আগামী বছর জেএসসিতে সর্বোচ্চ গ্রেড জিপিএ-৪
পাবলিক পরীক্ষায় গ্রেডিং পদ্ধতি সংস্কারের কাজ শুরু করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। পুরোনো পদ্ধতি জিপিএ-৫ এর পরিবর্তে সর্বোচ্চ গ্রেড নির্ধারণ করা হয়েছে জিপিএ-৪।
আগামি বছর থেকে জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট (জেএসসি) পরীক্ষায় এই গ্রেডিং পদ্ধতি বাস্তবায়ন করা হবে। আর ২০২১ সালের এসএসসি, এইচএসসি পরীক্ষাতেও এ পদ্ধতি চালু করা হবে।
রোববার (৮ সেপ্টেম্বর) আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীনে গ্রেড পরিবর্তন সংক্রান্ত আয়োজিত সভায় এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি।
সভা সূত্রে জানা গেছে, পাবলিক পরীক্ষায় গ্রেড পরিবর্তন কমিটির সদস্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক অধ্যাপক শাহাদাত হোসেন নতুন গ্রেড পদ্ধতি উপস্থাপন করেন। এরপর সকলের সম্মতিতে খসড়া প্রস্তাবনা চূড়ান্ত করা হয়। তবে এ সংক্রান্ত আরও দু-একটি সভা করা হবে।
কর্মশালায় যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, দক্ষিণ কোরিয়া ও অস্ট্রেলিয়ার পরীক্ষার জিপিএ পয়েন্ট নিয়ে আলোচনা করা হয়। এর মধ্যে অস্ট্রেলিয়ায় শুধু জিপিএ-৭ রয়েছে, অন্য দেশগুলোতে জিপিএ-৪ এর বিষয়টি উঠে আসে।
আর গ্রেড পরিবর্তন প্রস্তাবনায় দেখা গেছে, জেএসসি-জেডিসি, এসএসসি-সমমান, এইচএসসি-সমমান পরীক্ষায় নম্বরের ভিত্তিতে সর্বোচ্চ জিপিএ-৪ করা হবে। এ ক্ষেত্রে ৯০-১০০ পর্যন্ত এ প্লাস জিপিএ-৪, ৮০-৮৯ পর্যন্ত ‘এ’ জিপিএ-৩.৫, ৭০-৭৯ ‘বি’ প্লাস জিপিএ-৩, ৬০-৬৯ ‘বি’ জিপিএ-২.৫, ৫০-৫৯ ‘সি’ প্লাস জিপিএ-২, ৪০-৪৯ ‘সি’ জিপিএ-১.৫, ৩৩-৩৯ ‘ডি’ জিপিএ-১ এবং শূন্য থেকে ৩২ ‘এফ’ গ্রেড জিপিএ-০ বা ফেল নির্ধারণ করা হয়েছে।
সভা শেষে শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি বলেন, ‘বর্তমানে জিপিএ-৫ নিয়ে অভিভাবকদের মধ্যে একধরনের অসুস্থ প্রতিযোগিতা কাজ করছে। এটিকে রোধ করতে হবে। এছাড়া জিপিএ-৫ ধরে ফল প্রকাশ করায় বিদেশে চাকরির বাজারেও কিছু সমস্যা দেখা দিয়েছে। তাই সব বিশ্ববিদ্যালয়ে পরীক্ষার ফলেও জিপিএ-৪ প্রবর্তনের পরিকল্পনা হাতে নেওয়া হয়েছে। আগামী কয়েক মাসের মধ্যে বিশেষজ্ঞদের মতামত নিয়ে বিষয়টি চূড়ান্ত করা হবে। পরিবর্তন করলে পুরো সিস্টেমের পরিবর্তন করা দরকার এবং সেটি যেন মানসম্মত হয়, তা খেয়াল রাখতে হবে।’
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. সোহরাব হোসাইন বলেন, ‘আমরা আরও মতামত নিয়ে প্রয়োজনে আগামী বছরের সাময়িক পরীক্ষায় জিপিএ-৪ ধরে ফল প্রকাশ করে দেখতে পারি। এ সময় উত্তরপত্র মূল্যায়নের বিষয়টিও সামনে আসবে।’
মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের আয়োজিত কর্মশালায় আরও উপস্থিত ছিলেন- আইইআরের অধ্যাপক এসএম হাফিজুর রহমান ও হোসনে আরা বেগমসহ শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরের কর্মকর্তা, সব শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান, জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) চেয়ারম্যান, জাতীয় শিক্ষা ব্যবস্থাপনা একাডেমির (নায়েম) বিশেষজ্ঞ, বিভিন্ন কলেজের অধ্যক্ষ এবং বাংলাদেশ পরীক্ষা উন্নয়ন ইউনিটের (বেডু) কর্মকর্তারা।