গভীর সমুদ্রে মৎস্য আহরণ বাড়াতে চায় সরকার
গভীর সমুদ্রে মৎস্য আহরণ বাড়াতে চায় বাংলাদেশ সরকার। দুইশ নটিক্যাল মাইল পর্যন্ত মৎস্য সম্পদ আহরণে নতুন লাইসেন্স প্রদান বন্ধ রয়েছে। তবে গভীর সমুদ্রে মৎস্য আহরণে আগ্রহীদের ক্ষেত্রে এই বিধিনিষেধ প্রযোজ্য হবে না। বরং সরকার গভীর সমুদ্রের বিষয়ে আগ্রহীদের উৎসাহ দিতে চায়।
এমন তথ্য নিশ্চিত করেছেন মৎস্য অধিদপ্তরের সামুদ্রিক শাখার সহকারি পরিচালক (রিজার্ভ) শওকত চৌধুরী।
তিনি বার্তা২৪.কমকে বলেন, আমরা চাচ্ছি গভীর সমুদ্রে মৎস্য আহরণে আমাদের শেয়ার বাড়ুক। এখন পর্যন্ত মাত্র ১৭টি জাহাজের জন্য সম্মতিপত্র দেওয়া হয়েছে। যদিও দরপত্র আহ্বান করার পর আবেদন করতে হয়, কিন্তু এখনও আগ্রহীরা এই আবেদন জমা দিতে পারবেন। কয়েকটি আবেদন জমা হয়েছে। নতুন করে আরও কিছু আবেদন পাওয়া গেলে দ্রুত সময়ের মধ্যে দরপত্র আহ্বান করতে চায় মৎস্য অধিদপ্তর বলে জানান তিনি।
তিনি বলেন, নিয়ম হচ্ছে দরপত্র আহ্বান করলে আবেদন জমা দিতে হয়। আবেদন যথাযথ হলে জাহাজ আমদানি করার অনুমোদন দেওয়া হয়। এই অনুমোদন পাওয়ার ছয় মাসের মধ্যে জাহাজের নকশা জমা দিতে হয়। নকশা অনুমোদিত হলে, দুই বছর সময় দেওয়া হয় জাহাজ আমদানির জন্য।
জাহাজ আমদানি করার পর এমএমডি (মার্কেন্টাইল মেরিন ডিপাটমেন্ট) থেকে জাহাজের ফিটনেস সনদ নিতে হয়। সনদ প্রাপ্তি সাপেক্ষে সমুদ্রে মৎস্য আহরণের চুড়ান্ত সনদ দেওয়া হয়। এখানে একটি শর্ত রয়েছে, পাঁচ বছরের অধিক ব্যবহৃত কোনো জাহাজ আমদানি করার কোনো সুযোগে নেই।
অন্যদিকে দুইশ নটিক্যাল মাইল পর্যন্ত এক্সক্লুসিভ ইকোনমিক জোন (ইইজেড) সমুদ্র সম্পদ নিয়ে একটি জরিপ কাজ চলমান রয়েছে। ২০১৬ সালে শুরু হয়েছে এই জরিপ কাজ। আগামী জুন মাসে শেষ হবে এই জরিপ। জরিপ শেষ হওয়ার পর জরিপের রিপোর্টের ওপর নির্ভর করবে ইইজেডে লাইসেন্স প্রদানের বিষয়টি। বর্তমানে অনুমোদিত লাইসেন্স রয়েছে ২৫৫টি।
বর্তমানে দেশের মোট মৎস্য উৎপাদনের ২২ শতাংশ আসে সমুদ্র থেকে। জিডিপিতে যার অবদান ৩.৭৪ শতাংশ। আর দেশের মোট রপ্তানি আয়ের প্রায় চার শতাংশ আসে এই খাত থেকে। দেশে মৎস্যজীবীর সংখ্যা ধরা হয় প্রায় ১১ লাখের মতো। যার এক-তৃতীয়াংশ সামুদ্রিক মৎস্য আহরণে জড়িত। এর বাইরে বিশাল জনগোষ্ঠী রয়েছে যারা খন্ডকালীন মৎস্য আহরণে জড়িত।
ভারত মহাসাগরে মাছ ধরার অধিকার রয়েছে বাংলাদেশের। এক টুনা মাছ ধরেই বছরে কোটি কোটি ডলার আয় করছে ভিয়েতনাম। ২০১১ সালে দেশটি টুনা রপ্তানি করে আয় করেছে ২১ কোটি ডলার। কিন্তু বাংলাদেশ সবে মাত্র ১৭টি জাহাজের সম্মতিপত্র দিয়েছে। যা ২০১৬ ও ২০১৭ সালে দুই দফায় টেন্ডার করার পর।