শিক্ষকের গাফিলতি, এক বছরেও ফল হয়নি জাবির ইংরেজি বিভাগে



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) ইংরেজি বিভাগের ৪১ তম আবর্তনের শিক্ষার্থীদের ফলাফল এক বছরেও দিতে পারেনি কর্তৃপক্ষ। এর ফলে ৬০ জনের অধিক শিক্ষার্থী কর্মজীবনে অন্যদের থেকে পিছিয়ে পড়ার পাশাপাশি হতাশায় ভুগছে বলে বার্তা২৪.কম এর অনুসন্ধানে বেরিয়ে আসে।

অনুসন্ধান থেকে জানা যায়, ইংরেজি বিভাগের ৪১ তম আবর্তনের ‘ভাষা শাখার’ পরীক্ষা শুরু হয়েছিল ২৬ জুলাই ২০১৭ সালে এবং তা শেষ হয়েছিল ২৭ আগস্ট ২০১৭(মৌখিক পরীক্ষাসহ)। বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়মানুযায়ী যেকোন বিভাগের পরীক্ষা সমাপ্ত হওয়ার ৭৫ দিনের মধ্যে ফলাফল দিয়ে দেয়া হয় বলে জানা গেছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত ফলাফল দিতে পারেনি ইংরেজি বিভাগ।

এ নিয়ে শিক্ষার্থীরা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বার্তা২৪.কম এর কাছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক শিক্ষার্থী বলেন, পরীক্ষা কমিটির সভাপতি অধ্যাপক আহমেদ রেজার  কারণে তাদের ফল আটকে রয়েছে। প্রথমে পরীক্ষা কমিটির সভাপতি ছিলেন অধ্যাপক মনিরুজ্জামান। তিনি দ্রুত দিতে সকল শিক্ষককে খাতা জমা দিতে তাড়া দিতেন। কিন্তু খাতা দেখে জমা দিতে দেরি করতে থাকেন অধ্যাপক রেজা ও কয়েকজন শিক্ষক। এরপর তিনি বারবার তাগাদা দিয়েও অধ্যাপক রেজাকে খাতা ও নম্বর জমা দেয়াতে পারেননি।

শিক্ষার্থীরা বলেন, এরপর অধ্যাপক রেজার একগুয়েমির কারণে পরীক্ষা কমিটির সভাপতি থেকে সরে দাঁড়ান তিনি এবং অধ্যাপক রেজা আগ্রহের সাথে সেই দায়িত্ব নেন। কিন্তু তিনি এখনো ফলাফল দিতে পারেননি।

এদিকে খাতা যে দ্বিতীয় পরীক্ষকের কাছে পাঠিয়েছেন অধ্যাপক আহমেদ রেজা সেই শিক্ষকের নাম তানিয়া তাসনিম বলে জানা গেছে। তিনি নিয়মিত ক্লাস নেননা বলে শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন।

অধ্যাপক রেজার ব্যাপারেও ক্লাস কম নেওয়া ও টিউটোরিয়াল পরীক্ষার ফল না দেওয়া বা কখনো অনেক দেরিতে দেয়ার অভিযোগ করেন শিক্ষার্থীরা।

তবে রেজাসহ ইংরেজি বিভাগের অধিকাংশ শিক্ষকই বাণিজ্যিক সান্ধ্যকালীন কোর্সের নিয়মিত ক্লাস নেন ও সঠিক সময়ে ফলাফল দিয়ে দেন বলে অভিযোগ করেন শিক্ষার্থীরা।

এদিকে এক বছরেও ফলাফল না হওয়ায় ছাত্রছাত্রীরা প্রতিযোগিতায় পিছিয়ে পড়ছে। অনেকেই হতাশাগ্রস্ত হয়ে জীবনের ব্যাপারে নিরাশ বলে জানায় শিক্ষার্থীরা।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন ছাত্রী বলেন, এক বছর আগে বাড়িতে জানিয়েছি যে স্নাতকোত্তর শেষ হয়েছে, কিন্তু সেই ফল এখনো আমরা পেলাম না। বাড়ি থেকে বাবা-মা ফোন দিয়ে জানতে চায়। আমরা যতই বলি এখনো ফল দেয়নি তারা বিশ্বাস করেন না।

তবে এই প্রতিবেদক তাদের যে কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলেছেন সবাই তাদের নাম প্রকাশ না করার অনুরোধ করেন।

নাম প্রকাশ না করতে চাওয়ার কারণ হিসেবে তারা বলেন, শিক্ষকদের কাছে যতক্ষণ নম্বর দেয়ার ক্ষমতা থাকে তারা তাদের ‘ক্ষতি’করতে পারেন।

এর আগে এই বিভাগ ৪৩ তম আবর্তনের ফল প্রকাশেও এক বছর সময় নেয় বলে সমালোচিত হয়।

গত ২৫ জুলাই বিশ্ববিদ্যালয়ের সবচেয়ে বড় ভার্চুয়াল প্লাটফরম ‘আমরাই জাহাঙ্গীরনগরে’ ইংরেজি বিভাগের ৪১ ব্যাচের মেহেদী হাসান নামের একজন শিক্ষার্থী লেখেন, আজ থেকে ৩৬৪ দিন আগে ইংরেজি ৪১ ব্যাচের স্নাতকোত্তর পরীক্ষা (linguistics)শুরু হয়ে একমাসে শেষ হয়েছিল। দুঃখের বিষয়..আজও তারা তাদের ফল পায় নি।

তিনি আরো লেখেন, দুঃখের বিষয় পরীক্ষা শুরুর আগের রাতে শহীদুল ইসলামের মা এ দুনিয়ার মায়া ত্যাগ করে চলে গেলেন। আর আমাদের ভবিষ্যত নিয়ে চিন্তিত শিক্ষকমণ্ডলী আমাদের পরীক্ষা পেছালেন না। যদিও আমরা অনেক অনুরোধ করেছিলাম শিক্ষক মণ্ডলীর কাছে। তারা আমাদের কে বোঝালেন, যে চলে গেছে তাকে আর ফিরিয়ে নিয়ে আসা সম্ভব না, সামনে তোমাদের অনিশ্চিত ভবিষ্যত ইত্যাদি।

শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, অধ্যাপক আহমেদ রেজা Approaches & Methods in L2 teaching ৫০১ নং কোর্সটি নিতেন যেটির খাতা তিনি হারিয়ে ফেলেছেন। সেটি রয়েছে এখন তানিয়া তাসনিম এর কাছে।

এ বিষয়ে পরীক্ষা কমিটির প্রথম চেয়ারম্যান অধ্যাপক মনিরুজ্জামান বার্তা২৪.কমকে বলেন, আমি দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হচ্ছিলাম, কারণ অনেকেই ঠিক সময়ে খাতা ও নম্বর দিচ্ছিলেন না। সে কারণে আমি পরীক্ষা কমিটি থেকে সরে গিয়েছি। আর কিছু বা কারো নাম বলতে পারবোনা।

এ বিষয়ে সে সময়ে ইংরেজি বিভাগের সভাপতি তানিয়া শারমিন ববি বলেন, আমি একাধিকবার আহমেদ রেজা স্যারকে ফলাফল দিয়ে দেয়ার জন্য তাগিদ দিয়েছি কিন্তু তিনি দেননি। সর্বশেষ মে মাসের মিটিংয়েও তিনি ৭ দিনের মধ্যে দেবেন বলে জানিয়েছেন। কিন্তু শুনলাম এখনো দেননি।

তিনি বলেন, আমি উপাচার্য ও পরীক্ষা নিয়ন্ত্রককেও বিষয়টি জানিয়েছি। কিন্তু কোন কাজ হয়নি। আসলে উনি আমার শিক্ষক, উনাকে আমি যতটুকু পেরেছি ফলাফল দেয়ার তাগাদা দিয়েছি। কারণ ছাত্রছাত্রীদের জন্য আমার খারাপ লাগছিল। এটা আমাদের জন্য লজ্জাজনক ব্যাপার।

ইংরেজি বিভাগের এ শিক্ষক জানান, গত এক বছরে কিন্তু সান্ধ্যকালীন কোর্সের তিনটি পরীক্ষার ফলাফল ঠিকই দেয়া হয়েছে।

ইংরেজি বিভাগ সূত্রে জানা যায়, ৪১ তম আর্বতনের পরীক্ষার খাতা হারিয়ে ফেলেছেন আহমেদ রেজা । যদিও খাতা হারিয়ে ফেলার বিষয়টি অস্বীকার করেন তিনি।

এ বিষয়ে জানতে অধ্যাপক আহমেদ রেজাকে ফোন করা হলে তিনি বার্তা২৪কে বলেন, আসলে দুইটি ভিন্ন কোর্সের খাতা তৃতীয় পরীক্ষকের কাছে যাওয়ায় ফলাফল দিতে দেরি হচ্ছে। আমি মাস দুয়েক হলো দায়িত্ব নিয়েছি। আশা করি আগামী সপ্তাহে ফল দিয়ে দিতে পারবো।

খাতা হারিয়ে ফেলার ব্যাপারটি তিনি অস্বীকার করে বলেন, না খাতা আসলে হারাইনি। আমার আলমারি ও টেবিলের খাতার মধ্যে মিশ্রণ ঘটেছিল।

আগের সভাপতি কেন তার কাছে দায়িত্ব দিলো এ ব্যাপারেও তিনি মুখ খোলেননি।

এক বছর ফল ধরে ফল না দেয়ায় শিক্ষার্থীদের জীবনের ক্ষতির ব্যাপারেও তিনি কোন মন্তব্য করেননি। তবে ফল দ্রুত দিয়ে দেবেন বলে বার্তা২৪.কমকে জানিয়েছেন অভিযুক্ত অধ্যাপক আহমেদ রেজা।

এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. ফারজানা ইসলামের মুঠোফোনে কল করলেও তিনি রিসিভ করেননি।

   

ফেনীতে সড়ক দুর্ঘটনায় দুই তরুণের মৃত্যু



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ফেনী
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

ফেনীতে পৃথক দুইটি সড়ক দুর্ঘটনায় তানভীর হোসেন সৈকত (১৬) ও শাকিল হক শান্ত (২৬) নামে দুই তরুণের মৃত্যু হয়েছে।

শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কাইচ্ছুটি এলাকা ও ফেনীর সোনাগাজী উপজেলার ডাক বাংলা এলাকায় এসব দুর্ঘটনা ঘটে।

নিহত তানভীর হোসেন সৈকত ফেনী সদর উপজেলার শর্শদি ইউনিয়নের নোয়াবাদ এলাকার গুড়াগাজী বাড়ির হারুনুর রশীদের ছেলে এবং অন্যজন শাকিল হক শান্ত ছাগলনাইয়া উপজেলার মহামায়া ইউনিয়নের চাঁদগাজী এলাকার প্রবাসী সিরাজুল ইসলামের ছেলে। শান্ত দীর্ঘদিন ধরে পরিবারের সঙ্গে শহরে ভাড়া বাসায় থাকতেন।

পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ফেনীর সোনাগাজীতে তিন বন্ধু মিলে প্রাইভেটকার নিয়ে ঘুরতে বের হয়েছিলেন শান্ত। গাড়ি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে পড়ে গেলে প্রাণ হারান তিনি। এ সময় গাড়িতে থাকা তার অপর দুই বন্ধু অমি এবং রবিন গুরুতর আহত হয়েছেন।

অন্যদিকে নিহত সৈকতের পরিবার জানায়, বিকালে বোনের বাড়ি থেকে ফেরার পথে কাইচ্ছুটি রাস্তার মাথায় মহাসড়ক পার হওয়ার সময় একটি মাইক্রোবাসের ধাক্কায় গুরুতর আহত হন সৈকত। পরে স্থানীয়রা উদ্ধার করে ফেনী জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে আসলে দায়িত্বরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

নিহত সৈকতের ভগ্নিপতি মজিবুল হক বলেন, পরিবারে পাঁচ বোনের মধ্যে সবার ছোট সৈকত। আমি প্রবাস থেকে ফেরার পর ঈদ উপলক্ষে শ্বশুরবাড়ির সবাইকে দাওয়াত করেছিলাম। এখান থেকে বাড়ি ফেরার পথে পরিবারের সবাই চলে গেলেও সৈকত পরে বের হয়। পরে কাইচ্ছুটি এলাকায় পৌঁছালে তাকে একটি মাইক্রোবাস ধাক্কা দেয়। তার এমন আকস্মিক মৃত্যু কোনোভাবেই মানতে পারছে না কেউ।

ফেনী জেনারেল হাসপাতালে দায়িত্বরত পুলিশ সদস্য জসিম উদ্দিন বলেন, কয়েকজন পথচারী গুরুতর আহত অবস্থায় সৈকতকে ফেনী জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে আসলে জরুরি বিভাগের দায়িত্বরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করে। নিহতদের মরদেহ হাসপাতালের মর্গে রয়েছে। 

;

সিরাজগঞ্জে দুই মাথা ৪ চোখ নিয়ে বাছুরের জন্ম



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, সিরাজগঞ্জ
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

দুই মাথা ও চার চোখ নিয়ে জন্ম নিয়েছে একটি গরুর বাছুর। এ খবর শুনে উৎসুক জনতা এক নজর দেখতে খামারির বাড়িতে ভিড় করছে।

এই অদ্ভুত বাছুরটি জন্ম হয়েছে সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলার বারুহাস ইউনিয়নের পালাশী গ্রামের খয়বার আলীর বাড়িতে।

শুক্রবার (১৯ এপ্রিল ) বিকালে খামারির বাড়িতে জন্ম নেওয়া পর থেকে বাছুরটি দেখতে ভিড় করছে এলাকাবাসী।

খয়বার হোসেন বলেন, গাভীটি আমার গৃহপালিত। চার বছর আগে বিদেশি ষাড়ের মাধ্যমে প্রজনন দিয়ে প্রসূতি গাভীটির জন্ম হয়। পরবর্তীতে গাভীটি বড় হলে প্রজননের জন্য ইনজেকশন ব্যবহার করে গর্ভধারণ করা হয়। দীর্ঘ আট মাস ২৩ দিন পর গাভীটি দুই মাথা ও চার চোখ বিশিষ্ট একটি বকনা বাছুর প্রসব করে। বকনা বাছুরটি এখনো নড়াচড়া করছে। উঠে দাঁড়ানোর চেষ্টা করলেও দুই মাথার কারণে উঠে দাঁড়াতে পারছে না।

তিনি আরও বলেন, বাছুরটি অস্বাভাবিক, দুই মাথা ও চার চোখ বিশিষ্ট। অস্বাভাবিক প্রকৃতির এই বাছুরটিকে দেখার জন্য বাড়িতে ভিড় করছে।

তাড়াশ উপজেলার প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. ওয়ালিউল্লাহ বলেন, হরমোনাল ইমব্যালান্সের কারণে এরকম বাছুর প্রসব করার সম্ভাবনা থাকে। এ ছাড়াও প্রজনন গত কারণেও এ রকম অস্বাভাবিক বাছুর প্রসব হতে পারে। তবে এমন বাছুর প্রসব খুব একটা পরিলক্ষিত হয় না।

;

বান্দরবান-রাঙ্গামাটি সীমান্তে তীব্র গোলাগুলি



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, বান্দরবান
বান্দরবান-রাঙ্গামাটি সীমান্তে তীব্র গোলাগুলি

বান্দরবান-রাঙ্গামাটি সীমান্তে তীব্র গোলাগুলি

  • Font increase
  • Font Decrease

বান্দরবান-রাঙ্গামাটির সীমান্তের দুর্গম এলাকায় তীব্র গোলাগুলির খবর পাওয়া গেছে। সেখানে যৌথ বাহিনীর অভিযান চলমান রয়েছে।

শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) বিকেলে বান্দরবানের রুমার প্রাংসা-পাইন্দু ও রাঙ্গামাটির বিলাইছড়ির বড়থলি ইউনিয়নে সীমান্তের দুর্গম এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

রুমায় ব্যাংক ডাকাতির ঘটনায় গত ৬ এপ্রিল থেকে সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করছে যৌথ বাহিনী, যা এখনও চলমান রয়েছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, রুমা খাল, প্রাংসা, পাইন্দু ও রাঙ্গামাটি জেলার বিলাইছড়ি উপজেলার বড়থলি সীমান্ত এলাকায় তীব্র গোলাগুলির চলছে। এ ঘটনায় স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।

রুমা উপজেলা চেয়ারম্যান উহ্লা চিং মারমা জানান, কয়েকদিন ধরে রুমা উপজেলায় যৌথবাহিনীর অভিযান চলছে। এলাকাবাসীরা তাকে আজ বিকেলে জানিয়েছেন পাইন্দু- রুমা সদর ইউপি ও বিলাইছড়ি উপজেলা বড়থলি ইউনিয়নের সীমান্তে দুর্গম এলাকার ভিতরে প্রচণ্ড গুলি বোমার আওয়াজ শুনেছেন। এলাকাবাসীর ধারণা, গোলাগুলি হচ্ছে সশস্ত্র গোষ্ঠী কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের (কেএনএফ) সদস্যদের সঙ্গে যৌথবাহিনীর।

রুমা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শাহজাহান জানান, গোলাগুলির সংবাদ পেয়েছি। তবে বিস্তারিত জানা যায়নি।

গত ৮ এপ্রিল যৌথবাহিনী বিশেষ অভিযান চালিয়ে রুমা উপজেলার বেথেলপাড়া থেকে ১৮ নারীসহ ৪৯ জনকে গ্রেফতার করে। অন্যদের বিভিন্ন সময়ে মোট ৬৬ জনকে গ্রেফতার করা হয়। এদের মধ্যে ৫২ জনের চারদিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। রিমান্ডে পাঠানো ৫২ জনের মধ্যে ১৭ জন নারী রয়েছেন।

 

 

 

 

 

 

;

সাভারে বেপরোয়া কিশোর গ্যাং, আতঙ্কে নগরবাসী



মো. কামরুজ্জামান, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, সাভার (ঢাকা)
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

ঢাকার সাভারে দিনদিন বেড়েই চলছে কিশোর গ্যাংয়ের ভয়ংকর তাণ্ডব। ফলে সাভার এখন পরিণত হয়েছে আতঙ্কের নগরীতে। পৌর এলাকাতেই মাত্র দুই মাসের ব্যবধানে ৪ খুন। এছাড়া প্রতিনিয়ত ছিনতাই, আধিপত্য বিস্তার ও মাদকের অন্যতম কারণ এই গ্যাং কালচার। কোনোভাবেই যেন লাগাম টানতে পারছে না আইন শৃঙ্খলা বাহিনী।

প্রকাশ্যে কিশোর গ্যাংয়ের হামলা পাল্টা হামলা সাভার পৌরসভার নিত্যদিনের ঘটনা। রক্তাক্ত শরীর নিয়ে কেউ হেঁটে যায়, আনার কেউ হাসপাতালে বিছানায় করে বাঁচার আর্তনাদ। কিশোর গ্যাংয়ের দৌরাত্ম্যে সম্প্রতি সাভার পৌরসভার বিভিন্ন স্থানে এমন ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন সাধারণ মানুষ। প্রতিবাদ করতে গিয়ে ১২ এপ্রিল সাভারের আড়াপাড়ায় খুন হলেন রং মিস্ত্রী সাজ্জাদ। গত ৩১ মার্চ সাভারের রেডিও কলোনীতে কিশোর গ্যাংয়ের ছিনতাইয়ের শিকার হয়ে মৃত্যু সাথে লড়াই করেছেন কলেজ ছাত্র রবিউল।

ভুক্তভোগী কলেজ ছাত্র রবিউল ইসলাম বার্ত২৪.কম-কে বলেন, 'সকালে আমি ডিউটির উদ্দেশ্যে যাইতেছি। তখন দেখি দুইটা ছেলে বসা তখন আমার হাতে মোবাইল ছিল ওরা আমাকে ডাক দিছে। ডাক দিয়েই বলে কি আছে দে। আমি সাথে সাথে মোবাইল দিয়ে দিছি। তারপরেও ওরা আমাকে ছুরি মারছে। আমার পেটে পিঠে চাকু মারছে। তখন আমি চিৎকার দিলে আশপাশে থেকে লোকজন এসে হাসপাতালে নিয়ে আসেন। আমার পায়েও সমস্যা, ১৮ দিন ধরে ব্যথায় আমি একটুও ঘুমাতে পারি না।

ছেলেকে বাঁচাতে রবিউলের কৃষক বাবা ধার-দেনা করে প্রায় নিঃস্ব এখন। তাদের দাবি এ ধরনের ঘটনা যেন কোনো পরিবারের সাথে না হয়। এই পরিবারের মত এমন ঘটনার ভুক্তভোগীর সংখ্যা দিন দিন বাড়ছেই।

ভুক্তভোগী রবিউল ইসলামের বাবা মো. আশরাফুল বার্তা২৪.কম-কে বলেন, আমাদের টোটাল বিল আসছিল ৭ লাখ টাকা। পেমেন্ট দিয়েছি প্রায় চার লাখ টাকা। আমি কৃষি কাজ করি ও মানুষের বাড়িতে বাড়িতে কাজ করি। হাসপাতালের এই ৪ লাখ টাকা মানুষের কাছে তো ধার ও সুদের উপর এনে দিয়েছি। আর্থিকভাবে মনে হয় দশ বছরেরও আমি এই জিনিসটা পূরণ করতে পারব না। আমি সুদে যে টাকাটা নিছি প্রতিমাসে এই সুদ টানতেই আমার কষ্ট হয়ে যাবে এখন।

ভুক্তভোগী রবিউলের মা বার্তা২৪.কম-কে বলেন, আমরা যদি আর্থিক দিকে কোনো সাহায্য সহযোগিতা না পাই, তাও কোনো দুঃখ নাই। আমার ছেলেটা ১৮ দিন ধরে হসপিটালের বিছানায়। আমার ছেলের মত এরকম ঘটনা যেন আর না ঘটে এটাই আমার দাবি।

তথ্য বলছে, সাভারে কিশোর গ্যাংয়ের মূল দৌরাত্ম্য পৌরসভাজুড়ে। পিনিক রাব্বি, হৃদয় গ্রুপ, ভাই-ব্রাদার গ্রুপ বেশ সক্রিয়। নিজেদের দ্বন্দ্ব থেকে ভাগ হয়ে তৈরি হচ্ছে আরো গ্রুপ। গত দুই মাসে কিশোর গ্যাংয়ের ছিনতাই ও আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে অন্তত ৪ খুনের ঘটনা ঘটেছে। খরচ মেটাতে ছিনতাই, ডাকাতি, মাদক ব্যবসা, জমি দখল, চাঁদাবাজি, অপহরণসহ নানা সন্ত্রাসী কার্যক্রমের সাথে জড়িত এই কিশোর গ্যাং।

সাভার পৌর সভার বাসিন্দা রিফত বার্তা২৪.কম-কে বলেন, অপরাধীরা বেশিরভাগই মাদক সেবন করেন। তার জন্য তো টাকা দরকার তাদের। তারা কোনো কাজকর্ম করে না। আর এই টাকার জন্যই তারা ছিনতাই করে। কাছে কিছু না পেলে বা দিতে না চাইলেই তাকে আঘাত করে। কয়েকটি ঘটনা ঘটেছে এমন। মারাও গেছেন কয়েকজন। সরকারের কাছে আমাদের একটাই অনুরোধ, এই মাদক ও কিশোর গ্যাং নিয়ে যেন কঠোর একটা ব্যবস্থা নেয়। এদের যেন শাস্তি হয়, এগুলো যেন একবারে নির্মূল করে দেয়।

গত মার্চ মাসে র‍্যাব ও পুলিশের আলাদা অভিযানে হৃদয় গ্রুপের প্রধান গিয়ার হৃদয়সহ ৮ জন ও ভাই-ব্রাদার গ্রুপের ৪ জনসহ মোট ১২ জন গ্রেফতার করা হয়।

সাভার মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.শাহ জামান বার্তা২৪.কম-কে বলেন, কখনো যদি কোনো লোক এরকম ছিনতাইয়ের শিকার হন বা ডাকাতির শিকার হন, তাহলে তাৎক্ষণিক আমাদের কাছে রিপোর্ট করবেন। যাতে করে আমরা এই ঘটনায় যারা জড়িত, তাদের শনাক্ত করে আইনের আওতায় নিয়ে আসতে পারি। যদি এরকম কোনো ঘটনায় আপনারা রিপোর্ট না করেন, ওই অপরাধীদেরকে আমরা যদি গ্রেফতার করতে না পারি, সেক্ষেত্রে কন্টিনিউয়াস একটার পর একটা ঘটনা ঘটিয়ে যাবে। সুতরাং যে কোনো ঘটনাই ঘটুক, অবশ্যই পুলিশকে রিপোর্ট করতে হবে। পুলিশ যাতে সংশ্লিষ্ট অপরাধীকে আইনের আওতায় আনতে পারে।

;