সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদকে দেখতে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) গেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
সোমবার( ১ জুলাই) সকাল সাড়ে ১০ টার দিকে তিনি সিএমএইচ যান বলে জানা গেছে। সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের সিএমএইচ এর আইসিইউতে থাকা হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের সঙ্গে দেখা করেন।
এ সময় জাতীয় পার্টির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জিএম কাদের ও মহাসচিব মসিউর রহমান রাঙ্গাসহ দলের শীর্ষ নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
গত বুধবার (২৬ জুন) শরীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাঁকে সিএমএইচে ভর্তি করানো হয়। চিকিৎসকরা জানিয়েেছন, সাবেক রাষ্ট্রপতির ফুসফুসে পানি জমেছে।
রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের ওপর দিয়ে বয়ে যাচ্ছে তীব্র তাপদাহ। তীব্র এই দাবদাহে চুয়াডাঙ্গা ও পাবনায় হিট স্ট্রোকে দুই জনের মৃত্যু হয়েছে।
শনিবার (২০ এপ্রিল) বিকেল ৩টায় ৪২ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে চুয়াডাঙ্গায়। এসময় বাতাসের আদ্রতা ছিল ১৮ শতাংশ।পাবনার ঈশ্বরদীতে ৪১ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে, যা জেলায় চলতি মৌসুমের মধ্যে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা।
চুয়াডাঙ্গায় আজ সকালে মাঠে কাজ করতে গিয়ে জাকির হোসেন (৩৩) নামের এক কৃষক হিট স্ট্রোকে আক্রান্ত হন। পরে হাসপাতালে নেওয়ার পথে তিনি মারা যান।
জাকির হোসেনের বাবা আমির হোসেন ও দর্শনা থানার ওসি বিপ্লব কুমার সাহা বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
জাকিরের বাবা আমির হোসেন বলেন, তীব্র গরমে মাঠের ধান মরার মতো অবস্থা। তাই জমিতে সেচ দেওয়ার জন্য সকাল ৮টার দিকে মাঠে যায় জাকির হোসেন। মাঠে যাওয়ার ঘণ্টাখানেক পর খবর পাই ছেলে স্ট্রোক করেছে। মাঠের অন্য কৃষকরা ছেলেকে উদ্ধার করে দামুড়হুদা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাচ্ছিলেন। পথেই সে মারা যায়।
এদিকে, দুপুরে পাবনায় তীব্র দাবদাহে হিট স্ট্রোক করে সুকুমার দাস (৬০) নামের এক বৃদ্ধ মারা গেছেন।
জানা গেছে, পাবনা শহরের রুপকথা রোডে একটি চায়ের দোকানে চা খাওয়ার সময় হিট স্ট্রোকে আক্রান্ত হন সুকুমার দাস। এ সময় আশপাশের লোকজন তাকে উদ্ধার করে পাবনা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
সুকুমার দাস শহরের শালগাড়িয়ার জাকিরের মোড়ের বাসিন্দা।
ঈশ্বরদী আবহাওয়া অফিসের তথ্য মতে, কয়েক দিন ধরেই পাবনায় ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের ওপর তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। আজকে রেকর্ড করা হয়েছে ৪১ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
রাজধানীর হাজারীবাগে একটি নির্মাণাধীন ১০ তলা ভবনের ছাদ থেকে নিচে পড়ে রফিকুল (৩৫) নামে এক শ্রমিক মারা গেছেন।
শনিবার (২০ এপ্রিল) দুপুর দেড়টার দিকে হাজারীবাগ বায়তাল মহারম মসজিদের পাশে ঘটনাটি ঘটে।
রফিকের সহকর্মী মো. শাহিন জানান, রফিকের বাড়ি ভোলা জেলার তজুমুদ্দিন উপজেলায়। বর্তমানে মোহাম্মদপুর চাঁদ উদ্যান এলাকায় থাকতেন তিনি। হাজারীবাগের ওই ভবনে রড মিস্ত্রীর কাজ করতেন।
তিনি আরও জানান, সকালে ওই ১০তলা ভবনের ছাদে সেন্টারিংয়ের টিনের সিট খুলছিলেন রফিক। এ সময় অসাবধানতাবসত ১০তলা থেকে নিচে পরে গুরুতর আহত হন। মুমূর্ষু অবস্থায় সহকর্মীরা ওই শ্রমিককে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে এলে চিকিৎসক দুপুর ২টার দিকে তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ (পরিদর্শক) মো. বাচ্চু মিয়া মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, মরদেহ মর্গে রাখা হয়েছে।
ময়মনসিংহের গৌরীপুরে প্রতি মণ শসা বিক্রি হচ্ছে, ৮০-১০০ টাকা দরে। শসার ন্যায্য দাম না পাওয়ায় লোকসানের মুখে পড়তে হচ্ছে চাষিদের। অনেকেই হতাশ হয়ে পড়েছেন আবার অনেক কৃষক লোকসানের ভয়ে ক্ষেতের শসা ক্ষেতেই রেখে দিচ্ছেন।
শনিবার (২০ এপ্রিল) দুপুরে উপজেলার কয়েকটি গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, ক্ষেত থেকে শসা তুলছেন কৃষকেরা। কেউ পাইকারি দরে প্রতি কেজি শসা দুই টাকা আড়াই টাকা দামে বিক্রি করছেন। কেউ শসা তুলে ক্ষেতেই ফেলে দিচ্ছেন অথবা কেউ ক্ষেত থেকে শসা তুলছেনই না!
উপজেলার অচিন্তপুর গ্রামের শসাচাষি আমিনুল হক শাহীন বলেন, এবার ৪০ শতাংশ জমিতে শসার আবাদ করেছি। ফলন ভালো হয়েছে। প্রথমদিকে ৮০-৯০ টাকা মণ দরে বিক্রি করলেও এখন তো ক্ষেতেই যাই না। কারণ, শসা ৮০-১০০ টাকা মণ দরে এখন বিক্রি করতে হচ্ছে। শসা বিক্রি করে ন্যায্য দাম না পাওয়ায় শ্রমিকদের মজুরি দিয়ে শসা উত্তোলন করে কোনো লাভ নেই। ক্ষেতের মধ্যেই শসা লাউয়ের মতো বড় হচ্ছে। ক্ষেতেই পচে যাচ্ছে।
মোবারকপুর গ্রামের চাষি আলী বলেন, ৩০ শতাংশ জমিতে শসা চাষ করেছি। ফলন দেখে খুশি হয়েছিলাম। কিন্তু বর্তমানে শসা তুলে বাজারে নিয়ে গেলে বিক্রি হচ্ছে না। এক পরিচিত পাইকারের কাছে ৯০-১০০ মণ দরে বিক্রি করেছি। বাজার দরে হতাশ হয়ে পড়েছি। লাভ তো দূরের কথা, খরচ তোলাই তো দায় হয়ে পড়েছে!
ব্যবসায়ী মিন্টু মিয়া বলেন, আমরা বিভিন্ন কৃষকের কাছ থেকে ১শ টাকা মণ দরে কিনে সিলেটে বিক্রি করি ২শ টাকা মণে। বর্তমানে এক ট্রাক শসা পাঠাতে মণপ্রতি আড়ৎদারকে দিতে হয় ২০ টাকা। লেবার খরচ হয় ১৫ টাকা। বস্তা কিনতে হয় ২০ টাকায় এবং পাঠাতে ভাড়া লাগে ২২ হাজার টাকা। এই টাকা খরচ করে সিলেটে শসা পাঠালে এখন আর আমাদের লাভ হয় না। লোকসান গুণতে হচ্ছে।
ইছুলিয়া গ্রামের ব্যবসায়ী আশরাফুল ইসলাম আশরাফ বলেন, এখন শসার ব্যবসা করে আমরা লোকসানের মধ্যে আছি। আমাদের ২/৩ লাখ টাকা করে লস হচ্ছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নিলুফার ইয়াসমিন জলি বলেন, রমজান মাসকে সামনে রেখে গৌরীপুরের কৃষকেরা বেশি পরিমাণে শসা উৎপাদন করেছেন এবং বাম্পার ফলনও হয়েছে। ফলন ভালো হওয়ায় বাজারে আমদানিও বেশি। সে কারণে দাম দ্রুত কমে যাচ্ছে। দাম কমে যাওয়ায় কৃষকদের লাভ কম হচ্ছে।
স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, চট্টগ্রাম ব্যুরো
জাতীয়
প্রত্যাশার একদিন আগেই দস্যুমুক্ত বাংলাদেশি জাহাজ এমভি আবদুল্লাহ দুবাইয়ের আল হামরিয়া বন্দরে পৌঁছার আশা করছেন মালিকপক্ষ। আগামীকাল রোববার (২১ এপ্রিল) সন্ধ্যা নাগাদ জাহাজটি বন্দরে নোঙর করবে। এর আগে ২২ এপ্রিল জাহাজটি দুবাইয়ে পৌঁছতে পারে বলে জানিয়েছিল জাহাজটির মালিকপক্ষ কবির গ্রুপ। তবে জাহাজটির বর্তমান অবস্থান অনুযায়ী দ্রুতই দুবাই অভিমুখে এগিয়ে চলায় আগের সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করেছে তারা।
জাহাজটির মালিকপক্ষ কেএসআরএমের মিডিয়া অ্যাডভাইজর মিজানুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘রোববার সন্ধ্যা নাগাদ এমভি আবদুল্লাহ দুবাইয়ের হামরিয়া বন্দরে পৌঁছাবে। সেখানে বার্থিং শেষে আরও ৪-৫ দিনের আনুষ্ঠানিকতা আছে। তারপর ২১ নাবিক জাহাজটি নিয়ে চট্টগ্রামে পৌঁছাবে। দুজন আসবেন উড়োজাহাজে।’
মালিকপক্ষের একটি সূত্র জানিয়েছে, রোববার সন্ধ্যা ছয়টার সময় জাহাজটি হামরিয়া বন্দরে পৌঁছাতে পারে। তবে সেখানে বন্দরের বর্তমান অবস্থান অনুযায়ী সেখানে বার্থিং ২৪-৩২ ঘণ্টা বিলম্ব হওয়ার সম্ভাবনা আছে। আর জোয়ারের সময় এই বার্থিং হতে পারে। মালিকপক্ষের প্রতিনিধি হিসেবে কেএসআরএম গ্রুপের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মেহেরুল করিম নাবিকদের গ্রহণ করতে দুবাই যাচ্ছেন।
১২ মার্চ মোজাম্বিক থেকে কয়লা নিয়ে দুবাই যাবার পথে সোমালিয়া উপকূল থেকে ৬০০ নটিক্যাল মাইল দূরে জলদস্যুদের কবলে পড়ে ২৩ নাবিকসহ এমভি আবদুল্লাহ।এরপর জাহাজটিকে নিজেদের উপকূলে নিয়ে যায় দস্যুরা। সেখানে প্রায় এক মাস ধরে নাবিকদের জিম্মি করে রাখে তারা। এর ৩৩ দিন পর মুক্তিপণের অর্থ পেয়ে ১৩ মার্চ দিবাগত রাত ৩টার দিকে জলদস্যুরা জাহাজ ছেড়ে চলে যায়। এরপর গন্তব্য দুবাইয়ের উদ্দেশ্যে রওনা হয় জাহাজটি।
সোমালি উপকূল পেরিয়ে এডেন উপসাগর হয়ে সংযুক্ত আরব আমিরাতে পৌঁছাবে এমভি আবদুল্লাহ। দস্যুমুক্ত হওয়ার পর নিরাপদ এলাকায় না পৌঁছানো পর্যন্ত ইইউএনএভিএফওআরের যু্দ্ধজাহাজ এমভি আবদুল্লাহকে পাহারা দিয়ে নিয়ে যায়। এর মধ্যে এডেন উপসাগর পর্যন্ত সাগর নিরাপদ নয়। এডেন উপসাগর পার হওয়ার পর যুদ্ধজাহাজগুলো এমভি আবদুল্লাহকে বিদায় দিয়ে নিজেদের গন্তব্যে ফিরে যায়। অবশ্য জাহাজে নিজস্ব উদ্যোগে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। এমভি আবদুল্লাহর রেলিংয়ের চারপাশে লোহার কাঁটাতার, ডেকে ফায়ার হোস, জাহাজে নিরাপত্তার জন্য সংরক্ষিত এলাকা সিটাডেল, ইমার্জেন্সি ফায়ার পাম্প এবং সাউন্ড সিগন্যাল প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
এছাড়া সমুদ্র পথে নিরাপত্তা ঝুঁকি মূল্যায়নকারী এবং ঝুঁকি হ্রাসে পরামর্শদাতা এমব্রেই গার্ডিয়ান সার্ভিস নামের যুক্তরাজ্যভিত্তিক একটি প্রতিষ্ঠানের সেবা নিয়েছে জাহাজের মালিক পক্ষ এসআর শিপিং। আরব আমিরাতের আল হামরিয়া বন্দরে পৌঁছানো পর্যন্ত জাহাজটির চারপাশে কোনো ঝুঁকি থাকলে তা ক্যাপ্টেনকে জানাবে প্রতিষ্ঠানটি।