চীন-রাশিয়াও চায় রোহিঙ্গারা ফিরে যাক
মিয়ানমারের বন্ধু, যারা রোহিঙ্গা ইস্যুতে তাদের সমর্থন করে যাচ্ছে, সেই রাশিয়া ও চীনও চায় রোহিঙ্গারা তাদের দেশে ফেরত যাক। কিন্তু এখন পর্যন্ত একজন রোহিঙ্গাও মিয়ানমারে ফেরত যায়নি।
বৃহস্পতিবার (২৫ জুলাই) রাজধানীর ব্র্যাক সেন্টারে 'রোহিঙ্গা সংকট এবং আশ্রয় দেওয়া দেশে প্রভাব' বিষয়ক কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী একে আবদুল মোমেন।
তিনি বলেন, এর আগেও রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে এসেছিলেন। মিয়ানমার তাদের ফেরত নিয়েছে। মিয়ানমার বন্ধু রাষ্ট্র। আমাদের সম্পর্ক খুব ভালো। প্রতিবেশী সব দেশের সঙ্গে বাংলাদেশ শান্তিপূর্ণ সম্পর্ক রাখে। আমি আশাবাদী, মিয়ানমার অতিসত্বর রোহিঙ্গাদের ফেরত নেবে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, একজন রোহিঙ্গাও ফেরত যাননি। এটা নড়ছে না, আমরা যেমনটা চাই। তাদের সম্মান ও নিরাপদে ফেরত যেতে হবে। মিয়ানমার তার নিজের স্বার্থে নিতে হবে। কারণ না নিলে এ অঞ্চলের নিরাপত্তা বিঘ্নিত হবে। তাদের দেশে যে বিদেশি বিনিয়োগ আসছে তা বাস্তবায়নে কর্মী লাগবে, যা রোহিঙ্গারা মেটাতে পারেন।
পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউট (পিআরআই) এবং ইউএনডিপি কর্মশালার আয়োজন করে। এতে স্বাগত বক্তব্য দেন পিআরআই -এর নির্বাহী পরিচালক ড. আহসান মনসুর।
তিনি বলেন, বিশ্বের ৫ শতাংশ উদ্বাস্তু রোহিঙ্গা বাংলাদেশে বাস করছেন। এই রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে ফেরাতে বিশ্ব সম্প্রদায়কে মিয়ানমারের ওপর জোরালো চাপ দিতে হবে।
ইউএনডিপি’র আবাসিক প্রতিনিধি সুদীপ্ত মুখার্জি বলেন, যদিও রোহিঙ্গা শরণার্থীর জন্য বাংলাদেশ তার দরজা খুলে দিয়ে উদারতার দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে, কিন্তু এর ফলে বহুবিধ সংকটেরও আবির্ভাব হচ্ছে। রোহিঙ্গাদের সম্মানজনকভাবে ফেরত পাঠানোর কোনো বিকল্প নেই। তবে যতদিন থাকছে ততদিন পর্যন্ত কক্সবাজারের উন্নয়ন জরুরি হয়ে পড়েছে।
পিআরআই -এর রিসার্চ ডিরেক্টর ড. এম.এ. রাজ্জাক বলেন, রোহিঙ্গারা আসার পর কক্সবাজারের আর্থ-সামাজিক, ভৌগোলিক, পানির স্তর থেকে আরাম্ভ করে নিত্য প্রয়োজনীয় সব বিষয়ে নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। টেকনাফে ১০০ শতাংশ এবং উখিয়াতে ৮০ শতাংশ পরিবেশ সম্পূর্ণভাবে প্রভাবিত হয়েছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) অধ্যাপক ড. সি.আর. আবরার বলেন, রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন বিষয়টি যেভাবে এগোচ্ছে তা পরিবর্তন করার সময় এসেছে। আমাদের দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনার দিকে এগোতে হবে, নাহলে সব রকমের অগ্রগতি হওয়ার পর এটা বন্ধ হয়ে যেতে পারে। এছাড়া মিয়ানমারের ওপর চাপ অব্যাহত রাখতে হবে।