৫৩ বছর ধরে চলা ‘শ্রম’ হাট এখনো জমজমাট
বরগুনার তালতলী উপজেলা শহরের ভূমি অফিসের সামনের মাঠে ৫৩ বছর ধরে বসে শ্রম হাট। এই হাটে ভোর থেকে ভিড় করেন বিভিন্ন এলাকা থেকে আগত শ্রমিক ও গৃহস্থরা। দরদাম ঠিক হলে প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র নিয়ে শ্রমিকরা চলে যান গৃহস্থদের বাড়ি। কেউ বিক্রি হন দিন চুক্তিতে, কেউবা সপ্তাহ চুক্তিতে আবার কেউ মাস চুক্তিতে।
জানা গেছে, বছরের শ্রাবণ ও ভাদ্র মাসের মাঝামাঝি পর্যন্ত আমন চাষাবাদের উপযুক্ত সময়। এ সময় শ্রমজীবী মানুষের চাহিদা থাকে বেশি। ধান বোনা, ধান কাটাসহ বিভিন্ন কাজে পারদর্শী শ্রমিকের চাহিদা থাকে সবচেয়ে বেশি। দরদাম করে শ্রমিকদের নেওয়া হয় এলাকার বাড়িতে। কৃষি কাজে ব্যবহৃত মালামাল নিয়ে শ্রম হাটে বসে থাকেন শ্রমিকরা। হাটে ১৬ থেকে ৫০ বছর বয়সের শ্রমিকদের দেখা মেলে।
রোববার (২৫ আগস্ট) দুপুরে সরেজমিনে দেখা গেছে, শতশত শ্রমজীবী মানুষ হাটে এসেছেন বিক্রি হতে। উপজেলার বিভিন্ন এলাকার মানুষ কৃষিকাজের জন্য তাদের কিনে নিয়ে যাচ্ছেন। বাজারের অন্যান্য পণ্যের মতো শ্রমিকদের পারিশ্রমিক নিয়ে চলে দর কষাকষি। সকালের দিকে শ্রমিকদের চাহিদা বেশি থাকে। শ্রমজীবীরা দামও বেশি পান। দুপুর গড়িয়ে বিকাল হলে চাহিদা কমে যায় এবং দামও কমে যায়। অনেকে বিক্রি হতে না পারলে হতাশা নিয়ে বাড়ি ফেরেন।
কয়েকজন শ্রমিক জানান, সব জিনিসের দাম বাড়ায় দৈনিক ৭২০-৭৫০ টাকায় শ্রম বিক্রি করেন তারা। তবে শ্রম কিনতে আসা মালিকের পছন্দের ওপর পারিশ্রমিক নির্ভর করে। তবে শ্রম বাজারে বৃদ্ধদের চেয়ে যুবকদের চাহিদা বেশি।
শ্রম কিনতে আসা কয়েকজন মালিক জানান, গত বছরের চেয়ে এ বছর শ্রমের দাম একটু বেশি। কিন্তু উপায় না থাকায় বেশি দামেই শ্রম কিনতে হচ্ছে।
শ্রম অবিক্রিত থাকা হালিম হাওলাদার জানান, বাজারে লোক বেশি থাকায় বিক্রি হতে পারেননি তিনি। তবে আগামী সপ্তাহে তিনি আবার হাটে আসবেন।
বিক্রিত মহের উদ্দির জানান, তিনিসহ দলের সাতজনের শ্রম কিনেছেন তাঁতিপাড়ার এলাকার বাসিন্দা রিয়াজুল ইসলাম। তার কৃষি কাজ করে দিতে হবে।
শ্রম ক্রেতা হাসান জানান, তিনি ১০ জনকে সাত দিনের জন্য ক্রয় করেছেন। আগামী সপ্তাহে আবারও শ্রম কিনতে হবে।