গ্রামীণফোনের কলরেট বাড়ছে ৫ পয়সা
দেশের বৃহৎ মোবাইল ফোন অপারেটর গ্রামীণফোনের সর্বনিম্ন কলরেট আরও ৫ পয়সা বাড়ছে। এর ফলে মোবাইল ফোনে কথা বলতে গ্রামীণফোন গ্রাহকদেরকে ৫০ পয়সা ব্যয় করতে হবে।
গ্রামীণফোনকে সিগনিফিকেন্ট মার্কেট পাওয়ার (এসএমপি) ঘোষণার অংশ হিসেবে সরকার তাদের কলরেট বাড়ানোর বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আগামী জুন থেকে এ সিদ্ধান্ত কার্যকর হতে যাচ্ছে বলে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) সূত্রে জানা গেছে। নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিটিআরসি রোববার (১২ মে) এ সংক্রান্ত একটি চিঠি গ্রামীণফোনকে পাঠিয়েছে।
বর্তমানে অন্যসব অপারেটরের ক্ষেত্রে মিনিট প্রতি সর্বনিম্ন কলরেট ৪৫ পয়সা। ভ্যাট ও অন্যান্য শুল্ক আরোপের পর এটি ৫৪ পয়সা দাঁড়ায়। কিন্তু গ্রামীণফোনের ক্ষেত্রে এটি ৬১ পয়সায় দাঁড়াবে।
তবে এ বিষয়ে বিটিআরসি চেয়ারম্যান জহুরুল হক অবশ্য বলছেন, এতে গ্রামীণফোনের বর্তমান গ্রাহকদের ওপর বাড়তি চাপ পড়ার সম্ভাবনা কম। কারণ অপারেটরটি বেশি পয়সা নিয়ে থাকে গ্রাহকদের কাছ থেকে। গ্রামীণফোনের আর্থিক প্রতিবেদন অনুযায়ী তার এভারেজ কলরেট এখন ৭০ পয়সা।
এর আগে বিটিআরসি এসএমপির আওতায় গ্রামীণফোনের কলরেট বাড়ানোর বিষয়ে একটি সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। তখন বলা হয়েছিল আগামী ১ মার্চ থেকে বর্ধিত কলরেট কার্যকর হবে। কিন্তু তখন কত পয়সা বাড়ানো হবে সেই সিদ্ধান্ত নিতে পারেনি বিটিআরসি।
মার্কেট নিয়ন্ত্রণের জন্যই বিভিন্ন দেশে এসএমপি চালু করা হয়। ইউরোপ-আমেরিকার দেশগুলোতে অনেক আগেই এসএমপি চালু হয়েছে। বাংলাদেশেও এ ধরনের প্রক্রিয়া নিয়ে অনেক দিন ধরেই আলোচনা চলছিল। এবার তা কার্যকরের উদ্যোগ নেওয়া হলো।
বিটিআরসি’র রেগুলেশন বলছে, কোনো গ্রাহকই মার্কেটের ৪০ শতাংশের বেশি দখলে রাখতে পারবে না। গ্রাহক সংখ্যা অনুযায়ী, বর্তমানে গ্রামীণফোনের মার্কেট শেয়ার ৪৫.৮ শতাংশ, রবির ৩০ শতাংশ, বাংলালিংককের ২২ শতাংশ এবং টেলিটকের ২.৫ শতাংশ। মোবাইল অপারেটরগুলোর মোট আয়ের অর্ধেকের বেশি গ্রামীণফোনের (৫১ শতাংশ)।
মোবাইল অপারেটরের গ্রাহক সংখ্যা ও রাজস্ব আয় দুই বিবেচনাতেই এই অপারেটরটিকে এসএমপি ঘোষণা করা হয়। এসএমপি হওয়ার ফলে গ্রামীণফোন কোনো প্রকার মার্কেট কমিউনিকেশন করতে পারবে না, কোনো প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে স্বতন্ত্র বা একক স্বত্বাধিকার চুক্তি করা থেকে বিরত থাকতে হবে, মাসে কল ড্রপ ২ শতাংশের বেশি হতে পারবে না এবং এমএনপি এর মাধ্যমে গ্রাহককে ৩০ দিন পর্যন্ত রাখতে পারবে। যদিও এমএনপিতে একবার অপারেটর পরিবর্তন করলে ৯০ দিন পর আবার অপারেটর পরিবর্তন করা যাবে। কিন্তু গ্রামীণফোনের ক্ষেত্রে তা ৩০ দিন করা হয়েছে।
বিটিআরসি বলছে, টেলিযোগাযোগের বাজারে শৃঙ্খলা ও প্রতিযোগিতা আনতেই এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এতে এই শিল্পেরই উপকার হবে। এর আগে টেলিযোগাযোগ খাতে মনোপলি বন্ধে প্রণীত সিগনিফিকেন্ট মার্কেট পাওয়ার (এসএমপি) রেগুলেশন জারি করেছিল বিটিআরসি।