মৌসুমের প্রথম কালবৈশাখীর আঘাতে নিহত ৪, ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি



সেন্ট্রাল ডেস্ক ২

  • Font increase
  • Font Decrease
  রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় মৌসুমের প্রথম কালবৈশাখী আঘাত হেনেছে গতকাল শুক্রবার। এতে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে লিচু ও আমের মুকুল এবং ধান, গম, ভুট্টো, মরিচ, টমোটেসহ বিভিন্ন ধরনের ফসলের ক্ষেতে। সবচেয়ে বেশি ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে রংপুর বিভাগের আট জেলাসহ উত্তরাঞ্চলের দশ জেলায়। রংপুর জেলায় চারজন নিহত ও অন্তত ৫০ জন আহত হয়েছে। কালবৈশাখীতে রাজধানীর বিদ্যুৎ ব্যবস্থা বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে। বিঘিœত হয় হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বিমান ওঠা-নামা। বাংলাদেশের খবরের নিজস্ব প্রতিবেদক রানা হানিফ ও কামাল মোশারেফ জানান, গতকাল বিকাল ৪টার দিকে কালো মেঘে ছেয়ে যায় রাজধানীর আকাশ। বিকাল ৫টার দিকে শুরু হয় ধূলিঝড়, সঙ্গে হালকা বৃষ্টি। আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, বিকাল ৫টা নাগাদ রাজধানীর উপর দিয়ে বয়ে গেছে কালবৈশাখী। আবহাওয়াবিদ রুহুল কুদ্দুস বাংলাদেশের খবরকে বলেন, ত্রৈমাসিক প্রতিবেদন অনুযায়ী মার্চে দুইটি কালবৈশাখীর পূর্বাভাস ছিল। যেটা আজ দেশের উপর দিয়ে বয়ে গেছে। তিনি জানান, এপ্রিলে দেশের উত্তর ও মধ্যাঞ্চলের উপর দিয়ে ৩ থেকে ৪টি তীব্র এবং অন্যত্র ২ থেকে ৩টি হালকা কালবৈশাখী বয়ে যেতে পারে। পাশাপাশি সাগরে দুটি নি¤œচাপ হতে পারে, যেগুলো ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে। তিনি বলেন, গতকাল রাজধানীতে ১ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। এছাড়া সিলেটে ৪৪, নেত্রকোনায় ৩৪, তেঁতুলিয়ায় ৩১, কুমারখালীতে ১৯, ডিমলাতে ১৮ ও সৈয়দপুরে ১৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। সূত্র জানায়, দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার কারণে বিকাল সোয়া ৪টায় আন্তর্জাতিক ও অভ্যন্তরীণ রুটের ফ্লাইটগুলোর উড্ডয়ন-অবতরণে নিষেধাজ্ঞা জারি করে বিমানবন্দর আবহাওয়া অফিস। এ কারণে বেশ কয়েকটি বিমানের গতিপথ পরিবর্তন করতে হয়েছে। আবহাওয়া স্বাভাবিক হলে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে বিমান চলাচল পুনরায় শুরু হয়। ঢাকা থেকে ইউএস-বাংলার একটি বিমানের রাজশাহীর শাহ মুখদুম বিমানবন্দরের অবতরণের কথা ছিল বিকাল ৩টা ২০ মিনিটে। খারাপ আবহাওয়ার কারণে বিমানটি যশোর, বরিশাল ও ভারতের মালদা ঘুরে পৌনে ৬টার দিকে রাজশাহীতে অবতরণ করে। কক্সবাজার থেকে রিজেন্ট এয়ারের একটি ফ্লাইট ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে এলেও আবহাওয়া খারাপ থাকায় চট্টগ্রামের শাহ আমানত বিমানবন্দরে অবতরণ করে। পরে আবহাওয়া ভালো হলে ঢাকা আসা বিমানটি। শাহজালাল বিমানবন্দরের পরিচালক উইং কমান্ডার কাজী ইকবাল করিম বলেন, দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার কারণে বিমান চলাচল বিঘিœত হয়। রংপুর ব্যুরো জানায়, দমকা হাওয়ার সঙ্গে শিলাবৃষ্টি ও বজ্রপাতে বদরগঞ্জ উপজেলার দিনমজুর শামীম মিয়া (৩৫) ও তারাগঞ্জ উপজেলার নয়া মিয়া (৪০) মারা গেছেন। ঝড়ে জেলায় আহত হয়েছে অন্তত ৫০ জন। রংপুর আবহাওয়া অফিসের সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ আলী জানান, দুপুর ১২টার দিকে ঝড় শুরু হয়। ঘণ্টায় ৬০ থেকে ৬৫ কিলোমিটার বেগের এই ঝড় রংপুর নগরীর কিছু এলাকাসহ গঙ্গাচড়া, পীরগঞ্জ, মিঠাপুকুর ও তারাগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় আঘাত হানে। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, ঝড়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে পীরগঞ্জ ও মিঠাপুকুর উপজেলায়। পীরগঞ্জের কাবিলপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান রবিউল ইসলাম জানান, হঠাৎ ঝড়োবৃষ্টিতে তার ইউনিয়নে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। অনেক ঘর ও গাছ-পালা পড়ে গেছে। নষ্ট হয়েছে ক্ষেতের ফসল। আহত হয়েছে অন্তত ৩০ জন। উপজেলার টুকুরিয়ার ইউপির চেয়ারম্যান আতোয়ার রহমান বলেন, ঝড় আর শিলাবৃষ্টিতে ফসল ও ঘরবাড়ির অনেক ক্ষতি হয়েছে। চতরা ইউপির চেয়ারম্যান এনামুল হক শামীম জানান, ঝড়ের চেয়ে শিলাবৃষ্টিতে তার এলাকায় বেশি ক্ষতি হয়েছে। কমপক্ষে ২০ জন আহত হয়েছে। তাদের ৮ জনকে পীরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। মিঠাপুকুরের মিলনপুর ইউনিয়নে ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় কৃষক রবিউল ইসলাম। তিনি বলেন, পাথরের মতো শিল আর বৃষ্টিতে বোরো ধান, ভুট্টাসহ বিভিন্ন ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। দিনাজপুর প্রতিনিধি জানান, জেলার চিরিরবন্দর উপজেলায় বেলা ১২টার দিকে হঠাৎ শুরু হওয়া শিলাবৃষ্টিসহ ঝড়ো হাওয়ায় জনজীবন থমকে যায়। প্রায় আধা ঘণ্টার এই ঝড়ে আম ও লিচুর গুটিসহ বিভিন্ন ফসলের ক্ষতি হয়েছে। নীলফামারী প্রতিনিধি জানান, সকাল সাড়ে ৯টা থেকে পৌনে ১০টা পর্যন্ত হওয়া শিলাবৃষ্টিতে ডোমার ও ডিমলা উপজেলার ১২ ইউনিয়নের অনেক ঘরের টিনের চাল ফুটো হয়ে গেছে। ডিমলায় আহত হয়েছে অন্তত ৩ জন। জেলা কৃষি বিভাগ জানিয়েছে, ভারী শিলাবৃষ্টিতে ডোমার ও ডিমলায় ভুট্টা, মরিচ, পেঁয়াজ, তামাক ও বোরো ধান ক্ষেতের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা জানান, ডোমার উপজেলার জোড়াবাড়ি, গোমনতাতি, বামুনিয়া ভোগডাবুড়ি, কেতকিবাড়ি ও পাঙ্গামুটুকপুর এবং ডিমলার খালিশাচাপানী ও নাউতারা ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে শিলাবৃষ্টিতে ফসল ও টিনের ঘরে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। জোড়াবাড়ি ইউনিয়নের পূর্ব জোড়াবাড়ি গ্রামের নলনী রায় (৪৫) বলেন, তার বাড়ির চারটি ঘরের টিন ফুটো হয়েছে। ওই টিন পরিবর্তন না করে বসবাস করা সম্ভব না। গ্রামের অমল চন্দ্র রায় (৫৫) বলেন, ‘মুই গরীব মানুষ। মোর চাইরটা বসত ঘরের চালা ঝাঁঝরা হয়া গেছে। মাইনষের পাঁচ বিঘা জমি আদি (বর্গা) নিয়া ধার-দেনা করি তামাক, মরিচ, ভূট্টা লাগাছিনু। ক্ষেতের সব ফসল নষ্ট হয়া গেছে।’ ভোগডাবুড়ি ইউনিয়নের চিলাহাটি বাজার এলাকার হামিদুল হক বলেন, ‘আমার ৫০ বছরের জীবনে এমন শিলাবৃষ্টি দেখিনি।’ শিলায় তার চারটি ঘরের চালা ফুটো হয়ে বসবাসের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে বলে জানান তিনি। গাইবান্ধা প্রতিনিধি জানান, জেলা সদরসহ বিভিন্ন স্থানে দুপুরের শিলাবৃষ্টি এক নারীসহ পাঁচজন আহত হয়েছে। তাদের মধ্যে ৩ জনের পরিচয় পাওয়া গেছে। তারা হলো- গোবিন্দগঞ্জ উপজলোর উত্তর ধর্মপুর বাসোতুল্যার ছেেল আজাহার আলী (৯০), তালুককানুপুর ইউনয়নিরে বাহাদুরপুর গ্রামের খয়বর আলীর ছেেল গাজী (৪৫) ও দামোদরপুর চিয়ারগ্রামের আব্দুল সাত্তাররে স্ত্রী সুফিয়া  বেগম (৪৫)। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধদপ্তিররে উপ-পরচািলক একএমে রুহুল আমনি জানান, প্রায় আধা ঘন্টা ব্যাপী প্রচন্ড শীলাবৃষ্টিতে আমের মুকুল ও উঠতি ফসলের ব্যাপক ক্ষতি  হয়েছে। লালমনিরহাট প্রতিনিধি জানান, সকাল ১০টার দিকে ১০ মিনিটের ঝড় ও শিলাবৃষ্টিতে হাতীবান্ধা ও পাটগ্রাম উপজেলার বসতবাড়িসহ ফসলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। শিলায় হাজার হাজার ঘরের টিন ফুটো হয়ে গেছে। ভুট্টা ও ইরি-বোরোসহ বিভিন্ন ফসল নষ্ট হয়েছে। হাতীবান্ধা উপজেলার দক্ষিণ গড্ডিমারী গ্রামের আজিজার রহমান জানান, তার চারটি টিনের ঘরের একটির টিনও ভালো নেই। তার ১২ বিঘা জমির ভুট্টা ও ১৫ বিঘা জমির ইরি-বোরো ক্ষেতেরও ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। সিঙ্গিমারী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মনোয়ার হোসেন দুলু জানান, শিলাবৃষ্টিতে তার এলাকার শত শত ঘরসহ বিভিন্ন ফসলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। হাতীবান্ধার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম জানান, ভয়াবহ শিলাবৃষ্টিতে বসতবাড়িসহ বিভিন্ন ফসলী ক্ষেতে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা করে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ে আবেদন করা হবে। ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি জানান, ঝড়ে কাঁচা ঘর এবং পাকা গম ও গুটি আমের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। গাছ ভেঙে ও বিদ্যুতের তার ছিঁড়ে যানবাহন চলাচলে বিঘিœত হচ্ছে। কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি জানান, কালবৈশাখীতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে জেলার নাগেশ্¦রী ও ভুরুঙ্গামারী উপজেলায়। নাগেশ্বরীর বালাটারি গ্রামের কৃষক আব্দুল কাদের বলেন, স্বাধীনের পর এই প্রথম এত জোরে ঝড়-বৃষ্টি হলো। ঝড়ে তার দুটি ঘর উড়ে গেছে, সুপারিসহ বিভিন্ন গাছ পড়ে গেছে। নষ্ট হয়েছে শাক এবং ধানক্ষেত। গ্রামের বক্তার আলী বলেন, ঝড়ে গাছ পড়ে রাস্তা বন্ধ হয়ে গেছে। পঞ্চগড় প্রতিনিধি জানান, জেলার প্রতিটি উপজেলায় কমবেশি ঝড় ও শিলাবৃষ্টি হয়েছে। সবচেয়ে বেশি শিলাবৃষ্টি হয়েছে সদর উপজেলায়। উপজেলার হাড়িভাসা, হাফিজাবাদ, কামাত কাজলদিঘী ইউনিয়নের অনেক ক্ষেতের উন্নত জাতের টমেটো, তরমুজ, শসা, গম ও ভুট্টার ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। ঝরে গেছে আম ও লিচুর অনেক মুকুল। চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি জানান, দুপুর দেড়টার দিকে হঠাৎ ঝড় শুরু হয়ে চলে আড়াইটা পর্যন্ত। এতে শহরের অনেক এলাকার সাইনবোর্ড ও তোরণ হেলে পড়ে। ইন্টারনেট ও ডিশের তার ছিড়ে যায়। দুর্ঘটনার আশঙ্কায় জেলা শহরসহ আশপাশের উপজেলায় বিদ্যুৎ সরবরাহ সাময়িকভাবে বন্ধ করে দেওয়া হয়। চাঁপাইনবাবগঞ্জ হর্টিকলচার সেন্টারের উপ-পরিচালক ড. সাইফুর রহমান বলেন, যে কোনো ফসলের জন্য এ বৃষ্টি উপকারী। বিশেষ করে, আমের জন্য। তবে আরো দুই তিন দিন বৃষ্টি হলে তা আমের জন্য খুব ক্ষতিকর হবে, অন্য ফসলের ক্ষতি হবে। নাটোর প্রতিনিধি জানান, বিকাল ৪টার দিকে জেলার গুরুদাসপুর উপজেলায় বজ্রপাতে ২ নারীসহ ৯ জন আহত হয়েছে। তারা হলো- মশিন্দা মাঝপাড়া গ্রামের নিলুফা বেগম (৪০), সাহাপুরের আয়েতুন (৬০), বিলহরিবাড়ী গ্রামের আইগরী (৪৫), জগিন্দনগর গ্রামের হাবিবুর (৩০), শরিফুল (২৪), কালাম (৪৫), বাবলু (২৮), সাড্ডাক (৫০) এবং খ্বুজীপুরের আফছার (৪০)। নিলুফা বেগমকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। অন্যদের ভর্তি করা হয়েছে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। সিলেট ব্যুরো জানায়, কালবৈশাখীতে ওসমানীনগরে দুইজন নিহত হয়েছে; বিদ্যুৎহীন রয়েছে গোটা উপজেলা। বিকাল প্রায় ২০ মিনিট স্থায়ী এই ঝড়ে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় শত শত গাছ পড়ে যায়; উড়ে যায় শতাধিক ঘরের টিনের চালা। দশহাল গ্রামে নূরুল আলমের নির্মাণাধীন ঘরের টিন উড়ে গিয়ে গলা কেটে সাবিয়া বেগম (৪৫) নামের এক মহিলা ঘটনাস্থলেই নিহত হন। ঝড়ের সময় পানিতে ডুবে হাসান আহমদ নামের ১৬ মাসের এক শিশুর মৃত্যু হয়। এছাড়া বজ্রপাতে তেতইখালিতে পূর্বতিলা পাড়ার ইউছুফ আলীর ৪টি গরু মারা গেছে। মাগুরা প্রতিনিধি জানান, বিকালের ঝড়ের সময় শিলাবৃষ্টিতে সদর উপজেলার পলিতা বেরইল ইউনিয়নের গহর ডাঙ্গা গ্রামের আকরাম হোসেন (৫০) নামের এক কৃষক মারা গেছেন। এছাড়া সদরের বিভিন্ন গ্রামে নারীসহ ৯ জন আহত হয়েছে। তাদের সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকতা আবু সুফিয়ান জানান, শিলাবৃষ্টিতে বিভিন্ন গ্রামে ফসলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
   

বার্তা২৪.কম-কে একান্ত সাক্ষাৎকারে ড. সাহাব এনাম খান

‘মধ্যপ্রাচ্য সংকটে প্রথম ভিকটিম বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশগুলি’



আশরাফুল ইসলাম, পরিকল্পনা সম্পাদক বার্তা২৪.কম
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

ইসরায়েল-হামাস এর সংঘাতের পথ ধরে ফিলিস্তিনে ইসরাইলি বর্বরতার কোন কিনারা না হতেই ফের ইসরায়েল-ইরান সংঘাত গোটা মধ্যপ্রাচ্যের স্থিতিশীলতার জন্য বিরাট হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশেষজ্ঞ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ড. সাহাব এনাম খান এমনটাই মনে করেন। তিনি বলেছেন, মধ্যপ্রাচ্যে অস্থিতিশীলতার প্রথম ভিকটিম হবে বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশগুলো। চলমান এই সংকটকে ‘দীর্ঘমেয়াদী’ উল্লেখ করে সম্ভাব্য পরিস্থিতি মোকাবেলায় বাংলাদেশকে শুধুমাত্র গার্মেন্টস আর রেমিটেন্স নির্ভর হয়ে না থেকে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য কুটনীতিকে ঢেলে সাজাতে হবে। বার্তা২৪.কম-কে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে এসব কথা বলেন অধ্যাপক সাহাব। কথা বলেছেন পরিকল্পনা সম্পাদক আশরাফুল ইসলাম

বার্তা২৪.কম: মধ্যপ্রাচ্যের সাম্প্রতিক উত্তেজনকর পরিস্থিতিকে কিভাবে মূল্যায়ন করবেন? এটি কি ধরণের বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ তৈরি করছে, বিশেষ করে আমাদের মত উন্নয়নশীল দেশের জন্য?

ড. সাহাব এনাম খান: মধ্যপ্রাচ্য পরিস্থিতি পুরোই আনপ্রেডিকটেবল এবং এই আনপ্রেডিকটেবিলিটি অনেক লম্বা সময় ধরে থাকবে। এই আনপ্রেডিকটেবিলিটি শুধু ইসরায়েল বা ইরান ক’দিন লাফালাফি করলো এরপর আবার বন্ধ হয়ে গেল এরকম না। এই আনপ্রেডিকটেবিলিটি অনেকটা লম্বা সময় ধরে চলতে থাকবে এবং এর মূল কেন্দ্রবিন্দু থাকবে ইসরায়েল। ইসরায়েলেকে ঘিরেই আরব ও পশ্চিমা বিশ্বের সম্পর্ক। সুতরাং এখানে ইসরায়েলকে কেন্দ্র করে ভোলাটাইলিটি। আর এর মূল দিকটা হল পশ্চিমা বিশ্বই এটাকে হ্যান্ডেল করে। স্পষ্ট করে বলতে গেলে এখানে আরববিশ্বের কোন রোল নেই বাক্-যুদ্ধ করা ছাড়া। আরেকটা পয়েন্ট আছে তা হচ্ছে-এই ঘটনাগুলির প্রেক্ষিতে এখন একটি বড় মেরুকরণ হয়ে গেছে রাশিয়া-চীন-তুরস্ক-ইরান, এদেরকে কেন্দ্র করে। অন্যদিকে ইসরায়েলকে ঘিরে পশ্চিমা বিশ্বেও একটা মেরুকরণ হয়ে গেছে। এই মেরুকরণ বিশ্ব অর্থনীতিতে ব্যাপক প্রভাব ফেলবে। এরা চাইবে ওয়েস্ট এটা করতে না পারুক, যে কারণে বিশ্ব অর্থনীতি ও মুদ্রা ব্যবস্থার ওপর একটা বড় রকমের চাপ পড়বে। যার প্রথম ভিকটিম হবে উন্নয়নশীল দেশগুলি।

বার্তা২৪.কম: তার মানে কি এটি স্পষ্ট হয়ে উঠছে যে বিশ্বব্যবস্থায় পশ্চিমা মনোপলি ভেঙে পড়েছে?

ড. সাহাব এনাম খান: একদমই। এজন্যই তো বিশ্বে মোটাদাগে মেরুকরণ তৈরি হয়েছে। পশ্চিমা বিশ্বের মনোপলিতে ইসরায়েল রয়েছে কিন্তু ইরান নেই। তবে পশ্চিমাদের সঙ্গে ইসরায়েলের সম্পর্কটা কি হবে, তারা এই সম্পর্ককে কিভাবে হ্যান্ডেল করবে তার ওপর নির্ভর করবে সামনের দিনগুলি কি রকম হবে। আরবদের সঙ্গে ইসরায়েলের সম্পর্ক কেমন হবে সেটা এখানে ম্যাটার করবে না।

বার্তা২৪.কম: পশ্চিমাদেশসমূহ, বিশেষ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র প্রকাশ্যে যে বক্তৃতা-বিবৃতি দেয় আর তাদের ভেতরকার যে স্ট্যান্ড তার মাঝে কি এক ধরণের বৈপরিত্য লক্ষ্য করা যায় না…অন্ততঃ পরিস্থিতি মূল্যায়ন করলে?

ড. সাহাব এনাম খান: তা তো বটেই। আরও একটি বিষয় যোগ করব, তা হচ্ছে-মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আসন্ন নির্বাচনও গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এ কারণে ইসরায়েল-পশ্চিমা সংযোগটি একটা লম্বা সময় ধরে অস্থিরই থাকবে। ঠিক এ কারণেই বিশ্ব অর্থনীতি ও মুদ্রা ব্যবস্থায় বড় রকমের চাপ তৈরি হচ্ছে। যার প্রভাব বাংলাদেশের মত উন্নয়নশীল দেশগুলিতে হবেই।

বার্তা২৪.কম: কি ধরণের প্রভাব পড়তে পারে বলে মনে করেন আপনি?

ড. সাহাব এনাম খান: প্রথমতঃ বিভিন্ন রকমের স্যাংশন, অলটারনেটিভ কারেন্সির প্রেশার আসবে। দ্বিতীয়তঃ কৌশলগত কুটনৈতিক চাপও প্রচুর আসবে এই সময়ে। ফিলিস্তিনের পাশে দাঁড়ানোর আমাদের এক ধরণের সাংবিধানিক অঙ্গীকারও আছে, আমরা তা দেখিয়েও আসছি। রোহিঙ্গাদের ক্ষেত্রেও আমরা একই অবস্থান নিয়েছি। বিপন্ন মানবতার পক্ষে দাঁড়ানো।

বার্তা২৪.কম: বাস্তবতার নিরিখে আমাদের কি ধরণের সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত?

ড. সাহাব এনাম খান: আন্তর্জাতিক বাণিজ্য নিয়ে আমাদের সম্পর্ণ নতুন করে চিন্তা ভাবনা করা দরকার। শুধুই গার্মেন্টস আর রেমিটেন্স নির্ভর হয়ে থাকলে হবে না। বর্তমান বিশ্ব পরিস্থিতির কারণে আমরা যতটা না হিট হব বা ইউক্রেন সংকটে যতটা হয়েছি-ভারত কিন্তু ততটা হয়নি এর কারণ ভারতের অর্রথনীতির ডাইভার্সিটি আছে। আমি মনে করি-চারটি জায়গায় আমাদের খুব জোর দিয়ে কাজ করতে হবে। প্রথমতঃ এনার্জি সিকিউরিটি, আরও স্পষ্ট করে বললে স্বনির্ভর এনার্জি অর্জন করতে হবে আমাদের, যা জাতীয় স্বার্থের সঙ্গে সরাসরি সম্পৃক্ত। এখানে উল্লেখ করা প্রয়োজন, আমাদের দেশের জাতীয় স্বার্থকে অনেকে ব্যকিক্তগত স্বার্থের সঙ্গে গুলিয়ে ফেলেন। জাতীয় স্বার্থে আমাদের জ্বালানি নিরাপত্তা ইন্ডিজেনাস সোর্স থেকে করতে হবে। অদক্ষ এনার্জি ইনস্টিটিউশনস দিয়ে আমাদের হবে না। পুরো জ্বালানি ব্যবস্থাকে ঢেলে সাজাতে হবে।

দ্বিতীয়তঃ আমাদের বাণিজ্য কুটনীতিতে কেবল মৌখিকভাবে বললে হবে না, প্রায়োগিক অর্থে বাণিজ্য কুটনীতি জোরদার করতে হবে। এর মধ্যে নম্বার ওয়ান প্রায়োরিটি থাকবে, ‘ডাইভার্সিটি’। অর্থাৎ অর্থনীতির নানা খাত চাঙা করে তুলতে হবে।   

তৃতীয়তঃ আরব দেশগুলির সঙ্গে বিদ্যমান যে সম্পর্কে আছে, তাকে আরও গভীর করতে হবে। সেইসঙ্গে বৈশ্বিক এই উত্তেজনা ও সংঘাতে উন্নয়নশীল আরও যেসব দেশ আক্রান্ত হবে তাদের সঙ্গেও শক্তিশালী জোটবদ্ধতা তৈরি করা জরুরি। আমরা ব্রিকসে যেতে আগ্রহী না হয়ে নিজেরা একটা কিছু করতে চেষ্টা করতে পারি, যেখানে নিজেদের স্বার্থ অগ্রাধিকার পাবে। যেখানে বাংলাদেশের মত এমন অনেক দেশ বিদ্যমান পরিস্থিতিতে শঙ্কায় আছে। যদি বাংলাদেশ অনেকগুলি ইকনমিকে একসঙ্গে নিয়ে একটি কালেক্টিভ ভয়েস তৈরি করতে পারে তবেও তা কার্যকর ফল বয়ে আনবে।

অনেক দেশই আমাদের অনেক কথা বলবে, কিন্তু তা প্রায়োগিক ক্ষেত্রে কতটা ফলপ্রুসু হবে তা আমাদের চিন্তা করে দেখতে হবে। অন্ততঃ এক দশক ধরে বাংলাদেশ বাণিজ্য বহুমূখিকরণের কথা বলে আসছে, কিন্তু কি রপ্তানি করবে, কি আছে-তা নিয়ে কোন কাজ হচ্ছে না। এখানে ইন্ডিজেনাস কোন ইন্ডাষ্ট্রি সৃষ্টি করছে না, সম্ভাবনাময় পাটকে নিয়ে সেভাবে বড় রকম কিছু করা গেল না। তার মানে কেবল কথা নয়, প্রায়োগিক অর্থে বাস্তবভিত্তিক প্রচেষ্টা নেওয়া দরকার।

চতুর্থ হচ্ছে-অভ্যন্তরীণ বাজারকে আরও শক্তিশালী ও সম্প্রসারণ করা। এই মুহূর্তে বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বাজার বহুলাংশে পরনির্ভরশীল হয়ে আছে। ভারতে একটি ক্যাডবেরি চকলেট ব্রিটিশ স্ট্যান্ডার্ডে নিজেরা উৎপাদন করে ভোক্তাদের দেয়। তাতে ফরেন কারেন্সি নিয়ে আর ঝামেলা থাকে না। বাংলাদেশে পুরনো গাড়ি কিনতে মানুষজন একেবারে উদগ্রিব। এতবড় মার্কেট থাকতে কেন এখানে ইন্ডিজেনাস কার ইন্ডাষ্ট্রি হচ্ছে না? এটা যদি ভুটান বা মালদ্বীপের মতো স্বল্প জনসংখ্যার দেশ হতো তাহলে চিন্তা করা যেত, কিন্তু ব্যাপারটি তো আসলে তা নয়। আমরা পুরনো গাড়িতে চড়তে পারলেই খুব স্বস্তি পাই, কারণ বাস্তবতা হচ্ছে গাড়ি একটি প্রয়োজন। যেখানে অর্থনৈতিক উৎপাদনশীলতা বেড়েছে, স্কেল বেড়েছে; স্বাভাবিকভাবে মানুষের মবিলিটি বাড়বে। কিন্তু এখানে ২০০-৪০০% ট্যাক্স দিয়ে আমদানি করে মানুষের প্রোডাক্টিভিটি ও সেফটিকে ছোট করে ফেলা হচ্ছে।

২০২৬-এ উন্নয়নশীল দেশ হিসবে রূপান্তর নিয়ে অনেক হইচই হচ্ছে, কিন্তু এখানকার ওষুধশিল্প নিয়ে কি হবে? সরকার সাবসিডি দিয়ে এপিআই তৈরি করুক, তা দিয়ে কমোডিটিজগুলো তৈরি করা হোক-কিন্তু এসব বাদ দিয়ে সব হাতি-ঘোড়া মারার চিন্তাভাবনা আমাদের ভর করছে, যা মোটেও উচিত নয়।

বার্তা২৪.কম: সম্ভাবনা ও বৈচিত্রকে নিরুৎসাহিত করার অন্তরায় কি তবে বাড়তি আমলাতান্ত্রিক নির্ভরতা?

ড. সাহাব এনাম খান: অবশ্যই, অর্থনীতি কখনো আমলানির্ভর হতে পারে না। এখানে প্রাইভেট সেক্টরকে আরও নীতিনির্ধারণে আনা দরকার। প্রাইভেট সেক্টর মুনাফায় বিশ্বাস করে। সুতরাং তারা সব সময় বৈচিত্র চাইবে। আমলারা যদি এক্সপোর্ট ডাইভার্সিফিকেশন বুঝতে পারতেন তবে পাট শিল্প কেন মুখ থুবড়ে পড়ল? আমি মনে করি, এক্সটেন্সিভ প্রাইভেটাইজেশনে গিয়ে আমলা নির্ভরতাকে কমিয়ে ক্রিয়েটিভ ইন্ডাষ্ট্রিকে এখানে ঢুকাতে হবে। বর্তমান বৈশ্বিক সংকটে এটি দেশের অর্থনীতিকে অনেক সহায়তা করবে।

বার্তা২৪.কম: মিয়ানমার সীমান্তে উত্তেজনা তো থামছেই না, কোন টেকসই সমাধানের পথ কি দেখেন আপনি?

ড. সাহাব এনাম খান: টেকসই সমাধান তখনই হবে যখন আরাকান স্থিতিশীল হবে। আরাকানকে স্থিতিশীল করতে বাংলাদেশের একটি সন্মুখ ভূমিকা থাকা প্রয়োজন। অনেকভাবেই তা হতে পারে-একক সহায়তা হতে পারে বা অবকাঠামো উন্নয়নে ভূমিকা রাখা যেতে পারে। ওদের সিভিল সোসাইটি, পলিটিক্যাল সোসাইটিকে শক্তিশালী করতে পদক্ষেপ নেওয়া যেতে পারে। দেখা যাবে আমেরিকানরা আললান্টিকের ওপার থেকে এসে ঠিকই করে ফেলছে। বাংলাদেশ তো গণতন্ত্রের কথা বলছে, তাহলে সেখানে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে বাংলাদেশ কাজ করতেই পারে। এখানে শুধু আরাকান আর্মি নয়-যেসব অ্যাক্টরগুলো সেখানে সক্রিয় তাদের সঙ্গে আমাদের এনগেজ হতে হবে। কারণ এদের ছাড়া রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন সম্ভব হবে না। তাতমাদো (মিয়ানমারের সরকারি সামরিক বাহিনী) এটি সমাধান করবে না। কিংবা তাতমাদো রাখাইনে গেড়ে বসলেও রোহিঙ্গা সংকট সমাধান হবে না। তাতমাদো যদি না থাকতে পারে, আরাকান আর্মি আসে, তাতেও সমাধান আসবে না, যদি তাদের সঙ্গে সম্পর্ক না রাখা হয়। যদিও রোহিঙ্গা ইস্যুতে গত এক বছরে বাংলাদেশের অনেক অগ্রগতি হয়েছে, তার আগে কিছু হয়নি।

সম্পাদনা: মাহমুদ মেনন, এডিটর-অ্যাট্-লার্জ, বার্তা২৪.কম

;

সাড়ে ৪ লাখ টাকার গাঁজাসহ কারবারী আটক



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, বরগুনা
সাড়ে ৪ লাখ টাকার গাঁজাসহ কারবারী আটক

সাড়ে ৪ লাখ টাকার গাঁজাসহ কারবারী আটক

  • Font increase
  • Font Decrease

কুমিল্লা থেকে গাঁজা বিক্রি করতে এসে সাড়ে ৪ লাখ টাকার ৬ কেজি গাঁজাসহ আটক হয়েছে সোহেল নামে এক মাদক কারবারি।

শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) সকালে বরগুনা জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের একটি টিম গোপন সংবাদের ভিত্তিতে আমতলী উপজেলার সীমান্ত এলাকা শাখারিয়া বাসস্ট্যান্ড থেকে একটি ব্যাগের ভিতর থেকে ওই গাঁজাগুলো উদ্ধার করে জব্দ করে। ওই সময় তারা গাঁজা বহনকারী কারবারী সোহেলকে আটক করে জিজ্ঞাসাদের জন্য বরগুনা জেলা ডিবি কার্যালয়ে নিয়ে যায়।

আটককৃত মাদক কারবারি সোহেল কুমিল্লার কোতোয়ালি থানার ধর্মপুর এলাকার বশিরুল্লাহর ছেলে। পেশায় সে একজন স্যানিটারী মিস্ত্রি। ভারত থেকে চোরাইপথে আসা গাঁজা আখাউড়া থেকে সংগ্রহ করে সড়ক পথে বরগুনার আমতলীতে বিক্রি করার উদ্দেশ্য নিয়ে আসার সময় পথিমধ্যে জেলা গোয়েন্দা (ডিবি)'র অভিযানে ধরা পড়ে যায়।

এ বিষয়ে বরগুনা জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) শাখার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ বশির আলম বার্তা২৪.কমকে বলেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে আমার নেতৃত্বে উপ- পরিদর্শক জ্ঞান কুমার দাস, মোঃ বশির আহমেদ, সহকারী পরিদর্শক রুবেল হাওলাদার, ডিবি সদস্য প্রিন্স সিমলাই, মাহমুদসহ গোয়েন্দা পুলিশের একটি টিম গভীর রাত থেকে আমতলীর সীমান্ত এলাকা শাখারিয়া বাসস্ট্যান্ডে অবস্থান করি।

চট্টগ্রাম থেকে ছেড়ে আসা কুয়াকাটাগামী হানিফ পরিবহনে তল্লাশি চালিয়ে ৬ কেজি গাঁজাসহ সোহেল নামে ওই মাদক কারবারীকে হাতেনাতে আটক করতে সক্ষম হই। আটক কারবারীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) কার্যালয়ে নিয়ে আসা হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে বিধি মোতাবেক তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

 

;

রংপুরে ৩৫ কেজি গাঁজাসহ ৪ মাদক ব্যবসায়ী আটক



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, রংপুর
ছবি: বার্তা ২৪

ছবি: বার্তা ২৪

  • Font increase
  • Font Decrease

রংপুরের পীরগাছায় ৩৫ কেজি গাঁজাসহ চার মাদক ব্যবসায়ীকে আটক করেছে পুলিশ।

শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) দুপুরে বিষয়টি নিশ্চিত করেন পীরগাছা থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) রফিকুল ইসলাম। এর আগে বৃহস্পতিবার রাত ১২টার দিকে উপজেলার পূর্বদেবু গ্রামের একটি বাড়িতে অভিযান চালিয়ে দুজন ও শুক্রবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে একই বাড়ি থেকে অপর দুজনকে আটক করা হয়।

আটককৃতরা হলেন উপজেলার পূর্বদেবু গ্রামের বাদশা মিয়ার ছেলে সাব্বির আহমেদ জয় ওরফে আব্দুস সালাম (৪০), একই গ্রামের হোসেন আলীর ছেলে শাহাজাহান মিয়া (৩৬), কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ি উপজেলার বাসিন্দা সবুজ মিয়া (২৮) ও একরামুল হক (২৬)।

পুলিশ জানায়, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে উপজেলার পূর্বদেবু গ্রামের আব্দুস ছালামের বাড়িতে অভিযান চালায় পুলিশ। এ সময় তল্লাশি করে ৩৫ কেজি গাঁজাসহ আব্দুস ছালাম ও শাহাজাহান মিয়াকে আটক করা হয়। পরে শুক্রবার সকালে আব্দুস ছালামের বাড়িতে সেই গাঁজা কিনতে আসে ফুলবাড়ি থেকে সবুজ মিয়া ও একরামুল হক। খবর পেয়ে তাদেরকেও আটক করে থানায় নিয়ে আসে পুলিশ।

পীরগাছা থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) রফিকুল ইসলাম বলেন, গাঁজাসহ দুজন ও পরবর্তীতে গাঁজা কিনতে আসা দুজনকে আটক করা হয়েছে। এ ঘটনায় মামলা হয়েছে।

;

লালমনিরহাটে ৪০০ বোতল ফেনসিডিলসহ নারী কারবারি আটক



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, লালমনিরহাট
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

লালমনিরহাট জেলার কালীগঞ্জ উপজেলায় ৪০০ বোতল ফেনসিডিল ও চার বোতল ভারতীয় হুইস্কিসহ স্বরসতী রানী (৩৩) নামে এক নারী মাদকারবারীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

গ্রেফতারকৃত স্বরসতী রানী কালীগঞ্জ উপজেলার ঘোঙ্গাগাছ এলাকার পলাতক মাদক ব্যবসায়ী পবিত্র রায়ের স্ত্রী।

বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) রাতে মাদক ব্যবসায়ী পবিত্র রায়ের বাড়িতে মাদকের বড় চালান ঢুকেছে এমন গোপন সংবাদের ভিত্তিতে এসআই মফিজুল ইসলাম সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে অভিযান পরিচালনা করে এ সময় স্বরসতী রানীর সহযোগিতায় বাশের তৈরী মাচা হতে ৪০০ বোতল ফেনসিডিল ও ৪ বোতল হুইস্কি উদ্ধার করা হয়।

কালিগঞ্জ থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ইমতিয়াজ কবির ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বার্তা২৪.কমকে জানান, আটককৃত নারী মাদক কারবারীর বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা দায়ের করে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।

;