দুবাই ছেড়ে আম বাগানে!
চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলা সদরের অদূরে চতুরপুরের একটি বাগানের পাহারা চৌকিতে আড্ডা দিচ্ছেন কয়েকজন। তাদেরই একজন রবিউল, দুবাই থেকে এসেছেন মাত্র ১২দিন আগে।
দীর্ঘ ১২ বছর প্রবাসে কাটালেও তিনি আম চেনেন ভালো। কোনটা হিমসাগর, কোনটা ফজলি আর কোনটা আশ্বিনা তা এক পরখেই বলে দিতে পারেন।
আমের ব্যবসায়ও বুঝেন ভালো। প্রবাসে থাকা অবস্থায় দেশে টাকা পাঠিয়ে আমের ব্যবসায় বিনিয়োগ করেছেন। এবার নিজে এসে কিনে ফেলেছেন তিনটি আম বাগান। সেগুলোর মধ্যে একটি রয়েছে চতুরপুরে, শুক্রবার সেখানেই তিনি আড্ডা দিচ্ছিলেন।
এক আমচাষীর কাছ থেকে দুই লাখ টাকায় কিনেছেন পুরনো এ আম বাগান। প্রায় ২০০ মন আম আছে বাগানের গাছে- এমনটিই তার ধারণা।
এছাড়া ঝালমাছমারি ও জগন্নাথপুরেও আমের বাগান কিনেছেন রবিউল। দাম একটু বেশি পেলে অন্য ব্যবসায়ীর কাছে পুনরায় বিক্রি করে দেবেন।
আমের সিজন শেষে ফের দুবাই চলে যাবেন রবিউল। এ কয়েক দিনের আম ব্যবসা তাকে টেনে এনেছে বাংলাদেশে।
আম বাগানের গাছে গাছে সাফল্য দেখছেন তার মতো অনেকেই। লাভের হিসেবটা বেশ লাভের। লাখের অংকে কেনা আম বাগানের লাভ কোটির ঘরে গিয়ে ঠেকে!
এই যেমন শামসুদ্দিনের বাগানের ১০৪টি আম গাছের হিসেবটা ভাবুন। তিনি চার বছরের জন্য ২২ লাখ দিয়ে কেনা বাগান থেকে এক কোটি টাকা আয় করছেন। চার বছরে তার এ আয় হচ্ছে।
আরও পড়ুন- কবে বাজারে আসছে চাঁপাইয়ের আম?
চাঁপাইনবাবগঞ্জের বেশির ভাগ মানুষই জৈষ্ঠ মাসে পুরদস্তুর আম ব্যবসায়ী হয়ে উঠেন। কেউ আম বাগান কেনেন। কেউ বাগানের পরিচর্যা করে তাতে ভাগ বসান। আর এক শ্রেণীতো আছেন আম কানসাটের বাজারে নিয়ে যাওয়ার জন্য নিয়োজিত। সাইকেলের দুইপাশে বস্তা বোঝাই আম নিয়ে ছুটেন কানসাটের সবচেয়ে বড় আম বাজারে। সেখান থেকে দেশ-বিদেশে ছড়িয়ে পড়ে আম।
কানসাট আমবাজার সমিতির সভাপতি প্রবোধ কুমার দে বার্তা২৪.কমকে বলেন, গতবার একলাখ টন আম উঠেছিলো। এবার আশা করছি দেড় লাখ টন আম উঠবে।
শিলাবৃষ্টিতে গুটি কয়েক আমবাগানের ক্ষতি হলেও বেশিরভাগ আমবাগান অক্ষত রয়েছে। মধ্যজুনে আমের ভারে বাজার অন্যরকম দেখাবে। আশেপাশের ৫/৬টি থানার আম এসে এখানে জড়ো করা হয়। বাংলাদেশের অর্ধেকের বেশি আমের চাহিদা কানসাট থাকে পুরণ করা হয়।