
কলেজ সূত্রে জানা যায়, সারা দেশের মত ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌর ডিগ্রি কলেজ কেন্দ্রে সকাল ১০টায় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা শুরু হয়। এ সময় কেন্দ্রের ১০১ নম্বর কক্ষে পরীক্ষার্থী ছিলেন রিনা আক্তার। পরীক্ষা শুরু হওয়ার প্রায় আধা ঘণ্টা পেরোলেও প্রশ্নের উত্তরপত্রে কোনো কিছু না লিখে বসে ছিলেন তিনি। তখন পরীক্ষাকেন্দ্রে ডিউটিরত কেন্দ্র পরিদর্শকের সন্দেহ হলে রিনার দেহ তল্লাশি চালায়। এতে কানের ভেতরে লুকিয়ে রাখা খুব ছোট একটি ইলেকট্রনিক ডিভাইস উদ্ধার করা হয়। পরে কলেজ কর্তৃপক্ষ খবর দিলে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ সেলিম শেখ ঘটনাস্থলে এসে শিক্ষার্থীকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করেন ও তার ভাই আব্দুল আজিজকে আটক করেন। পরে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে দুজনের বিরুদ্ধে মামলা করেন।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ সেলিম শেখ জানান, পরীক্ষার্থী রিনা আক্তার তার কানে ডিভাইস লুকিয়ে রেখেছিলেন। সেই ডিভাইসের মাধ্যমে পরীক্ষার্থী হয়তো পরীক্ষার শেষ সময়ের দশ মিনিট পূর্বে উত্তর লেখার চেষ্টা করতেন। এটি করতে তার ভাই সাহায্য করেছেন। পরে তার ভাইকেও আটক করা হয়। এ ঘটনায় একটি মামলা করা হয়েছে। মামলার মাধ্যমে এই চক্রের সঙ্গে জড়িত আর কেউ থাকলে সবাইকে গ্রেফতার করা হবে।
রংপুরে বরাদ্দ নেই নতুন ট্রেন, ঈদ যাত্রার ভোগান্তির শঙ্কা
ঈদুল ফিতর উপলক্ষে নতুন ৮ জোড়া ট্রেন বরাদ্দ হলেও রংপুর বিভাগে নেই একটিও। এ নিয়ে রংপুরের ট্রেন যাত্রীদের মাঝে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে।
এদিকে লালমনিরহাট রেলওয়ে বিভাগের ১০ জোড়া আন্তঃনগর ট্রেন ছাড়ছে নির্দিষ্ট সময়ের অনেক পরে। ফলে ঈদযাত্রায় নতুন করে ভোগান্তির সঙ্গে বাড়বে শিডিউল বিপর্যয়।
পশ্চিমাঞ্চলীয় রেলের লালমনিরহাট বিভাগ সূত্রে জানা যায়, লালমনিরহাট বিভাগ থেকে ১০ জোড়া আন্তঃনগর ট্রেন ঢাকায় যাতায়াত করে। এগুলো হচ্ছে রংপুর এক্সপ্রেস, লালমনি এক্সপ্রেস, বুড়িমারী এক্সপ্রেস, কুড়িগ্রাম এক্সপ্রেস, পঞ্চগড় এক্সপ্রেস, একতা, দ্রুতযান, দোলনচাঁপা, করতোয়া এক্সপ্রেস ও বাংলাবান্ধা এক্সপ্রেস। প্রতিদিন এসব ট্রেনে ৮ থেকে ১০ হাজার যাত্রী ঢাকাসহ বিভিন্ন স্থানে যাতায়াত করে। প্রতিবছর ঈদকে কেন্দ্র করে যাত্রীর সংখ্যা দুই-তিন গুণ পর্যন্ত বেড়ে যায়। যাত্রীদের চাপ কমাতে বিশেষ ট্রেন চালুর উদ্যোগ নেওয়া হলেও বরাদ্দের বেলায় রংপুর বরাবরই উপেক্ষিত।
এদিকে ঈদের আগেই রংপুর বিভাগে চলাচলকারী ট্রেনগুলোর শিডিউল বিপর্যয় শুরু হয়েছে। যাত্রীদের অভিযোগ রংপুর এক্সপ্রেস, লালমনিরহাট এক্সপ্রেস, কুড়িগ্রাম এক্সপ্রেস ট্রেনগুলো প্রতিদিনই প্রায় ৫ ঘণ্টা পর্যন্ত দেরিতে ছাড়ছে। ফলে ট্রেন যাত্রীরা চরম বিপাকে পড়েছে।
রংপুর মহানগর সুজনের সভাপতি অধ্যক্ষ খন্দকার ফখরুল আনাম বেঞ্জু বলেন, রংপুর অঞ্চলের সঙ্গে সরকারের যে বিমাতাসুলভ মনোভাব ছিল তা এখনও যায়নি। ২৮২ বছরের পুরোনো ঐতিহ্যবাহী রংপুর জেলা হলেও এখানে রেল ব্যবস্থার উন্নয়ন হয়নি। রংপুর বিভাগ থেকে সারা দেশে ধান, আলু, কয়লা, কঠিন শিলা রপ্তানি হয়। লাখ লাখ মানুষ ঢাকায় গার্মেন্টসে চাকরি করছে। কিন্তু তাদের যাতায়াতের জন্য কোনো বিশেষ ট্রেন বরাদ্দ নেই।
এদিকে রংপুর রেলস্টেশনের সুপার শংকর গাঙ্গুলী বলেন, রংপুর এক্সপ্রেসসহ অন্য ট্রেন কিছুটা দেরিতে ছাড়লেও শিডিউল বিপর্যয়ের শঙ্কা নেই।