‘মরার আগে একপোয়া জমি কিননের খুব ইচ্ছা’



রাকিবুল ইসলাম রাকিব, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, গৌরীপুর (ময়মনসিংহ), বার্তা২৪.কম 
বৃদ্ধা আমেনা খাতুন। ছবি: বার্তা২৪.কম

বৃদ্ধা আমেনা খাতুন। ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

‘আমার তো জামাই নাই। একটা ছ্যাড়া আছিন, হেইডাও মইর‌্যা গেছে। তয় তিনডা মাইয়্যা আছিন, হ্যাগোর বিয়া অইয়্যা গেছে। অহন ঘরে বইয়্যা থাকলে আমারে খাওয়াইবো কেডা? হেরলেইগ্যা ঘুইর‌্যা ঘুইর‌্যা ভিক্ষা করি। খিদা লাগলে পেডেতে কিছুতো দেওন লাগে।’

বার্তা২৪.কমের সঙ্গে একান্ত সাক্ষাৎকারে কথাগুলো বলছিলেন বয়সের ভারে ন্যুব্জ হয়ে পড়া ষাটোর্ধ্ব বৃদ্ধা আমেনা খাতুন।

আমেনা খাতুনের বাড়ি গৌরীপুর উপজেলার সদর ইউনিয়নের হিম্মতনগর গ্রামে। ওই গ্রামের খোকন মিয়ার বাড়িতে থাকেন তিনি। তার বাবার নাম হানিফ মিয়া। মা জিলুমা বেগম।

বুধবার (১৬ জানুয়ারি) বিকেলে আমেনা খাতুনের দেখা মিলে গৌরীপুর পৌর শহরের ধানমহাল এলাকায়। পলিথিনের একটি ব্যাগ ও পুঁটলি নিয়ে ধীরে ধীরে হেঁটে চলছিলেন তিনি। হাতে ইশারা দিয়ে ডাক দিতেই আমেনা বলেন, ‘ভিক্ষা লাগদোনা (লাগবে না)। মইসিংয়ের (ময়মনসিংহ) বাস থেইক্যা নামনের পরে মাথাডা কিরম করতাছে, অহন একটু বইবার দেন।’

স্থানীয় একটি দোকান থেকে চেয়ার এনে আমেনার বসার ব্যবস্থা করা হয়। কিছুক্ষণ বিশ্রামের পড় অনেকটাই স্বাভাবিক হয়ে ওঠেন তিনি। কথাবার্তায় ফিরে আসে তার প্রাণচাঞ্চল্য।

আমেনা বলেন, ‘সংগ্রামের পর লগের গেরামের তালেব মিয়ার সঙ্গে আমার বিয়া অয়। সংসারে আহে তিন মাইয়্যা ও একটা পোলা। আমরা জামাই-বউ মাইনষ্যের বাড়ি কাম কইর‌্যা সংসার চালাইতাম। অভাব থাকলেও সংসারডাত সুখ আছিন। এরমইধ্যে একদিন জামাই মইর‌্যা গেল। হেরপর মইর‌্যা যায় আমার ছ্যাড়া আজিবুলডা। পরে কত কষ্ট কইর‌্যা তিনডা মাইয়্যারে বিয়া দিছি। অ্যাহন আমার তো বয়স অইছে, তাই কেউ কাইজ-কামে নেয় না। হের লইগ্যা পেডের দায়ে মইসিং শহরে ভিক্ষা করি।’

জানা গেছে, প্রতিদিন সকালে হিম্মতনগর গ্রাম থেকে চার মাইল পথ পায়ে হেঁটে উপজেলা শহরে আসেন আমেনা। এরপর ১৫ টাকা রিকশা ভাড়া দিয়ে বাসস্ট্যান্ড পৌঁছে ২৫ টাকা টিকিটে বাসযোগে ময়মনসিংহ শহরে যান। সেখানে ঘুরে ঘুরে ভিক্ষা করে প্রতিদিন তার আয় হয় ৪ থেকে ৫শ টাকার মতো। এরপর তিনি সন্ধ্যায় আবার বাসযোগে গৌরীপুর এসে পায়ে হেঁটে বাড়িতে যান।

কথা প্রসঙ্গে আমেনা খাতুন জানান, বয়সের ভারে ঠিকমতো চলতে পারেন না তিনি। তবুও তিনি পান না কোনো সরকারি ভাতা। স্থানীয় এক মেম্বার তার নামে ভাতার কার্ড দেয়ার আশ্বাস দিলেও টাকা দিতে না পারায় সেটা পাওয়া হয়নি। নিজের নামে জমি না থাকায় সরকারি ঘরের সুবিধা থেকেও বঞ্চিত তিনি। তবে এতো কিছুর পরেও দমে যাওয়ার পাত্র নন আমেনা। এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে ও নিজের জমানো কিছু টাকা দিয়ে ছোট্ট একটা ঘর তুলেছেন খোকনের জমিতে। এখন তার স্বপ্ন একখণ্ড জমি কেনার।

এরই মাঝে বিকেলের সূর্য পশ্চিমে হেলেছে। সড়কে জ্বলে উঠেছে নগর বাতি। এমন সময় আগমন ঘটে স্থানীয় স্কুল শিক্ষক রায়হান উদ্দিনের। আমেনাকে দেখেই তিনি বলে ওঠেন, চাচি আপনার শরীর কেমন? জবাবে আমেনা বলেন, ‘শইল্যো আমার অসুখ-বিসুখে ভরা। কোমবালা যে মইর‌্যা যাই। দোয়া কইরো ভাই একপোয়া (আড়াই শতক) জমি কিইন্যা সেখানে একটা ঘর তুইল্যা যেন মরতাম পারি।’

কথার রেশ টেনে স্কুল শিক্ষক বলেন, ‘জমি কিনতে তো অনেক টাকা লাগে।’ মৃদু হেসে আমেনা বলেন, ‘একপোয়া জমির দর এক লাখ টেকা। আমি টেকা জমাইতাছি। মরার আগে আমার জমিডা কিননের খুব ইচ্ছা। অহন উইঠ্যা পড়ি, বেইল যাইতাছেগা।’

   

গড়াই নদীতে ডুবে যুবকের মৃত্যু



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, কুষ্টিয়া
ছবি প্রতীকী

ছবি প্রতীকী

  • Font increase
  • Font Decrease

কুষ্টিয়ার খোকসায় গড়াই নদীতে ডুবে সুমন (২০) নামে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে।

রোববার (৫ এপ্রিল) বিকেলে খোকসা উপজেলার গনেশপুর অংশে গড়াই নদী থেকে মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

মৃত সুমন কুমারখালী উপজেলার রাজাপুর গ্রামের নিজাম উদ্দিনের ছেলে।

খোকসা ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের ফায়ারম্যান হাবিবুর রহমান জানান, সকালের দিকে গড়াই নদীতে মাছ ধরতে যান সুমন। মাছ ধরার এক পর্যায়ে নদীতে ডুবে যান তিনি। বিকেলের দিকে স্থানীয়দের সহায়তায় তার মরদেহ উদ্ধার করে ফায়ার সার্ভিস।

;

কুমিল্লার নাঙ্গলকোটে বজ্রপাতে কিশোরের মৃত্যু



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, কুমিল্লা
প্রতীকী ছবি

প্রতীকী ছবি

  • Font increase
  • Font Decrease

কুমিল্লার নাঙ্গলকোটে ফুটবল খেলার সময় বজ্রপাতে সাফায়েত হোসেন (১৯) নামে একজনের মৃত্যু হয়েছে। এ সময় সালাউদ্দিন (২২) নামের আরেক যুবক গুরুতর আহত হন।

রোববার (৫ এপ্রিল) এই বিকেলে এই ঘটনা ঘটে। তাদের উদ্ধার করে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে লাকসামের একটি ক্লিনিকে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক ওই কিশোরকে মৃত ঘোষণা করেন।

স্থানীয় সূত্র জানায়, উপজেলার আদ্রা দক্ষিণ ইউনিয়নের আটিয়াবাড়ি দক্ষিণপাড়া স্কুল বাড়ির আবদুল আউয়ালের ছেলে সাফায়াত হোসেন এদিন বিকেলে সহপাঠীদের সাথে পার্শ্ববর্তী ঘোড়াময়দান গ্রামের একটি মাঠে ফুটবল খেলতে যায়। বিকাল ৫টার দিকে খেলা চলা অবস্থায় আকস্মিক বজ্রপাতে সাফায়েতের পুরো শরীর ঝলসে যায়। তাৎক্ষনিকভাবে তাকে উদ্ধার করে লাকসামের একটি ক্লিনিকে নেয়া হলে সন্ধ্যায় কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

এছাড়া বজ্রপাতে ওই ঘোড়াময়দান গ্রামের নুরুল হকের ছেলে সালাউদ্দিন (২২) গুরুতর আহত হয়ে স্থানীয় একটি ক্লিনিকে চিকিৎসাধীন রয়েছে।

স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আবদুল ওহাব ঘটনার এ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

;

লক্ষ্মী ভাইয়েরা বাসায় যান, নিজেসহ দেশকে বাঁচান



নাহিদ রেজা, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঠাকুরগাঁও
ওসি তানভিরুল ইসলাম।

ওসি তানভিরুল ইসলাম।

  • Font increase
  • Font Decrease

আমার লক্ষ্মী ভাইয়েরা দয়া করে বাইরে ঘোরাঘুরি না করে বাসায় যান। নিজে বাঁচেন, পরিবারকে বাঁচান, দেশকে বাঁচান। সচেতন হোন।

ঠিক এসব কথা বলে করোনাভাইরাস প্রতিরোধে জনগণকে সচেতন করছেন ঠাকুরগাঁও সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) তানভিরুল ইসলাম। মাঠ পর্যায়ে গিয়ে এভাবে সচেতন করায় সাধুবাদ জানিয়েছে সাধারণ মানুষ।

ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার রহিমানপুর ইউনিয়নের রেজাউল ইসলাম বলেন, ‘আমি ওষুধ কেনার জন্য স্থানীয় বাজারে এসেছিলাম। কিছুক্ষণ পর থানার একটি গাড়ি বাজারের সামনে এসে দাঁড়ায় এবং ওসি তানভিরুল সবাইকে বাসায় থাকার জন্য অনুরোধ করেন। এর আগে কখনো জনগণের সঙ্গে পুলিশের এমন ভালো আচরণ দেখি নাই।’

ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার চৌড়াস্তা মোড়ে কথা হয় জয়নাল নামে এক পথচারীর সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘আমাদের জেলার পুলিশ সাধারণ জনগণের সঙ্গে ভালো ব্যবহার করছে। তাদের ভাই বলে বাসায় ফিরে যাওয়ার জন্য অনুরোধ করছে। ওসিসহ পুলিশের সদস্যরা নিজেদের কথা চিন্তা না করে আমাদের জন্য এ কাজটি করে যাচ্ছেন। তাদের ধন্যবাদ জানাই।’

স্থানীয় সাহাদত হোসেন নামে একজন বলেন,‘তানভিরুল ভাই একজন মানবিক পুলিশ অফিসার। তার জন্য শুভকামনা ও দোয়া রইল।’

ঠাকুরগাঁও সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) তানভিরুল ইসলাম বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘করোনাভাইরাস নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। এ ভাইরাস প্রতিরোধে আমাদের সবাইকে সচেতন হতে হবে। সরকার যেসব দিক নির্দেশনা দিয়েছে সেগুলো মেনে চলতে হবে। জনগণের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার না করে তাদের সচেতন করা হচ্ছে। এতে কাজও হচ্ছে।’

;

ডিবি পরিচয়ে মোবাইল ছিনতাই, যুবক গ্রেফতার



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, নীলফামারী
গ্রেফতার আবেদ আলী।

গ্রেফতার আবেদ আলী।

  • Font increase
  • Font Decrease

নীলফামারীতে গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) উপপরিদর্শক পরিচয়ে মোবাইল ছিনতাই করার অপরাধে আবেদ আলী (২৮) নামে এক যুবককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

রোববার (৫ এপ্রিল) বিকেলে নীলফামারী সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মমিনুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

আবেদ আলী সৈয়দপুর উপজেলার কাশিরাম বেলপুকুর ইউনিয়নের চওড়া গ্রামের খয়রাত হোসেনের ছেলে।

জানা গেছে, শনিবার (৪ এপ্রিল) দুপুরে জেলা সদরের কুন্দপুকুর ইউনিয়নের আঙ্গারপাড়া গ্রামে মোকছেদুল ইসলামসহ কয়েক যুবক মোবাইলে ভিডিও গেম খেলছিলেন। এ সময় আবেদ আলী নিজেকে সৈয়দপুর থানার ডিবি পুলিশের উপপরিদর্শক পরিচয় দিয়ে ওই যুবকদের কাছ থেকে মোবাইলটি নিয়ে যান। পরে এ বিষয়ে মোবাইলের মালিক মোকছেদুল ইসলাম সদর থানায় অভিযোগ করেন।

এরপর রোববার ভোরে আবেদ আলীর বাড়িতে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করা হয়। ওই সময় তার কাছ থেকে ছিনতাই কাজে ব্যবহৃত একটি খেলনা পিস্তল ও ওয়্যারলেস সেট, একাধিক মোবাইল সিম এবং দুটি পরিচয়পত্র জব্দ করে পুলিশ।

নীলফামারী সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মমিনুল ইসলাম জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ডিবি পুলিশের ভুয়া পরিচয়ে মোবাইল ছিনতাই করার সত্যতা স্বীকার করেছেন আবেদ আলী। এ ঘটনায় মামলা দায়ের করার পর আদালতের মাধ্যমে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

;