হামলার চেষ্টায় নব্য জেএমবি, সতর্ক আইনশৃঙ্খলা বাহিনী



শাহরিয়ার হাসান, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম, ঢাকা
সায়েন্সল্যাবে পুলিশের ওপর হামলা, পুরনো ছবি

সায়েন্সল্যাবে পুলিশের ওপর হামলা, পুরনো ছবি

  • Font increase
  • Font Decrease

রাজধানীর গুলিস্তান, মালিবাগ, খামারবাড়ি, পল্টন এবং সর্বশেষ সায়েন্স ল্যাবরেটরি মোড়ে ইম্প্রোভাইজড এক্সপ্লোসিভ ডিভাইস তথা হাতে তৈরি বোমা-গ্রেনেড (আইইডি) পেতে রেখেছিল দুর্বৃত্তরা।

গত পাঁচ মাসে ভিন্ন পাঁচ স্থানে চারটি বিস্ফোরণ ঘটায় তারা। বিস্ফোরণের এসব ঘটনায় পুলিশ কর্মকর্তাসহ অন্তত সাত জন আহত হয়েছেন। এছাড়া অবিস্ফোরিত অবস্থায় উদ্ধার হয়েছে একাধিক আইইডি।

তবে এখন পর্যন্ত এসব ঘটনায় কেউ ধরা না পড়ায় মামলার তদন্তে অগ্রগতি নেই বললেই চলে। পুলিশের পক্ষ থেকে বারবার বলা হচ্ছে, এই হামলাগুলোর মূল টার্গেট পুলিশ।

গত ৩১ আগস্ট সায়েন্স ল্যাবরেটরি মোড়ে আইইডি বিস্ফোরণের ঘটনায় জঙ্গিগোষ্ঠীর হাত থাকতে পারে বলে ধারণা করছেন সংশ্লিষ্টরা। অবশ্য প্রতিটি ঘটনার পর হামলার দায় স্বীকার করেছে মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক জঙ্গিগোষ্ঠী ইসলামিক স্টেট (আইএস)।

তবে পুলিশ বলছে, আইএস নয় ফের সক্রিয় হওয়ার চেষ্টা করছে নব্য জেএমবি। এসব হামলা তারাই করছে।

আরও পড়ুন: এলজিআরডি মন্ত্রীর গাড়ি লক্ষ্য করে ককটেল নিক্ষেপ, ২ পুলিশ সদস্য আহত

পুলিশের ওপর এমন হামলার মামলাগুলোর তদন্ত, বিশ্লেষণ ও পর্যবেক্ষণ করছেন অতিরিক্ত কমিশনার ও কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্স ন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) প্রধান মনিরুল ইসলাম। ডিএমপি কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়ার নির্দেশনায় মনিরুল ইসলামকে প্রধান করে আট সদস্যের একটি কমিটি করা হয়েছে।

হামলার চেষ্টায় নব্য জেএমবি, সতর্ক আইনশৃঙ্খলা বাহিনী
খামারবাড়ি এলাকা থেকে বোমা উদ্ধার, ছবি: বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম

 

তদন্ত সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, সর্বশেষ সায়েন্সল্যাবে বিস্ফোরণস্থলের পাশে দুটি সিসি ক্যামেরা ছিল। একটি সিসি ক্যামেরার ভিডিও ফুটেজ বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, বোমাটি আগেই সেখানে রেখে যাওয়া হয়। বিস্ফোরকটি রিমোট কন্ট্রোলড অথবা টাইমবোমা ছিল। তবে বিস্ফোরণের মুহূর্তে সায়েন্সল্যাব মোড়ে সিগন্যাল থাকায় সেখানে শুধু পুলিশই ছিল।

তদন্তকারী সূত্র আরও বলছে, এসব ঘটনার সঙ্গে নব্য জেএমবির একটি নতুন গ্রুপ জড়িত। হলি আর্টিজানের পর দেশব্যাপী সাঁড়াশি অভিযানে জঙ্গিরা কোণঠাসা হলেও নব্য জেএমবি ফের সক্রিয় হয়েছে। এরই মধ্যে তারা আইইডি তৈরির সক্ষমতা অর্জন করেছে।

একই কথা বলছেন জঙ্গিবাদ বিরোধী অভিযানের কর্মকর্তারা। তারা বলছেন, নেতৃত্বহীন এই জঙ্গি নেটওয়ার্কটি শনাক্ত করা যাচ্ছে না। এদের শনাক্ত করে, আইনের আওতায় আনতে পারলে, এই ঝুঁকি আর থাকবে না।

হামলার চেষ্টায় নব্য জেএমবি, সতর্ক আইনশৃঙ্খলা বাহিনী
খামারবাড়ি এলাকা থেকে বোমা উদ্ধার অভিযান, ছবি: বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম

 

এদিকে নব্য জেএমবির টার্গেট পুলিশ কেন? জানতে চাইলে সিটিটিসি'র প্রধান অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মনিরুল ইসলাম বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম-কে বলেন, 'রাজনৈতিকভাবে যুদ্ধাপরাধের বিচার যখন শুরু হয় তখন তারা যে নৈরাজ্যকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে চেয়েছিল, সেটার প্রধান প্রতিপক্ষ হিসেবে তারা দেখেছে পুলিশকে। অর্থাৎ তারা যেন বিশৃঙ্খলা তৈরি করতে না পারে সেটি প্রতিহত করেছে পুলিশ। এটি তাদের বিপক্ষে গিয়েছে, ফলে সেই দিক থেকে পুলিশের প্রতি তাদের একটি ক্ষোভ রয়ে গেছে।'

তিনি আরও বলেন, 'তাছাড়া গত কয়েক মাসের ৪/৫টি ঘটনার বাইরে আগের সকল সন্ত্রাসী ঘটনার রহস্য উদঘাটিত ও মামলাগুলোর অধিকাংশই চার্জশিট হয়েছে। নব্য জেএমবির শীর্ষ নেতারা অধিকাংশই হয় গ্রেফতার হয়েছে, না হলে পুলিশি অভিযানকালে নিহত হয়েছে অথবা আত্মাহুতি দিতে বাধ্য হয়েছে। এই সকল ক্ষোভের কারণেই পুলিশেকে তারা টার্গেট করেছে।'

এমন পরিস্থিতিতে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কাছে পুলিশ সদরদফতর থেকে নানা দিক-নির্দেশনা পাঠানো হয়েছে।

পুলিশ সদর দফতরের সহকারী মহাপরিদর্শক সোহেল রানা বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম-কে বলেন, 'সায়েন্স ল্যাবরেটরিতে বোমা বিস্ফোরণের ঘটনার আগে থেকেই সারা দেশে পুলিশকে সতর্ক অবস্থায় দায়িত্ব পালনের নির্দেশনা ছিল। এ ঘটনার পর বিভিন্ন রেঞ্জ ডিআইজি, কমিশনার ও ফিল্ড কমান্ডারদের নিরাপত্তা নির্দেশনা যথাযথভাবে পালনের বিষয়টি আবারও বলা হয়েছে।'

আরও পড়ুন: রাজধানীতে বোমা সদৃশ বস্তু উদ্ধার

   

মানিকগঞ্জে হাসপাতাল থেকে নারীসহ দালাল চক্রের ৫ সদস্য গ্রেফতার



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, মানিকগঞ্জ
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

মানিকগঞ্জে সরকারি জেলা সদর হাসপাতাল থেকে বেসরকারি হাসপাতাল-ক্লিনিকে রোগী ভাগিয়ে নেওয়া চক্রের (দালাল) নারীসহ পাঁচ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) দুপুরে মানিকগঞ্জ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেলা সদর হাসপাতালের ভেতরে অভিযান চালিয়ে তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়।

গ্রেফতারকৃতরা হলেন, মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার গড়পাড়ার পাঞ্জনখাড়া এলাকার মৃত আনোয়ার হোসেনের ছেলে পাপ্পু মিয়া (৩৫), একই উপজেলার পশ্চিম সেওতা এলাকার হযরত আলীর ছেলে ফারুক হোসেন (৩৮), জাগীর শেঘশিমুল এলাকার মনির মিয়ার স্ত্রী শিলা আক্তার (২৫), সাটুরিয়া উপজেলার পশ্চিম চর-তিল্লী এলাকার জহির আলীর মেয়ে বিউটি বেগম (৫০) ও ঘিওর উপজেলার হিজুলিয়া এলাকার মৃত মনোয়ার হোসেনের স্ত্রী সেলিনা বেগম (৪২)।

পুলিশ জানান, মানিকগঞ্জ সদর হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা সহজ-সরল রোগী ও স্বজনদের ফুসলিয়ে বেসরকারি হাসপাতাল-ক্লিনিকের চিকিৎসার জন্য নিয়ে যেতেন এবং বেসরকারি হাসপাতাল-ক্লিনিক মালিকদের কাছ থেকে কশিমন পেতেন দালাল চক্রের সদস্যরা।

জেলা হাসপাতালের ভেতর থেকে রোগী ধরে বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়াকে কেন্দ্র করে গত সোমবার জেলা সদর হাসপাতালের নিরাপত্তা কর্মী দুলাল হোসেনের সাথে দালাল চক্রের সদস্যদের কথা কাটাকাটি হয়।

এর এক পর্যায়ে সদর হাসপাতালের নিরাপত্তা কর্মী দুলাল হোসেনকে অশ্লীল ভাষায় গালাগাল করে এবং দেশীয় ধারালো অস্ত্র দিয়ে মেরে ফেলার হুমকি দিয়ে জেলা সদর হাসপাতাল থেকে চলে যায় দালাল চক্রের ১০-১২জন সদস্য।

পরে এ ঘটনায় জেলা সদর হাসপাতালের নিরাপত্তা কর্মী দুলাল হোসেনে ১৫ জনের নাম উল্লেখ্যসহ আরো ৫ জনকে অজ্ঞাতনামা করে গতকাল বুধবার মানিকগঞ্জ সদর থানায় মামলা করেন।

মানিকগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. হাবিল হোসেন জানান, মামলার পর মানিকগঞ্জ জেলা সদর হাসপাতালে অভিযান চালিযে দালাল চক্রের নারীসহ পাঁচ সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়। এরপর আইনি প্রক্রিয়া শেষে গ্রেফতারকৃতদের আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে। মামলার বাকি অভিযুক্তদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে বলেও তিনি জানান।

;

গাজীপুরের কোনাবাড়ী পল্লী বিদ্যুৎ অফিসে আগুন



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, গাজীপুর
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

গাজীপুর মহানগরীর কোনাবাড়ী পল্লী বিদ্যুৎ জোনাল অফিসে পাওয়ার ট্রান্সফরমারে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে।

বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে আগুনের সূত্রপাত ঘটে। খবর পেয়ে কোনাবাড়ী মডার্ন ফায়ার সার্ভিসের দুইটি ইউনিট ঘটনাস্থলে গিয়ে ২০ মিনিট চেষ্টা চালিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণ করে।

প্রত্যক্ষদর্শী ও ফায়ার সার্ভিস জানায়, বৃহস্পতিবার বিকেলে কোনাবাড়ী পল্লী বিদ্যুৎ জোনাল অফিসের ১০ মেগাওয়াটের ট্রান্সফরমারে যান্ত্রিক ত্রুটি থেকে অগ্নিকান্ডের সৃষ্টি হয়। এ সময় সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ছুটে এসে পাশের ফ্যাশন পয়েন্ট নামে পোশাক কারখানার অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র ও পানি দিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করে। ততোক্ষণে খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট ঘটনাস্থলে এসে আগুন নিয়ন্ত্রণ করেন।

কোনাবাড়ী পল্লীবিদ্যুৎ জোনাল অফিসের জেনারেল ম্যানেজার কামাল হোসেন বলেন, অতিরিক্ত তাপে ১০ মেগাওয়াট পাওয়ার ট্রান্সফরমার পুড়ে গেছে। এখান থেকে শুধু কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগারে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হতো।

কোনাবাড়ী মডার্ন ফায়ার সার্ভিসের টিম লিডার আশরাফ উদ্দিন বলেন, খবর পেয়ে আমাদের ২টি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণ করেছে। তবে তাৎক্ষণিকভাবে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ জানা যায়নি।

;

টেকনাফে কোস্ট গার্ডের অভিযানে ৪৫ হাজার ইয়াবা উদ্ধার



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, কক্সবাজার
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

টেকনাফের বাহারছড়ায় কোস্ট গার্ডের অভিযানে ৪৫ হাজার পিস ইয়াবা উদ্ধার করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) দুপুরে কোস্ট গার্ড সদর দপ্তরের মিডিয়া কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কমান্ডার খন্দকার মুনিফ তকি এ তথ্য জানান।

তিনি বলেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বাংলাদেশ কোস্ট গার্ডের একটি দল বৃহস্পতিবার ভোর সাড়ে ৪ টার দিকে কক্সবাজার জেলার টেকনাফ থানাধীন বাহারছড়া ইউনিয়নস্থ কচ্ছপিয়া ঘাট এলাকায় একটি বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে।

অভিযান চলাকালীন কচ্ছপিয়া ঘাট সংলগ্ন ঝাউবনে কতিপয় ব্যক্তির গতিবিধি সন্দেহজনক মনে হলে কোস্ট গার্ড এর আভিযানিক দল কর্তৃক তাদেরকে টর্চ লাইট ও বাঁশির মাধ্যমে থামার সংকেত প্রদান করা হয়। তারা কোস্ট গার্ডের উপস্থিতি বুঝতে পেরে ঝাউবনের অভ্যন্তরে ১টি বস্তা ফেলে দ্রুত পালিয়ে যায়। পরবর্তীতে উক্ত বস্তাটি তল্লাশী করে ৪৫ হাজার পিস ইয়াবা ও ১টি দেশীয় অস্ত্র (রাম দা) জব্দ করা হয়।

জব্দকৃত ইয়াবা ও দেশীয় অস্ত্র পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের নিমিত্তে টেকনাফ মডেল থানায় হস্তান্তর করা হয়।

;

জব্বারের বলীখেলার নতুন চ্যাম্পিয়ন কুমিল্লার বাঘা শরীফ



তাসনীম হাসান, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, চট্টগ্রাম
ছবি: আনিসুজ্জামান দুলাল

ছবি: আনিসুজ্জামান দুলাল

  • Font increase
  • Font Decrease

মাথার ওপর বৈশাখের কাঠফাটা রোদ। সেটি উপেক্ষা করে ২০ বাই ২০ হাতের চতুর্ভুজ আকৃতির রিংয়ের চারপাশ ঘিরে অসংখ্য দর্শকের হৈ-হুল্লোড়। রেফারির বাঁশি বেজে ওঠার সঙ্গে সঙ্গে শুরু হলো শক্তির লড়াই। দাঁতে দাঁত চেপে, মাথায় মাথা লাগিয়ে শুরু হলো বাঘা শরীফ ও রাশেদের চ্যাম্পিয়ন হওয়ার লড়াই।

ঘামে ভিজে, রোদে পুড়ে অস্থির। তবু যেন ‘কেহ কারে নাহি ছাড়ে সমানে সমান’। কিন্তু থামতে যে হবেই! ৩১ মিনিটেও কেউ কারও পিঠ রিংয়ের বালুতে ছোঁয়াতে পারেনি। তবে শেষমেশ আর না পেরে হার মেনে নেন রাশেদ বলী। এর মধ্য দিয়ে ঐতিহাসিক এই বলীখেলা পেল নতুন চ্যাম্পিয়ন।

১১ রুদ্ধশ্বাস লড়াই শেষে রেফারি বাঘা শরীফের হাত উঁচিয়ে বললেন, ‘ওই এবারের আবদুল জব্বার বলীখেলার চ্যাম্পিয়ন’। মন ভাঙলেও মেনে নেন কুমিল্লারই আরেক বলী রাশেদ।

একটা সময় জব্বারের বলীখেলা মানেই ছিল কক্সবাজারের দিদার বলীর হাতে ট্রফি। রেকর্ড ১১ বারের চ্যাম্পিয়ন দিদার ২০১৭ সালে অবসরে যাওয়ার পর থেকে আসল দ্বৈরথটা হচ্ছে জীবন ও শাহজালালের মধ্যে। ২০১৯ সালের বলীখেলায় ফাইনালে জীবনকে হারিয়ে শিরোপা জিতেছিলেন শাহজালাল। পরেরবার শিরোটা পুনরুদ্ধার করেন জীবন। এরপর গতবার শোধ নেন জীবন। তবে এবার দুজনেই নাম প্রত্যাহার করেন।

যুবসমাজকে ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনে উদ্বুদ্ধ করতে ১৯০৯ সালে চট্টগ্রামের বকশিরহাটের ব্যবসায়ী আবদুল জব্বার সওদাগর চালু করেছিলেন বলীখেলা। সময়ের ব্যবধানে লালদীঘির মাঠে বসা ‘জব্বারের বলীখেলা’ হয়ে উঠেছে এই জনপদের অন্যতম আকর্ষণ। শুধু কি তাই? বলীখেলাকে কেন্দ্র করে বৃহত্তর চট্টগ্রামের সবচেয়ে বড় বৈশাখী মেলাটিও বসে এখানে। কিন্তু করোনার থাবা এই আনন্দ-উৎসব থামিয়ে দিয়েছিল ২০২০ সালে। এরপর গত বছরও এই মেলা হয়নি একই কারণে। এবারও ঐতিহাসিক এই আয়োজনের ভবিষ্যৎ ঝুলছিল সুতার ওপর। শেষ পর্যন্ত সিটি মেয়র মো. রেজাউল করিম চৌধুরীর প্রচেষ্টায় তিন বছর পর বলীখেলা দেখল নগরবাসী।

এবার আবদুল জব্বারের বলীখেলায় অংশ নিতে ৮৪ জন বলী নিবন্ধন করেন। তাদের মধ্যে ২৫ বছরের তরুণ যেমন ছিল, তেমনি ছিলেন ৭০ বছরের বলীও। প্রথম রাউন্ডে শখের বশে খেলতে আসা বলীরা অংশ নেন। এরপর হয় চ্যালেঞ্জ রাউন্ড। এই রাউন্ড থেকেই জয়ী হয়ে বাঘা শরীফ, রাশেদ, রাসের ও সৃজন চাকমা যান সেমিফাইনালে।

সেমিফাইনাল শেষে ফাইনালে মুখোমুখি হন বাঘা শরীফ ও রাশেদ। ফাইনালে দুই দুরন্ত বলীর লড়াইয়ে এক প্রস্থ নাটকও হলো। ২০ বাই ২০ হাতের চতুর্ভুজ আকৃতির রিংয়ে শক্তির লড়াইয়ে কেউ কাউকে ফেলতে পারছিলেন না। দুজনের মধ্যে বেশ কয়েকবার ধাক্কাধাক্কিও হলো।

পিঠ নিচে ফেলতে না পারলেও অবশ্য বাঘা শরীফ বারবারই পরাস্থ করেন রাশেদতে। খেলার ১১ মিনিটের মাথায় রাশেদ বলে উঠতে না পেরে সরে দাঁড়ান।

কুমিল্লার হোমনা বাসিন্দা বাঘা শরীফ মাংস বিক্রেতা। কাজের ফাঁকে যে টুকু অবসর মিলে তার পুরোটা দেন বলীখেলায়। কুমিল্লার অন্যতম সেরা বলী হিসেবে পরিচিতি আছে তার। সেজন্য তার নাম হয়ে দাঁড়ায় বাঘা শরীফ।

চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর বাঘা শরীফ বলেন, প্রথমবারের মতো অংশ নিলাম। আর প্রথমবার অংশ নিয়েই চ্যাম্পিয়ন হলাম। যারা সুযোগ করে দিয়েছেন। সামনের আসরগুলোতে আরও শিরোপা চাই।

;