শেষ মুহূর্তে বাংলাদেশ জাসদকে নিবন্ধন দিতে তৎপরতা
আগ্রহী দলগুলোকে নিবন্ধন অযোগ্য জানিয়ে দেওয়ার পর বাংলাদেশ জাসদ নামে একটি দলের পুনর্বিবেচনা আবেদন আমলে নিয়েছে নির্বাচন কমিশন। দলটিকে নিবন্ধন দিতে এখন মাঠ পর্যায়ের অফিস ও কমিটি তদন্ত চলছে। তবে দলটি বলছে সব কিছু ঠিক থাকার পরও নিবন্ধন না পেলে আদালতে যাবেন তারা।
সুত্র জানায়, একাদশ সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে ৭৬টি দল নিবন্ধন পেতে আবেদন করে নির্বাচন কমিশনে। সাত মাস ধরে আবেদন যাচাই-বাছাই ও প্রাথমিকভাবে টিকে থাকা দলগুলোর দলিলাদি পর্যালোচনা করে নিবন্ধন অযোগ্য বলে জানিয়ে দেওয়া হয়। কিন্তু শেষ মুহুর্তে বাংলাদেশ জাসদ নিবন্ধনযোগ্য কিনা তা পুনরায় যাচাই করা হচ্ছে।
নতুন দল নিবন্ধনের জন্য গত বছরের ৩০ অক্টোবর দলগুলোর কাছে আবেদন আহ্বান করে ইসি। ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে ৭৬টি দল আবেদন করে। নির্বাচনী রোডম্যাপ অনুযায়ী এপ্রিলের মধ্যে তা শেষ হওয়ার কথা ছিল।
নিবন্ধন পেতে দলগুলোকে কিছু শর্ত পূরণ করতে হয়। শর্তগুলো হলো- ১. দেশ স্বাধীন হওয়ার পর যে কোনো জাতীয় নির্বাচনের আগ্রহী দলটি যদি অন্তত একজন সংসদ সদস্য থাকেন; ২. যে কোনো একটি নির্বাচনে দলের প্রার্থী অংশ নেওয়া আসনগুলোয় মোট প্রদত্ত ভোটের ৫ শতাংশ পায়। ৩. দলটির যদি একটি সক্রিয় কেন্দ্রীয় কার্যালয়, দেশের কমপক্ষে এক তৃতীয়াংশ [২১টি] প্রশাসনিক জেলায় কার্যকর কমিটি এবং অন্তত ১০০টি উপজেলা/ মেট্রোপলিটন থানায় কমপক্ষে ২০০ ভোটারের সমর্থন সম্বলিত দলিল থাকে।
জাতীয় সংসদে দুজন সংসদ সদস্য থাকার পরও বাংলাদেশ জাসদকে নিবন্ধন না দিলে নির্বাচন কমিশন প্রশ্নবিদ্ধ হবে বলে হুঁশিয়ার করেছেন দলটি। হাতি অথবা আনারস প্রীক চেয়েই আবেদন করেছে দলটি।
নিবন্ধন যাচাই-বাছাই কমিটির দায়িত্বশীল ইসির উপ সচিব আব্দুল হালিম খান বলেন, যে ৭৬টি দল আবেদন করেছিল শেষ পর্যন্ত সবাইকে আমরা ‘না’ করে দিয়েছি। কিন্তু বাংলাদেশ জাসদের একটি আবেদন পুনর্বিবেচনার সিদ্ধান্ত দিয়েছে ইসি। এজন্যে মাঠ পর্যায়ে তদন্ত চলছে।
তিনি জানান, বাংলাদেশ জাসদের এটি নতুন কোনো আবেদন নয়। সংসদ সদস্য রয়েছে উল্লেখ করে একটা আবেদন নাকচ হওয়ায় জেলা-উপজেলা কমিটির তালিকা দিয়েছিল দলটি। সেই আবেদনই আমলে নেওয়া হয়েছে। আগামী ১০ দিনের মধ্যে মাঠ পর্যায়ের তদন্ত প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে উল্লেখ করেন এ কর্মকর্তা।
নিবন্ধন নিতে নতুন দলকে হয় একজন সংসদ সদস্য থাকতে হবে নতুনা জেলা-উপজেলার কমিটির তালিকা দিতে হবে।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ জাসদের সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হক প্রধান জানান, গত সপ্তাহে নিবন্ধন আবেদন আমলে নিয়ে তদন্ত করা হচ্ছে এমন চিঠি দিয়েছে ইসি। আমাদের প্রথমেই জানিয়েছিল সংসদ সদস্য থাকলেও নিবন্ধন দেওয়া হবে না। ওই চিঠি পেয়েই আমরা জেলা-উপজেলা কমিটির তালিকা দিয়ে পুনর্বিবেচনার জন্য আবেদন করি। বিশেষ কোনো ফেভার কিংবা নতুন আবেদন নয়, নির্ধারিত সময়ে আবেদন করেছি বলেই তা আমলে তদন্ত করা হচ্ছে। মাঠ পর্যায়ে ৩৭টি জেলার কমিটি ও শতাধিক উপজেলার সমর্থকদের তালিকা যাচাই শেষে নিবন্ধন পাবে বলে আশা করেন তিনি।
তিনি বলেন বলেন, আমাদের সংসদ সদস্য থাকার পরও নিবন্ধন দিল না; এখন মাঠে তদন্ত চলছে। সব কিছু ঠিক থাকার পরও নিবন্ধন না দিলে আমরা আদালতে যাব।
তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু নেতৃত্বাধীন জাসদে ভাঙনের পর আলাদাভাবে সক্রিয় রয়েছে জাসদের অন্য অংশটি। শরীফ নুরুল আম্বিয়া ও নাজমুল হক প্রধান নেতৃত্বাধীন এই অংশ বাংলাদেশ জাসদ নামে নিবন্ধন চাইছে।
