হাসপাতালে লাশ রেখে পালাল স্বামী
লক্ষ্মীপুর: লক্ষ্মীপুরে যৌতুকের টাকা না পাওয়ায় কামরুন নাহার নিশি (২২) নামে এক গৃহবধূকে গলায় রশি পেঁচিয়ে হত্যা করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
এ ঘটনার পর হাসপাতালে লাশ রেখেই স্বামী মেহেরাব হোসেন শুভ ও শ্বশুরবাড়ির লোকজন পালিয়ে যায়। ময়নাতদন্ত শেষে সোমবার (১৮ জুন) সকালে সদর উপজেলার দক্ষিণ হামছাদি ইউনিয়নের হেতিমপুর গ্রামে নিহতের পরিবারের কাছে লাশটি হস্তান্তর করা হয়।
এর আগে গত শনিবার দুপুরে (ঈদুল ফিতরের দিন) অসুস্থতার কথা বলে গৃহবধূকে লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালে নিয়ে যায় শ্বশুর বাড়ির লোকজন। পরে তাকে ঢাকা মেডিকেল হাসপাতালে নেওয়া হলে ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করে। তার গলায় রশি পেঁচানোর কালো দাগ রয়েছে।
নিহত গৃহবধূ একই ইউনিয়নের হেতিমপুর গ্রামের প্রবাসী আবুল হাসনাত কাইয়ুমের মেয়ে। অভিযুক্ত স্বামী মেহেরাব হোসেন শুভ লক্ষ্মীপুর পৌর শহরের বিসিক শিল্পনগরী এলাকার নাজমা ম্যানশনের তোফায়েল আহমেদের ছেলে।
নিহতের পরিবার জানায়, ২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে প্রেমের সম্পর্কের ভিত্তিতে নিশি ও শুভর বিয়ে হয়। এক বছরের একটি ছেলে সন্তান রয়েছে তাদের সংসারে। বিয়ের পর থেকেই স্বামী ও শ্বশুর বাড়ির লোকজন ৫ লাখ টাকা যৌতুকের জন্য বিভিন্ন ভাবে নির্যাতন করে আসছে। ঘটনার সময় ঈদের দিনেও গৃহবধূকে বাপের বাড়ি থেকে ১ লাখ টাকা এনে দিতে চাপ দেয় শুভ। এতে টাকা দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে স্বামী ও শশুর বাড়ির লোকজন। এক পর্যায়ে গৃহবধূর গলায় রশি পেঁচিয়ে হত্যা করে তারা।
পরে আত্মহত্যার নাটক সাজিয়ে লাশ প্রথমে সদর হাসপাতালে পরে ঢাকা মেডিকেল হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করলে স্বামী, শ্বশুর ও শাশুড়ি হাতপাতালে গৃহবধূর লাশ রেখে পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় লক্ষ্মীপুর থানায় মামলার প্রস্তুতি চলছে বলে জানায় গৃহবধূর পরিবারের লোকজন।
নিহতের মা শিউলি বেগম অভিযোগ করে বলেন, ‘যৌতুকের ৫ লাখ টাকা না দেওয়ায় নিশিকে হত্যার পর গলায় ফাঁসি দিয়ে আত্মহত্যা করেছে বলে নাটক সাজানো হয়েছে। আমরা যেন মেয়ের লাশ না পাই সেজন্য তারা হাসপাতালে নামও পরিবর্তন করে দিয়েছে। আমার মেয়ে হত্যার বিচার দাবি করছি।’
এ ঘটনায় স্বামী শুভর বাড়িতে গিয়েও কারো বক্তব্য জানা যায়নি। বাড়িঘরে তালা দিয়ে তারা পালিয়ে গেছেন।
লক্ষ্মীপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা লোকমান হোসেন জানান, ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা হয়েছে। হত্যা না আত্মহত্যা তা সঠিক ভাবে বলা যাচ্ছে না। লিখিত অভিযোগ ও ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন হাতে আসলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।