সমালোচকদের মুখে কালি মেখে দিয়েছে রূপনগর থানা
দেড় মাস পেরিয়ে গেলেও রূপনগর আবাসিকের প্রধান সড়কে দোকান বসতে দেয় নি থানা পুলিশ। ঘটনাটি সমালোচকদের মুখে চুনকালি মেখে দেওয়ার মতো হয়েছে।
পহেলা বৈশাখের তিনদিন আগে যখন ফুটপাত ও রাস্তা থেকে দোকান উচ্ছেদ করা হয় তখন অনেকে মুখ টিপে টিপে বলেছিলেন, বছর শেষতো তাই নতুন করে মাসোহারা বাড়াবে তার মহড়া চলছে। কয়েকদিন পর দেখবেন ঠিকই বাজার বসে যাবে।
পেছনে যারা সমালোচনা করেছিলেন তারাও বেশ অবাক। আরে এমনটাতো সচরাচর দেখা যায় না। সকালে তুলে দিলে সন্ধ্যায় ফিরে আসে, আর সন্ধ্যায় তুলে দিলে পরদিন সকালে ফিরে আসে দখলবাজরা। কিন্তু এবার তো বেশ অবাকেই হতে হচ্ছে।
অবশ্য উচ্ছেদের কয়েকদিনের মাথায় দোকানিরা ফিরে আসার চেষ্টা করেছিলো, কিন্তু পুলিশ তাদের সরিয়ে দিয়েছে। পুলিশের কঠোর মনোভাবের কারণে দেড় মাস হতে চললেও রূপনগর প্রধান সড়ক এখন হকার মুক্ত।
এই উচ্ছেদের পূর্বে ফুটপাতে ছিলো বাহারি মালামালের পসরা। আর রাস্তায় ছিলো সবজি ভ্যানে ঠাসা। যে কারণে প্রায়ই যানজট লেগে থাকতো। সড়কটির পাশে বাংলাদেশ ইউনির্ভাসিটি অব বিজনেস টেকনোলজি, মনিপুর স্কুল এন্ড কলেজ, কামাল আহমেদ মজুমদার স্কুল, রাজধানী মহিলা কলেজসহ অনেকগুলো শিক্ষা প্রতিষ্ঠান অবস্থিত।
রাজধানী মহিলা কলেজের বিপরীতে ফুটপাত ছিলো মুরগি ও মাছ ব্যবসায়ীদের দখলে। যে কারণে এখানে হেঁটে চলা ছিলো অনেক কষ্টকর। নির্ধারিত স্থানের বাইরে পশু জবাই করার নিষেধ থাকলেও। এখানে এই আইন ছিলো পুরোপুরি অনুপস্থিত। কসাইদের ছিলো স্থায়ী ঘাঁটি। দিন দুপুরে রাস্তার উপর গরু কাটা বেচা চলতো।
মহিলা কলেজের প্রবেশ পথ ঘেষেও বসতো একজন কসাই। সাধারণ মানুষের অসহ্য হলেও তারা প্রতিবাদ করার সাহস করতো না। কিছু বলতে গেলে উল্টো অনেক কথা শুনিয়ে দিতো। অনেকটা অভিন্ন পরিস্থিতি ছিলো আরামবাগ আবাসিক এলাকার প্রধান সড়কের।
সেখানে ছিলো শতশত সবজি ও ফল বিক্রেতার ভ্যান। সিটি করপোরেশনও তাদের কাছে অসহায় হয়ে পড়েছিলো। সিটি করপোরেশন ভ্যান-ঠেলার সবজি বিক্রেতাদের বিপদজনক উৎপাত হিসেবে দেখছে। তাদের কারণে রাস্তাও টেকানো যাচ্ছে না বলে অভিযোগ করেছেন ডিএনসিসির কর্তা এনামুল কবীর।
তিনি অভিযোগ করেন, পিচঢালা পথ যদি সবসময় ভেজা থাকে তাহলে টেম্পার নষ্ট হয়ে যায়। সবজি বিক্রেতারা সব সময় পানি ছিটাতে থাকে। এতে তাদের ভ্যানের নিচে সব সময় স্যাঁতস্যাঁতে হয়ে থাকে। এতে অল্পদিনেই রাস্তা নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।
সিটি করপোরেশন কেনো তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছে না? জবাবে এনামুল কবীর বলেন, আমরা তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেই না এ কথা সঠিক নয়। আমরা ব্যবস্থা নেই। জরিমানাও করি পরে আবার বসে যায়। কোথাও অভিযান শুরু হলে দ্রুত ভ্যান নিয়ে গলির মধ্যে হারিয়ে যায়। আমরা চলে এলে আবার ফিরে আসে।
মিরপুর অঞ্চলের মহল্লার রাস্তাগুলো ঘুরলে এমন হাজারো ভ্যান ও ঠেলায় সবজি, ফলমুল থেকে মাছ মুরগি বিক্রেতার হরদম দেখা যাবে। এর একদিকে যেমন রাস্তায় জট তৈরি করছে, তেমনি রাস্তা দ্রুত নষ্ট করে ফেলছে একইসঙ্গে পরিবেশও দুষিত করছে। হোপের গলিসহ অনেক সড়ক পুরোটাই গিলে ফেলেছে হকাররা। রাস্তা না বাজারের গলি সেটাই বুঝতে বেশ বেগ পেতে হয়। ষাট ফিট রাস্তার অবস্থাও যায় যায়। রূপনগর থানার এই উদ্যোগ অব্যহত থাকুক স্থানীয়রা এমনটাই কামনা করেছেন।