গোপনে কওমি পরীক্ষায় ‘মাওলানা’ হলেন শিবির সভাপতি



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
শিবির সভাপতি ড. মোবারক হোসাইন, ছবি: সংগৃহীত

শিবির সভাপতি ড. মোবারক হোসাইন, ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

কওমি মাদরাসার নিয়মিত ছাত্র না হয়েও দাওরায়ে হাদিসের পরীক্ষায় অংশ নিয়ে উত্তীর্ণ হয়ে ‘মাওলানা’ ডিগ্রি পেলেন শিবির সভাপতি ড. মোবারক হোসাইন। অত্যন্ত গোপনে পরীক্ষায় অংশ নেন তিনি। ফলাফল প্রকাশের পর এটা নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা শুরু হয়েছে। দাবি উঠেছে, দাওরায়ে হাদিসের পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার জন্য শুধু মেশকাত ক্লাসের সনদ বাধ্যতামূলক নয়, বরং সব স্তরের সনদ ও কওমি মাদরাসার নিয়মতান্ত্রিক ছাত্রত্ব থাকতে হবে।

বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি ড. মোবারক হোসাইন দাওরায়ে হাদিস (তাকমিল)-এ ৬৯৬ নম্বর পেয়ে জায়্যিদ জিদ্দান (প্রথম বিভাগ) বিভাগে উত্তীর্ণ হয়েছেন। ‘আল হাইআতুল উলইয়া লিল-জামিয়াতিল কওমিয়া বাংলাদেশ’ এর অধীনে অনুষ্ঠিত ১৪৪০ হিজরি শিক্ষাবর্ষের দাওরায়ে হাদিস (তাকমিল) পরীক্ষায় তিনি এ ফলাফল অর্জন করেন।

দাওরায়ে হাদিসের পরীক্ষায় অংশ নিয়ে প্রথম বিভাগ পাওয়ার খবর শিবির সভাপতি তার ফেসবুক পেইজে জানান। তবে তিনি কোন মাদরাসা থেকে পরীক্ষায় অংশ নিয়েছেন সেটা প্রকাশ করেননি।

কিন্তু বার্তা২৪.কম এর অনুসন্ধানে জানা গেছে, তিনি আল জামিয়াতুল উসমানিয়া দারুল উলুম, সাতাইশ, টঙ্গি মাদরাসা থেকে পরীক্ষায় অংশ নিয়েছেন। আর পরীক্ষার কেন্দ্র ছিল টঙ্গীর চেরাগ আলীতে অবস্থিত দারুল উলুম মাদরাসা। মোবারক হোসাইনের রোল নম্বর ৬৯৪৫। বার্তা২৪.কম এর কাছে তার মার্কশীট রয়েছে।

শিবির সভাপতি কীভাবে সাতাইশ মাদরাসা থেকে পরীক্ষার সুযোগ পেলেন, এ বিষয়ে জানতে চাইলে মাদরাসার একাধিক শিক্ষক বার্তা২৪.কমকে বলেন, ঘটনা সত্য। শিবির সভাপতি আমাদের মাদরাসা থেকে পরীক্ষায় অংশ নিয়েছেন। তবে তিনি আমাদের মাদরাসায় ভর্তি হননি। ক্লাস করেছেন। যাকে বলা হয়, ‘সেমায়াত’। মাদরাসার বোখারির শিক্ষক মাওলানা আবদুল মতিনের সুপারিশে তাকে এ সুযোগ দেওয়া হয়। আমরা এর পক্ষে ছিলাম না।
https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Jul/03/1562172654099.jpg

এ বিষয়ে মাওলানা আবদুল মতিন বলেন, আমি তাকে সেভাবে চিনি না। তিনি নিজেকে একটি কলেজের প্রফেসর পরিচয় দিয়ে আমার জুমার বয়ান শোনে ইলমে দ্বীন শেখার আগ্রহ দেখান। তাই আমি তাকে এ সুযোগ করে দিয়েছি।

আল হাইআতুল উলইয়া লিল জামিয়াতিল কওমিয়া বাংলাদেশের অধীনে দাওরায়ে হাদিসের সনদকে মাস্টার্সের স্বীকৃতি দেওয়ার পর আলিয়া মাদরাসার প্রচুর ছাত্র কওমি মাদরাসা থেকে পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছেন। এরই ধারাবাহিকতায় শিবির সভাপতি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছেন অনেকটা গোপনে। কওমি মাদরাসায় শিবিরের রাজনীতি একেবারে নিষিদ্ধ। ধর্মীয় ও আদর্শগত কারণে কওমি মাদরাসায় ছাত্র ও আলেমরা জামাত-শিবিরের রাজনীতির বিরোধীতা করে আসছেন শুরু থেকেই। এমতাবস্থায় আলিয়ার ছাত্রদের কওমি মাদরাসার পরীক্ষায় অংশগ্রহণকে সহজভাবে নিতে পারছেন না আলেম-উলামারা। এটাকে তারা কওমি মাদরাসার দেউলিয়াত্ব, অনৈতিকতা ও আদর্শচ্যুত মনোভাব বলে মনে করছেন।

কওমি মাদরাসার একাধিক শিক্ষক বার্তা২৪.কমকে জানিয়েছেন, অনেক মাদরাসা তাদের ছাত্র সংখ্যা বেশি দেখানোর বাসনায় অনিয়মিত ছাত্রদের পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ করে দেন। আর এই সুযোগটি নিয়েছেন শিবির সভাপতি। অথচ তিনি, কওমি মাদরাসা ছাত্র নন, তার আকিদা-বিশ্বাস উলামায়ে দেওবন্দ ও আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাতের আকিদা পরিপন্থী। তার পরও তিনি দাওরায়ে হাদিসের পরীক্ষায় অংশ নিয়ে সার্টিফিকেট গ্রহণের সুযোগ নিলেন।

ড. মোবারক কুমিল্লা জেলার ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার বালিনা গ্রামে ১ ফেব্রুয়ারি ১৯৮৭ সালে জন্মগ্রহণ করেন। ব্রাহ্মণপাড়ার বালিনা মাদরাসা থেকে দাখিল এবং মুরাদনগর অধ্যাপক আব্দুল মজিদ কলেজ থেকে এইচএসসি কৃতিত্বের সঙ্গে শেষ করে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিবিএ স্নাতক (সম্মান) ডিগ্রি এবং নর্দান বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমবিএ ডিগ্রি লাভ করেন।

২০১৭ সালে তিনি ভারতের রাজস্থানের শ্রী জে জে টি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি ডিগ্রি লাভ করেছেন।

এর আগে বুধবার (৩ জুলাই) আল হাইআতুল উলইয়া লিল জামিআতিল কওমিয়ার কেন্দ্রীয় দফতর থেকে দাওরায়ে হাদিসের ফলাফল ঘোষণা করা হয়। ফল ঘোষণা করেন সংস্থাটির কো চেয়ারম্যান আল্লামা আশরাফ আলী। ফল ঘোষণার আগে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মাওলানা মুহাম্মাদ ইসমাইল ফলাফলের ফাইল কো-চেয়ারম্যানের কাছে হস্তান্তর করেন।

পরীক্ষার গড় পাসের হার ৭৩ দশমিক ৫১ শতাংশ। ছাত্রদের পাশের হার ৭৭ দশমিক ১৮ আর ছাত্রীদের পাশের হার ৬৫ দশমিক ২৬।

অক্টোবর ২০১৮ সালে জাতীয় সংসদে কওমি মাদরাসার দাওরায়ে হাদিসের সনদকে মাস্টার্স (ইসলামিক স্টাডিজ এবং আরবি) এর সমমান প্রদান বিল পাস হয়।

এবারের পরীক্ষায় মোট পরীক্ষার্থী ছিল ২৬,৭৮৮ জন, মোট উত্তীর্ণ হয়েছে ১৯,০৭৯ জন। এর মধ্যে ছাত্র ১৩,৮৬৯ জন এবং ছাত্রী ৫,২১০ জন। পাসের হার ছাত্র ৭৭.১৮, ছাত্রী ৬৫.২৬। মুমতাজ (স্টার মার্ক) পেয়েছে ছাত্র ৯৫৯ জন এবং ছাত্রী ৯২ জন। জায়্যিদ জিদ্দান (১ম) বিভাগে উত্তীর্ণ হয়েছে ছাত্র ৪,১২৪ জন, ছাত্রী ১,০৭৬ জন। জায়্যিদ (২য়) বিভাগে উত্তীর্ণ হয়েছে ছাত্র ৫,৬৩৪ জন, ছাত্রী ২,৩৫১ জন এবং মাকবূল (৩য়) বিভাগে উত্তীর্ণ হয়েছে ছাত্র ৩,১৫২ জন, ছাত্রী ১,৬৯১ জন।

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন হাইআতুল উলইয়ার সদস্য মাওলানা আব্দুল কুদ্দুস ও মুফতি মাহফুজুল হক।

এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন বেফাকের (কওমি মাদরাসা শিক্ষাবোর্ড, ঢাকা) পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মাওলানা আবু ইউসুফ এবং প্রধান নিরীক্ষক মাওলানা আব্দুল গনী। কওমি মাদরাসা শিক্ষাবোর্ড, গওহরডাঙ্গা, গোপালগঞ্জের মাওলানা আবুল কালাম, কওমি মাদরাসা শিক্ষাবোর্ড, সিলেটের মহাসচিব মাওলানা আব্দুল বছির এবং নিরীক্ষক মাওলানা মুহিব্বুল হক, কওমি মাদরাসা শিক্ষাবোর্ড, উত্তরবঙ্গের মহাসচিব মাওলানা মুফতি এনামুল হক, জাতীয় দ্বীনী মাদরাসা শিক্ষা বোর্ডের মহাসচিব মুফতি মোহাম্মদ আলী।

   

মুক্তিযুদ্ধ ও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির চেতনা তৃণমূলে ছড়িয়ে দেয়ার আহ্বান রাষ্ট্রপতির



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
মুক্তিযুদ্ধ ও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির চেতনা তৃণমূলে ছড়িয়ে দেয়ার আহ্বান রাষ্ট্রপতির

মুক্তিযুদ্ধ ও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির চেতনা তৃণমূলে ছড়িয়ে দেয়ার আহ্বান রাষ্ট্রপতির

  • Font increase
  • Font Decrease

রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন মুক্তিযুদ্ধ ও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির চেতনা তৃণমূল পর্যায়ে ছড়িয়ে দিতে দলমত নির্বিশেষে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের সকল শক্তিকে একযোগে কাজ করার আহ্বান জানান।

বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) বঙ্গভবনে একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সভাপতি বিশিষ্ট সাংবাদিক শাহরিয়ার কবিরের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধিদল সাক্ষাৎকালে রাষ্ট্রপতি এ আহ্বান জানান।

রাষ্ট্রপ্রধান বলেন, স্বাধীনতা বিরোধী শক্তি মুক্তিযুদ্ধ এবং স্বাধীনতার ইতিহাসকে বিকৃত করে দেশকে অন্য পথে পরিচালিত করতে চেয়েছিল কিন্তু দেশের জনগণ তা হতে দেয়নি।

রাষ্ট্রপতির প্রেস সচিব জয়নাল আবেদীন জানান, এ বিষয়ে ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার কথাও তিনি উল্লেখ করেন।

রাষ্ট্রপতি বলেন, স্বাধীনতার মূল লক্ষ্য ছিল একটি ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা। কিন্তু স্বাধীনতা বিরোধী একটি চক্র ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুকে হত্যার মাধ্যমে সেই লক্ষ্য অর্জনে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে। স্বাধীনতার পক্ষের সকল শক্তির ইস্পাত কঠিন ঐক্যের প্রতিও গুরুত্বারোপ করেন।

সাক্ষাৎকালে ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির প্রতিনিধিদল ৩ মে অনুষ্ঠেয় জাতীয় সম্মেলনে যোগদানের জন্য রাষ্ট্রপতিকে আমন্ত্রণ জানান।

প্রতিনিধিদল ১৯৭১ এর গণহত্যাকারীদের বিচার দ্রুত সম্পন্ন করার প্রয়োজনে সর্বোচ্চ আদালতে অধিক সংখ্যক বিচারক নিয়োগ এবং সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে সাহাবুদ্দিন কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়নের জন্য স্মারকপত্র প্রদান করেন।

তাঁরা সাহাবুদ্দিন কমিশনের প্রস্তাবনা ও সুপারিশ বাস্তবায়নে রাষ্ট্রপতির সার্বিক সহযোগিতা কামনা করেন।

এ সময় একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি সাহাবুদ্দিন কমিশনের প্রস্তাবনা ও সুপারিশ সংক্ষিপ্ত আকারে প্রকাশ করবে মর্মে জানানো হয়।

উল্লেখ্য, ২০০১ সালে সাধারণ নির্বাচন পরবর্তী সময়ে বিএনপি-জামায়াত জোটের নেতাকর্মীদের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের জনগোষ্ঠীর ওপর হামলা, হত্যা, ধর্ষণ ও লুণ্ঠনের ঘটনা তদন্তে পরবর্তী সময়ে গঠিত বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিশনের চেয়ারম্যান ছিলেন বর্তমান রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। এ কমিশন সাহাবুদ্দিন কমিশন নামে পরিচিত।

সাক্ষাৎকালে রাষ্ট্রপতির কার্যালয়ের সচিব মো. ওয়াহিদুল ইসলাম খান, প্রেস সচিব মো. জয়নাল আবেদীন এবং সামরিক সচিব মেজর জেনারেল এস. এম সালাহউদ্দিন ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।

;

নোয়াখালীতে ট্রাক-মোটরসাইকেল সংঘর্ষে এক প্রবাসী তরুণের মৃত্যু



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, নোয়াখালী
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

নোয়াখালীর জেলা শহর মাইজদী-কুমিল্লা আঞ্চলিক মহাসড়কে ট্রাক-মোটরসাইকেল সংঘর্ষে এক প্রবাসী তরুণের মৃত্যু হয়েছে। এ সময় আরও এক মোটরসাইকেল আরোহী আহত হয়। নিহত আনোয়ার হোসেন অনিক (২২) কবিরহাট উপজেলার ধানসিঁড়ি ইউনিয়নের ৬নম্বর ওয়ার্ডের দক্ষিণ জগদানন্দ গ্রামের মাজারুল হক মন্টু মিয়ার ছেলে।

বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) সন্ধ্যা ৬টার দিকে নোয়াখালীর জেলা শহর মাইজদী-কুমিল্লা আঞ্চলিক মহাসড়কের টোকিও ফুডের পাশে হায়দার ইলেক্ট্রনিক্সের সামনের সড়কে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বিকেলের দিকে বন্ধুদের ইফতার পার্টিতে যোগ দিতে মোটরসাইকেল যোগে গ্রামের বাড়ি থেকে জেলা শহর মাইজদীতে আসেন অনিক। সন্ধ্যা ৬টার দিকে জেলা শহর মাইজদীর টোকিও ফুডের পাশে হায়দার ইলেক্ট্রনিক্সের সামনে ট্রাক ও মোটরসাইকেলের মুখোমুখি সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে অনিক গুরুত্বর আহত হয়। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করে।

নিহতের বাবা মন্টু মিয়া জানান, অনিক ২ মাস আগে বিয়ে করে। সে আবুধাবি প্রবাসী ছিল। ২মাস ৫দিন আগে সে দেশে ফিরে আসে। আসরের নামাজের পর বাড়ি থেকে সে বের হয়। আমাকে বলেছিল তাদের একটা ইফতার পার্টি আছে। ইফতার পার্টি শেষে বাড়ি ফিরবে। ইফতারের সময় একটি নম্বর থেকে আমার মুঠোফোনে কল দিয়ে জানানো হয় অনিককে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে রয়েছে। হাসপাতালে এসে জানতে পারি আমার ছেলে মারা গেছে।

সুধারাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মীর জাহেদুল হক রনি বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মরদেহের সুরতহাল রিপোর্ট প্রস্তুত করে। লিখিত অভিযোগ পেলে আনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

;

ট্রেনের অগ্রিম ৩৩ হাজার টিকিট পেতে ২ কোটিবার চেষ্টা



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ফাইল ছবি

ফাইল ছবি

  • Font increase
  • Font Decrease

ঈদযাত্রায় ট্রেনের অগ্রিম টিকিটের জন্য পঞ্চম দিনে ৩২ হাজার ৫৯১টি টিকিটের বিপরীতে প্রায় ২ কোটিবার চেষ্টা করেছেন যাত্রীরা। বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) ট্রেনে ভ্রমণের জন্য আগামী ৭ এপ্রিলের টিকিট বিক্রি করা হয়।

রেলসেবা অ্যাপ পরিচালনার দায়িত্বে থাকা সহজ ডট কমের প্রধান নির্বাহী অফিসার সন্দ্বীপ দেবনাথ জানান, আগামী ৭ এপ্রিলে ট্রেনে যাত্রীদের জন্য ঢাকা থেকে বরাদ্দ ছিল ৩২ হাজার ৫৯১টি টিকিট, এর মধ্যে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ২৮ হাজারের বেশি টিকিট বিক্রি হয়ে গেছে।

তিনি জানান, এদিন সকাল ৮ থেকে সাড়ে ৮টায় পশ্চিমাঞ্চলের টিকিট ছাড়ার পিক আওয়ারে চেষ্টা হয়েছে ৮২ লাখ। আর বেলা ২টা থেকে আড়াইটা পর্যন্ত পূর্বাঞ্চলের টিকিট ছাড়ার পিক আওয়ারে ৭৪ লাখবার চেষ্টা করেছেন যাত্রীরা।

রেল কর্তৃপক্ষ জানান, এবার ঈদে পশ্চিমাঞ্চলের জন্য আজকের রেগুলার টিকিট ১৫ হাজার ৯৩৩টি। আর পূর্বাঞ্চলের জন্য নির্ধারিত টিকিট ১৬ হাজার ১০০টি। তবে ঈদ উপলক্ষে ৭ তারিখ যে স্পেশাল ট্রেন যাবে, সেখানে আরও ৫০০ টিকিট যোগ হবে দুই অঞ্চলের জন্য।

রেলওয়ে বলছে, এ বছর ঢাকা থেকে ছেড়ে যাওয়া আন্তনগর ৪২ জোড়া ট্রেনের টিকিট দুই পর্যায়ে দেওয়া হচ্ছে ৷ ঈদ উপলক্ষে এই অগ্রিম টিকিট সম্পূর্ণ অনলাইনে বিক্রি হচ্ছে ৷ এবার মোবাইলে ওটিপি ভেরিফিকেশনের মাধ্যমে টিকিট দেওয়া হচ্ছে ৷ ঈদযাত্রাকে সুশৃংখল রাখার জন্য সব ব্যবস্থা রাখা হয়েছে ৷

বাংলাদেশ রেলওয়ে জানিয়েছে, ৮ এপ্রিলের ভ্রমণের টিকিট পাওয়া যাবে ২৯ মার্চ এবং ৯ এপ্রিলের ভ্রমণের টিকিট পাওয়া যাবে ৩০ মার্চ। এই ঈদে ৩৩ হাজার ৫০০টি আন্তনগর ট্রেনের টিকিট প্রতিদিন অনলাইনে উন্মুক্ত করা হয়। একই সঙ্গে ঈদের সময় আটটি বিশেষ ট্রেন চালানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

এর আগে ৩ এপ্রিলের টিকিট বিক্রি হয়েছে ২৪ মার্চ; ৪ এপ্রিলের টিকিট বিক্রি হয়েছে ২৫ মার্চ; ৫ এপ্রিলের টিকিট বিক্রি হয়েছে ২৬ মার্চ এবং ৬ এপ্রিলের টিকিট বিক্রি করা হয়েছে ২৭ মার্চ।

;

মশা নিয়ন্ত্রণে গবেষণার প্রয়োজন বোধ করছেন চসিক মেয়র!



স্টাফ করেসপেন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, চট্টগ্রাম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

সম্প্রতি চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র হিসেবে তিন বছর পূর্ণ হয়েছে মো. রেজাউল করিম চৌধুরীর। দায়িত্ব নেয়ার পর থেকেইে গত তিন বছরে ছোট্ট মশাই যেন বড় ব্যর্থতা তাঁর! তবে মেয়র এই ব্যর্থতার দায় চাপাচ্ছেন মশার প্রতিরোধক্ষমতার উপর। এবার মশা নিয়ন্ত্রণ করতে গবেষণার প্রয়োজনও বোধ করছেন তিনি।

বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) সকালে লালদিঘী পাড়স্থ দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ভবনের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত চসিকের ৬ষ্ঠ নির্বাচিত পরিষদের ৩৮তম সাধারণ সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি বলেন, মশার ঔষধের প্রতি মশার প্রতিরোধক্ষমতা তৈরি হয়েছে। এখন ঔষধ মেরেও মশা মারা যাচ্ছে না। মশা নিয়ন্ত্রণে আনতে হলে গবেষণা প্রয়োজন।

সভায় মশার প্রকোপ কমাতে আগামী সপ্তাহ (৩১ মার্চ) থেকে কার্যক্রম বাড়ানোর ঘোষণা দিয়ে মেয়র বলেন, ঢাকার মতো চট্টগ্রামেও মশা দ্রুত বাড়ছে। আগামী সপ্তাহ থেকে স্প্রেম্যান থেকে শুরু করে সংশ্লিষ্ট লোকবল বাড়িয়ে মশা নিধনে প্রতিটি ওয়ার্ডে আরও ব্যাপক কার্যক্রম গ্রহণ করা হবে। ডেঙ্গু প্রকোপ প্রতিরোধে এখনই উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। কাউন্সিলরদের মাঠে থেকে তদারকি করতে হবে এ কার্যক্রম।

‘অনেকে মনে করে টনকে টন মশার ঔষধ মারলেই মশা কমবে, এটা ঠিকনা। আমাদেরকে পরিবেশগত ভারসাম্যের বিষয়টিও মাথায় রাখতে হবে। একসময়ে শহরে ব্যাঙ পাওয়া যেত যেটা মশার লার্ভা খেয়ে মশা কমাতে সহায়তা করত। বিভিন্ন ধরনের উপকারী কীট-পতঙ্গ পাওয়া যেত, যা পাওয়া যাচ্ছে না।’

জনগণকে সচেতন হওয়ার আহ্বান জানিয়ে মেয়র বলেন, আমাদের পরিচ্ছন্ন বিভাগ নালা-গুলো পরিস্কার করছে। অনেক সময় দেখা যায় নালায় ডাবের খোসা থেকে লেপ-তোষক সব ফেলা হয়েছে যা জলাবদ্ধতা তৈরি করে মশার প্রজননক্ষেত্রে পরিণত হচ্ছে। জনগণ সচেতন না হলে মশার প্রকোপ কমানো কঠিন হবে। জনগণ বাড়িতে থাকা জমা পানি প্রতি তিনদিনে একদিন ফেলে দিলে এবং যত্রতত্র ময়লা ফেলে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি থেকে জনগণকে বিরত রাখতে পারলে পরিস্থিতির উত্তরণ ঘটবে। সিডিএ ৩৬টা খালে যে জলাবদ্ধতা নিরসণ প্রকল্প করছে সেগুলোতে বাধ দিতে হয়েছে। সিডিএ বর্ষার আগে বাধ ও খালের মাটি অপসারণ করলে জলাবদ্ধতা ও মশার প্রকোপ কমবে।

আর্থিক সমস্যায় চট্টগ্রামের উন্নয়ন ব্যাহত হচ্ছে জানিয়ে মেয়র বলেন, চট্টগ্রাম দেশের দ্বিতীয় শহর। চট্টগ্রামকে ঘিরে বে-টার্মিনাল, শিল্পপার্ক, গভীর সমুদ্র বন্দরসহ অনেকগুলো বৃহৎ প্রকল্প বাস্তবায়িত হচ্ছে। এ প্রকল্পগুলোকে সফল করতে যে ধরনের অবকাঠামো চট্টগ্রামের দরকার তা কেবল শুধু হোল্ডিং ট্যাক্স আর ট্র্রেড লাইসেন্সের আয় দিয়ে তৈরি ও রক্ষণাবেক্ষণ করা সম্ভব নয়।

‘আমরা বন্দরের আয়ের ১ শতাংশ চেয়েছিলাম। আইনের গ্যাড়াকলে তা হয়নি। অথচ বন্দরের ৩০ থেকে ৪০ টনের লরি চলাচল করে শহরের রাস্তা নষ্ট করে ফেলছে। প্রতিদিন যে কন্টেইনার খালাস হচ্ছে তা থেকে আয়ের একটি অংশ চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনকে দেয়া উচিৎ। চসিকের ভবনগুলোকে উর্ধ¦মুখী সম্প্রসারণের মাধ্যমে আয়বর্ধন করতে হবে। এ বিষয়ে আমরা মন্ত্রণালয়ে যোগাযোগ করব। চসিকের রাজস্ব বিভাগকেও আয় বহুমুখীকরণে মনোযোগ দিতে হবে। সিডিএ এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে বানাচ্ছে। সিডিএ টোল আদায় করবে কিন্তু চসিকের হিস্যা কী হবে তা আলাপ করা উচিৎ ছিল। কারণ সিটি কর্পোরেশনের জায়গায় এক্সপ্রেসওয়ে বানাবেন, সিটি কর্পোরেশনের রাস্তা দিয়ে গাড়ি উঠা-নামা করবে, আমরা সড়ক সংস্কারে ব্যয় করব অথচ আমাদের কোন হিস্যা থাকবেনা তা হবেনা।’

নগরীতে আলোকায়ন প্রসঙ্গে মেয়র বলেন, চসিকের বিদ্যুৎ উপ-বিভাগকে নির্দেশ দিয়েছিলাম রমজানে সড়কে, মসজিদে, কবরস্থানে আলোকায়ন করতে। কিন্তু, আমি খোঁজ নিয়ে দেখেছি অনেক রাস্তায়, গলিতে বাতি জ্বলেনা।

কাউন্সিলররা নিজ নিজ এলাকার বিদ্যুতের ইন্সপেক্টরদের নাম্বার রাখার পরামর্শ দিয়ে মেয়র বলেন, কোন সড়কে বাতি না জ্বললে জানতে চাবেন কেন বাতি জ্বলছেনা। কেউ রেসপন্স না করলে লিখিত অভিযোগ দিবেন। পরিচ্ছন্ন বিভাগের কর্মীরা অনেক সময় শোনা যায় এক-দুই ঘন্টা কাজ করে চলে যায়। এদের ব্যাপারেও অভিযোগ দিবেন। তদন্ত করে অভিযোগ প্রমাণিত হলে বরখাস্ত করে দিব।

হকার উচ্ছেদ প্রসঙ্গে মেয়র বলেন, চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন, জেলা প্রশাসন, পুলিশ ও র‌্যাবের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় অবৈধ হকার উচ্ছেদ হওয়ায় মানুষ স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলছে। মানুষ খুবি খুশি। মানুষের পুঞ্জিভূত ক্ষোভ নিরসণ হয়েছে। গরীব হকারদের জন্য হলিডে মার্কেটের ব্যবস্থা করব। তবে, হকারদের নিয়ে কাউকে চাঁদাবাজি করতে দেয়া হবে না। অলিতে-গলিতে হকার বসিয়ে মানুষকে কষ্ট দেয়া বন্ধ করব। রেলওয়ে ও গণপূর্তর সাথে আমরা যোগাযোগ করছি। পরিত্যক্ত ভূমিতে কেবল সপ্তাহে দু’দিন হলিডে মার্কেট চালু করা হবে।

হলিডে মার্কেট প্রসঙ্গে গণপূর্ত অধিদপ্তরের সহকারী প্রকৌশলী রমিজুর রহমান জানান, চসিকের উচ্ছেদ অভিযানে বায়েজিদ বোস্তামীতে দুটি ভূমি অবৈধ দখল থেকে মুক্ত হয়েছে। বায়েজিদ এলাকায় গণপূর্ত অধিদপ্তরের উদ্ধারকৃত জায়গায় হকারদের জন্য হলিডে মার্কেট স্থাপনের বিষয়ে মন্ত্রনালয়ে প্রতিবেদন দিতে হবে। জনস্বার্থ বিবেচনায় হলিডে মার্কেট বাস্তবায়নে সর্বাত্মক সহযোগিতা করা হবে।

চসিকের প্রকৌশল বিভাগের উদ্দেশ্যে মেয়র বলেন, শুস্ক মৌসুমে ফুটপাত রং করা, জ্যাব্রাক্রসিং এবং রোডমার্কিং এর কাজ একমাসের মধ্যে শেষ করতে হবে। কিছুদিন আগে একজন জানালো একটা রাস্তা বানানোর মধ্যে রাস্তাটা কেটে ফেলেছে। সমন্বয় করলে রাষ্ট্রের সম্পত্তির এ অপচয় রোধ করা যাবে। আমাদেরকে কিছু কিছু সড়কে ব্লক দিয়ে নির্মাণ করা যায় কীনা তা ভাবতে হবে। প্রয়োজনে পাইলট প্রকল্প গ্রহণ করতে হবে

ঈদের সময় নিরাপত্তা নিশ্চিতে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীগুলোকে ভূমিকা পালনের আহ্বান জানান মেয়র।

চসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মুহম্মদ তৌহিদুল ইসলাম জানান, স্থায়ী কমিটির পরামর্শ অনুসারে ১ জুলাই থেকে অস্থায়ী কর্মচারীদের বেতন বাড়ানো হবে। চসিকের অস্থায়ী কর্মচারীদের স্থায়ীকরণের কার্যক্রমও অনেকটুকু এগিয়ে গেছে।

সভায় ওয়াসার নির্বাহী প্রকৌশলী আবদুর রউফ জানান, গ্রীস্মে কিছু এলাকায় পানির সংকট দেখা দিয়েছে। আমরা পানি সরবরাহ ও লিকেজ মেরামতের জন্য ভিজিল্যান্স টিম গঠন করেছি। সহসাই পানির সংকটের সমাধান হবে।

সভায় ট্রাফিক বিভাগের এডিসি মো. কাজী হুমায়ুন রশীদ বলেন, অবৈধ হকার উচ্ছেদ চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ সর্বাত্মক সহায়তা করেছে এবং ভবিষ্যতেও এধারা অব্যাহত থাকবে। তবে, উচ্ছেদ অভিযান বিকালে পরিচালনা করলে আরো বেশি সুফল পাওয়া যাবে। কারণ হকাররা মূলত বিকালে সড়ক-ফুটপাত দখল করে নিচ্ছে যা নগরীতে তীব্র যানজট সৃষ্টি করছে। নির্বিঘ্নে রাস্তা পারাপারের স্বার্থে নগরীজুড়ে জেব্রা ক্রসিং গড়ে তুলতে হবে।

সভায় বিগত সাধারণ সভার কার্যবিবরণী, দরপত্র কমিটির কার্যবিবরণী এবং স্ট্যান্ডিং কমিটির কার্যবিবরণী অনুমোদিত হয়। স্ট্যান্ডিং কমিটির সভাপতিগণ তাদের নিজ নিজ স্ট্যান্ডিং কমিটির কার্যবিবরণী পেশ করেন। সভায় চসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মুহম্মদ তৌহিদুল ইসলাম, ভারপ্রাপ্ত সচিব নজরুল ইসলাম, প্যানেল মেয়রবৃন্দ, কাউন্সিলরসহ চসিকের বিভাগীয় ও শাখা প্রধানগণ এবং নগরীর বিভিন্ন সরকারি সংস্থার প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

;