ভাটারায় আয়েশা ধর্ষণ ও হত্যাকাণ্ডের রহস্য উন্মোচন
ভাটারা এলাকায় গৃহপরিচারিকা আয়েশা ধর্ষণ ও হত্যাকাণ্ডের রহস্য উন্মোচন করেছে গোয়েন্দা উত্তর বিভাগ।
গোয়েন্দারা বলছে, হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত চেতনানাশক, মোবাইল সিম কার্ড, জি আই তারসহ মূল হোতা নাজমুলকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
রোববার (২১ জুলাই) বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন ডিবি (উত্তর) বিভাগের অতিরিক্ত উপপুলিশ কমিশনার মো. গোলাম সাকলায়েন।
তিনি ঘটনার বর্ণনা দিয়ে বলেন, আয়েশার স্বামী ট্রাক চালক। দ্বিতীয় স্ত্রীকে নিয়ে থাকে টাঙ্গাইলে। আয়েশার ১২ বছরের এক ছেলে সন্তান ও ৮ বছরের এক কন্যা সন্তান রয়েছে। আয়েশা গৃহপরিচারিকার কাজ করে। প্রতিবেশী নাজমুল ইয়াবা ব্যবসায়ী। আয়েশার সঙ্গে আস্থার সম্পর্ক তৈরি করে।
আয়েশাকে বুঝাতে সক্ষম হয় যে, এক কবিরাজের বাণ মারার কারণেই তার স্বামী জসিম দ্বিতীয় বিয়ে করেছে। আর আয়েশাকে ছেড়ে দ্বিতীয় বউ নিয়ে অন্যত্র বসবাস করে।
ডিবির এই কর্মকর্তা বলেন, ঘটনার দিন রাতে ১০ টা থেকে বিভিন্ন সময় আয়েশা প্রতিবেশী নাজমুলকে অনেকবার ফোন দিতে থাকে। সবশেষ রাত ১ টা ২৫ মিনিটে আয়েশার সঙ্গে কথা হয় নাজমুলের। কথামত নাজমুল তাড়াতাড়ি আয়েশার বাসায় যায়। রাত ১ টা ৩০ মিনিটের দিকে আয়েশার বাসায় ঢুকে। তার রুমে একটি খাট আছে। খাটের উপর ছোট ছেলে ঘুমিয়ে ছিল। আয়েশার স্বামীকে বশে আনার কথা বলে ইতিমধ্যে নাজমুল প্রায় ২৪০০ টাকা নেয় এবং কবিরাজের কথা বলে তার সঙ্গে অবৈধ যৌনমিলন করে।
এরমধ্যেই আয়েশার স্বামী জসিম উদ্দিন টাঙ্গাইল থেকে ঢাকায় আসে তার বোনের বাসায় উঠে ছোট বউকে সঙ্গে করে। নাজমুল আয়েশাকে বুঝাতে চেষ্টা করে যে কবিরাজের মাধ্যমেই এটি সম্ভব হয়েছে। পরবর্তীতে (৪ জুলাই) দিবাগত রাতে নাজমুলের সঙ্গে আয়েশার অনেক কথা কাটাকাটি হয়। নাজমুল তার কাছে যেতে চাইলে সে উত্তেজিত গলায় বলে যে আমার টাকা নিয়েছেন, আমার চরিত্র নষ্ট করেছেন, এখন আমার স্বামীও আসল না তাহলে আমার টাকা ফেরত দেন নইলে ভাল হবেনা।
পরে পকেটে করে ঘুমের ঔষুধ নিয়ে আয়েশার ঘরে যেয়ে তাকে বুঝায় যে আয়েশাকে “বাঁধা বান ” মেরেছে তার ছোট সতীন হামিদা। তাই কবিরাজ ঔষুধ দিয়েছে আয়েশাকে খেতে হবে। বলে পানির বোতলে অল্প একটু পানির মধ্যে ঔষুধ ২টা গুলিয়ে খাইয়ে দেয়। এবার তার সঙ্গে একবার এমনি যৌনমিলন করে। তাকে বুঝায় যে এটা কবিরাজের নির্দেশ।
সে যখন নাজমুলের সঙ্গে একটু তর্ক করে, কিভাবে তার স্বামীকে তার নিজের কাছে ফেরত আনা যাবে তখন নাজমুল তাকে বুঝাতে সক্ষম হয় , যেহেতু তাকে “বাঁধা বান” মারা হয়েছে তাই তাকে হাত পা বেঁধে নাজমুলের সঙ্গে যৌন মিলন করতে হবে। নাজমুলের কথা মত আয়েশার হাত-পা বাঁধা হয়। এর মধ্যে ঔষধের ক্রিয়ায় সে অচেতন হয়ে পড়ে। নাজমুল তখন তার সঙ্গে নিয়ে যাওয়া বৈদুত্যিক তার আয়েশার গলায় পেঁচিয়ে মৃত্যু নিশ্চিত করে।