বিটিআরসি মোবাইল টাওয়ারের রেডিয়েশন পরিমাপ করবে সেপ্টেম্বরে
ঢাকা: মোবাইল ফোন কোম্পানির টাওয়ারের রেডিয়েশন (বিকিরণ) পরিমাপ শুরু হচ্ছে আগামী সেপ্টেম্বরে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জনস্বাস্থ্যের জন্য টাওয়ারের রেডিয়েশন ক্ষতিকর। এ বিষয়ে আদালতও টাওয়ারের রেডিয়েশন কতটা ক্ষতিকর তা জানাতে বলেছিল বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনকে (বিটিআরসি)।
বিটিআরসির নির্ভরযোগ্য সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। সূত্র জানায়, আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী মোবাইল ফোন কোম্পানির টাওয়ারসমূহ থেকে কি পরিমাণ বিকিরণ (রেডিয়েশন) নির্গত হয় তার ঝুঁকি মূল্যায়ন কাজ শুরু করতে যাচ্ছে বিটিআরসি। টাওয়ার থেকে কি পরিমাণ রেডিয়েশন নির্গত হয় এবং তার ঝুঁকি কতটুকু তা পরিমাপের কাজ শুরু হবে আগামী সেপ্টেম্বরে। এজন্য প্রয়োজনীয় সকল প্রস্তুতি প্রায় শেষ করেছে টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রক সংস্থা, বিটিআরসি সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
নিয়ন্ত্রক সংস্থার এক কর্মকর্তা নাম না প্রকাশের শর্তে বার্তা২৪.কমকে বলেন, প্রায় তিন কোটি টাকা ব্যয়ে অত্যাধুনিক যন্ত্রাংশ ও ভেহিকেল কেনা হয়েছে। ভারতীয় কোম্পানি ফাস্টটেক টেলিকমিউনিকেশন প্রাইভেট লিমিটেড এসব যন্ত্রাংশ কিনছে। গেল মে মাসে বিটিআরসি’র সঙ্গে ফাস্টটেকের এ সংক্রান্ত চুক্তি হয়। চুক্তির আগে ফাস্টটেককে ২৯.৩১ লাখ টাকা পারফরমেন্স বন্ড জমা দিতে হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা বলেন, টাওয়ারের রেডিয়েশন পরিমাপক উন্নত বিশ্বে রয়েছে। বাংলাদেশে এটি না থাকায় এ বিষয়ে মোবাইল ফোন কোম্পানির বিরুদ্ধে তথ্য প্রমাণ ছাড়া কোনো ব্যবস্থা নেওয়া যাচেছ না।
আদালত এ সংক্রান্ত চার বছর আগের প্রতিবেদন বাস্তবায়ন না হওয়ায় বিস্ময় প্রকাশ করেছিল এবং টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিটিআরসি এ বিষয়ে কি পদক্ষেপ নিয়েছে তাও জানতে চায় চেয়েছিল।
মোবাইল ফোনের টাওয়ার থেকে বিকিরণ নিয়ে ২০১২ সালে জনস্বার্থে এই রিট আবেদন করে পরিবেশবাদী সংগঠন হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশ (এইচআরপিবি)। ওই রিট পিটিশনের প্রেক্ষাপটে হাইকোর্ট গত বছরের মার্চে বিটিআরসিকে মোবাইল টাওয়ার থেকে নি:সৃত বিকিরনের (রেডিশেন) মাত্রা পরিমাপ করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলেছিল।
ওই সময় আনবিক শক্তি কমিশন এক প্রতিবেদনে জানিয়েছিল, উপযুক্ত যন্ত্রপাতি না থাকায় তারা বিকিরণের সঠিক মাত্রা পরিমাপ করতে পারছেন না।
এই রায়ের পর স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় একটি বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠন করে। কমিটি ঢাকার কিছু টাওয়ার থেকে জনস্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর রেডিয়েশন বিকিরণের উপস্থিতি পায়। রেডিয়েশনের মাত্রা পরিমাপক বিটিআরসিকে টেলিযোগাযোগ টাওয়ার সংক্রান্ত ভবিষ্যতের নিয়ন্ত্রক নির্দেশিকা তৈরিতে সহায়তা করবে। এরই মধ্যে বিটিআরসি টাওয়ার শেয়ারিং গাইডলাইন সংক্রান্ত একটি নীতিমালার খসড়া তৈরি করেছে।
ওই সময় আদালত রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানের কয়েকটি জায়গায় মোবাইল টাওয়ার পরীক্ষা করে রেডিয়েশনের মাত্রা জানাতে বলেছিল। এছাড়া স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কেও রেডিয়েশন বিকিরণের স্বাস্থ্যঝূঁকি নিয়ে একটি রিপোর্ট জমা দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল।