বাঁধ রক্ষায় স্থানীয় জনগণকে সম্পৃক্ত করতে হবে



সেন্ট্রাল ডেস্ক, বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম, ঢাকা
ড. আইনুন নিশাত, ছবি: বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম

ড. আইনুন নিশাত, ছবি: বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

ড. আইনুন নিশাত পানিসম্পদ ও জলবায়ু পরিবর্তন বিশেষজ্ঞ। তিনি ২০০৯ সালে জাতিসংঘ জলবায়ু পরিবর্তন সম্মেলনসহ একাধিক আন্তর্জাতিক জলবায়ু বিষয়ক সম্মেলনে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করেছেন।

২০১৭ সালে বাংলা একাডেমি তাকে সম্মানসূচক ফেলোশিপ প্রদান করে। বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের এই সাবেক অধ্যাপক বিশ্বব্যাংক, এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক, আন্তর্জাতিক প্রকৃতি ও প্রাকৃতিক সম্পদ সংরক্ষণ সংঘ ছাড়াও বিভিন্ন দেশি-বিদেশি সংস্থা ও প্রকল্পে কাজ করেছেন। ২০১০ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত তিনি ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের দায়িত্ব পালন করেন। বর্তমানে একই বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্টার ফর ক্লাইমেট চেঞ্জ অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল রিসার্চ এর ইমেরিটাস অধ্যাপক হিসেবে নিয়োজিত আছেন।

সম্প্রতি দেশের বিদ্যমান বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম তার মুখোমুখি হয়। আলাপচারিতায় তিনি বন্যা পরিস্থিতির নানা দিক নিয়ে কথা বলেন। সাক্ষাৎকারটি নিয়েছেন শিমুল সুলতানা।

 

দেশের বেশকিছু এলাকা এখন পানির নিচে। অন্য এলাকা প্লাবিত হওয়ার শঙ্কা

আইনুন নিশাত: আমরা কথা বলছি জুলাই মাসের মাঝামাঝির পর অর্থাৎ শ্রাবণ মাসের শুরুর দিকে। এ সময় বৃষ্টিপাত হওয়া, নদ-নদীর পানি বাড়া ও নদীর পানি বেড়ে দুই কূল উপচে প্লাবনভূমিতে পানি ঢোকাও খুব স্বাভাবিক। আজ থেকে ৩০, ৪০, ৫০ বছর আগে দেশের এক ভাগ এলাকা এই সময় পানির তলায়ই থাকত।

একটা এলাকা কতটা পানির তলায় থাকবে তার একটা স্বাভাবিক মাত্রা আছে। যেমন সুনামগঞ্জের তাহিরপুর বা জামালগঞ্জে হাওরাঞ্চলে এখন ১৫/২০ ফুট পানি থাকা খুবই স্বাভাবিক। স্যাটেলাইটের মাধ্যমে দেখলে দেখা যাবে, এখন ওই এলাকা পুরো পানিতে ডুবে আছে।

বলা হলো, লোকজন পানিবন্দী, কথাটা একেবারে বেঠিক। কারণ ওই এলাকায় কী উচ্চতায় পানি আসবে, সেটা জেনেই জমির ব্যবহার করা হয়, অর্থাৎ হাওরে বর্ষাকালে কোনো ধান লাগানো হয় না এবং একটা উঁচু ঢিবির উপরে গ্রামটা বানানো হয়। গ্রামে কি পানি উঠেছে? উঠানে কি পানি উঠেছে? উত্তর হচ্ছে না। কাজেই মাঠে ধান নেই, বাড়ির উঠানে পানি ওঠেনি, তাহলে তো ওই এলাকার লোকজন এটাকে স্বাভাবিক বলেই জানে।

ফরিদপুর বা গোপালগঞ্জ এলাকা আরো ৫০/৬০ বছর আগে বর্ষায় ডুবে যেত। যে জমিতে পাট আছে, আউশ ধান আছে, তা তিন/চার দিন পানিতে ডুবে থাকলেও তেমন ক্ষতি হতো না। গ্রামগুলো ঢিবির উপরে ছিল। কিন্তু পরে আমরা কৃষিতে উৎপাদন বাড়াতে দেশীয় প্রজাতির ধানের পরিবর্তে উচ্চ ফলনশীল ধান লাগানোর জন্য নদীগুলোতে বাঁধ দিলাম। যাতে নদীর পানি ভেতরে ঢুকতে না পারে। এটা করে আমরা প্লাবনভূমিগুলো শুকনা বানিয়ে ফেললাম। এ কাজটি হয়েছে ৬০, ৭০, ৮০’র দশকে এবং এখন্ও হচ্ছে।

বিপদসীমার ওপরে পানি। বন্যা প্রতিরোধে বাঁধগুলোর ভূমিকা 

আইনুন নিশাত: দেশের শতকরা ৭০-৮০ ভাগ এলাকাতে বন্যা নিয়ন্ত্রণকারী বাঁধ হয়েছে অথবা রাস্তা তৈরি হয়েছে, যেটার কারণে পানি নদী থেকে আর ভেতরে ঢোকে না, প্লাবনভূমিগুলো আর ডোবে না। এভাবে আস্তে আস্বে আমরা প্লাবনভূমিতে পানি আসার কথা ভুলে গেলাম। উঁচুতে বাড়ি না করে সমতলেই বাড়ি করা শুরু করলাম। অর্থাৎ আমরা মানুষকে একটা নিরাপত্তা দিলাম। যে লোকগুলো ওই নিরাপত্তা বেষ্টনীর বাইরে আছে, যেমন চরাঞ্চলের বাড়ি ডুববে, উঠান ডুববে এটাই স্বাভাবিক।

বিপদসীমা এটাতো একটা আরবিটরারি টার্ম। নদীর পাড় উপচে যেখানে বাঁধ আছে সেখানে বাঁধের ওপর থেকে তিন চার ফুট নিচ পর্যন্ত বলা হয় বিপদসীমা। অর্থাৎ বাঁধটি না থাকলে জমিতে কিন্তু তিন-পাঁচ ফুট পানি থাকত, আর স্বাভাবিকভাবেই বিপদসীমা ছুঁইছুঁই হলেই চরটা ডুবে যাওয়ার কথা। চরে উঁচু করে যারা বাড়ি বানিয়েছে, তারা নিরাপদ। আর বাঁধের ভেতরে যারা আছে তাদের নিরাপত্তা নির্ভর করছে বাঁধের স্থায়ীত্বের ওপর। এখন নির্মাণের ত্রুটির কারণে, রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে যদি বাঁধের ক্ষতি হয়, তবে তো বন্যা হবেই। তাই এটাকে আমি প্রাকৃতিক বন্যা বলব না, বলব মানবসৃষ্ট বন্যা। কারণ, নদীতে যে পরিমাণ পানি থাকার কথা সেটা স্বাভাবিকভাবেই আছে। যেমন যমুনার আরিচায় পানি এখন বিপদসীমার সামান্য ওপরে। এটা এ সময়ে খুবই স্বাভাবিক। এখানে সেপ্টেম্বরে তৃতীয় সপ্তাহ পর্যন্ত পানি বিপদসীমার ওপরে থাকতে পারে। কাজেই কিছু ব্যতিক্রম ছাড়া নদী খুব স্বাভাবিক আচরণই করছে। এ বছর খুব খারাপ অবস্থা গেছে ডালিয়া জুড়ে।

জুন মাসের শেষ থেকে সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি পর্যন্ত যে কোনো সময় পানি বাড়তে পারে। কিন্তু বাড়লে আবার খুব দ্রুত নেমেও যায়। এখন আরিচার পানি জুলাইয়ের ৫/৬ তারিখ বিপদসীমার নিচে ছিল। আস্তে আস্তে এটা বাড়ছে। আরো ৫/৬ দিন বাড়বে। কারণ যমুনা দিয়ে ভারত থেকে যে পানিটা আসছে সেটা নেমে যাচ্ছে। কয়েকদিন পর চাঁদপুরে পানি বাড়বে।
বন্যা পূর্বাভাস বুঝতে হবে। কৃষির জন্য পূর্বাভাস কাজে আসবে না। কারণ ধান লাগিয়ে ফেললে তো ডুবে যাবে। কিন্ত যেখানে বাঁধ আছে, বাঁধের ভেতরে লোকদের নিরাপদ থাকার কথা।

 

চট্টগ্রামে পানি বেড়েছে, ঢাকায়ও বন্যা হতে পারে

আইনুন নিশাত: এখন টট্টগ্রাম শহরের অবস্থা খুব খারাপ। ঢাকাতে কয়েকদিনের মধ্যেই পানি চলে আসতে পারে। এখন ডেমরা এলাকায় পানি বিপদসীমার নিচে থাকলেও আস্তে আস্তে বাড়ছে। আগামী ১০ দিন পানি বাড়বে। আগামী ২৫/২৬ তারিখ নাগাদ পানি বিপদসীমা অতিক্রম করবে। পানি বাড়লেও শহরের পশ্চিমাংশ (আশুলিয়া হয়ে মিরপুর, কল্যাণপুর, মিডফোর্ড, বুড়িগঙ্গা ১ নম্বর সেতু, মেয়র হানিফ সেতু, সায়দাবাদ, বিশ্বরোড, মালিবাগ, এয়ারপোর্ট) সুরক্ষিত থাকার কথা। বুড়িগঙ্গা ও তুরাগের থেকে ঢাকা সুরক্ষিত। এ বাঁধটি না থাকলে হয়ত পল্লবী, আদাবার আজ পানির নিচে থাকত। ঢাকার পূর্ব দিকে কোনো প্রকেটশন নেই। দক্ষিণের বালু নদীর আশপাশের এলাকা প্লাবিত হবে এবং এর জন্য গ্রামের লোকও প্রস্তুত। ওই এলাকায় আর সাতদিন পরে স্বাভাবিকভাবেই অনেক পানি আসবে।

 

দক্ষিণ ডিএনডি এলাকা সংরক্ষিত। সেখানে বাইরে থেকে পানি আসে না। সমস্যা হচ্ছে সংরক্ষিত এলাকার ভেতরের পানি বের করার ব্যবস্থা নেই। ভেতরের বৃষ্টির পানি বের করে দেওয়ার পাম্প (গোড়ান, কল্যাণপুর, নারিন্দা, কমলাপুর, হাতিরঝিলের পাম্প) স্টেশনগুলো কাজ করছে না।
৪/৫ দিন আগে আষাঢ়ে পূর্ণিমা ছিল। সে সময় সমুদ্রের ভরা কটাল অনেক উঁচুতে ছিল। সেই সঙ্গে নিম্নচাপ থাকায় পানি ফুলে উঠেছিল। ওদিকে চট্টগ্রামের পাহাড় অঞ্চলেও প্রচণ্ড বৃষ্টি হয়েছে। বৃষ্টির পানি নামতে পারেনি কারণ নদীও ভরাট। সমাধান হচ্ছে কর্ণফূলী ঘেঁষে নদীর বাঁধ বানাতে হবে, খালগুলোর মুখে অবকাঠামো নির্মাণ করতে হবে। অর্থাৎ ভেতরের পানি বের করার জন্য রেগুলেটর লাগবে আর বাইরের পানি যাতে না ঢুকতে পারে সেজন্য বাঁধ বানাতে হবে।

নদীগুলোর নাব্যতা কমার কারণ

আইনুন নিশাত: বাংলাদেশ বন্যার দেশ। হাজার বছর ধরে বন্যার মধ্য দিয়েই বাংলাদেশ সৃষ্টি হয়েছে। আমরা নদীর দিকে গত ৫০/৬০ বছরে কোনো নজর দেইনি, যত্ন ও রক্ষণাবেক্ষণ করিনি। ফলে নদীগুলো অনেক প্রশস্ত হয়ে গেছে। যেমন হার্ডিঞ্জ ব্রিজ এলাকায় নদী ১.৮ কিলোমিটার প্রশস্ত। কিন্তু আরেকটু ভাটিতে এলে ৬ কি.মি.। কাজেই নদীগুলোর দিকে নজর দিতে হবে যাতে তার গভীরতা বাড়ে। ড্রেজিং করে গভীরতা বাড়বে না। কারণ উজান থেকে পলি আসবে। ড্রেজিং করলে দুই বছরের মধ্যে ভরাট হয়ে যাবে। আমার ধারণা ইতোমধ্যেই সরকার কয়েক হাজার কোটি টাকা ড্রেজিংয়ের পেছনে ঢেলেছে। কারিগরি বিশেষজ্ঞরা সেডিমেন্ট মুভমেন্টের বিষয়টি মাথায় না রেখেই ড্রেজিংয়ের পরামর্শ দিচ্ছেন। ড্রেজিংয়ের সঙ্গে যদি নদী শাসনকে সম্পৃক্ত করে নদীর পলি পরিবহন ক্ষমতা বিবেচনায় না আনা হয়, তবে ড্রেজিংয়ের পেছনে হাজার কোটি টাকা প্রতি বছর খরচ করেও কোনো লাভ হবে না।


বাঁধগুলো রক্ষণাবেক্ষণ

আইনুন নিশাত: এ কাজে স্থানীয় জনগণকে সম্পৃক্ত করে করতে হবে। ইউনিয়ন পরিষদ ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের কাজে লাগাতে হবে। বড় সংস্কার লাগলে পানি উন্নয়ন বোর্ড করবে। আর বন্যা পূর্বাভাসটা ঠিক মতো বুঝতে হবে।

বাঁধকে যদি রাস্তা হিসেবে ব্যবহার করতে পারলে ভালো। টঙ্গী-আশুলিয়া-মিরপুর বাঁধ রাস্তা হিসেবে চমৎকার কাজ করছে। তারপরও চরম অবস্থা আসতেই পারে, যেমন তিস্তার ডালিয়া পয়েন্টে এবার কয়েক ঘণ্টার জন্য পানির স্তর সর্বকালের রেকর্ড ছাড়িয়েছে, হবিগঞ্জ, মৌলভীবাজার, সুনামগঞ্জের নদীগুলোর অবস্থাও ভালো নয়। সেখানকার পানির সীমারেখা বারবার আগের সীমা অতিক্রম করছে, কারণ অববাহিকাগুলো নষ্ট হয়ে গেছে। অববাহিকার পানি ধারণ ক্ষমতা নষ্ট হয়ে গেছে।

 জনগণের করণীয়

আইনুন নিশাত: আমাদের এখানে পানি উন্নয়ন বোর্ডের অত্যন্ত আপডেটেড বন্যা পূর্বাভাস আছে। সে অনুযায়ী প্রস্তুতিমূলক ব্যবস্থা নিলেই হবে। বাঁধের বাইরে যারা আছেন, যাদের জন্য কোনো নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেই, তাদের এলাকা পানিতে ডুববেই। সেজন্য সেভাবে তাদের ব্যবস্থা নিতে হবে। অর্থাৎ জুলাই মাসে তাদের ধান লাগানো উচিত না। বর্ষার পানি নেমে গেলে ধান লাগাবেন। পাট লাগানোর কথা চিন্তা করতে পারেন ওই সময়।

এ ক্ষেত্রে সরকারের করণীয়

আইনুন নিশাত: বন্যা ব্যবস্থাপনা থেকে আমাদের নজর সরে গেছে। আর এখন একটা হুজুগ হচ্ছে, কোনো জায়গায় পানি উঠলেই সরকারকে দোষারোপ করা যে ত্রাণ দিচ্ছে না। আমি আবারও বলছি, কোন জায়গায় কী ধরনের পানি হতে পারে এটা আমরা জানি, তাহলে সে অনুযায়ী আমাদের প্রস্তুতি থাকবে না কেন? সরকার, মন্ত্রী-এমপি ও আমলারা ত্রাণ দিতে পছন্দ করেন। আমি মনে করি, তাদেরই ত্রাণ দেওয়া উচিত, যারা প্রকৃত দাবিদার, বৃদ্ধ, অনাথ, বিধবাদের দেওয়া উচিত। বন্যার সময় একটা অসুবিধা হয়, ওই এলাকায় স্বাভাবিক আয়ের রাস্তা বন্ধ হয়ে যায়, শ্রমের চাহিদা কমে যায়, কাজকর্ম থাকে না। কাজেই আমাদের যে অতি উন্নত মানের ব্যবস্থাপনা যেটা ৬০ বা ৭০’র দশক থেকে আস্তে আস্তে গড়ে তোলা হয়েছে, সেটা কার্যকর করার জন্য কোথায় কী অবস্থা হতে পারে স্থানীয়দের সেটা জানিয়ে আগে থেকেই তাদের প্রস্তুতিটা বাড়ানো যেতে পারে।

ঢাকা শহরে ৩০-৪০ মিলি মিটার বৃষ্টি হলেই অবস্থা খারাপ হয়ে যায়। ৩০০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাতেও যাতে সমস্যা না হয় সেভাবে ঢাকা শহরের নকশা করতে হবে। জলবায়ু পরিবর্তনের বিষয়টি মাথায় রাখতে হবে।


প্লাবনভূমিতে জনবসতি

আইনুন নিশাত: আসলে জনসংখ্যা বেড়েছে। আগে প্লাবনভূমিতে কেউ বসবাস করত না, স্বাভাবিক বন্যার পানি থাকত এবং এ পানি তো প্রকৃতির জন্য ভালো, মাছের জন্য ভালো, পাখির জন্য ভালো, জলজ উদ্ভিদের জন্য ভালো। ইকোসিস্টেমের জন্য তো এটা প্রয়োজন।

বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম: আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।

আইনুন নিশাত: আপনাকেও ধন্যবাদ।

   

রাতের মধ্যে রাজধানীসহ ১৩ অঞ্চলে বজ্রবৃষ্টির সম্ভাবনা



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
রাতের মধ্যে রাজধানীসহ ১৩ অঞ্চলে বজ্রবৃষ্টির সম্ভাবনা

রাতের মধ্যে রাজধানীসহ ১৩ অঞ্চলে বজ্রবৃষ্টির সম্ভাবনা

  • Font increase
  • Font Decrease

দেশের ১৩ অঞ্চলে রাতের মধ্যে সর্বোচ্চ ৬০ কিলোমিটার বেগে ঝড়ো হাওয়াসহ বজ্রবৃষ্টি হতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।

বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) বিকেল ৪টা থেকে রাত ১টা পর্যন্ত দেশের অভ্যন্তরীণ নদীবন্দরগুলোর জন্য দেওয়া আবহাওয়ার পূর্বাভাসে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

আবহাওয়াবিদ মো. ওমর ফারুকের সই করা বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, ঢাকা, ফরিদপুর, কুষ্টিয়া, যশোর, খুলনা, বরিশাল, পটুয়াখালী, কুমিল্লা, নোয়াখালী, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, সিলেট এবং ময়মনসিংহ অঞ্চলগুলোর উপর দিয়ে পশ্চিম থেকে উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে ঘণ্টায় ৪৫ থেকে ৬০ কিলোমিটার বেগে অস্থায়ীভাবে দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। এসব এলাকার নদীবন্দর সমূহকে ১ নম্বর সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।

এদিকে, বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, পশ্চিমা লঘুচাপের বর্ধিতাংশ পশ্চিমবঙ্গ ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে। এছাড়া মৌসুমের স্বাভাবিক লঘুচাপ দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে।

এই অবস্থায় বৃহস্পতিবার সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে রাজশাহী, ঢাকা, ময়মনসিংহ, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের দু-এক জায়গায় অস্থায়ী দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। এছাড়া দেশের অন্যত্র অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে।

পাশাপাশি এই সময় সারাদেশের দিন এবং রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।

;

বিডিএস দেশের ভূমি ব্যবস্থাপনায় বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনবে: ভূমিমন্ত্রী



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
বিডিএস দেশের ভূমি ব্যবস্থাপনায় বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনবে: ভূমিমন্ত্রী

বিডিএস দেশের ভূমি ব্যবস্থাপনায় বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনবে: ভূমিমন্ত্রী

  • Font increase
  • Font Decrease

সারা দেশে আরও ১ হাজার ৩৩৩টি শহর ও ইউনিয়ন ভূমি অফিস নির্মাণ করা হবে বলে জানিয়েছেন ভূমিমন্ত্রী নারায়ণ চন্দ্র চন্দ। 

তিনি বলেন, বিডিএস (বাংলাদেশ ডিজিটাল সার্ভে) বাংলাদেশের ভূমি ব্যবস্থাপনায় বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনবে। 

বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) ভূমি মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এক বিশেষ ‘প্রকল্প পর্যালোচনা সভা’য় অংশগ্রহণ শেষে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন তিনি।

নারায়ণ চন্দ্র চন্দ বলেন, বিডিএস বাস্তবায়িত হলে ম্যাপসহ মালিকানাভিত্তিক খতিয়ান চালু করা সম্ভব হবে এবং খতিয়ানে দাগ শেয়ার করতে হবে না। ম্যাপ সংযুক্ত মালিকানাভিত্তিক খতিয়ান প্রণয়ন করা সম্ভব হলে ভূমি নিয়ে মামলা-মোকাদ্দমা ও সীমানা বিরোধ অনেকাংশে কমে যাবে।

এ সময় বিডিএসকে একটি জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প হিসেবে উল্লেখ করে তিনি সংশ্লিষ্ট প্রকল্প পরিচালককে অগ্রাধিকার দিয়ে যথাযথ গুরুত্ব সহকারে প্রকল্পটি বাস্তবায়নের নির্দেশ দেন।

সভায় অবহিত করা হয় যে চট্টগ্রাম, নারায়ণগঞ্জ, রাজশাহী সিটি করপোরেশন, মানিকগঞ্জ পৌরসভা এবং ধামরাই ও কুষ্টিয়া সদর উপজেলায় ইডিএলএমএস প্রকল্পের (ইস্টাবলিশমেন্ট অব ডিজিটাল ল্যান্ড ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম প্রকল্প) মাধ্যমে বাংলাদেশ ডিজিটাল সার্ভে কার্যক্রম চলমান রয়েছে।

খুব শিগগিরই আরেকটি প্রকল্পের রিভিউ শেষ হলে পটুয়াখালী, বরগুনা, পাবনা, সিরাজগঞ্জ ও গোপালগঞ্জ জেলার ৩২টি উপজেলায়ও বাংলাদেশ ডিজিটাল সার্ভে শুরু হবে। পর্যায়ক্রমে দুটি প্রকল্পের মাধ্যমে সারা বাংলাদেশে 'বাংলাদেশ ডিজিটাল সার্ভে' পরিচালনা করা হবে বলেও সভায় জানানো হয়।

ভূমিসচিব খলিলুর রহমানের সভাপতিত্বে পর্যালোচনা সভায় ভূমি মন্ত্রণায়ের অতিরিক্ত সচিব (উন্নয়ন) জিয়াউদ্দীন আহমেদ উপস্থিত ছিলেন।

;

সাভারে ছুরিকাঘাতে যুবক খুন



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা ২৪.কম, সাভার (ঢাকা)
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

 

সাভারে শহিদুল ইসলাম নামে এক যুবককে ছুরিকাঘাতে খুন করেছে দূর্বৃত্তরা। নিহতের নিথর দেহ উদ্ধার করে এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) রাত ৮ টার দিকে এ তথ্য নিশ্চিত করে সাভার মডেল থানার পুলিশ পরিদর্শক (অপারেশন্স) নয়ন কারকুন। এর আগে দুপুরের দিকে সাভার পৌরসভার সোবহানবাগ আমতলা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

নিহত মো. শহিদুল ইসলাম (২৪) চাপাইনবাবগঞ্জ জেলার ভোলাহাট থানার চরধরমপুর গ্রামের সাইদুলের ছেলে। তিনি সাভারের সোবহানবাগ আমতলা এলাকায় ভাড়া থাকতেন। পেশায় ছিলেন দন্ত চিকিৎসকের সহকারী।

হত্যাকান্ডের কারণ বা এর সাথে কারা জড়িত তা এখনও বলতে পারেনি পুলিশ। তবে ধারণা করা হচ্ছে পূর্ব শত্রুতার জেরে এ হত্যাকান্ড ঘটানো হয়েছে।

পুলিশ পরিদর্শক (অপারেশন্স) নয়ন কারকুন বলেন, নিহতের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হবে। প্রাথমিক ভাবে মনে হচ্ছে পূর্ব শত্রুতার জেরে এ হত্যাকান্ড হয়েছে। কিশোর গ্যাংয়ের কোন সম্পৃক্ততা আছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, এখনই কিছু বলা যাচ্ছেনা। তদন্ত করে পরে বিস্তারিত জানানো হবে।

;

মৎস্য খাতের উন্নয়নে ১৭২ কোটি টাকা অনুদান দিচ্ছে জাপান



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
মৎস্য খাতের উন্নয়নে ১৭২ কোটি টাকা অনুদান দিচ্ছে জাপান

মৎস্য খাতের উন্নয়নে ১৭২ কোটি টাকা অনুদান দিচ্ছে জাপান

  • Font increase
  • Font Decrease

দেশের কক্সবাজার জেলার মৎস্য খাতের উন্নয়নে ২ হাজার ২৯৪ মিলিয়ন ইয়েন (১৭২ কোটি টাকা) অনুদানের কথা জানিয়েছে জাপান।

বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সচিব শাহরিয়ার কাদের ছিদ্দিকী ও বাংলাদেশে নিযুক্ত জাপানের রাষ্ট্রদূত ইয়োমা কিমিনোরির এ সংক্রান্ত চুক্তি স্বাক্ষর হয়েছে।

বাংলাদেশস্থ জাপানের দূতাবাসের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, কক্সবাজার জেলার মৎস্য খাতের উন্নয়নের জন্য এ অনুদান দিয়েছে জাপান। মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন মৎস্য উন্নয়ন করপোরেশনের (বিএফডিসি) প্রকল্পের আওতায় এ অর্থ ব্যয় হবে।

অনুদান প্রসঙ্গে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি) জানিয়েছে, জাপান সরকারের অনুদানে মৎস্য আহরণ, উপকূলে অবতরণ এবং হস্তান্তরে দক্ষতা বাড়ানো হবে। এছাড়া কক্সবাজারে বিএফডিসির মৎস্য আহরণ কেন্দ্রের অবকাঠামো উন্নয়ন এবং মাছ ধরার যন্ত্রপাতি উন্নত করার মাধ্যমে মৎস্য আহরণ ও উপকূলে অবতরণের মান উন্নয়ন, জেলেদের দক্ষতা বৃদ্ধি এবং বিতরণ ব্যবস্থায় উন্নতিতে ব্যয় হবে।

এ ব্যাপারে বাংলাদেশে নিযুক্ত জাপানের রাষ্ট্রদূত কিমিনোরি বলেন, এ অনুদানের অর্থ বাংলাদেশের ব্লু ইকোনমিকে সমৃদ্ধির পাশাপাশি কক্সবাজার অঞ্চলের মানুষের জীবনমানের উন্নয়ন ঘটাবে। পাশাপাশি এ অনুদানের অর্থ দেশে রোহিঙ্গা নিয়ে যে অর্থনৈতিক সংকট চলছে সেটিরও প্রশমন ঘটাবে।

;