কুষ্টিয়ায় এক হামলায় আহত মাহমুদুর রহমান
কুষ্টিয়া: কুষ্টিয়ায় এক হামলায় মারাত্মকভাবে আহত হয়েছেন আমার দেশের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মাহমুদুর রহমান। ছাত্রলীগ ও যুবলীগের কর্মীরা এ হামলা করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। আদালত এলাকায় দীর্ঘ সময় মাহমুদুর রহমানকে ঘিরে রেখেছিল ছাত্রলীগ কর্মীরা বলেও জানা যায়।
কুষ্টিয়া জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ইয়াসির আরাফাত তুষারের দায়ের করা মানহানি মামলায় জামিন নিতেই আদালতে এসেছিলেন মাহমুদুর রহমান।
রোববার (২২ জুলাই) দুপুরে কুষ্টিয়ার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতের বিচারক এম. এম মোর্শেদ ১০ হাজার টাকা জামানতে স্থায়ীভাবে এই জামিন মঞ্জুর করেন।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, গত বছরের ১লা ডিসেম্বর বাংলাদেশ প্রেসক্লাবে বাংলাদেশ ডেমোক্রেটিক কাউন্সিল আয়োজিত আলোচনা সভায় আমার দেশ সম্পাদক মাহমুদুর রহমান বঙ্গবন্ধু তার কন্যা শেখ হাসিনা ও নাতনি টিউলিপ সিদ্দিকীকে নিয়ে কটুক্তিমুলক বক্তব্যে প্রদান করেন। সেই বক্তব্যে বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলিকট্রনিক মিডিয়ায় প্রকাশিত ও প্রচারিত হয়।
সেই বক্তব্যে ইউটিউবে কুষ্টিয়া জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ইয়াসির আরাফাত তুষার দেখে গত বছরের ১০ ডিসেম্বর আমার দেশ সম্পাদকের বিরুদ্ধে কুষ্টিয়া অতিরিক্ত জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে বাদী হয়ে মানহানি মামলা দায়ের করেন।
আদালতে এ সময় আমার দেশ সম্পাদক মাহবুবুর রহমান আদালতে উপস্থিত ছিলেন। এদিকে জামিন মঞ্জুর করায় অসন্তোষ প্রকাশ করে ছাত্রলীগ নেতারা আদালত চত্বরে মাহমুদুর রহমানকে অবরুদ্ধ করে রাখে। এ সময় তারা মাহমুদুর রহমানের বিচার চেয়ে আদালত চত্বরে বিক্ষোভ মিছিল করেন। এক পর্যায়ে মাহমুদুর রহমান বাইরে বের হয়ে তার ব্যবহৃত প্রাইভেট গাড়ীতে উঠতে গেলে কয়েকজন লাঠিসোঠা নিয়ে তার উপর হামলা করে। পরে দৌঁড়ে জেলা মহিলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক এ্যাড. শামস তানিম মুক্তির চেম্বারে গিয়ে আশ্রয় নিলেও সেই সেই চেম্বারেও হামলা চালায়। সেই সঙ্গে তার ব্যবহৃত গাড়ীটিও ভাংচুর করে।
সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদ কুষ্টিয়ার সদস্য সচিব এ্যাডভোকেট শামীম উল হাসান অপু জানান, মানহানির একটি মামলায় জামিন নিতে রোববার কুষ্টিয়া সদর জুডিশিয়াল ম্যাজেস্ট্রেট আদালতে আত্মসমর্পণ করেন মাহমুদুর রহমান। উভয় পক্ষের শুনানির পর বিচারক এম এম মোর্শেদে জামিন আদেশ দেন। দুপুর ১টার দিকে তিনি সঙ্গীদের সাথে আদালত থেকে বের হওয়ার মুহূর্তে আদালত ভবনের প্রতিটি প্রবেশ দ্বারে ছাত্রীলীগের নেতাকর্মীরা আটকে দেয়। এসময় তিনি পুনরায় আদালতের এজলাসে আশ্রয় নেন। দীর্ঘ সময় একই পরিবেশ বিরাজ করায় তিনি আদালতকে বিষয়টি জানান। পরে লিখিতভাবে পুলিশ প্রোটেকশনের জন্য তিনি আবেদন করেন। এসময় আদালতে মাহমুদুর রহমানের আইনজীবী কুষ্টিয়া বারের সিনিয়র আইনজীবী প্রিন্সিপাল আমিরুল ইসলাম, বিএফইউজে মহাসচিব এম আব্দুল্লাহ, কুষ্টিয়া জেলা বিএনপির সভাপতি সাবেক এমপি সৈয়দ মেহেদী আহমেদ রুমী, সাবেক এমপিসহ অনেকে তার সঙ্গে ছিলেন।
পরে তিনি আদালত এলাকা থেকে বের হওয়ার চেষ্টা করলে তার ওপর হামলা চালানো হয়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, তার ওপর ব্যাপকভাবে ইট-পাথর বর্ষণ করা হয়। এতে তিনি মারাত্মকভাবে আহত হন। নাম প্রকাশ না করার শর্তে আদালতের এক আইনজীবী জানায়, গামছা দিয়ে মুখ ঢাকা বেশ কয়েকজন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা এসে কাঠের বাটাম দিয়ে তাকে আঘাত করে রক্তাক্ত করে।
কুষ্টিয়া জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদ আহম্মেদ জানান, কুষ্টিয়া জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ইয়াসির আরাফাত তুষারের দায়ের করা মানহানি মামলায় জামিন নিতেই আদালতে এসেছিলেন মাহমুদুর রহমান। এসময় আমরা আদালতে ছিলাম। পরে আমরা আদালত চত্বর থেকে আমরা চলে এসেছিলাম। আমরা চলে আসার পর কারা হামলা করেছে এব্যাপারে আমাদের কিছু জানা নেই।