রোহিঙ্গা ভোটার: নেপথ্যের চক্র ধরতে বিশেষ অভিযান



ইসমাঈল হোসাইন রাসেল, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম, ঢাকা
মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গারা | ছবি: সংগৃহীত

মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গারা | ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গারা যাতে কোনভাবে ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হতে না পারে সেজন্য সর্বোচ্চ সতর্কতা জারি করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। পাশাপাশি রোহিঙ্গাদের ভোটার করার কাজের সঙ্গে জড়িত চক্রকে ধরতে নিয়মিত বিশেষ অভিযান পরিচালনা করছে ইসি ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী। ইতোমধ্যে এ কাজে জড়িত কয়েকজনকে আটক করা হয়েছে।

জানা গেছে, সম্প্রতি চট্টগ্রামে লাকী নামে একজন রোহিঙ্গা নারী স্মার্টকার্ড আনতে গেলে সার্ভার থেকে জানা যায় তার এনআইডি সঠিক নয়। এরপর সন্দেহ হওয়ায় তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে জানা যায় তিনি রোহিঙ্গা। এরপর তাকে পুলিশে দেওয়া হয়। এর কয়েক দিন পর সার্ভারে আরও ৪৬ জনের অসম্পূর্ণ তথ্য পাওয়া যায়। তাদের মধ্যে কারও ফিঙ্গার প্রিন্ট ঠিক নেই, কারও ফরম সঠিকভাবে আপলোড করা হয়নি। তাই সেগুলো চিহ্নিত করে ব্লক করে রাখা হয়েছে। পরে এ ঘটনা তদন্তের জন্য ইসি সচিবালয় থেকে পাঁচ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়।

একই সঙ্গে জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগের (এনআইডি) একটি বিশেষ টিম গঠন করে মাঠ পর্যায়ে তদন্তের জন্য পাঠানো হয়। গত ১১ সেপ্টেম্বর থেকে সেই টিম কাজ শুরু করে এবং ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ত কয়েকজনকে শনাক্ত করে। পরে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সহায়তায় দুই জনকে আটক করা হয়। তাদের তথ্যের ভিত্তিতে ইসির চট্টগ্রামের ডবলমুরিং থানা কার্যালয়ের অফিস সহকারী জয়নাল আবেদীনকে আটক করা হয়। আটকদের তথ্যের ভিত্তিতে বিশেষ অভিযান চলছে, সেখানে নেপথ্যে থাকা চক্রের সদস্যদের সন্ধানও মিলছে। তবে তদন্তের স্বার্থে আটকের সংখ্যা ও তাদের পরিচয় প্রকাশ করা হচ্ছে না।

সূত্র জানায়, কক্সবাজার ও চট্টগ্রাম অঞ্চলের একটি প্রভাবশালী চক্র রোহিঙ্গাদের ভোটার করার জন্য সার্বক্ষণিক কাজ করছে। মোটা অঙ্কের অর্থের বিনিময়ে এই চক্রকে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে সার্বিক সহযোগিতা করছেন ইসির কিছু অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ বিভিন্ন পর্যায়ের জনপ্রতিনিধিরা।

এনআইডি উইং সূত্র জানায়, তথ্য সংগ্রহকারী দ্বারা ভোটারদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে তথ্য সংগ্রহের মাধ্যমে সংগৃহীত তথ্য ও কাগজপত্র সুপারভাইজার দ্বারা যাচাই করা হয়। সেসব তথ্য শনাক্তকারী দ্বারা শনাক্ত এবং যাচাইয়ের পর প্রুফ রিডিং, অ্যাডজুডিকেট, বায়োমেট্রিকসের দ্বৈততা পরীক্ষা করে খসড়া ও চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হয়। আর বায়োমেট্রিকস প্রদানের সময় ছবি ও চার আঙুলের পরিবর্তে চোখের আইরিশ ও দশ আঙুলের ছাপ নেওয়া হয়।

তবে রোহিঙ্গা অধ্যুষিত ৩২টি বিশেষ এলাকার নাগরিকদের তথ্য যাচাই-বাছাইয়ের জন্য প্রতিটি এলাকায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নেতৃত্বে ১৫ সদস্যের কমিটি করা হয়েছে। এছাড়াও বিশেষ এলাকার নাগরিকদের নিবন্ধনের জন্য নির্ধারিত নিবন্ধন ফরমের অতিরিক্ত বিশেষ ফরম রয়েছে। সেখানে পিতা-মাতার পাশাপাশি চাচা-চাচি, মামা-মামি, ফুফা-ফুফুসহ আত্মীয়স্বজনের নাম দিতে হয়।

ইসির কর্মকর্তারা জানান, প্রাথমিক নিবন্ধন কার্যক্রমের পর ভোটার নিবন্ধনের আগে ইসির কাছে রক্ষিত ১১ লাখ ২০ হাজার রোহিঙ্গার ডাটাবেজের সঙ্গে বায়োমেট্রিকসের দ্বৈততা পরীক্ষা সম্পন্ন করার ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। রোহিঙ্গা ডাটাবেজ পরীক্ষার পর কমিশনের নিজস্ব ডাটাবেজ পরীক্ষা করা হয়, এরপর সব ঠিক থাকলে ভোটার নিবন্ধন কার্যক্রম চূড়ান্ত হয়। ফলে এসব ধাপ পেরিয়ে ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্তির সুযোগ থাকে না। তবে প্রভাবশালীদের সহায়তায় অনেক অসাধু চক্র এটি করার চেষ্টা করে, কিন্তু যখন রোহিঙ্গা ডাটাবেজে এটি পরীক্ষা করা হয় তখন সেটি অবশ্যই ধরা পড়বে। সেক্ষেত্রে ধরা পড়লে সেই ভোটার তথ্যটি সঙ্গে সঙ্গে ব্লক করে দিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হয়। বর্তমানেও এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত চক্রকে ধরতে অভিযান চলছে।

এদিকে নতুন করে যাতে কোন রোহিঙ্গার নাম ভোটার তালিকায় ঢুকতে পারে না পারে সেজন্য ৩ সেপ্টেম্বর থেকে সাতদিন সার্ভারে নতুন ভোটারদের তথ্য আপলোড করার কার্যক্রম পুরোপুরি বন্ধ রাখা হয়। এছাড়া নতুন ভোটার অন্তর্ভুক্তিতে সতর্কতা জারি করে সব আঞ্চলিক, জেলা ও থানা নির্বাচন কর্মকর্তাদের চিঠি দেবে কমিশন।

এ বিষয়ে ইসির জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ সাইদুল ইসলাম বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমকে বলেন, রোহিঙ্গাদের ভোটার তালিকায় ঢোকানোর সুযোগ নেই। তবে যারা এটি করার চেষ্টা করেছে তাদের শনাক্ত করার চেষ্টা করছি। আমাদের কাছে ওই তিনজনের বাইরে কে বা কারা আটক আছে, তার পরিচয় ও সংখ্যা তদন্তের স্বার্থে প্রকাশ করতে চাই না। আমরা পুরো চক্রকে ধরতে বদ্ধপরিকর। যেহেতু কমিশনের একজন অফিস সহকারীর সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেছে, তার পরিচয় আমরা সবাইকে জানিয়েছি। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী আমাদের সহায়তা করছে, পুরো চক্রটিকে ধরতে প্রতিদিনই বিশেষ অভিযান চলছে।

ইসি সচিবালয়ের অতিরিক্ত সচিব মোখলেসুর রহমান বলেন, কক্সবাজারের আশপাশের ৩২টি উপজেলাকে বিশেষ এলাকা ঘোষণা করেছি। সেখানে গঠিত বিশেষ কমিটির সঙ্গে বৈঠক করে বার বার সতর্ক করেছি, যাতে বিদেশি বা রোহিঙ্গারা ভোটার তালিকায় আসতে না পারে। অভিযুক্ত যাদের আটক করা হয়েছে তারা রোহিঙ্গাদের ভোটার করার চেষ্টা করেছেন, কিন্তু কাউকে ভোটার করতে পারেননি এবং আইডি কার্ডও দিতে পারেননি। শুধু তারা উদ্যোগ নিয়েছে, সেজন্য তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আরও কেউ এই অপকর্মের সঙ্গে জড়িত আছে কি না, সেটাও আমরা দেখছি।

বিদ্যমান আইন অনুসারে বর্তমান ভোটার তালিকা হালনাগাদ কার্যক্রম ২০১৯ এর খসড়া তালিকা প্রকাশ করা হবে আগামী বছরের ২ জানুয়ারি। ৩১ জানুয়ারি প্রকাশ করা হবে চূড়ান্ত ভোটার তালিকা, যার ভিত্তিতে বাংলাদেশি নাগরিক ভোটার হিসেবে নিবন্ধিত হবেন।

   

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে মানবাধিকার উইং চালুর পরামর্শ



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে মানবাধিকার সম্পর্কিত একটি নতুন শাখা চালু করার পরামর্শ দিয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি।

বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) জাতীয় সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত সংসদীয় কমিটির বৈঠকে এই পরামর্শ দেওয়া হয়। বৈঠক শেষে সংসদ সচিবালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

বৈঠকে ২৫ মার্চকে আন্তর্জাতিক গণহত্যা দিবস হিসেবে স্বীকৃতি আদায়ের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সুপারিশ করা হয়। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সদস্যদের নিয়ে রোহিঙ্গা ক্যাম্প কুতুপালং এবং ভাসানচর পরিদর্শনের জন্য বৈঠকে প্রস্তাব করা হয়।

কমিটির সভাপতি এ কে আব্দুল মোমেনের সভাপতিত্বে বৈঠকে কমিটির সদস্য ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ, শাহরিয়ার আলম, নাহিম রাজ্জাক, নিজাম উদ্দিন জলিল, নুরুল ইসলাম নাহিদ, হাবিবুর রহমান, সাইমুম সারওয়ার, জারা জাবীন মাহবুব অংশ নেন।

 

;

ঢাকাসহ ৮ জেলায় ৬০ কিমি বেগে ঝড়ের শঙ্কা



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

ঢাকাসহ দেশের আট জেলার ওপর দিয়ে ৬০ কিলোমিটার বেগে ঝড়ের আশঙ্কা করছে আবহাওয়া অফিস। সেইসঙ্গে বজ্রসহ বৃষ্টি হওয়ার সম্ভবনা রয়েছে বলা হচ্ছে।

শুক্রবার (২৯ মার্চ) সকাল ৯টা পর্যন্ত দেশের অভ্যন্তরীণ নদীবন্দরগুলোর জন্য দেওয়া এক পূর্বাভাসে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।

আবহাওয়াবিদ মো. শাহীনুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, খুলনা, বরিশাল, পটুয়াখালী, নোয়াখালী, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম, ঢাকা এবং সিলেট জেলার ওপর দিয়ে পশ্চিম অথবা উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে ঘণ্টায় ৪৫ থেকে ৬০ কিলোমিটার বেগে অস্থায়ীভাবে দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। এ সময় বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। তাই এসব এলাকার নদীবন্দরগুলোকে ১ নম্বর সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।

এদিকে, আবহাওয়া অফিসের অপর এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, পশ্চিমা লঘুচাপের বর্ধিতাংশ পশ্চিমবঙ্গ ও তার কাছাকাছি এলাকায় অবস্থান করছে। মৌসুমের স্বাভাবিক লঘুচাপ দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে।

এ অবস্থায় শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ঢাকা, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের দুয়েক জায়গায় অস্থায়ী দমকা বা ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি বা বজ্রবৃষ্টি হতে পারে।

;

ইসলামি সংগীত শিল্পী সালমানের মৃত্যুতে শোকের ছায়া



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ময়মনসিংহ
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

ময়মনসিংহের ত্রিশালে বাসের ধাক্কায় নিহত তিনজনের একজন সালমান আজাদী। তিনি জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গীত বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী এবং ইসলামি সঙ্গীত শিল্পী ও প্রশিক্ষক। তার মৃত্যুতে ক্যাম্পাসের শিক্ষক-শিক্ষার্থী এবং স্বজন-শুভাকাঙ্ক্ষীদের মাঝে নেমে এসেছে শোকের ছায়া।

বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) দুপুর সোয়া ১২টার দিকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান সালমান আজাদী।

তিনি বগুড়া জেলার শেরপুর উপজেলার হাপানিয়া এলাকার মৃত কোরবান আলীর ছেলে। নিহত সালমান স্ত্রী ও এক শিশুপুত্রকে নিয়ে নগরীর মাসকান্দা এলাকায় থাকতেন।

জানা গেছে, ইসলামি সংঙ্গীত শিল্পী হিসেবে ময়মনসিংহে বেশ জনপ্রিয় ছিলেন সালমান আজাদী। ইসলামি সঙ্গীতের প্রসারে নিজেই প্রতিষ্ঠা করেছেন সালমান ইসলামি সঙ্গীত একাডেমি। প্রায় দুই বছর ধরে এই প্রতিষ্ঠানে শিশুদের ইসলামি গান শেখাতেন। এছাড়াও ত্রিশালে কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের ইসলামি সঙ্গীতের প্রশিক্ষক ছিলেন তিনি।

উদীয়মান এ ইসলাম সঙ্গীত শিল্পীর মৃত্যুতে শোকাভিভূত পরিবার, আত্নীয়-স্বজন, ক্যাম্পাসের সহপাঠী-শিক্ষার্থী, ইসলামি সংস্কৃতি প্রেমিসহ শুভাকাঙ্ক্ষীরা। শতশত মানুষের ফেসবুক স্ট্যাটাসে যেন শোক বইয়ে পরিণত হয়েছে সানমানের ফেসবুক টাইমলাইন।

আব্দুর রহিম ভূঁইয়া নামে একজন লিখেছেন, কিছু মৃত্যুর সংবাদ মানুষকে ভীষণ বেদনা দেয়, ভীষণ কষ্ট দেয়। আর এই মৃত্যু যদি অকালে হয় বা আকস্মিক হয় তার শোক কাটিয়ে উঠা মোটেও সহজ না। সালমান আজাদী ইসলামিক শিল্প একাডেমির শিক্ষক ও স্বপ্নদ্রষ্টা ছিলেন। তিনি বাচ্চাদের নিয়ে অনেক স্বপ্ন দেখতেন। বাচ্চাদের সুস্থ ধারার ইসলামিক সাংস্কৃতিক চর্চার ব্যাপারে তার অনেক পরিকল্পনা ছিল।

হানজালা রমজান মুন্না নামে আরেকজন লিখেছেন, প্রিয় হাসিমাখা মুখ ও সুন্দর করে কথা উপস্থাপন ছিল যার নৈমিত্তিক অভ্যাস। ইসলামি সংস্কৃতি ছড়িয়ে দেয়ায় পেছনে ময়মনসিংহ শহরে যাদের অবদান, তাদেরই একজন ছিলেন। মনের মধ্যে ছিল ইসলামের জন্য তীব্র ভালবাসা। ভাইয়ের ভুল ত্রুটিগুলো ক্ষমা করে দিয়ে জান্নাতের উঁচু মাক্বাম দান করুন।

স্বামীর শোকে বাকরুদ্ধ স্ত্রী খাদিজা খাতুন জানান, সালমান নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গীত বিভাগে মাস্টার্সে অধ্যয়নরত ছিলেন। বৃহস্পতিবার ক্লাস করতেই ক্যাম্পাসের উদ্দেশ্যে ত্রিশাল যাচ্ছিলেন তিনি।

এদিকে সালমান আজাদীর অকাল মৃত্যুতে গভীর শোক জানিয়েছে নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় পরিবার। এক শোকবার্তায় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. সৌমিত্র শেখর বলেন, অত্যন্ত দুঃখের সঙ্গে জানাচ্ছি, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সংগীত বিভাগের ২০১৭-'১৮ শিক্ষাবর্ষের স্নাতকের শিক্ষার্থী এবং বর্তমানে স্নাতকোত্তরে ২০২১-'২২ সেশনে অধ্যয়নরত মো. সালমান আজাদী (২৫) বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে দশটায় ত্রিশালে এক মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় মারাত্মকভাবে আহত হয়ে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেছে। তাঁর এই অকাল মৃত্যুতে বিশ্ববিদ্যালয়-পরিবারের পক্ষে আমি গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করছি। সেইসঙ্গে সালমানের বিদেহী আত্মার চিরশান্তির জন্য প্রার্থনাসহ শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানাচ্ছি।

কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাঈন উদ্দিন জানান, বিনা ময়নাতদন্তের জন্য আবেদনের প্রেক্ষিতে মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

এর আগে, ত্রিশালে বাসের ধাক্কায় সিএনজিচালিত অটোরিকশার তিন যাত্রী নিহত হয়। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও ৪ জন। বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে উপজেলার ত্রিশাল বাজারের সাইফুল কমিশনারের বাসার সামনে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

নিহত অন্য দুইজন হলেন, উপজেলার বৈলর ইউনিয়নের রুদ্রগ্রামের এনামুল হকের মেয়ে রুবাইরা তাজনিম (২) ও চিকনা মনোহর এলাকার মৃত আব্দুস সামাদের ছেলে শরিফুল ইসলাম (৩৪)।

;

মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম বীরাঙ্গনাদের সম্মাননা দাবি



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, নরসিংদী
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধ বাংলাদেশের বহু যুবক ও ছাত্র জনতার আত্মহুতির অবদান। এই যুদ্ধে নারীদের অবদানও কোন অংশে কম নয়। এ যুদ্ধে অসংখ্য নারী সরাসরি অংশগ্রহণের পাশাপাশি ইজ্জতও দিতে হয়েছে। তাদের মধ্যে একজন নরসিংদীর পলাশ উপজেলার বেদনা দত্ত। বেদনা দত্তের মতো বীরাঙ্গনাদের স্মরণীয় করে রাখতে বীরাঙ্গনা স্মৃতিসৌধ বা রাস্তা ও প্রতিষ্ঠানের নামকরণের দাবি মুক্তিযোদ্ধাসহ স্থানীয়দের।

নরসিংদীর পলাশ উপজেলার বড়ি-বাড়ির বেদনা দত্ত স্বাধীনতা সংগ্রামের পূর্বেই স্বামী মারা যাওয়ায় অবুঝ তিন শিশুকে নিয়ে অনেক দুঃখ কষ্টে দিন পার করছিলেন। ঠিক সেই সময়ে মুক্তিযোদ্ধাদের রান্না করে খাওয়ানোসহ তাদের নানাভাবে সহয়তা করতেন বেদনা দত্ত। আর এমন খবর পেয়ে রাজাকার সদস্যরা বেদনাকে জোরপূর্বক ধরে নিয়ে পাকিস্তানি হায়েনাদের হাতে তুলে দেয়। বাড়ির পাশে রেল ব্রিজের নিচে পাকিস্তানিদের ক্যাম্পে ৪ দিনে নির্যাতন শেষে মৃত ভেবে পাশের জঙ্গলে ফেলে দেয় বেদনাকে।

পরে সেখান থেকে দুইদিন পর প্রাণ ফিরে পেলেও ইজ্জত আর সন্তানদের জীবন রক্ষায় এলাকা ছেড়ে নিজেকে আড়াল করে রাখেন তিনি। দীর্ঘদিন পর বাড়ি ফিরে আসলেও জীবন চলে অনাহারে অর্ধাহারে। এভাবেই পার করতে হয়েছে জীবনের প্রায় অর্ধশতাব্দি। অবশেষে এই ঘটনা নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়। সংবাদ প্রকাশের পর প্রশাসনের নজরে আসলে তার কাগজপত্র যাচাই বাছাই শেষে তাকে বীরাঙ্গনা হিসেবে নথিভুক্ত করেন এবং ভাতার আওতায় আনেন। সেই সাথে মুজিব বর্ষের উপহার হিসেবে তার জন্য তৈরি করা হয় বীর নিবাস। এখন এলাকাবাসীর দাবি বেদনা দত্তের অবর্তমানে পরবর্তী প্রজন্মের জন্য স্মৃতিসৌধ নির্মাণের। অথবা তার নামে স্থানীয় কোন রাস্তা বা প্রতিষ্ঠানের নামকরণের দাবি মুক্তিযুদ্ধাসহ স্থানীয় বাসিন্দাদের।

স্থানীয় জিনারদী ইউনিয়ন মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা সুলতান উদ্দিন পাঠান বলেন, আমরা জানতামই না আমাদের এলাকায় একজন বীরাঙ্গনা রয়েছে। সরকার যখন বেদনা দত্তকে একটি বীর নিবাস তৈরি করে দেয় তখনই জানতে পারি এই এলাকায় একজন বীরাঙ্গনা রয়েছেন। স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় নির্মম নির্যাতনের শিকার এই নারী হয়তো একদিন থাকবেনা। কিন্তু তাকে যেনো পরবর্তী প্রজন্ম মনে রাখে এবং স্মরণ করে সেজন্য তার নামে একটি সড়কের নামকরণ বা স্মৃতিসৌধ নির্মাণের দাবি জানাই।

নরসিংদী জেলা প্রশাসক ড. বদিউল আলম জানান, স্বাধীনতা যুদ্ধে নারী মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে বেদনা দত্তের মতো আরও যারা বীরাঙ্গনা রয়েছেন তাদের অসামান্য অবদান রয়েছে। নরসিংদীর নারী মুক্তিযোদ্ধাদের স্মৃতি রক্ষার্থে কয়েকটি আবেদন জমা পড়েছে যা প্রক্রিয়া দিন রয়েছে। অচিরেই এ বিষয়ে কাজ শুরু হবে বলে জানান তিনি।

;