লতাপাতায় প্যাঁচানো কয়েক কোটি টাকার গাড়ি, উদাসীন কর্তৃপক্ষ



কান্ট্রি ডেস্ক, বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

লক্ষ্মীপুর: যথাযথ রক্ষণাবেক্ষণ আর স্থান সংকুলানের অভাবে লক্ষ্মীপুরে নষ্ট হচ্ছে বিভিন্ন অপরাধে জব্ধ হওয়া দুই হাজারেরও অধিক গাড়ি। যার মূল্য কয়েক কোটি টাকা। এর মধ্যে মোটরসাইকেলের সংখ্যাই বেশি। আদালত পাড়া ও পুলিশ লাইন্সসহ জেলার ৫টি থানায় খোলা আকাশের নিচে রোদ-বৃষ্টিতে অযত্ন-অবহেলায় নষ্ট হচ্ছে এসব গাড়ি। এছাড়া ধুলা-বালিসহ লতাপাতায় প্যাঁচানো থাকায় মুছে যাচ্ছে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ মামলার আলামত।

তবে এগুলো সংরক্ষণে সংশ্লিষ্ট কারোর কোনো উদ্যোগ নেই। এক কথায় বলা চলে এ ব্যাপারে উদাসীন কর্তৃপক্ষ। তাইতো মামলা জটিলতার কারণে নিলামও করা যাচ্ছে না। যা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে সরকারের কোটি টাকার রাজস্ব।

অথচ দিন দিন বিভিন্ন অপরাধে জব্দকৃত গাড়ির সংখ্যা বেড়েই চলছে। ফলে জায়গার অভাব দেখা দিয়েছে। একই সঙ্গে মামলার আলামত হিসেবে যানবাহনগুলো সঠিকভাবে সংরক্ষণ করতে না পারায় কোর্ট পুলিশ এবং থানা পুলিশকে বিপাকে পড়তে হচ্ছে। তারা দ্রুত মামলা নিষ্পত্তিসহ নিলাম ও সঠিক মালিকের কাছে যানবাহন গুলো হস্তান্তরের দাবি জানান।

পুলিশ সূত্রে জানা যায়, জব্ধ হওয়া আলামতের মধ্যে তিন স্তরের গাড়ি রয়েছে। আর তা হচ্ছে মামলার আলামত, চোরাইকৃত গাড়ি ও কাগজপত্র বিহীন গাড়ি। এসব গাড়ির মধ্যে রয়েছে প্রাইভেটকার, ট্রাক, পিকাপ ভ্যান, মাইক্রোবাস এবং মোটরসাইকেল। তবে বেশি সংখ্যকই চোরাইকৃত মোটরসাইকেল। এসব গাড়ির বর্তমান বাজার মূল্য প্রায় কয়েক কোটি টাকা। জব্দ হওয়া এসব গাড়ি মামলার আলামত হিসেবে গুরুত্বসহ সংরক্ষণ করার কথা থাকলেও তা সম্ভব হচ্ছে না।
খোলা আকাশের নিচে বছরের পর বছর অরক্ষিত অবস্থায় রাখতে হচ্ছে। যার কারণে বেশির ভাগ গাড়িই এখন ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। বিকল হয়ে যাচ্ছে গাড়ির ইঞ্জিন। আইনি জটিলতার কারণে অনেক মালিকই ছাড়িয়ে নিতে পারেন না তাদের গাড়ি। তাই দিনের পর দিন এভাবে জমে গাড়ির স্তুপ। আর আইনি জটিলতার কারণেও ওয়াকসন দেওয়া যাচ্ছে না।

সরেজমিনে পুলিশ লাইন্স ও থানা এলাকার মালখানায় গিয়ে দেখা যায়, ভবনের সামনে খোলা আকাশের নিচে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে জব্দকৃত গাড়ি ও মামলার আলামত। লতাপাতা আর আবর্জনার স্তুপে কোনটির হেডলাইট, আবার কোনটির ব্রেক-শো, কোনটির বা ব্যাক লাইট দেখা যাচ্ছে। এর সবগুলোই বিভিন্ন অপরাধে জব্দ হওয়া মামলার আলামত (যানবাহন)।

/uploads/files/bSzoqJPA5liCF5mn3ascuCkLGESdWJBThIgZeARS.jpeg

এছাড়া স্থান সংকটের কারণে আদালত পাড়ায় খোলা স্থানে পরিত্যক্ত অবস্থায় গাড়িগুলো (আলামত) স্তুপ করে রাখা হয়েছে। এসবের মধ্যে নামীদামি ব্র্যান্ডের গাড়িও রয়েছে। তবে রোদ-বৃষ্টি আর ধুলার আস্তরণে বোঝার উপায় নেই কোনটা সচল আর কোনটা অচল। বছরের পর বছর অযত্নে পড়ে থাকায় কিছু গাড়ির কাঠামো বা চ্যাসিস ছাড়া অবশিষ্ট কিছুই নেই। নিরাপত্তার অভাবে গাড়িগুলোর বিভিন্ন পার্সও চুরি হয়ে গেছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জব্ধকৃত এক গাড়ির মালিক বলেন, ‘মামলায় জামিনে মুক্ত হয়েছি। তবে মুক্ত করতে পারিনি আমার দামি মোটরসাইকেলটি। মামলা জনিত কারণে আলামত হিসেবে রেখে দেওয়া হয়েছে এটি। তবে গাড়িটির আশা আমি ছেড়ে দিয়েছি। কারণ যখন এটি ফেরত দেওয়া হবে তখন আর তা ব্যবহারের উপযোগী থাকবে না।’

এ বিষয়ে লক্ষ্মীপুর জেলা জজ কোর্টের আইজীবী অ্যাডভোকেট জাকির হোসেন মঞ্জু জানান, জব্ধকৃত যানবাহন নিয়ে যদি কোনো দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা থাকে তা হলে ছড়িয়ে না রেখে একত্রিত ভাবে যত্ন সহকারে রাখলেই হয়। অযত্মের কারণে মামলার আলামত ও সরকারি সম্পদ নষ্ট হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট ম্যাজিস্ট্রেট প্রশাসন, সরকারি আইনজীবীর সমন্বয়ে দ্রুত মামলা নিষ্পত্তির দাবি জানান তিনি।

কোর্ট মালখানার ইনচার্জ মোহাম্মদ গফফার খান জানান, ৫০টি মামলা নিষ্পত্তি হয়েছে। এখনো ১০০টি মামলা চলমান রয়েছে। জব্দকৃত গাড়িগুলোর মামলা নিষ্পত্তি না হওয়ায় নিলামে দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। তাছাড়া স্থান সংকটের কারণে দীর্ঘদিন রোদ-বৃষ্টির মধ্যে বিক্ষিপ্তভাবে পড়ে রয়েছে গাড়িগুলো।

লক্ষ্মীপুর পুলিশ সুপার আ স ম মাহাতাব উদ্দিন জানান, মামলা জটিলতাসহ বিভিন্ন কারণে এগুলো নিলাম করা যাচ্ছে না। তাছাড়া স্থান সংকটতো রয়েছেই। তাই যত্নও নেওয়া যাচ্ছে না। তবে অল্প সময়ের মধ্যে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন এ পুলিশ কর্মকর্তা।

জেলা বিআরটিএ সহকারী পরিচালক আনোয়ার হোসেন বলেন, এ সব বিষয়ে আইনি প্রক্রিয়ার পর ইন্সপেকশন চাওয়া হয়। ওই ক্ষেত্রে জব্ধকৃত গাড়িগুলো রেজিস্ট্রেশনের যোগ্য না হলে পরে নিলামে দেওয়া হয়। এতে সরকার রাজস্ব পায়। এছাড়া আদালতে মামলা চলমান অবস্থায় কোনো গাড়ির ইঞ্জিন নষ্ট হলে তা রেজিস্ট্রেশনের যোগ্যতা হারিয়ে ফেলে।

   

বাংলাদেশকে ৭১ মিলিয়ন ডলার ঋণ দেবে এডিবি



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
বাংলাদেশকে ৭১ মিলিয়ন ডলার ঋণ দেবে এডিবি

বাংলাদেশকে ৭১ মিলিয়ন ডলার ঋণ দেবে এডিবি

  • Font increase
  • Font Decrease

জলাবদ্ধতা নিরসনে বাংলাদেশকে ৭১ মিলিয়ন মার্কিন ডলার ঋণ দেবে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি)। এ নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে একটি চুক্তি সই হয়েছে।

ক্লাইমেট রেজিলেন্ট ইন্টিগ্রেটেড সাউথওয়েস্ট প্রজেক্ট ফর ওয়াটার রিসোর্সেস ম্যানেজমেন্ট বাস্তবায়নের লক্ষ্যে এডিবি এ ঋণ দেবে। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের অধীনে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড (বাপাউবো)। 

শনিবার ( ২০ এপ্রিল) অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিবৃতিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে। ঋণচুক্তি ও প্রকল্পচুক্তিটি ঢাকায় স্বাক্ষরিত হয় বলে জানা গেছে।

এ সময় বাংলাদেশ সরকারের পক্ষে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সচিব মো. শাহরিয়ার কাদের ছিদ্দিকী এবং এডিবির পক্ষে বাংলাদেশ আবাসিক মিশনের কান্ট্রি ডিরেক্টর এডিমন জিনটিং উভয় চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন। এ সময় বাংলাদেশ সরকার ও এডিবির আবাসিক মিশনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

ঋণটি এডিবির Ordinary Operations (Concessional) বা নমনীয় শর্তে পাওয়া গিয়েছে যার সুদের হার ২ শতাংশ এবং ৫ বছর গ্রেস পিরিয়ডসহ মোট ২৫ বছরে পরিশোধযোগ্য। এছাড়া অন্য কোনো চার্জ নেই।

অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে আরও জানা যায়, প্রকল্পটি পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের অধীনে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড (বাপাউবো) কর্তৃক বাস্তবায়িত হবে। আলোচ্যে প্রকল্পের মাধ্যমে প্রকল্প এলাকার জলাবদ্ধতা নিরসন করে কৃষি ও মৎস্য উৎপাদন বৃদ্ধি, আনুষঙ্গিক উন্নয়নের মাধ্যমে আর্থ-সামাজিক অবস্থার পরিবর্তন আনয়ন, সমন্বিত পানি সম্পদ ও অংশগ্রহণমূলক পানি ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনা বাস্তবায়ন এবং উন্নত অবকাঠামো নির্মাণ ও সমন্বিত সহায়তার মাধ্যমে টেকসই উন্নয়ন অর্জন সম্ভব হবে।

এছাড়া প্রকল্প থেকে প্রাপ্ত সুবিধাদির দীর্ঘমেয়াদী স্থায়িত্ব বজায় রাখার নিমিত্ত পানি ব্যবস্থাপনা সংঘ গঠন করা হবে। প্রকল্পটির বাস্তবায়নকাল জানুয়ারি ২০২৪ হতে ডিসেম্বর ২০২৮ পর্যন্ত।

এডিবি বাংলাদেশের অন্যতম প্রধান উন্নয়ন সহযোগী। বাংলাদেশ ১৯৭৩ সালে সদস্যলাভের পর থেকে এডিবি থেকে এর অর্থনীতির অগ্রাধিকারভুক্ত বিভিন্ন খাতসমূহে ধারাবাহিকভাবে আর্থিক সহায়তা পেয়ে আসছে। এডিবি এ যাবত বাংলাদেশ সরকারকে ৩১ হাজার ৫৪৭.৪৭ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের ঋণ সহায়তা ও ৫৭১.২ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের অনুদান সহায়তা প্রদান করেছে। বাংলাদেশে উন্নয়ন সহায়তার ক্ষেত্রে এডিবি সাধারণত বিদ্যুৎ, জ্বালানি, পরিবহন, শিক্ষা, স্থানীয় সরকার, কৃষি, পানিসম্পদ ও সুশাসনকে প্রাধান্য দেয়।

;

হিট স্ট্রোকে ২ জনের মৃত্যু



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের ওপর দিয়ে বয়ে যাচ্ছে তীব্র তাপদাহ। তীব্র এই দাবদাহে চুয়াডাঙ্গা ও পাবনায় হিট স্ট্রোকে দুই জনের মৃত্যু হয়েছে।

শনিবার (২০ এপ্রিল) বিকেল ৩টায় ৪২ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে চুয়াডাঙ্গায়। এসময় বাতাসের আদ্রতা ছিল ১৮ শতাংশ।পাবনার ঈশ্বরদীতে ৪১ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে, যা জেলায় চলতি মৌসুমের মধ্যে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা।

চুয়াডাঙ্গায় আজ সকালে মাঠে কাজ করতে গিয়ে জাকির হোসেন (৩৩) নামের এক কৃষক হিট স্ট্রোকে আক্রান্ত হন। পরে হাসপাতালে নেওয়ার পথে তিনি মারা যান।

জাকির হোসেনের বাবা আমির হোসেন ও দর্শনা থানার ওসি বিপ্লব কুমার সাহা বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

জাকিরের বাবা আমির হোসেন বলেন, তীব্র গরমে মাঠের ধান মরার মতো অবস্থা। তাই জমিতে সেচ দেওয়ার জন্য সকাল ৮টার দিকে মাঠে যায় জাকির হোসেন। মাঠে যাওয়ার ঘণ্টাখানেক পর খবর পাই ছেলে স্ট্রোক করেছে। মাঠের অন্য কৃষকরা ছেলেকে উদ্ধার করে দামুড়হুদা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাচ্ছিলেন। পথেই সে মারা যায়।

এদিকে, দুপুরে পাবনায় তীব্র দাবদাহে হিট স্ট্রোক করে সুকুমার দাস (৬০) নামের এক বৃদ্ধ মারা গেছেন।

জানা গেছে, পাবনা শহরের রুপকথা রোডে একটি চায়ের দোকানে চা খাওয়ার সময় হিট স্ট্রোকে আক্রান্ত হন সুকুমার দাস। এ সময় আশপাশের লোকজন তাকে উদ্ধার করে পাবনা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

সুকুমার দাস শহরের শালগাড়িয়ার জাকিরের মোড়ের বাসিন্দা।

ঈশ্বরদী আবহাওয়া অফিসের তথ্য মতে, কয়েক দিন ধরেই পাবনায় ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের ওপর তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। আজকে রেকর্ড করা হয়েছে ৪১ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

;

হাজারীবাগে ১০ তলা ভবন থেকে পড়ে শ্রমিকের মৃত্যু



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

রাজধানীর হাজারীবাগে একটি নির্মাণাধীন ১০ তলা ভবনের ছাদ থেকে নিচে পড়ে রফিকুল (৩৫) নামে এক শ্রমিক মারা গেছেন।

শনিবার (২০ এপ্রিল) দুপুর দেড়টার দিকে হাজারীবাগ বায়তাল মহারম মসজিদের পাশে ঘটনাটি ঘটে।

রফিকের সহকর্মী মো. শাহিন জানান, রফিকের বাড়ি ভোলা জেলার তজুমুদ্দিন উপজেলায়। বর্তমানে মোহাম্মদপুর চাঁদ উদ্যান এলাকায় থাকতেন তিনি। হাজারীবাগের ওই ভবনে রড মিস্ত্রীর কাজ করতেন।

তিনি আরও জানান, সকালে ওই ১০তলা ভবনের ছাদে সেন্টারিংয়ের টিনের সিট খুলছিলেন রফিক। এ সময় অসাবধানতাবসত ১০তলা থেকে নিচে পরে গুরুতর আহত হন। মুমূর্ষু অবস্থায় সহকর্মীরা ওই শ্রমিককে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে এলে চিকিৎসক দুপুর ২টার দিকে তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ (পরিদর্শক) মো. বাচ্চু মিয়া মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, মরদেহ মর্গে রাখা হয়েছে।

;

গৌরীপুরে শসার মণ ১শ টাকা, লোকসানে চাষিরা



উপজেলা করেসপন্ডেন্ট, গৌরীপুর (ময়মনসিংহ)
ছবি: বার্তা২৪

ছবি: বার্তা২৪

  • Font increase
  • Font Decrease

ময়মনসিংহের গৌরীপুরে প্রতি মণ শসা বিক্রি হচ্ছে, ৮০-১০০ টাকা দরে। শসার ন্যায্য দাম না পাওয়ায় লোকসানের মুখে পড়তে হচ্ছে চাষিদের। অনেকেই হতাশ হয়ে পড়েছেন আবার অনেক কৃষক লোকসানের ভয়ে ক্ষেতের শসা ক্ষেতেই রেখে দিচ্ছেন।

শনিবার (২০ এপ্রিল) দুপুরে উপজেলার কয়েকটি গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, ক্ষেত থেকে শসা তুলছেন কৃষকেরা। কেউ পাইকারি দরে প্রতি কেজি শসা দুই টাকা আড়াই টাকা দামে বিক্রি করছেন। কেউ শসা তুলে ক্ষেতেই ফেলে দিচ্ছেন অথবা কেউ ক্ষেত থেকে শসা তুলছেনই না!

উপজেলার অচিন্তপুর গ্রামের শসাচাষি আমিনুল হক শাহীন বলেন, এবার ৪০ শতাংশ জমিতে শসার আবাদ করেছি। ফলন ভালো হয়েছে। প্রথমদিকে ৮০-৯০ টাকা মণ দরে বিক্রি করলেও এখন তো ক্ষেতেই যাই না। কারণ, শসা ৮০-১০০ টাকা মণ দরে এখন বিক্রি করতে হচ্ছে। শসা বিক্রি করে ন্যায্য দাম না পাওয়ায় শ্রমিকদের মজুরি দিয়ে শসা উত্তোলন করে কোনো লাভ নেই। ক্ষেতের মধ্যেই শসা লাউয়ের মতো বড় হচ্ছে। ক্ষেতেই পচে যাচ্ছে।

মোবারকপুর গ্রামের চাষি আলী বলেন, ৩০ শতাংশ জমিতে শসা চাষ করেছি। ফলন দেখে খুশি হয়েছিলাম। কিন্তু বর্তমানে শসা তুলে বাজারে নিয়ে গেলে বিক্রি হচ্ছে না। এক পরিচিত পাইকারের কাছে ৯০-১০০ মণ দরে বিক্রি করেছি। বাজার দরে হতাশ হয়ে পড়েছি। লাভ তো দূরের কথা, খরচ তোলাই তো দায় হয়ে পড়েছে!

ময়মনসিংহের গৌরীপুর উপজেলার অচিন্তপুর থেকে বস্তায় করে শসা সিলেটে পাঠানো হচ্ছে, ছবি- বার্তা২৪.কম

ব্যবসায়ী মিন্টু মিয়া বলেন, আমরা বিভিন্ন কৃষকের কাছ থেকে ১শ টাকা মণ দরে কিনে সিলেটে বিক্রি করি ২শ টাকা মণে। বর্তমানে এক ট্রাক শসা পাঠাতে মণপ্রতি আড়ৎদারকে দিতে হয় ২০ টাকা। লেবার খরচ হয় ১৫ টাকা। বস্তা কিনতে হয় ২০ টাকায় এবং পাঠাতে ভাড়া লাগে ২২ হাজার টাকা। এই টাকা খরচ করে সিলেটে শসা পাঠালে এখন আর আমাদের লাভ হয় না। লোকসান গুণতে হচ্ছে।

ইছুলিয়া গ্রামের ব্যবসায়ী আশরাফুল ইসলাম আশরাফ বলেন, এখন শসার ব্যবসা করে আমরা লোকসানের মধ্যে আছি। আমাদের ২/৩ লাখ টাকা করে লস হচ্ছে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নিলুফার ইয়াসমিন জলি বলেন, রমজান মাসকে সামনে রেখে গৌরীপুরের কৃষকেরা বেশি পরিমাণে শসা উৎপাদন করেছেন এবং বাম্পার ফলনও হয়েছে। ফলন ভালো হওয়ায় বাজারে আমদানিও বেশি। সে কারণে দাম দ্রুত কমে যাচ্ছে। দাম কমে যাওয়ায় কৃষকদের লাভ কম হচ্ছে।

 

;