ভাই লাশ হয়ে ফিরছে, টাকা দিয়ে কী হবে?



কান্ট্রি ডেস্ক, বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

নড়াইল: ‘আমার ছেলে এবার দেশে ফিরে এসে বিয়ে করবে বলে আমাদের মেয়ে দেখতে এবং বাড়িঘর মেরামত করতে বলেছিল। কিন্তু তার সে স্বপ্ন আর পূরণ হল না।’

ছেলের মৃত্যুর খবর শুনে নিহত মনিরুলের মা আমেনা বেগম কান্না জড়িত কণ্ঠে এসব কথা বলে বিলাপ করছিলেন। গত ৪ জুলাই সৌদি আরবের জেদ্দায় সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত দুইজনের বাড়ি নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলায়।

নিহতরা হলেন- মনিরুল মোল্যা (২৮) ও সৈয়দ হোসেন আলী (৩২)। তাদের দুই পরিবারে এখনো চলছে শোকের মাতম। আত্মীয়-স্বজন এবং পাড়া প্রতিবেশীদের আহাজারিতে এলাকার বাতাস ভারী হয়ে উঠেছে। স্বজনরা এখন অপেক্ষা করছে প্রিয়জনের লাশের জন্য।

জানা গেছে, লোহাগড়া উপজেলার আড়পাড়া গ্রামের মৃত মহসিন মোল্যার ছেলে মনিরুল সাত ভাই-বোনের মধ্যে সবার ছোট। তিনি জেলার সদর উপজেলার শাহাবাদ মাদরাসা থেকে কামিল পাশ করে এক বছর আগে সৌদি আরবে যান।

মনিরুলের বোন জেসমিন ও নাইচ বেগম বিলাপ করতে করতে জানান, ‘আমার ভাই বিদেশে গিয়েছিল অনেক টাকা আয় করতে। কিন্তু সে লাশ হয়ে ফিরছে। এখন আর টাকা দিয়ে কি হবে? দ্রুত লাশ দেশে ফিরিয়ে আনার দাবি জানাচ্ছি।’

অপরদিকে এ সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত উপজেলার লাহুড়িয়া গ্রামের সৈয়দ আশরাফ আলীর ছেলে হোসেন আলীর বাড়িতেও চলছে কান্নার রোল।

নিহতের স্ত্রী রাকিয়া বেগম তার দুই শিশু ছেলে ফাহাদ ও হামজাকে জড়িয়ে ধরে বিলাপ করে বলছে, ‘তোর বাবা আর কোনো দিন আমাদের মাঝে ফিরে আসবে না। তোদের পৃথিবীতে বাবা বলে ডাকার আর কেউ থাকল না। তোরা এতিম হয়ে গেলি। আমি ওদের কী করে মানুষ করব?’

নিহতের বড় ভাই সৈয়দ নাসির আলী জানান, হোসেন প্রথমে পাঁচ বছর কুয়েতে ছিল। এরপর দেশে ফিরে গত ৮ থেকে ৯ মাস আগে সৌদি আরবে চলে যায়। তার মৃত্যুর খবরে বৃদ্ধ বাবা-মা বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েছেন।

এদিকে নিহত দুই পরিবারের সদস্যরা মনিরুল ও হোসেনের লাশ দ্রুত দেশে ফিরে আনার দাবি জানিয়েছেন।

প্রসঙ্গত, গত ৪ জুলাই সৌদি আরবের জেদ্দায় কিং আব্দুল আজিজ সড়কের সামারী কোর্ট ও রেড সি মলের মধ্যবর্তী এলাকায় মাইক্রোবাস উল্টে হতাহতের ঘটনা ঘটে।

 

   

‘স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের হাতিয়ার দক্ষতা উন্নয়ন ও কর্মসংস্থান সৃষ্টি’



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে দক্ষতা উন্নয়ন ও সবাের জন্য কর্মসংস্থান সৃষ্টিকে হাতিয়ার বিবেচনা করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার এ লক্ষ্যে বিস্তৃত কর্মসূচি গ্রহণ করেছে বলে মন্তব্য করেছেন শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী।

বুধবার (২৪ এপ্রিল) সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার উদ্যোগে আয়োজিত ‘গ্লোবাল স্কিলস ফোরাম’ এর আলোচনায় শিক্ষামন্ত্রী এ মন্তব্য করেন।

শিক্ষামন্ত্রী বলেন, বর্তমান সরকারের সব উন্নয়ন নীতির মূলে রয়েছে সবার জন্য ন্যায়সঙ্গত কাজের সুযোগ সৃষ্টির প্রয়াস। সরকার সাধারণ শিক্ষার গুণগত উৎকর্ষের পাশাপাশি কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষার প্রসারে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। এ লক্ষ্যে সাধারণ শিক্ষার পাঠ্যক্রমে জীবন ও জীবিকা সংক্রান্ত পাঠ এবং প্রয়োজনীয় জীবন অভিজ্ঞতার পাঠ সন্নিবেশিত হয়েছে। তাছাড়া কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষার অবকাঠামোগত উন্নয়ন ও মান উন্নয়নে সরকার বিনিয়োগ অব্যাহত রেখেছে।

শিক্ষামন্ত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারের ধারাবাহিক বিনিয়োগের ফলে স্বাক্ষরতার হার ৭৫ শতাংশে উন্নীত হয়েছে বলে জানান। সাধারণ শিক্ষার ন্যায় কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষায়ও মেয়েদের অংশগ্রহণ উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে বলে তিনি জানান। বর্তমানে স্কুল সার্টিফিকেট পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে মেয়েদের হার ছেলেদের অংশগ্রহণের হারকে ছাড়িয়ে গেছে বলে মন্ত্রী জানান।

আলোচনায় অংশ নিয়ে আন্তর্জাতিক শ্রমসংস্থার মহাপরিচালক গিলবার্ট হোংবো সরকারের সাম্প্রতিক পদক্ষেপসমূহের ফলে দক্ষতা উন্নয়নে গুণগত অগ্রগতি সাধিত হয়েছে বলে জানান। মহাপরিচালক হোংবো নারী শিক্ষার প্রসার ও মান বৃদ্ধিতে বাংলাদেশ বিশ্ববাসীর কাছে উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত বলে মন্তব্য করেন।

এক প্রশ্নের উত্তরে শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী বলেন সরকার বৈদেশিক বিনিয়োগ আকর্ষণ ও দেশজ বিনিয়োগ বৃদ্ধির মাধ্যমে একদিকে যেমন কর্মসংস্থানমুখী বিভিন্ন অর্থনৈতিক খাতের উন্নয়নে কাজ করছে তেমনি মানবসম্পদ উন্নয়নের জন্য দক্ষতা উন্নয়ন ও নতুন নতুন দক্ষতা তৈরিতে প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। এ লক্ষ্যে সরকার শিক্ষা ব্যবস্থাকে অর্থনৈতিক সেক্টরগুলোর চাহিদা অনুযায়ী ঢেলে সাজানোর লক্ষ্যে কাজ করছে।

গ্লোবাল স্কিলস ফোরামের অংশ হিসেবে আয়োজিত এ প্যানেল আলোচনায় আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও কানাডা সরকারের অর্থায়নে বাংলাদেশের দক্ষতা উন্নয়ন ব্যবস্থার পরিবর্তনে বাস্তবায়িত প্রকল্পের সাফল্য তুলে ধরা হয়। আলোচনায় বাংলাদেশ এমপ্লয়ারস ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক ফারুক আহমেদ, বাংলাদেশ ফ্রি ট্রেড ইউনিয়ন কংগ্রেসের সাকি রিজওয়ানা, বাংলাদেশে ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূত চার্লস হোয়াইটলি ছাড়াও জেনেভায় ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও কানাডার প্রতিনিধিরা অংশগ্রহণ করেন। বক্তারা এ প্রকল্পের সাফল্যের ক্ষেত্রে সরকারের গুরুত্বপূর্ণ সহযোগিতার জন্য সরকারকে সাধুবাদ জানান এবং এ প্রকল্প অন্যান্য দেশের দক্ষতা উন্নয়ন প্রচেষ্টার ক্ষেত্রে দৃষ্টান্ত হতে পারে বলে মন্তব্য করেন।

;

মেয়েকে ধর্ষণের দায়ে পিতার মৃত্যুদণ্ড



স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
মেয়েকে ধর্ষণের দায়ে পিতার মৃত্যুদণ্ড

মেয়েকে ধর্ষণের দায়ে পিতার মৃত্যুদণ্ড

  • Font increase
  • Font Decrease

১৪ বছরের কিশোরী মেয়েকে ধর্ষণের অভিযোগে করা মামলায় পিতাকে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন ঢাকার একটি নারী ও শিশু ট্রাইব্যুনাল।

বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনাল-৪ এর বিচারক শাহরিয়ার কবির এ রায় ঘোষণা করেন। রায়ে কারাদণ্ডের পাশাপাশি তাকে এক লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।

রায় ঘোষণার আগে আসামিকে কারাগার থেকে আদালতে হাজির করা হয়। রায় ঘোষণার পর আসামিকে ফের কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, ভুক্তভোগী কিশোরী বাবার সঙ্গে রাজধানীর কেরানীগঞ্জ এলাকায় বসবাস করত। কিশোরীর মা বিদেশে থাকতেন।

২০২২ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি বাসায় ওই কিশোরীকে ধর্ষণ করে তার বাবা। এই ঘটনায় ওই কিশোরী বাদী হয়ে রাজধানীর দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানায় বাবার বিরুদ্ধে মামলা করেন।

পরবর্তীতে আসামিকে গ্রেফতার করে পুলিশ। গ্রেফতারের পর আসামি মেয়েকে ধর্ষণের কথা স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দেন।

রায় ঘোষণার আগে মামলায় ছয় জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ করে আদালত।

;

সাতক্ষীরায় পিলারে মোটরসাইকেলের ধাক্কা, চালক নিহত



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, সাতক্ষীরা
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

সাতক্ষীরায় বাইপাস সড়কের ধারে পিলারের সঙ্গে ধাক্কা লেগে রাজমোহন দাস (৩৫) এক মোটরসাইকেল চালক নিহত হয়েছেন।

বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) সকাল দশটার দিকে সাতক্ষীরা বাইপাস সড়কে এই ঘটনা ঘটে।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সাতক্ষীরা সদর থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) নজরুল ইসলাম। 

নিহত রাজমোহন সাতক্ষীরার পাটকেলঘাটা থানার রাজেন্দ্রপুর গ্রামের প্রভাত কুমার দাসের ছেলে।

পুলিশ জানায়, রাজমোহন দাস মোটরসাইকেলে সাতক্ষীরা থেকে মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের দিকে যাচ্ছিলেন। পথিমধ্যে বেলা দশটার দিকে মোটরসাইকেলটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সাতক্ষীরা বাইপাস সড়কের ধারে থাকা একটি পিলারের সাথে সজোরে ধাক্কা লাগে। এতে মাথায় গুরুতর আঘাত পেয়ে রাজমোহন দাস ঘটনাস্থলে নিহত হন।

 

;

একটা রিকশার আক্ষেপে ২৫ বছর পার



ছাইদুর রহমান নাঈম, উপজেলা করেসপন্ডেন্ট, বার্তা ২৪ কম, কটিয়াদী ( কিশোরগঞ্জ)
একটা রিকশার আক্ষেপে ২৫ বছর পার

একটা রিকশার আক্ষেপে ২৫ বছর পার

  • Font increase
  • Font Decrease

তীব্র দাবদাহ ও কাঠফাটা রোদে রাস্তার মোড়ে মাথায় হাত দিয়ে বসা এক রিকশাচালক। টপটপ করে ঘাম ঝরছে। বারবার মাথার ঘাম গামছা দিয়ে মোছার চেষ্টা করছেন। গরমের কারণে রাস্তায় তেমন লোকজন নেই। রিকশাচালক গোলাপ মিয়ার মাথায় চিন্তার ভাঁজ। একদিকে রিকশার ভাড়ার চাপ, আরেকদিকে সংসার চালানো।

দিনটা পার হলেই রিকশার ভাড়া দিতে হবে, তিনশো টাকা৷ সকালে বাড়ি থেকে বের হয়ে দুপুর একটা পর্যন্ত তার উপার্জন মোট আশি টাকা। রাতে রিকশার মহাজনকে যেভাবেই হোক টাকা দিতেই হবে। উপার্জন হোক বা না হোক এ-টাকা তাকে দিতেই হবে। এ প্রতিবেদকের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে কণ্ঠ ভারী হয়ে আসে তার।

কিশোরগঞ্জের কটিয়াদী উপজেলার পৌরবাজারে দেখা মিলেছে এমনই এক রিকশারচালকের৷ তার নাম গোলাপ মিয়া (৪০)। পার্শ্ববর্তী নরসিংদীর মনোহরদী উপজেলার কৃষ্ণপুর ইউপির পূর্ব বীরগাঁও গ্রামের মাঝিবাড়ির বাসিন্দা তিনি।

এলাকাবাসী ও রিকশাচালকের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, স্ত্রী দুই মেয়ে ও দুই ছেলেকে নিয়ে ছয় সদস্যের সংসার গোলাপ মিয়ার। মেয়ে এবার এইচএসসি পরীক্ষার্থী। বাকিরাও স্কুলে লেখাপড়া করছে। ছেলেমেয়েরা সবাই মেধাবী। লেখাপড়ায় তারা আগ্রহী। তীব্র অভাব অনটনে মানবেতর জীবনযাপন করছেন।

এলাকাবাসী জানান, গোলাপ খুবই সহজ সরল ও পরিশ্রমী মানুষ। নিয়মিত নামাজ পড়েন। নিজস্ব থাকার নিজস্ব কোন জায়গা নাই। ছেলেমেয়েরা পড়াশোনায় ভালো। অভাবের কারণে খাবার জোটানো কঠিন। লেখাপড়ার খরচ তাদের জন্য যুদ্ধ করার মতো কষ্ট হচ্ছে। তার নিজস্ব একটা গাড়ি হলে পরিবার নিয়ে উপার্জন করে ভালোভাবে চলতে পারতেন বলে ধারণা তাদের।

রিকশাচালক গোলাপ মিয়া বার্তা২৪.কমকে বলেন, সংসার নিয়ে প্রতিনিয়ত যুদ্ধ করছি। ভাত জোটানো যেখানে দায় সেখানে লেখাপড়া কীভাবে করাব বলেন? তবুও সন্তানের মুখের দিকে তাকালে মনডা মানে না আর, তাদের আবদার রাখতে পারি না।

তিনি আরও জানান, একটা আনলে আরেকটা বাকি থাকে। আমার নিজস্ব একটা প্যাডেলের রিকশা ছিল। ২৫ বছর আগে চিকিৎসার খরচ আর তীব্র অভাবে বিক্রি করেছিলাম। পরে আর কেনার সাধ্য হয়নি। একটি অটোরিকশা হলে সংসারটা চালাতে পারতাম। বাড়িটাও ঝুপড়ি ঘর, বৃষ্টি আসলেই ভিজতে হয়; এভাবেই চলছি।

;