তাজিয়া শোক মিছিলে পাইক সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ: ডিএমপি কমিশনার
শিয়া সম্প্রদায়ের ধর্মীয় অনুষ্ঠান পবিত্র আশুরা উপলক্ষে তাজিয়া শোক মিছিলে পাইক (‘হায় হোসেন’ মাতম তুলে যারা দা, ছোরা, কাঁচি, বর্শা, বল্লম, তরবারি নিয়ে নিজেদের শরীর রক্তাক্ত করেন) সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করেছেন ডিএমপি কমিশনার মো. আছাদুজ্জামান মিয়া।
বুধবার (৪ সেপ্টেম্বর ) সকালে ডিএমপি হেডকোয়ার্টার্সে এক সমন্বয় সভায় তিনি এ কথা বলেন।
উক্ত সভায় আশুরার শোক মিছিল আয়োজক কর্তৃপক্ষের প্রতি বেশ কয়েকটি নির্দেশনা দিয়েছেন ডিএমপি কমিশনার।
নির্দেশনাগুলো হলো:-
# শোক মিছিলের নির্ধারিত রুট ও সময়সীমা (নির্ধারিত সময়ে শুরু ও শেষ) মেনে চলতে হবে।
# তাজিয়া শোক মিছিলে কোন পাইক যাতে অংশগ্রহণ করতে না পারে সে বিষয়টি আয়োজক সংস্থা নিশ্চিত করবে।
# তাজিয়া শোক মিছিলে অংশগ্রহণকারীদের নিশান এর উচ্চতা ১২ ফুটের বেশী হবে না।
# তাজিয়া শোক মিছিল ও অন্যান্য অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে আয়োজক সংস্থা প্রতিটি সমবেত স্থানে পর্যাপ্ত সংখ্যক সিসি ক্যামেরা স্থাপন ও মনিটরিং এর ব্যবস্থা করবেন।
# আয়োজক সংস্থা পর্যাপ্ত সংখ্যক আইডি কার্ডসহ স্বেচ্ছাসেবক নিয়োগ এবং যাচাই বাছাইয়ের জন্য ছবিসহ তালিকা সংশ্লিষ্ট উপ-পুলিশ কমিশনারের অফিসে প্রেরণ করবেন।
# তাজিয়া শোক মিছিলে সকল প্রকার ধারালো অস্ত্র, ধাতব পদার্থ, দাহ্য পদার্থ, ব্যাগ, পোটলা, লাঠি, ছোঁড়া, চাকু, তরবারি/তলোয়ার, বর্শা, বল্লব এবং আতশবাজির ব্যবহার নিষিদ্ধ। পোশাকের সাথেও এগুলো ব্যবহার করা যাবে না।
# শোক মিছিল চলাকালীন সময়ে রাস্তার মাঝে বিভিন্ন অলি গলি থেকে আগত লোকদের মিছিলে প্রবেশ করতে দেয়া যাবে না। মিছিলে অংশগ্রহণ করতে হলে মিছিল শুরুর স্থানে যেতে হবে।
# শোক মিছিল শুরুর স্থানে প্রবেশের আগে সকলকে আর্চওয়ে, মেটাল ডিটেক্টর ও হাত দিয়ে দেহ তল্লাশি করে ঢুকতে দিতে হবে। তল্লাশি ব্যতীত কোন অবস্থায় কাউকে মিছিলে ঢুকতে দেয়া যাবে না। সেক্ষেত্রে পর্যাপ্ত সংখ্যক স্বেচ্ছাসেবী রাখতে হবে।
# শিয়া সম্প্রদায়ের প্রতিটি ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান, ইমামবাড়া ও শোক মিছিলে অংশগ্রহণকারীদের সমাবেত স্থান ও এর আশপাশের সমস্ত এলাকায় পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা রাখতে হবে। সন্ধ্যার মধ্যে অনুষ্ঠান শেষ করতে হবে।
# শোক মিছিলে উচ্চমাত্রার শব্দ তৈরি করে ঢাক-ঢোল, বাদ্য যন্ত্র, পিএ সেট ব্যবহার করা যাবে না।
# শোক মিছিল চলাকালীন সময়ে মিছিলের মধ্যে যেন কোনো গ্যাপ সৃষ্টি না হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে।
# তাজিয়া মিছিলে পাঞ্জা মেলানোর সময় শক্তি প্রয়োগ করে ভীতিকর পরিস্থিতি ও অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা তৈরি করা যাবে না।
# শোক মিছিল ও আশুরা কেন্দ্রিক অনুষ্ঠানে কাউকে চাদর গায়ে প্রবেশ করতে দেয়া যাবে না।
উল্লেখ্য, আগামী ৭ সেপ্টেম্বর দুপুর ২ টায় আঞ্জুমানে হায়দারীর আয়োজনে রাজধানীর হোসনি দালান ইমামবাড়া থেকে শোক মিছিলের মধ্য দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে পবিত্র আশুরা উদযাপন শুরু হবে। এছাড়াও বিভিন্ন অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে ১০ সেপ্টেম্বর আশুরা পালন শেষ হবে।