আঞ্চলিক অফিসে মিলবে হারিয়ে যাওয়া জাতীয় পরিচয়পত্র
১০টি আঞ্চলিক আফিসে স্থাপন করা হয়েছে সার্ভার স্টেশন
জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) নিয়ে ভোগান্তি নতুন কিছু নয়। বিশেষ করে এনআইডি হারিয়ে গেলে রাজধানীতে বসবাসকারীদের চেয়ে কয়েকগুণ ভোগান্তি পোহাতে হয় বাইরের জেলাগুলোর নাগরিকদের। বর্তমানে কার্ড হারিয়ে গেলে শুধু ঢাকায় সেই কার্ড প্রিন্ট দেওয়া হয়। ফলে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে হারানো জাতীয় পরিচয়পত্র উত্তোলন করতে ঢাকায় আসতে হয় সাধারণ নাগরিকদের। তাই ভোগান্তি কমাতে পহেলা আগস্ট থেকে দেশের ১০ টি আঞ্চলিক আফিসে হারানো কার্ড মুদ্রণ ও বিতরণের উদ্যোগ নিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
এ লক্ষ্যে আঞ্চলিক অফিস গুলোতে সার্ভার স্টেশন স্থাপন করেছে সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানটি। এতে আঞ্চলিক অফিসগুলো থেকে হারিয়ে যাওয়া কার্ড নিতে পারবেন নাগরিকরা।
ইসি কর্মকর্তারা জানান, যাদের জাতীয় পরিচয়পত্র হারিয়েছে বা নষ্ট হয়েছে তাদের এই পরিচয়পত্র তুলতে ঢাকায় আসতে হবে না। হারানো বা নষ্ট জাতীয় পরিচয়পত্র ১০টি আঞ্চলিক অফিসে প্রিন্ট করার ব্যবস্থা করা হবে। সেগুলো হল, ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাজশাহী, খুলনা, সিলেট, বরিশাল, রংপুর, ময়মনসিংহ, কুমিল্লা ও ফরিদপুরে ইসির আঞ্চলিক কার্যালয়ে।
এ বিষয়ে জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগের পরিচালক ও ইসির যুগ্ম সচিব আব্দুল বাতেন বলেন, আঞ্চলিক আফিসে হাড়ানো কার্ড মুদ্রণ ও বিতরণের জন্য আমরা সকল প্রস্তুতি শেষ করেছি। আগামী ১ আগস্ট থেকে অনুষ্ঠানিক ভাবে এ কার্যক্রম শুরু হবে।
ইসি সূত্র জানায়, বর্তমানে শুধু ঢাকায় হাড়ানো কার্ড প্রিন্ট দেওয়া হয়। ফলে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে হারানো জাতীয় পরিচয়পত্র উত্তলন করতে ঢাকায় আসতে হয় সাধারণ নাগরিকদের। নতুন উদ্যোগের ফলে আঞ্চলিক আফিসে ইসির সেবা পাওয়া যাবে। ঢাকায় জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগের উপর থেকে চাপ কমাতে হারানো জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) আঞ্চলিক কার্যালয়ে ছাপানো হবে। সেক্ষেত্রে আঞ্চলিক সার্ভার স্টেশনগুলোর সঙ্গে ঢাকার হেড অফিস সরাসরি সংযোগ স্থাপন করা হবে।
জাতীয় পরিচয়পত্র হারিয়ে গেলে বা নষ্ট হলে তাতে যাচাইয়ের দরকার পড়ে না। থানায় সাধারণ ডায়রির (জিডি) অনুলিপির সঙ্গে নির্ধারিত ফি জমা দিলেই বর্তমানে কেন্দ্রীয় অফিস থেকে কার্ড ছাপিয়ে দেওয়া হয়। আঞ্চলিক আফিসে কার্ড দেওয়ার উদ্যোগ সফল হলে ইসির কর্মকাণ্ড আরো প্রসারিত হবে। কাজটির জন্য মাঠ পর্যায়ের প্রত্যেকটি অফিসের জন্য এক লাখ ২০ হাজার টাকা বরাদ্দও দিয়েছে কমিশন। এসব অর্থ দিয়ে হারানো কার্ড মুদ্রণ করতে পারবেন তারা। কাজটির জন্য প্রত্যেকটি অফিসের জন্য কেনা হয়েছে দুইটি প্রিন্টার, দুইটি লেমিনেটিং মেশিন, দুইটি কাটিং মেশিন এবং পাউচ।
এদিকে স্থানীয় পর্যায়ে ইসির সেবা পৌঁছে দিতে দেশের ৩৩ উপজেলা এবং দুইটি জেলায় ইসির নতুন নিজস্ব ভবন করার পরিকল্পনা করা হচ্ছে। এই ভবন গুলোতে ইসির কেন্দ্রীয় আফিসের সঙ্গে যুক্ত করা হবে সার্ভার স্টেশন সংযোগ স্থাপন করা হবে। এছাড়া ইসির প্রতিটি জেলা ও থানা আফিস প্রথম ও দ্বীতিয় তলায় স্থানান্তর করার উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।
২০০৮ সালে ছবিসহ ভোটার তালিকা প্রণয়নের পর নবম সংসদে ভোটার ছিল ৮ কোটি ১০ লাখেরও বেশি। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের সময় দশম সংসদে ভোটার ছিল ৯ কোটি ১৯ লাখের বেশি। বর্তমানে ১০ কোটি ৪৩ লাখেরও বেশি নাগরিক ভোটার তালিকাভুক্ত রয়েছেন। চলতি বছরের শেষদিকে একাদশ সংসদ নির্বাচনে ভোট দিতে পারবেন এসব ভোটার। ৯ কোটি নাগরিকের হাতে স্মার্টকার্ড দেওয়ার প্রক্রিয়ার মধ্যে ২০১২ সালের পর থেকে নিবন্ধিত সব মিলিয়ে প্রায় সোয়া কোটি ভোটারকে পর্যায়ক্রমে লেমিনেটেড কার্ড দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল ইসি। কিন্তু বিভিন্ন সমস্যার কারণে এ বিতরণ কার্যক্রম পিছিয়ে যায়।