নেপালে লাশের অপেক্ষায় স্বজনেরা



সেন্ট্রাল ডেস্ক ৪

  • Font increase
  • Font Decrease
নেপালে মহারাজগঞ্জ মেডিকেল ক্যাম্পাসের টিচিং হাসপাতালের মর্গের সামনে সকাল থেকে বসে আছেন বাসিমাহ সাইফুল্লাহ। ইউএস-বাংলার দুর্ঘটনাকবলিত উড়োজাহাজের কেবিন ক্রু ছিলেন তাঁর ভাই খাজা হোসেন মোহাম্মদ শফি। দুর্ঘটনার তিন দিন পরও তিনি ভাইয়ের লাশটি দেখতে পাননি। আক্ষেপ করে বললেন, ‘লাশ কবে দেশে নিয়ে যাব, সেটা জানার আগে লাশটি তো দেখব। তারও অনুমতি পাচ্ছি না।’ এটুকু বলতেই গলা ধরে আসে তাঁর। শুধু বাসিমাহ নন, তাঁর মতো লাশের অপেক্ষায় বসে আছেন অন্য সব বাংলাদেশি, নেপালি, চীনের নিহত ব্যক্তির স্বজনেরা। নিহত ৫১ জনের কারও লাশই মর্গে আনার পর স্বজনদের দেখতে দেওয়া হয়নি। ময়নাতদন্ত শেষ না হলে কোনো লাশ দেখতে দেওয়া হবে না বলে জানিয়েছেন টিচিং হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগের প্রধান প্রমোদ শ্রেষ্ঠা। টিচিং হাসপাতালের মর্গের সামনে এখন স্বজনদের ভিড়। কীভাবে লাশ নিয়ে যাবেন, তা নিয়ে চিন্তিত সবাই। এর আগে তাঁরা মৃতদেহ দেখতে চান। ইউএস-বাংলার কাঠমান্ডু অফিসে কাজ করতেন হরি শঙ্কর পাওয়াল। বিমান বিধ্বস্ত হওয়ার ঘটনায় তিনি নিহত হন। তাঁর ভাই হরিচরণ পাওয়াল মর্গের সামনে বসে আছেন প্ল্যাকার্ড হাতে। ভাইয়ের মৃতদেহ নিতে চান। বাংলাদেশের রানা অটোমোবাইলের কাস্টমার কেয়ার প্রধান মাহমদুর রহমান, আরেক কর্মকর্তা মতিউর রহমান ও নুরুজ্জামান বাবুর মৃতদেহ নিতে এসেছেন প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তা সৌরভ আহমেদ। মর্গের সামনে মন খারাপ করে তিনি বসে ছিলেন। উড়োজাহাজটির কো-পাইলট পৃথুলা রশীদের নানা এ মান্নান দুই দিন ধরে কাঠমান্ডুতে। তিনিও আছেন লাশের অপেক্ষায়। নিহত উম্মে সালমার স্বামী ঢাকায় ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকোর কর্মকর্তা মর্গের সামনে দাঁড়িয়ে শুধু চোখের জল ফেলছেন। সিলেটের রাগিব-রাবেয়া মেডিকেলের নেপালি ছাত্রী সোয়েতা থাপার মা উর্মিলা প্রধান মেয়ের ছবি হাতে ধরে মর্গের সামনে বসে আছেন। সাংবাদিকদের বলেন, উড়োজাহাজটি যখন নামে, তখন তিনি বিমানবন্দরে ছিলেন। দেখছেন বিমান নামছে, মেয়ে নেমে আসবেন। হঠাৎ দেখেন বিমানে আগুন। আরও বলেন, ‘চোখের সামনে দেখলাম পুরো বিমানটি জ্বলছে।’ দুর্ঘটনায় নিহত একমাত্র চীনা নাগরিকের এক সহকর্মীও মর্গের সামনে দাঁড়িয়ে ছিলেন। তিনিও জানেন না কবে লাশ পাবেন। এদিকে বিমান দুর্ঘটনায় আহত ২০ জনের মধ্যে ৪ জনের অবস্থা আরও খারাপ হয়েছে। একজনকে কৃত্রিম উপায়ে বাঁচিয়ে রাখা হয়েছে। গুরুতর আহত ব্যক্তিদের মধ্য একজন বাংলাদেশিও রয়েছেন। বিমান বিধ্বস্ত হওয়ার ঘটনায় বাংলাদেশ, নেপাল ও উড়োজাহাজের নির্মাতা প্রতিষ্ঠান বোম্বাডেয়ার যৌথভাবে তদন্ত শুরু করেছে। বোম্বাডেয়ারের প্রতিনিধি গতকাল বুধবার বাংলাদেশ ও নেপাল তদন্ত দলের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। নেপাল সরকার এ ঘটনায় ছয় সদস্যের কমিটি গঠন করেছে। পরিস্থিতি নিয়ে নেপালে সফররত বাংলাদেশের বিমানমন্ত্রী এ কে এম শাহজাহান কামাল গতকাল নেপালের প্রধানমন্ত্রী কে পি শর্মা, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাম বাহাদুর থাপা ও সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল রাজেন্দ্র ছত্রীর সঙ্গে পৃথক বৈঠক করেছেন। সোমবার কাঠমান্ডুর ত্রিভুবন বিমানবন্দরে ইউএস-বাংলার ড্যাস ৮ কিউ ৪০০ উড়োজাহাজ বিধ্বস্ত হওয়ার ঘটনায় ৪ ক্রুসহ বিমানের ৭১ জনের সবাই হতাহত হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে ২৬ বাংলাদেশি, ২৪ নেপালি ও ১ চীনাসহ ৫১ জন নিহত হয়েছেন। আর ১০ বাংলাদেশি, ৯ নেপালি, ১ মালদ্বীপের নাগরিকসহ ২০ জন আহত হন। আহত চিকিৎসক রেজওয়ানুল হককে গতকালই উন্নত চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুর নেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া, আহত শাহরিন আহমেদ ঢাকায় ফিরে এসেছেন। ফলে এখন বাংলাদেশি আহত ৮ জন রইলেন নেপালে। কবে লাশ দেওয়া হবে টিচিং হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগের প্রধান প্রমোদ চেস্টা বলেন, তাঁদের কাছে ৫১টি মৃতদেহ আছে। ১০ জনকে দেখে চেনা সম্ভব। অন্য ৪১ জনের শরীর এতটাই পুড়ে গেছে যে তাঁদের কোনোভাবেই চেনা সম্ভব নয়। নিহত সবার পরিবারের কাছে একটি করে ফরম দেওয়া হয়েছে। তাঁদের বলা হয়েছে, নিহত ব্যক্তির শরীরে চেনার সম্ভাব্য যত চিহ্ন আছে, তা যেন উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, সবার ময়নাতদন্ত শেষ হলে তাঁদের পরিবারের সঙ্গে কথা বলে চেনার চেষ্টা করা হবে। যাঁদের চেনা যাবে, তাঁদের লাশ পরিবার বা দূতাবাসের কাছে দেওয়া হবে। আর যাঁদের চেনা যাবে না, তাঁদের ডিএনএ পরীক্ষা করা হবে। এ কাজে কত দিন লাগবে তা তিনি জানেন না। তবে বাংলাদেশের বিমান ও পর্যটনমন্ত্রী এ কে এম শাহজাহান কামাল গতকাল দুপুরে এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে বলেন, বাংলাদেশি নিহত ২৬ জনের মধ্যে ৮ জনের চেহারা চেনা সম্ভব। অন্যদের চেনা সম্ভব নয়। যাঁদের চেহারা চেনা যাবে, ময়নাতদন্তের পর তাঁদের লাশ দূতাবাসের কাছে দেওয়া হবে। আর যাঁদের চেনা সম্ভব নয়, তাঁদের ডিএনএ প্রোফাইল করা হবে। এ কাজের জন্য আজ ঢাকা থেকে একটি দল পাঠানো হবে। এতে বার্ন ইউনিট ও ডিএনএস বিশেষজ্ঞ থাকবেন। ডিএনএর মাধ্যমে পরিচয় নিশ্চিত হওয়ার পরই লাশ দেওয়া হবে। এতে ১০ থেকে ১৫ দিন সময় লাগতে পারে। তবে ময়নাতদন্ত তিন দিনের মধ্যে শেষ হবে বলে তিনি জানান। নেপালের সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল রাজেন্দ্র ছত্রী গতকাল সকালে বিমানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের বলেন, যত দ্রুত সম্ভব লাশ পাঠানোর ব্যবস্থা করা হবে। নেপাল সেনাবাহিনী এ কাজে সহায়তা করবে বলে তিনি জানান। নেপালে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মাশফি বিনতে শামস গতকাল বিকেলে নিজের কার্যালয়ে সাংবাদিকদের বলেন, স্বজনেরা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে আবেদন করবেন। পরিচয় নিশ্চিত হওয়ার পর মৃতদেহ দেওয়া হবে। এ সময় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দক্ষিণ এশিয়া বিভাগের মহাপরিচালক মনোয়ার হোসেন উপস্থিত ছিলেন। বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হওয়া চারজনের অবস্থা খুবই গুরুতর। তাঁদের মধ্যে এমরানা কবির হাসির অবস্থা গুরুতর। তাঁর শরীরের ৭০ শতাংশ পুড়ে গেছে। কাঠমান্ডু মেডিকেলে তিনি চিকিৎসাধীন আছেন। হাসির স্বামী রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক রকিবুল হাসান ঘটনাস্থলেই মারা যান। আশরাফ উদ্দিন নামে হাসির এর স্বজন বলেন, ‘জানি না কী হবে।’ হাসির পাশে পাশাপাশি রাখা হয়েছে রাগিব-রাবেয়া মেডিকেলের ছাত্রী প্রিন্সি ধামি। তাঁকে ভেন্টিলেটরে রাখা হয়েছে বলে চিকিৎসকেরা জানান। গ্র্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল হাসপাতালের চিকিৎসক রাজ চক্র পান্ডে বলেন, তাঁর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন দুজনের অবস্থা গুরুতর। আহত কবির হোসেনের ছেলে হেলাল ইবনে কবির বলেন, তাঁর বাবা পা নাড়াতে পারছেন না। বিভিন্ন হাসপাতাল সূত্র জানিয়েছে, এসব হাসপাতাল থেকে চারজনকে অন্য দেশে নিয়ে যাওয়ার প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। নেপাল সরকারে ছয় সদস্যের কমিটি এ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। এই দলে বাংলাদেশ ও বোম্বাডেয়ারের প্রতিনিধি আছেন বলে নেপালের পর্যটন মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব সুরেশ আচারিয়া জানান। বোম্বাডেয়ারের দুই সদস্য গতকাল নেপালে এসেছেন। গতকাল তাঁরা বাংলাদেশের বিমানমন্ত্রীর সঙ্গে হোটেলে বৈঠক করেছেন। বাংলাদেশের পক্ষে সিভিল অ্যাভিয়েশনের সদস্য (অপারেশন) এয়ার কমোডর মোস্তাফিজুর রহমান ও পরামর্শক ক্যাপ্টেন সালাউদ্দিন এম রহমতুল্লাহ যুক্ত আছেন। তদন্তের ব্যাপারে তাঁরা কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। তবে বিমানমন্ত্রী বলেন, নেপালের প্রধানমন্ত্রী কে পি শর্মার সঙ্গে বৈঠকে তিনি সাত দিনের মধ্যে তদন্ত শেষ করার অনুরোধ করেছেন। নেপাল বিমানবন্দরের নিয়ন্ত্রণকক্ষের ভুলের কারণে দুর্ঘটনা হয়েছে কি না, জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, আগে তদন্ত হোক, তারপর সব বলা যাবে।    
   

নির্বাচনে অনিয়ম হলে সিদ্ধান্ত নিতে কুণ্ঠাবোধ করব না: ইসি আনিছুর



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, চট্টগ্রাম
নির্বাচনে কোনো ধরনের অনিয়ম গ্রহণযোগ্য হবে না: ইসি আনিছুর

নির্বাচনে কোনো ধরনের অনিয়ম গ্রহণযোগ্য হবে না: ইসি আনিছুর

  • Font increase
  • Font Decrease

নির্বাচন কমিশনার (ইসি) মো. আনিছুর রহমান বলেন, আমরা এবারও ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচন চলাকালীন সময়ে কোনো রকমের সিদ্ধান্ত নিতে কুণ্ঠাবোধ করব না। আমাদের একটাই চাওয়া-নির্বাচনকে সুন্দর করতে হবে। কোনও অনিয়ম হবে, কারচুপি বা যেখানেই অন্যায় কার্যক্রম হবে সেখানে প্রিজাইডিং অফিসার ব্যবস্থা নিতে পারবেন।  

বুধবার (২৪ এপ্রিল) সকালে চট্টগ্রাম নগরের পিটিআই ভবনে ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচন নিয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসহ মাঠ প্রশাসনের কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, আসন্ন উপজেলা পরিষদ সাধারণ নির্বাচনে নয়টি জেলার প্রতিটি উপজেলায় ইভিএম’র মাধ্যমে এবং বাকি জেলাগুলোতে ব্যালট পেপারের মাধ্যমে নির্বাচন সম্পন্ন হবে। এ নির্বাচনে কোনো ধরনের অনিয়ম গ্রহণযোগ্য হবে না।

আনিছুর রহমান বলেন, গত নির্বাচন একই দিনে সম্পন্ন হলেও এবারের নির্বাচনে ব্যবস্থাপনার সুবিধা ও কৃচ্ছতাসাধনের লক্ষ্যে চার ভাগে নির্বাচন শেষ করার প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। ৮ মে ১৫০টি উপজেলায় প্রথম পর্যায়ে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। বাকি জেলাগুলোতে ২১ মে, ২৯ মে ও ৫ জুন নির্বাচন হওয়ার কথা রয়েছে। তবে বান্দরবান জেলার তিনটি উপজেলায় নির্বাচন স্থগিত রাখা হয়েছে। দুর্গম, পাহাড়ি ও দ্বীপ এলাকাগুলোতে স্থানীয় প্রশাসনের সহযোগিতায় ভোটের আগের দিন নির্বাচনী সরঞ্জাম পৌঁছে দেয়া হবে এবং বাকি জেলাগুলোতে ভোটের দিন সকাল ৮টার আগে ব্যালট পেপার পৌঁছে দেয়া হবে এবং বিকেল ৪টায় ভোট গ্রহণ শেষ হবে।

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে চট্টগ্রাম-১৬ (বাঁশখালী) আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী মোস্তাফিজুর রহমানের শেষ মুহূর্তে প্রার্থিতা বাতিলের বিষয়টি উল্লেখ করে তিনি বলেন, বাংলাদেশের ৫৩ বছরের ইতিহাসে এভাবে কখনো প্রার্থিতা বাতিল হয়নি। ওইদিন ভোটগ্রহণ শেষ হওয়ার ১৫ মিনিট আগে তার প্রার্থিতা বাতিল হয়েছে। বাতিল করার মতো যথেষ্ট উপাদান ছিল। আওয়ামী লীগের প্রার্থী মুস্তাফিজুর রহমানকে সপ্তাহখানেক আগে থেকে নজরদারি করা হচ্ছিল। যখন তিনি থানায় ঢুকে পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে মারধর করছেন, সার্কেল এসপিও তাকে নিবৃত্ত করতে পারছেন না, এরপর আর বসে থাকা যায়নি। তখনই আমরা প্রার্থিতা বাতিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছি।

তিনি আরও বলেন, আপনারা ভোটের দিন যে যেখানে থাকবেন, আইনের স্বপক্ষে সর্বময় ক্ষমতা প্রয়োগ করবেন। এতে যদি কোনো রকমের বিপদগ্রস্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে, আমরা আপনাদের পাশে আছি।

বিভাগীয় কমিশনার মো. তোফায়েল আহমেদের সভাপতিত্বে মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন সিএমপি কমিশনার কৃষ্ণ পদ রায়, চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি নুরে আলম মিনা, বিজিবি’র রিজিওনাল কমান্ডার মো. আজিজুর রহমান, ডিজিএফআই চট্টগ্রাম শাখার অধিনায়ক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল তোফায়েল মোস্তফা সরওয়ার ও জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান, পুলিশ সুপার এস. এম. শফিউল্লাহ, সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং কর্মকর্তা, সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তাসহ আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা মো. ইউনুচ আলী ও জেলার অন্যান্য কর্মকর্তারা।

;

চট্টগ্রামে সাংবাদিকের ওপর হামলা, যুবলীগ নেতা কারাগারে



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, চট্টগ্রাম
চট্টগ্রামে সাংবাদিকের ওপর হামলা, যুবলীগ নেতা কারাগারে

চট্টগ্রামে সাংবাদিকের ওপর হামলা, যুবলীগ নেতা কারাগারে

  • Font increase
  • Font Decrease

চট্টগ্রাম নগরীর ডবলমুরিয় থানার মনসুরাবাদ দু'পক্ষের সংঘর্ষের ভিডিও ধারণ করতে গিয়ে বেসরকারি টিভি চ্যানেল-২৪ এর সংবাদ কর্মী সেলিম উল্লাহর ওপর হামলা মামলার প্রধান আসামি যুবলীগ নেতা মো. সাদ্দাম হোসেনকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত।

বুধবার (২৪ এপ্রিল) চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট কাজী শরিফুল ইসলামের আদালত এই আদেশ দেন।

হামলায় আহত সেলিম উল্লাহ, চ্যানেল টোয়েন্টিফোরের চট্টগ্রাম অফিসের স্টাফ ক্যামেরাপারসন। এর আগে গত ২১ এপ্রিল রাতে নগরের ডবলমুরিং থানার মনসুরাবাদে এ ঘটনার পর পুলিশ ৭ জনকে গ্রেফতার করে। পরদিন ২২ এপ্রিল বিকেলে আদালতে হাজিরের পর তারা জামিন পেয়েছেন বলে জানা গেছে।

হামলার পর সাদ্দাম হোসেনসহ ৮ জনের নাম উল্লেখ করে নগরের ডবলমুরিং থানায় মামলা করেন আহত সাংবাদিক সেলিম।

মামলার বাদী পক্ষের আইনজীবী চট্টগ্রাম জেলা পিপি অ্যাডভোকেট শেখ ইফতেখার সাইমুল চৌধুরী বলেন, মনসুরাবাদ এলাকায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দু’পক্ষের সংঘর্ষের ভিডিও ধারণ করতে গিয়ে সংবাদকর্মীর ওপর হামলা মামলার আসামি মো. সাদ্দাম হোসেন আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করেন। আদালত শুনানি শেষে জামিন আবেদন না মঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন

হামলায় আহত সেলিমের ভাষ্য, গত রোববার রাত সাড়ে ১০টার দিকে অফিস থেকে বাসায় ফেরার পথে মনসুরাবাদে সংঘর্ষের মুখে পড়েন সেলিম। এ সময় তিনি সংবাদ সংগ্রহের উদ্দেশে ভিডিও ধারণ শুরু করেন। তা দেখে ঘটনাস্থলে থাকা সাদ্দাম ও তার অনুসারীরা তাকে মারধর শুরু করেন। একপর্যায়ে তাকে ছুরিকাঘাতে হত্যার চেষ্টাও করেন। স্থানীয়রা এগিয়ে গেলে হামলাকারীরা পিছু হটে। হামলায় চোখে ও পায়ের লিগামেন্টে মারাত্মক জখম হয়েছে বলে সেলিম জানান।

এদিকে পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে সাংবাদিক সেলিম উল্লাহর ওপর সন্ত্রাসী হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়ন (সিইউজে)। বুধবার প্রতিবাদ সমাবেশ থেকে হামলায় জড়িত সন্ত্রাসীদের গ্রেফতার করে দ্রুত বিচারের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন।

;

বাংলাদেশ-মরিশাসের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য বিষয়ে আলোচনা



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
বাংলাদেশ-মরিশাসের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য বিষয়ে আলোচনা

বাংলাদেশ-মরিশাসের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য বিষয়ে আলোচনা

  • Font increase
  • Font Decrease

মরিশাসের পররাষ্ট্র, আঞ্চলিক সংহতি ও আন্তর্জাতিক বাণিজ্য বিষয়ক মন্ত্রী মনিশ গোবিনের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করেছেন বাংলাদেশ সরকারের তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত।

বুধবার (২৪ এপ্রিল) মরিশাসের স্থানীয় সময় সকালে সে দেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।

বৈঠকে বাংলাদেশ ও মরিশাসের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বিষয়ে মরিশাসের পররাষ্ট্র মন্ত্রীর সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা করেন বাংলাদেশের তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী। এ সময় বাংলাদেশের বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে বিনিয়োগের জন্য মরিশাসের পররাষ্ট্র মন্ত্রীর প্রতি আহ্বান জানান তথ্য প্রতিমন্ত্রী।

নৃতাত্ত্বিক ও সাংস্কৃতিক দিক থেকে বাংলাদেশ ও মরিশাসের মধ্যে অনেক মিল রয়েছে উল্লেখ করে দুই দেশের সম্পর্ককে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করেন মর্মে মরিশাসের পররাষ্ট্র মন্ত্রীকে অবহিত করেন তথ্য প্রতিমন্ত্রী।

বৈঠকে তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী বাংলাদেশ থেকে মরিশাসে আরও বেশি শ্রমিক ও পেশাজীবীদের নিয়োগ দেওয়ার ব্যাপারে সে দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করেন। এছাড়া মরিশাসে কর্মরত বাংলাদেশী শ্রমিকরা যাতে দ্রুত দেশে রেমিটেন্স পাঠাতে পারে সে ব্যাপারে মরিশাস সরকারের সহযোগিতা কামনা করেন বাংলাদেশের তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী।

যেহেতু মরিশাস আফ্রিকা মহাদেশের প্রবেশদ্বার তাই মরিশাসে বাংলাদেশের বিনিয়োগের মাধ্যমে আফ্রিকা মহাদেশে বাংলাদেশি বিনিয়োগ বৃদ্ধির সম্ভাবনার কথা বৈঠকে তুলে ধরেন তথ্য প্রতিমন্ত্রী।

বৈঠক শেষে মরিশাসের পররাষ্ট্র মন্ত্রী মনিশ গোবিনকে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানান বাংলাদেশের তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী।

উল্লেখ্য, পশ্চিম ভারত মহাসাগর অঞ্চলে মাদক পাচার এবং মাদকদ্রব্যের অপব্যবহার নিয়ে প্রথম মন্ত্রী পর্যায়ের সম্মেলনে অংশগ্রহণের জন্য বর্তমানে মরিশাস অবস্থান করছেন বাংলাদেশ সরকারের তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত।

;

কোলোরেক্টাল ক্যান্সার সচেতনতা ফোরামের আয়োজন করেছে এভারকেয়ার হসপিটাল



নিউজ ডেস্ক
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

সম্প্রতি কোলোরেক্টাল ক্যান্সার সম্পর্কে সচেতনতা বাড়াতে একটি বিশেষ পেশেন্ট ফোরামের আয়োজন করেছে বাংলাদেশের প্রথম জেসিআই-স্বীকৃত হাসপাতাল এভারকেয়ার হসপিটাল ঢাকা।

প্রতিবছর বিশ্বব্যাপী ক্যান্সারজনিত মৃত্যুর অন্যতম প্রধান কারণ হলো এই কোলোরেক্টাল ক্যান্সার। আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে গ্যাস্ট্রোএন্টেরোলজি বিভাগের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক, হাসপাতালটির পরিচালনা পর্ষদের সদস্যগণ এবং ক্যান্সারের সাথে লড়াকু সাহসী রোগীরা তাদের নিজেদের অনুপ্রেরণামূলক গল্পগুলো সকলের সামনে উপস্থাপন করেন। এছাড়াও, বিশেষজ্ঞরা কোলোরেক্টাল ক্যান্সারের সাথে সম্পর্কিত ঝুঁকির কারণ, স্ক্রীনিং নির্দেশিকা এবং চিকিৎসা পদ্ধতির উপর বিশেষ জোর প্রদান করেন।

গ্যাস্ট্রোএন্টারোলজি এবং হেপাটোলজি বিভাগের কোঅর্ডিনেটর এবং সিনিয়র কনসালটেন্ট ডাঃ লুৎফুল এল. চৌধুরী নিয়মিত স্ক্রিনিংয়ের পাশাপাশি স্বাস্থ্যকর লাইফস্টাইল বজায় রাখার বিষয়ে জোর দেন। তিনি বলেন, “একজন গ্যাস্ট্রোএন্টেরোলজিস্ট হিসেবে আমরা কোলোরেক্টাল ক্যান্সার প্রতিরোধ ও ব্যবস্থাপনা উভয় ক্ষেত্রেই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করি। নিয়মিত স্ক্রিনিংয়ের মাধ্যমে ক্যান্সার ভয়াবহ আকার ধারণের আগেই তা সনাক্ত ও প্রতিরোধ করা সম্ভব। আমি মনে করি, ক্যান্সারের বিরুদ্ধে লড়াইতে সচেতনতা সবচেয়ে বড় হাতিয়ার। আমাদের উচিৎ ক্যান্সার নিয়ে উদ্বিগ্ন না হয়ে সচেতন হওয়া এবং নিয়মিত স্ক্রিনিং ও স্বাস্থ্যসম্মত লাইফস্টাইল বজায় রাখা। আমাদের মনে রাখা উচিত যে উপযুক্ত জ্ঞান হলো প্রতিরোধের অন্যতম ভিত্তি।”

মেডিকেল অনকোলজির কোঅর্ডিনেটর ও সিনিয়র কনসালটেন্ট ডাঃ ফেরদৌস শাহরিয়ার সাইদ বলেন, “কোলোরেক্টাল ক্যান্সার মোকাবেলায় রোগীদের সার্বিক সহযোগীতার পাশাপাশি যথাযোগ্য চিকিৎসার ধাপগুলো নিশ্চিত করতে আমরা স্বচেষ্ট। তবে সাধারণ মানুষকেও নিজ নিজ অবস্থান থেকে রোগ সম্পর্কে সচেতন হতে হবে।”

জেনারেল অ্যান্ড ল্যাপ সার্জারির সিনিয়র কনসালটেন্ট ডাঃ মোহাম্মদ ফরিদ হোসেন বলেন, “কোলোরেক্টাল ক্যান্সারের স্বাস্থ্যঝুঁকি থেকে রোগীর জীবন বাঁচাতে সময়মত পদক্ষেপ ও উন্নত অস্ত্রোপচারের কৌশলগুলো গ্রহণ করা অতীব গুরুত্বপূর্ণ। ।”

এভারকেয়ার হসপিটাল, বাংলাদেশের সিইও ও এমডি ডাঃ রত্নদীপ চাষ্কার বলেন, “এভারকেয়ার হসপিটালের মূল লক্ষ্য স্বাস্থ্যজ্ঞান ও স্বাস্থ্যসেবা প্রদানের মাধ্যমে সমাজের কল্যাণে ভূমিকা রাখা। আমাদের দক্ষ স্বাস্থ্যকর্মী ও বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকমন্ডলী গুরুতর স্বাস্থ্য ঝুঁকিগুলো চিহ্নিতকরণ, সচেতনতা বৃদ্ধি এবং কোলোরেক্টাল ক্যান্সারে আক্রান্ত রোগীদের সর্বোত্তম সেবা নিশ্চিতে কাজ করে যাচ্ছে ।”

এভারকেয়ার হসপিটাল, বাংলাদেশের মেডিকেল সার্ভিসেসের পরিচালক ডাঃ আরিফ মাহমুদ বলেন, “কোলোরেক্টাল ক্যান্সারের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে উন্নত স্বাস্থ্যসেবার প্রচার এবং বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের পারস্পরিক সহযোগিতা বৃদ্ধি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। প্রতিটি রোগীকে উন্নত স্বাস্থ্যসেবা প্রদান ও সহায়তায় এভারকেয়ার হসপিটাল সর্বদা স্বচেষ্ট।”

আয়োজিত এই পেশেন্ট ফোরামে বিশেষজ্ঞরা কোলোরেক্টাল ক্যান্সারে আক্রান্ত ব্যক্তিদের সাথে প্রতিরোধ ও প্রতিকারের পদ্ধতিগুলো সম্পর্কে মতবিনিময় করেন। দেশের প্রথম জয়েন্ট কমিশন ইন্টারন্যাশনাল (জেসিআই) স্বীকৃতি পাওয়া এভারকেয়ার হসপিটালের জনস্বাস্থ্যের উন্নয়নে অঙ্গীকারগুলোসহ ক্যান্সার মোকাবেলায় দক্ষতা ও রোগীদের স্বাস্থ্য উন্নতি প্রদর্শনে এই ফোরামটি বিশেষ ভূমিকা পালন করে।

অনুষ্ঠানটিতে আরও উপস্থিত ছিলেন এভারকেয়ার হসপিটাল ঢাকার গ্যাস্ট্রোএন্টারোলজি ও হেপাটোলজি বিভাগের সিনিয়র কনসালটেন্ট ডাঃ ইকবাল মুর্শেদ কবির ও সিনিয়র কনসালটেন্ট প্রফেসর ডাঃ শায়লা পারভীন, এভারকেয়ার হসপিটাল, বাংলাদেশের সিইও ও এমডি ডাঃ রত্নদীপ চাষ্কার, মেডিকেল সার্ভিসেস বিভাগের ডিরেক্টর ডাঃ আরিফ মাহমুদ, চিফ মার্কেটিং অফিসার ভিনয় কাউল- সহ অন্যান্য কর্মকর্তাবৃন্দ। গ্যাস্ট্রোএন্টেরোলজি বিভাগের বিশেষজ্ঞ এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন কয়েকজন ক্যান্সার-সারভাইভার, যারা তাদের অভিজ্ঞতা ও অনুপ্রেরণামূলক গল্পগুলো সবার সাথে শেয়ার করেন।

;